শতাধিক কেওড়াগাছ কেটে নিলেন বিএনপির নেতা!
চিংড়িঘের করার জন্য দুই সপ্তাহে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের গোয়ালঘেসিয়া নদীর চরে মশরকাটি এলাকা থেকে শতাধিক কেওড়াগাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) স্থানীয় এক কর্মকর্তার সঙ্গে সমঝোতা করে বিষ্ণুপুর ইউপি সদস্য ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান ও তাঁর শ্যালক উপজেলার নীলকণ্ঠপুর গ্রামের আক্তারুল ইসলাম সরকারি
জমির এসব গাছ বিক্রি করেছেন। গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মশরকাটি এলাকার চার-পাঁচ বিঘা জমির গাছ কেটে ফাঁকা করা হয়েছে। ৫০টির বেশি গাছের গোড়া মাটি খুঁড়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। আবার ৩৯টি কাটা গাছের গোড়া মাটিতেই রয়েছে।
এ সময় মশরকাটি গ্রামের বাসিন্দা নেছারউদ্দিন সরদার, জহুরুল সরদার ও অম্মত আলী জানান, গোয়ালঘেসিয়া নদীর চরে প্রাকৃতিকভাবেই কেওড়া ও গোলপাতাগাছ জন্মেছে। ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান ও তাঁর শ্যালক আক্তারুল ইসলাম ২০০৩ সালে চরের প্রায় চার বিঘা জমি দখলে নেন। তাঁরা দুই সপ্তাহ আগে সেখান থেকে ৫০টির বেশি কেওড়াগাছ কেটে বিক্রি করেন। ক্রেতা মাটি খুঁড়ে গর্ত করে গাছের গোড়া পর্যন্ত তুলে নিয়ে গেছেন। একইভাবে তাঁরা ৬১টি গাছ উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আবদুস সাত্তারের কাছে বিক্রি করেন। আবদুস সাত্তার গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ২০ জন শ্রমিক দিয়ে ওই গাছ কেটে নিয়ে শ্যামনগর উপজেলার খানপুর গ্রামের একটি ইটভাটায় বিক্রি করেন। দখলকারীরা পর্যায়ক্রমে বাকি গাছ বিক্রি করার পাঁয়তারা করছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার শ্যালক আক্তারুল ইসলাম পাউবোর নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি জমির কয়েকটি কেওড়াগাছ বিক্রি করেছে। এর সঙ্গে আমি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই।’
আক্তারুল ইসলাম বলেন, ‘২০০৩ সালে শখ করে নদীর চরে ৩০০টি কেওড়াগাছ লাগিয়েছিলাম। চিংড়িঘের করার জন্য পাউবোর সেকশন অফিসার কাজী আজাদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেই আমি পিঁপড়ে লাগা কয়েকটি গাছ দুই সপ্তাহ আগে কেটে জ্বালানি করেছি। এ ছাড়া বৃহস্পতি ও শুক্রবার ২৫-৩০টি গাছ বিক্রি করেছি।’
কাঠ ব্যবসায়ী আবদুস সাত্তার জানান, তিনি হাবিবুর রহমান ও আক্তারুলের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ৫০টি গাছ কিনেছেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১-এর কালীগঞ্জ শাখার সেকশন অফিসার কাজী আজাদ হোসেন বলেন, ‘শতাধিক নয়, ৩৭টি গাছ কাটা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কোনো সুবিধা নিইনি। যাঁরা গাছ কেটেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
No comments