শিমুর দিনরাত্রি by মীর সামী
সুমাইয়া শিমু অভিনয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন শুরু থেকেই। ক্রমেই তিনি উজ্জ্বল হয়ে উঠছেন আরও। পাশাপাশি পড়াশোনাও শেষ করেছেন সাফল্যের সঙ্গে। এখন পিএইচডি করছেন। মানুষ হিসেবেও তিনি অনন্য। শিমুর দিনরাত্রি নিয়ে এই প্রতিবেদন বাইরে শীতের হিমেল হাওয়া আর সোনালি রোদের আলতো স্পর্শ। পৌষের এক শীতের সকালে কথা হচ্ছিল সুমাইয়া শিমুর বনানীর বাসায়। কলিংবেল বাজতেই দরজা খুললেন তিনি। মুখে সবসময়ের মতোই এক
টুকরা হাসি। পরনে সবুজ কোর্তা আর ছাই রঙের চাদর। দেখা হতেই মিষ্টি গলায় ভেতরে নিয়ে গেলেন। সদর দরজা পার হলেই বসার ঘর। ঘরটা সুন্দর করে সাজানো। বাড়িভর্তি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, ক্রিস্টালের নানা ধরনের শোপিস, এখানে-ওখানে জ্বলছে মৃদু আলো। পুরো বাড়িটা সাজানো গোছানোর দায়িত্ব শিমুর ওপরই। সোফায় বসে বললেন, 'আজ কোনো নাটকের কাজ না থাকার কারণেই এতক্ষণ বিছানায় কম্বলের মধ্যেই ছিলাম।'
ছোট পর্দার অভিনেত্রী হিসেবে শিমু যেমন ঝলমলে হয়ে উঠেছেন, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাতেও রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে এমএসএস করার পর নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে এমফিল প্রথম পর্বে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এখন তিনি 'বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটকে অভিনয় নারী : শৈল্পিক ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষিত' বিষয়ে পিএইচডি করছেন। অভিনয়ের কারণে কাজটা খুব বেশি এগিয়ে নিতে পারছেন না। তবে সময় পেলেই পিএইচডির জন্য লিখছেন। 'পিএইচডি করি এটা আমার যেমন স্বপ্ন ছিল, তার চেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখেছেন আমার বাবা-মা। তাদের স্বপ্নকে সত্যি করতেই কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকার পরও পিএইচডি করছি।'
সুমাইয়া শিমু এখন অভিনয় নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। এ কথাটা বলার পরে খটকা লাগল মনে এই ভেবে যে, তিনি তো সবসময় এমনই ছিলেন! যেদিন তার নাটকের কাজ থাকে সেদিন সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে পড়েন ঘর থেকে। তারপর সারাদিন লাইট, ক্যামেরা আর অ্যাকশনের মধ্যে কেটে যায়। বেশিরভাগ সময়ই উভয় শিফটে কাজ করতে হয় তাকে। আর মাঝে মধ্যে বিরতিতে সহশিল্পীদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে গালগপ্পে অংশ নেন। ঘরে ফিরতে ফিরতে রাত ১০টা। খুব বেশি দেরি হলে ঘড়ির কাঁটা থাকে ১২টার ঘরে। এরপর মেকআপ তুলে রাতের খাবার আর ঘুম। পরদিন যদি কাজ থাকে তাহলে চরিত্র অনুযায়ী পোশাক গুছিয়ে নেন। এরপর বিছানায় কিছু সময়ের জন্য নাটকের চিত্রনাট্যে চোখ বুলান। তবে অভিনেত্রীর চেয়ে ব্যক্তি শিমু অনেক বেশি ব্যস্ত। কাজ না থাকলে পরিবারকে সময় দিতে হয়। সবাইকে নিয়ে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যাওয়া, নাটকের জন্য পোশাক কেনাসহ নানা কাজে সারাবেলা ব্যস্ত থাকেন তিনি। এই তো কিছুদিন আগে পরিবারের সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন সিলেটে। এর আগে অসংখ্যবার সিলেটে গেছেন বিভিন্ন নাটকের কাজে। কিন্তু এবার যান পুরো পরিবারের সঙ্গে। চা বাগান, জাফলং আর মাধবকুণ্ডে বেশ কয়েকটি দিন নিজের মতো করে কাটিয়েছেন। 'নাটকে অভিনয়ের কারণে অনেক সময় পারিবারিক অনেক সামাজিকতায় অংশ নিতে পারি না। সেজন্য মাঝে মধ্যে মন খারাপ হয়। তবে যখন আমার কোনো নাটকের কাজ থাকে না তখনই পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঢাকার বাইরে ঘুরে আসি। সেই সময়গুলো আনন্দেই কাটে।'
শিমুর অভিনয় জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ধারাবাহিক নাটক 'স্বপ্নচূড়া'। এতে হাস্যরসাত্মক চরিত্রে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ব্যাপক। অন্যদিকে 'ললিতা' নাটকের নামভূমিকায় অভিনয় করে তিনি প্রমাণ করেছেন নিজের অভিনয় ক্ষমতা। বস্তি থেকে উঠে আসা মেয়েটি নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেকে চলচ্চিত্রের নায়িকা ও সমাজের উচ্চতর আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। এই নাটকটির পর শিমু কাজ করছেন শওকত আলীর ত্রয়ী উপন্যাস নিয়ে সাজ্জাদ সুমন পরিচালিত 'দক্ষিণায়নের দিন' নাটকে। এখানে রাখি চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। এবার তার কাছে কয়েকটি প্রশ্ন_
১. নিজের অভিনয় সম্পর্কে তিনি বলেন, 'অভিনয় মূলত চর্চার বিষয়। আমি এখনও চর্চার মধ্যেই আছি। নিজের অভিনয় নিয়ে এখনও পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। মনে হয়েছে, আরও ভালো করা যেত বা আরও ভালো করা উচিত ছিল।'
২. নতুন বছর, মানে ২০১২ সালটি নিয়ে তার পরিকল্পনা কী? 'আগামী বছরেও গতানুগতিকতার বাইরে ভালো কিছু নাটকে কাজ করতে চাই।'
৩. নাটকে অভিনয়ের আগে কোন বিষয়গুলো দেখেন? 'আমি এখনও চিত্রনাট্য না দেখে অভিনয় করতে রাজি হই না। প্রতিটি চরিত্রকেই চ্যালেঞ্জিং হিসেবে ধরে নেই। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা যেমন কঠিন, তেমনি মিডিয়ায় বিখ্যাত হওয়া যতটা সহজ, সেই অবস্থান ধরে রাখা তেমনি কঠিন।'
৪. অভিনয়ের প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে এসে আপনার প্রাপ্তি কী? 'সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো দর্শকের ভালোবাসা।'
৫. আপনার সমসাময়িক প্রায় সব অভিনেত্রীই বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়েছেন। এ অবস্থায় কতদিন আর একা একা থাকবেন? 'বিয়ে তো করতেই হবে। একজীবন তো আর একা কাটিয়ে দেওয়া যায় না। বাবা-মা আমার বিয়ে নিয়ে ভাবছেন। আমি তাদের ভাবনাকে সম্মান করি।'
ছোট পর্দার অভিনেত্রী হিসেবে শিমু যেমন ঝলমলে হয়ে উঠেছেন, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাতেও রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে এমএসএস করার পর নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে এমফিল প্রথম পর্বে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এখন তিনি 'বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটকে অভিনয় নারী : শৈল্পিক ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষিত' বিষয়ে পিএইচডি করছেন। অভিনয়ের কারণে কাজটা খুব বেশি এগিয়ে নিতে পারছেন না। তবে সময় পেলেই পিএইচডির জন্য লিখছেন। 'পিএইচডি করি এটা আমার যেমন স্বপ্ন ছিল, তার চেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখেছেন আমার বাবা-মা। তাদের স্বপ্নকে সত্যি করতেই কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকার পরও পিএইচডি করছি।'
সুমাইয়া শিমু এখন অভিনয় নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। এ কথাটা বলার পরে খটকা লাগল মনে এই ভেবে যে, তিনি তো সবসময় এমনই ছিলেন! যেদিন তার নাটকের কাজ থাকে সেদিন সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে পড়েন ঘর থেকে। তারপর সারাদিন লাইট, ক্যামেরা আর অ্যাকশনের মধ্যে কেটে যায়। বেশিরভাগ সময়ই উভয় শিফটে কাজ করতে হয় তাকে। আর মাঝে মধ্যে বিরতিতে সহশিল্পীদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে গালগপ্পে অংশ নেন। ঘরে ফিরতে ফিরতে রাত ১০টা। খুব বেশি দেরি হলে ঘড়ির কাঁটা থাকে ১২টার ঘরে। এরপর মেকআপ তুলে রাতের খাবার আর ঘুম। পরদিন যদি কাজ থাকে তাহলে চরিত্র অনুযায়ী পোশাক গুছিয়ে নেন। এরপর বিছানায় কিছু সময়ের জন্য নাটকের চিত্রনাট্যে চোখ বুলান। তবে অভিনেত্রীর চেয়ে ব্যক্তি শিমু অনেক বেশি ব্যস্ত। কাজ না থাকলে পরিবারকে সময় দিতে হয়। সবাইকে নিয়ে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যাওয়া, নাটকের জন্য পোশাক কেনাসহ নানা কাজে সারাবেলা ব্যস্ত থাকেন তিনি। এই তো কিছুদিন আগে পরিবারের সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন সিলেটে। এর আগে অসংখ্যবার সিলেটে গেছেন বিভিন্ন নাটকের কাজে। কিন্তু এবার যান পুরো পরিবারের সঙ্গে। চা বাগান, জাফলং আর মাধবকুণ্ডে বেশ কয়েকটি দিন নিজের মতো করে কাটিয়েছেন। 'নাটকে অভিনয়ের কারণে অনেক সময় পারিবারিক অনেক সামাজিকতায় অংশ নিতে পারি না। সেজন্য মাঝে মধ্যে মন খারাপ হয়। তবে যখন আমার কোনো নাটকের কাজ থাকে না তখনই পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঢাকার বাইরে ঘুরে আসি। সেই সময়গুলো আনন্দেই কাটে।'
শিমুর অভিনয় জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ধারাবাহিক নাটক 'স্বপ্নচূড়া'। এতে হাস্যরসাত্মক চরিত্রে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ব্যাপক। অন্যদিকে 'ললিতা' নাটকের নামভূমিকায় অভিনয় করে তিনি প্রমাণ করেছেন নিজের অভিনয় ক্ষমতা। বস্তি থেকে উঠে আসা মেয়েটি নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেকে চলচ্চিত্রের নায়িকা ও সমাজের উচ্চতর আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। এই নাটকটির পর শিমু কাজ করছেন শওকত আলীর ত্রয়ী উপন্যাস নিয়ে সাজ্জাদ সুমন পরিচালিত 'দক্ষিণায়নের দিন' নাটকে। এখানে রাখি চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। এবার তার কাছে কয়েকটি প্রশ্ন_
১. নিজের অভিনয় সম্পর্কে তিনি বলেন, 'অভিনয় মূলত চর্চার বিষয়। আমি এখনও চর্চার মধ্যেই আছি। নিজের অভিনয় নিয়ে এখনও পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। মনে হয়েছে, আরও ভালো করা যেত বা আরও ভালো করা উচিত ছিল।'
২. নতুন বছর, মানে ২০১২ সালটি নিয়ে তার পরিকল্পনা কী? 'আগামী বছরেও গতানুগতিকতার বাইরে ভালো কিছু নাটকে কাজ করতে চাই।'
৩. নাটকে অভিনয়ের আগে কোন বিষয়গুলো দেখেন? 'আমি এখনও চিত্রনাট্য না দেখে অভিনয় করতে রাজি হই না। প্রতিটি চরিত্রকেই চ্যালেঞ্জিং হিসেবে ধরে নেই। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা যেমন কঠিন, তেমনি মিডিয়ায় বিখ্যাত হওয়া যতটা সহজ, সেই অবস্থান ধরে রাখা তেমনি কঠিন।'
৪. অভিনয়ের প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে এসে আপনার প্রাপ্তি কী? 'সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো দর্শকের ভালোবাসা।'
৫. আপনার সমসাময়িক প্রায় সব অভিনেত্রীই বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়েছেন। এ অবস্থায় কতদিন আর একা একা থাকবেন? 'বিয়ে তো করতেই হবে। একজীবন তো আর একা কাটিয়ে দেওয়া যায় না। বাবা-মা আমার বিয়ে নিয়ে ভাবছেন। আমি তাদের ভাবনাকে সম্মান করি।'
No comments