রিহ্যাব মেলার সমাপনীতে এ কে আজাদ-আবাসন ব্যবসায়ীদের দখলে বহু খাসজমি


রকারের শত শত বিঘা খাসজমি অবৈধভাবে দখল করে আছেন দেশের আবাসন খাতের কিছু ব্যবসায়ী। তাঁরা এতই শক্তিশালী যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী চেষ্টা করেও সেগুলো উদ্ধার করতে পারছেন না। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিহ্যাব মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এমন অভিযোগ করেন দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি এ কে আজাদ। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আরও বলেন,


রিহ্যাবের অনেক সুনাম আছে। কিন্তু রিহ্যাবেরই কিছু সদস্য সত্যিই মানুষের ক্ষতি করছে। এতে রিহ্যাবের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তিনি অসৎ আবাসন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিহ্যাব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। প্রয়োজনে এফবিসিসিআই থেকে সহায়তার আশ্বাসও দেন তিনি।
একই অনুষ্ঠানে নির্মাণবিধি মেনে ভবন নির্মাণ করতে আবাসন ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী এম হাছান মাহমুদ। জমির উন্নয়ন করতে গিয়ে পরিবেশের ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব যেন না পড়ে, সেদিকে সতর্ক থাকারও অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম হাছান মাহমুদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, গত কয়েক বছরে পরিবেশের বিপরীতে গিয়ে আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে। এতে ঢাকার বিস্তৃতি ঘটছে এবং ঘটবে। কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঢাকা আর বসবাসের উপযোগী থাকবে না।
বন ও পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, গ্রামের মানুষের জন্য আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় এসেছে। এ ক্ষেত্রে রিহ্যাবের সদস্যরা যদি গ্রাম বা উপজেলা পর্যায়ে তাঁদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেন, তবে দেশের আবাসন-সংকট সমাধানে তাঁরা বিরাট ভূমিকা রাখবেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, আবাসন ও শিল্পকারখানা নির্মাণের জন্য প্রতিবছর আমরা ১ শতাংশ হারে কৃষিজমি হারাচ্ছি। শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের জন্য সব দিক বিবেচনা করে আবাসন ব্যবসায়ীদের কাজ করতে হবে।
এ সময় বন ও পরিবেশমন্ত্রী বিদ্যুতের ওপর চাপ কমাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রেখে ভবন নির্মাণ করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রিহ্যাবের সভাপতি নসরুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মুরাদ ইকবাল চৌধুরী ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক রবিউল হক।
পরে সংগীত পরিবেশন করেন ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা ও নচিকেতা।
উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) উদ্যোগে জমি ও ফ্ল্যাটের পাঁচ দিনব্যাপী ‘রিহ্যাব মেলা’ শুরু হয়। এতে ২৮১টি রিয়েল এস্টেট ও ২টি অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের স্টল ছিল। এ ছাড়া অবৈধ প্রকল্প চিহ্নিত ও তদারকির জন্য রাজউকের একটি স্টল মেলা প্রাঙ্গণে ছিল।
তবে রিহ্যাব মেলায় অননুমোদিত প্রকল্পের প্লট বিক্রি ও প্রচার করার অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ২১টি আবাসন কোম্পানির নিবন্ধনের কার্যকারিতা স্থগিত এবং ২২টি নিবন্ধনবিহীন কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।
পাশাপাশি বিভিন্ন কোম্পানির অননুমোদিত প্রকল্পের প্লট বিক্রি ও প্রচার বন্ধের জন্য শেরেবাংলানগর থানায় গত রোববার রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।

No comments

Powered by Blogger.