স্বপ্নবাজ মেধাবীদের কথা by ফুয়াদ মু. খালিদ হোসাইন
কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুমনের ইচ্ছা, পড়া শেষ করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি নেওয়ার। তার মতে, অর্থের সঠিক জোগান থাকলে তা দিয়ে ইতিবাচক কাজ করা সম্ভব। তবে এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন অনেকেই। ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী নওশাবা আহমেদ প্রিয়াঙ্কার চিন্তা শিক্ষকতার। আকর্ষণীয় নানা পেশা থাকতে শিক্ষকতা কেন? কিন্তু মিতুর মতে, সমৃদ্ধিশালী জাতি গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকাই মুখ্য
কুয়াশাভেজা শীতের সকাল। কনকনে ঠাণ্ডায় শীতের পোশাক মুড়িয়ে ক্লাসে হাজির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা। শীত থাকলেও থেমে থাকে না এসব শিক্ষার্থীর পথচলা। লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ী এরা। সমাজবিজ্ঞান ভবনের ছাদে হয়ে যায় জম্পেশ আড্ডা। কথার ফুলঝুড়িতে চলে আসে শিক্ষা, পরিবেশ, দেশ, মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, খেলাধুলা, স্বপ্ন, সমস্যা, সম্ভাবনাসহ নানা প্রসঙ্গ।
বিজয়ের মাস। মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ দিয়েই কথা শুরু হয়। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহা তাবাসসুম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি নিয়ে। বর্তমানের কলুষিত ছাত্ররাজনীতি তাকে হতাশ করে। তিনি বলেন, 'বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এ দেশের ছাত্র সমাজের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। অথচ বর্তমানে ছাত্ররা ইতিহাস, ঐতিহ্য ভুলে নোংরা, হানাহানি আর ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে মেতে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধিশালী এক দেশ গড়ায় গঠনমূলক ছাত্ররাজনীতির বিকল্প নেই বলে দাবি করেন তিনি। সঙ্গে সমর্থন পান সেলিনা, নুরী, মাসুমসহ বন্ধুদের।
দেশের সমৃদ্ধির পেছনে রাজনীতিবিদদের ভূমিকার পাশাপাশি দেশের তরুণ সমাজকে দায়ী করেন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মেধাবী শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া। দেশের তারুণ্যকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশের তারুণ্য যদি কাজ করার জন্য প্রত্যয়ী হতো, তাহলে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটত। এ দেশের তরুণ সমাজ পরিশ্রমবিমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, যে কোনো উপায়ে একটি সরকারি চাকরি। এর ফলে সৃজনশীলতা নষ্ট হয়। হারিয়ে যায় সৃষ্টিশীলতা। অনেক ক্ষেত্রেই চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে বসে থাকে তারা। অথচ ব্যক্তিগতভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার বিকল্প কোনো চিন্তা তাদের মধ্যে অনুপস্থিত। 'পড়াশোনা শেষে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের বেকারত্বের পাশাপাশি অন্যদেরও বেকারত্ব ঘুচানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও এগিয়ে এসেছে সহযোগিতার হাত নিয়ে। এ সুযোগটা আমাদের কাজে লাগানো উচিত।' এ কারণে শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হওয়া দরকার।
কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুমনের ইচ্ছা, পড়া শেষ করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি নেওয়ার। তার মতে, অর্থের সঠিক জোগান থাকলে তা দিয়ে ইতিবাচক কাজ করা সম্ভব। তবে এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন অনেকেই। ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী নওশাবা আহমেদ প্রিয়াঙ্কার চিন্তা শিক্ষকতার। আকর্ষণীয় নানা পেশা থাকতে শিক্ষকতা কেন? 'সমৃদ্ধিশালী জাতি গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকাই মুখ্য। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঠিক জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে পারেন। শিক্ষকরা ছোটবেলা থেকে শিক্ষার্থীদের যেভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন, শিক্ষার্থী সেভাবেই গড়ে উঠবে। আদর্শ জাতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য দরকার শিক্ষকের যথার্থ ভূমিকা' নিজের কথার সঙ্গে সমর্থন পান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী অমীয় বালা, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের মনিরুজ্জামান এবং অর্থনীতি বিভাগের শিমুলের। প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের কথা। 'বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান সন্তোষজনক নয়। অথচ আমাদের সম্পদের ঘাটতির কথাটা শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। দরকার শুধু আমাদের আন্তরিকতা, মানবসম্পদ আর অর্থের যথাযথ ব্যবহার। এগুলোর সমন্বয় করলেই আমাদের বিদ্যাপীঠগুলোর অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটতে সময় লাগবে না। প্রয়োজন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করেন, আমাদের প্রশাসকদের ইতিবাচক ভাবনার উদয় হবে। তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাটিয়ে উঠবে সঙ্কীর্ণতা, প্রতিকূলতা। গড়ে উঠবে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই বের হয়ে আসবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কর্ণধার।
বিজয়ের মাস। মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ দিয়েই কথা শুরু হয়। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহা তাবাসসুম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি নিয়ে। বর্তমানের কলুষিত ছাত্ররাজনীতি তাকে হতাশ করে। তিনি বলেন, 'বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এ দেশের ছাত্র সমাজের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। অথচ বর্তমানে ছাত্ররা ইতিহাস, ঐতিহ্য ভুলে নোংরা, হানাহানি আর ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে মেতে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধিশালী এক দেশ গড়ায় গঠনমূলক ছাত্ররাজনীতির বিকল্প নেই বলে দাবি করেন তিনি। সঙ্গে সমর্থন পান সেলিনা, নুরী, মাসুমসহ বন্ধুদের।
দেশের সমৃদ্ধির পেছনে রাজনীতিবিদদের ভূমিকার পাশাপাশি দেশের তরুণ সমাজকে দায়ী করেন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মেধাবী শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া। দেশের তারুণ্যকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশের তারুণ্য যদি কাজ করার জন্য প্রত্যয়ী হতো, তাহলে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটত। এ দেশের তরুণ সমাজ পরিশ্রমবিমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, যে কোনো উপায়ে একটি সরকারি চাকরি। এর ফলে সৃজনশীলতা নষ্ট হয়। হারিয়ে যায় সৃষ্টিশীলতা। অনেক ক্ষেত্রেই চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে বসে থাকে তারা। অথচ ব্যক্তিগতভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার বিকল্প কোনো চিন্তা তাদের মধ্যে অনুপস্থিত। 'পড়াশোনা শেষে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের বেকারত্বের পাশাপাশি অন্যদেরও বেকারত্ব ঘুচানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও এগিয়ে এসেছে সহযোগিতার হাত নিয়ে। এ সুযোগটা আমাদের কাজে লাগানো উচিত।' এ কারণে শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হওয়া দরকার।
কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুমনের ইচ্ছা, পড়া শেষ করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি নেওয়ার। তার মতে, অর্থের সঠিক জোগান থাকলে তা দিয়ে ইতিবাচক কাজ করা সম্ভব। তবে এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন অনেকেই। ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী নওশাবা আহমেদ প্রিয়াঙ্কার চিন্তা শিক্ষকতার। আকর্ষণীয় নানা পেশা থাকতে শিক্ষকতা কেন? 'সমৃদ্ধিশালী জাতি গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকাই মুখ্য। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঠিক জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে পারেন। শিক্ষকরা ছোটবেলা থেকে শিক্ষার্থীদের যেভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন, শিক্ষার্থী সেভাবেই গড়ে উঠবে। আদর্শ জাতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য দরকার শিক্ষকের যথার্থ ভূমিকা' নিজের কথার সঙ্গে সমর্থন পান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী অমীয় বালা, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের মনিরুজ্জামান এবং অর্থনীতি বিভাগের শিমুলের। প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের কথা। 'বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান সন্তোষজনক নয়। অথচ আমাদের সম্পদের ঘাটতির কথাটা শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। দরকার শুধু আমাদের আন্তরিকতা, মানবসম্পদ আর অর্থের যথাযথ ব্যবহার। এগুলোর সমন্বয় করলেই আমাদের বিদ্যাপীঠগুলোর অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটতে সময় লাগবে না। প্রয়োজন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করেন, আমাদের প্রশাসকদের ইতিবাচক ভাবনার উদয় হবে। তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাটিয়ে উঠবে সঙ্কীর্ণতা, প্রতিকূলতা। গড়ে উঠবে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই বের হয়ে আসবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কর্ণধার।
No comments