ট্রানজিট রূপরেখা চুক্তির জন্য দর-কষাকষির সুপারিশ by জাহাঙ্গীর শাহ
ট্রানজিটের অংশীদার হতে আগ্রহী দেশগুলোর (ভারত, নেপাল ও ভুটান) সঙ্গে রূপরেখা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য দর-কষাকষির সুপারিশ করেছে ট্রানজিটবিষয়ক সরকার-গঠিত মূল দল। মূল দলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রানজিটসংক্রান্ত বিষয়গুলোকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য সরকার বাংলাদেশ ট্রানজিট আইন প্রণয়নের কথা বিবেচনা করতে পারে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ট্রানজিট-সংক্রান্ত
কোর কমিটি বা মূল দল গঠন করা হয়। মূল দল গত এপ্রিল মাসে সরকারের কাছে প্রথম প্রতিবেদন জমা দেয়, যাতে সম্ভাব্য রুট চিহ্নিত করা হলেও মাশুলের হার বা পরিমাণ নিয়ে কোনো সুপারিশ ছিল না। পরে মূল দলকে মাশুল সুপারিশ করার জন্য বলা হয়।
এরপর গত সেপ্টেম্বর মাসে রুটভিত্তিক মাশুলের প্রস্তাবসহ প্রতিবেদনটিকে চূড়ান্ত খসড়া হিসেবে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে, যাতে ১৩টি মূল সুপারিশ রয়েছে।
এসব সুপারিশে ট্রানজিটবিষয়ক রূপরেখা চুক্তি ও সংশ্লিষ্ট প্রটোকল প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সরকারকে উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। আরও বলা হয়েছে, একক কোনো মন্ত্রণালয় বা সংস্থার ওপর এই দায়িত্ব অর্পণ করা ঠিক হবে না।
পুরো কাজটি সমন্বয়ের জন্য একটি মন্ত্রণালয়কে প্রধান দায়িত্ব দেওয়া হলেও বিষয়ের গভীরতা ও জটিলতা বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে ট্রানজিটের বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে ভালোভাবে জানাবোঝা লোকজন নিয়ে একটি জাতীয় ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ গঠন করা উচিত বলেও মনে করে মূল দল। আর উল্লিখিত বিশেষজ্ঞ দল প্রস্তাবিত এই ট্রানজিট কর্তৃপক্ষের অন্যতম প্রধান অংশ হিসেবে কাজ করতে পারে।
সর্বোপরি দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিষ্পত্তি করার জন্য সরকার ট্রানজিটের ইস্যুটিকে কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করতে পারে বলে মনে করে মূল দল।
নতুন বাণিজ্যমন্ত্রীকে অবহিতকরণ: এদিকে ট্রানজিট প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেছে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন। ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান গতকাল বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদেরকে প্রতিবেদনটি সম্পর্কে অবহিত করেন।
জানা গেছে, বাণিজ্যমন্ত্রী প্রতিবেদনটি আরও পর্যালোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ ডিসেম্বর মূল দলের সদস্যরা আবারও বৈঠকে বসবেন।
ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বহুমাত্রিক ট্রানজিট ব্যবস্থার আওতায় রুট, মাশুল, সম্ভাব্য বিনিয়োগ, পণ্য পরিবহনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবকাঠামা না থাকায় বিদ্যমান নৌ-প্রটোকলের আওতায় পূর্ণাঙ্গ ট্রানজিট-সুবিধা ব্যাহত হচ্ছে। তবে বহুমাত্রিক ট্রানজিট-সুবিধা দিতে ১৫ ধরনের প্রটোকল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো: সড়ক, রেল ও নৌপথে পণ্য পরিবহন, ট্রানজিট মাশুল, বহুমাত্রিক ব্যবস্থায় পণ্য পরিবহন, ট্রানশিপমেন্ট ব্যবস্থায় পণ্য পরিবহন, কাস্টমস-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা, স্থলবন্দর ব্যবহার-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা, পণ্য নজরদারি ও নিরাপত্তা, ইমিগ্রেশন, পণ্যের বিমা, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার, বিবাদ নিষ্পত্তি এবং পচনশীল বা নির্দিষ্ট সময় পর নষ্ট হয়ে যায় (স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি) এমন পণ্যের সংরক্ষণবিধি।
মূল দল অবশ্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় ট্রানজিটের পরিবর্তে আপাতত ট্রানশিপমেন্ট দিতে বলেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবকাঠামো না থাকায় আগামী তিন বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ট্রানজিট দেওয়া সম্ভব নয়। পূর্ণাঙ্গ টানজিট দেওয়া হলে বছরে এক কোটি ৭৩ লাখ টন কার্গো বহন করা সম্ভব হবে। আর আপাতত ট্রানশিপমেন্ট দেওয়া হলে সম্ভব হবে এর ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ১৮ লাখ টন কার্গো বহন করা যাবে। অবকাঠামো উন্নয়নে আগামী ১০ বছরে ৪৭ হাজার ৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে ১৭টি পথও সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিভিন্ন হিসাবের ভিত্তিতে প্রতি টন/কিলোমিটারে ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের মাশুল সড়কপথে আট থেকে ১১ সেন্ট, রেলপথে পাঁচ থেকে ছয় সেন্ট এবং নৌরুটে দুই থেকে তিন সেন্টের মধ্যে ওঠানামা করবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সড়ক ও রেলপথের জন্য ১০ ধরনের মাশুল রয়েছে। এর মধ্যে স্থির মাশুল হলো কাস্টমস ও স্থলবন্দর সেবা মাশুল ও বিদেশি যান প্রবেশ মাশুল। এ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহন মাশুল, ভূমি ক্ষতিগ্রস্ত মাশুল, প্রশাসনিক মাশুল, প্রাতিষ্ঠানিক মাশুল, নিরাপত্তা মাশুল, দুর্ঘটনা মাশুল, যানজট বা কনটেইনার জট মাশুল, পরিবেশ দূষণ মাশুল ও শব্দদূষণ মাশুল—এগুলো পরিবর্তনশীল মাশুল হিসেবে দেখানো হয়েছে।
নৌরুটে স্থির মাশুলের বাইরে নয় ধরনের পরিবর্তনশীল মাশুল হিসাবে আনা হয়েছে। এগুলো হলো: নৌরুটের ডিজাইন (ড্রেজিংসহ) মাশুল, নৌসংস্থার প্রশাসনিক মাশুল, প্রাতিষ্ঠানিক মাশুল, নিরাপত্তা মাশুল, নৌ-কনটেইনার জট মাশুল, পরিবেশ দূষণ মাশুল, পানিদূষণ মাশুল, শব্দদূষণ মাশুল ও জ্বালানিমূল্য সমন্বয় মাশুল।
এরপর গত সেপ্টেম্বর মাসে রুটভিত্তিক মাশুলের প্রস্তাবসহ প্রতিবেদনটিকে চূড়ান্ত খসড়া হিসেবে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে, যাতে ১৩টি মূল সুপারিশ রয়েছে।
এসব সুপারিশে ট্রানজিটবিষয়ক রূপরেখা চুক্তি ও সংশ্লিষ্ট প্রটোকল প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সরকারকে উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। আরও বলা হয়েছে, একক কোনো মন্ত্রণালয় বা সংস্থার ওপর এই দায়িত্ব অর্পণ করা ঠিক হবে না।
পুরো কাজটি সমন্বয়ের জন্য একটি মন্ত্রণালয়কে প্রধান দায়িত্ব দেওয়া হলেও বিষয়ের গভীরতা ও জটিলতা বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে ট্রানজিটের বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে ভালোভাবে জানাবোঝা লোকজন নিয়ে একটি জাতীয় ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ গঠন করা উচিত বলেও মনে করে মূল দল। আর উল্লিখিত বিশেষজ্ঞ দল প্রস্তাবিত এই ট্রানজিট কর্তৃপক্ষের অন্যতম প্রধান অংশ হিসেবে কাজ করতে পারে।
সর্বোপরি দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিষ্পত্তি করার জন্য সরকার ট্রানজিটের ইস্যুটিকে কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করতে পারে বলে মনে করে মূল দল।
নতুন বাণিজ্যমন্ত্রীকে অবহিতকরণ: এদিকে ট্রানজিট প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেছে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন। ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান গতকাল বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদেরকে প্রতিবেদনটি সম্পর্কে অবহিত করেন।
জানা গেছে, বাণিজ্যমন্ত্রী প্রতিবেদনটি আরও পর্যালোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ ডিসেম্বর মূল দলের সদস্যরা আবারও বৈঠকে বসবেন।
ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বহুমাত্রিক ট্রানজিট ব্যবস্থার আওতায় রুট, মাশুল, সম্ভাব্য বিনিয়োগ, পণ্য পরিবহনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবকাঠামা না থাকায় বিদ্যমান নৌ-প্রটোকলের আওতায় পূর্ণাঙ্গ ট্রানজিট-সুবিধা ব্যাহত হচ্ছে। তবে বহুমাত্রিক ট্রানজিট-সুবিধা দিতে ১৫ ধরনের প্রটোকল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো: সড়ক, রেল ও নৌপথে পণ্য পরিবহন, ট্রানজিট মাশুল, বহুমাত্রিক ব্যবস্থায় পণ্য পরিবহন, ট্রানশিপমেন্ট ব্যবস্থায় পণ্য পরিবহন, কাস্টমস-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা, স্থলবন্দর ব্যবহার-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা, পণ্য নজরদারি ও নিরাপত্তা, ইমিগ্রেশন, পণ্যের বিমা, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার, বিবাদ নিষ্পত্তি এবং পচনশীল বা নির্দিষ্ট সময় পর নষ্ট হয়ে যায় (স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি) এমন পণ্যের সংরক্ষণবিধি।
মূল দল অবশ্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় ট্রানজিটের পরিবর্তে আপাতত ট্রানশিপমেন্ট দিতে বলেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবকাঠামো না থাকায় আগামী তিন বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ট্রানজিট দেওয়া সম্ভব নয়। পূর্ণাঙ্গ টানজিট দেওয়া হলে বছরে এক কোটি ৭৩ লাখ টন কার্গো বহন করা সম্ভব হবে। আর আপাতত ট্রানশিপমেন্ট দেওয়া হলে সম্ভব হবে এর ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ১৮ লাখ টন কার্গো বহন করা যাবে। অবকাঠামো উন্নয়নে আগামী ১০ বছরে ৪৭ হাজার ৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে ১৭টি পথও সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিভিন্ন হিসাবের ভিত্তিতে প্রতি টন/কিলোমিটারে ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের মাশুল সড়কপথে আট থেকে ১১ সেন্ট, রেলপথে পাঁচ থেকে ছয় সেন্ট এবং নৌরুটে দুই থেকে তিন সেন্টের মধ্যে ওঠানামা করবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সড়ক ও রেলপথের জন্য ১০ ধরনের মাশুল রয়েছে। এর মধ্যে স্থির মাশুল হলো কাস্টমস ও স্থলবন্দর সেবা মাশুল ও বিদেশি যান প্রবেশ মাশুল। এ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহন মাশুল, ভূমি ক্ষতিগ্রস্ত মাশুল, প্রশাসনিক মাশুল, প্রাতিষ্ঠানিক মাশুল, নিরাপত্তা মাশুল, দুর্ঘটনা মাশুল, যানজট বা কনটেইনার জট মাশুল, পরিবেশ দূষণ মাশুল ও শব্দদূষণ মাশুল—এগুলো পরিবর্তনশীল মাশুল হিসেবে দেখানো হয়েছে।
নৌরুটে স্থির মাশুলের বাইরে নয় ধরনের পরিবর্তনশীল মাশুল হিসাবে আনা হয়েছে। এগুলো হলো: নৌরুটের ডিজাইন (ড্রেজিংসহ) মাশুল, নৌসংস্থার প্রশাসনিক মাশুল, প্রাতিষ্ঠানিক মাশুল, নিরাপত্তা মাশুল, নৌ-কনটেইনার জট মাশুল, পরিবেশ দূষণ মাশুল, পানিদূষণ মাশুল, শব্দদূষণ মাশুল ও জ্বালানিমূল্য সমন্বয় মাশুল।
No comments