পাকিস্তানকে মোকাবিলা কঠিনই হবে বাংলাদেশের জন্য by দেলোয়ার মাসুম

দের ছুটি কাটাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার ও দলের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বেশ লম্বা ছুটি বলতে হবে। ১২ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে থাকবেন তারা। এদিকে ঈদের পর পরই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আবার ব্যস্ততায় নেমে পড়বেন। নভেম্বরের ২৬ তারিখ প্রায় মাসব্যাপী সফরে বাংলাদেশে আসছে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দল পাকিস্তান। দীর্ঘ এ সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি টি-টোয়েন্টি, তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ও দুই ম্যাচের একটি টেস্ট সিরজি খেলবে সফরকারীরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে কেমন খেলবে বাংলাদেশ? আগেভাগেই এসে যায় সে প্রশ্ন।


দুই দলের মধ্যকার একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ২৯ নভেম্বর। এরপর পহেলা ডিসেম্বর প্রথম ওয়ানডে দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে। ৩ ও ৬ ডিসেম্বর যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আর ৯ থেকে ১৩ ডিসেম্বর প্রথম এবং ১৭ থেকে ২১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান। এদিকে ঈদের ছুটি শেষে জাতীয় লিগে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের। তবে লিগে বেশি ম্যাচ খেলতে পারবেন মুশফিকরা। এক ম্যাচ খেলেই ১৮ নভেম্বর থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়ার জন্য নিজেদের ঝালাইয়ের কাজে নেমে পড়বেন তারা। এবারের অনুশীলনের প্রথম পর্বটা কিন্তু মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হচ্ছে না। মহিলা বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব শুরু হবে ১৪ নভেম্বর থেকে। এ বাছাই পর্ব শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা অনুশীলন করবেন চট্টগ্রামের জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। মহিলা বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব শেষ হয়ে গেলে আবার ঢাকার মিরুপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে এসে অনুশীলন করবেন স্টুয়ার্ট ল’র শীর্ষরা। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলা শেষে পাকিস্তান সরাসরি চলে আসবে বাংলাদেশে। এদিকে জাতীয় লীগে জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা খেললেও মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ও পেসার শফিউল ইসলাম খেলতে পারবেন কি না এ নিয়ে সন্দেহ আছে। দু’জনই চোটে ভুগছেন। ইনজুরির কারণে এই দু’জন ঈদের পর জাতীয় লীগের ম্যাচটি নাও খেলতে পারেন। রিয়াদ জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন পীড়ায় ভুগছেন। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজে কোনো ম্যাচই খেলতে পারেননি। ঢাকা টেস্টের আগে সুস্থ হয়ে উঠলেও অনুশীলনের সময় আঙ্গুলে ব্যথা পাওয়ায় আর খেলতে পারেননি। শফিউল ওয়ানডে সিরিজ খেললেও ইনজুরির কারণে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ পড়েন। এই দু’জনের সঙ্গে জাতীয় ক্রিকেট লীগে খেলবেন না জাতীয় দলের অন্যতম দুই ব্যাটিং স্তম্ভ সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালও। এ দু’জনেরই একটি বিজ্ঞাপন চিত্রে অংশগ্রহণ করার জন্য ভারতে যাওয়ার কথা রয়েছে। দলের নেতৃত্ব পেয়ে প্রথম ম্যাচেই জয় তুলেছেন মুশফিক। সদ্য সমাপ্ত হোম সিরিজের শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টি-টোয়েন্টিতে হারিয়েছেন তিনি। এরপর ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজ জয় আর সম্ভব না হলেও তৃতীয় ওয়ানডেতে এবং চট্টগ্রামে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে সাকিব নিয়েছেন সর্বোচ্চ ছয়টি উইকেট। আর টেস্টে হলেন সিরিজ সেরা। ব্যাট-বল হাতে তার ৫৬ গড়ে ১৬৮ রান এবং ১০ উইকেট নেয়াতে সিরিজ সেরার পুরস্কার তার হাতেই ওঠে। তাছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের অনেক ব্যাটসম্যানই রান পেয়েছেন। এর মধ্যে তামিম, মুশফিক, নাঈম, নাসিরের নাম উল্লেখ করা যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজের মাধ্যমে বাংলাদেশ দল খুঁজে পায় দুই মেধাবী ক্রিকেটার ইলিয়াস সানি ও নাসির হোসেন। একটি মাত্র টেস্ট খেলে দারুণ নৈপূণ্য দেখিয়েছেন সানি। খারাপ করেননি নাসিরও। তবে এসব সফলতা ভুলে গিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের কথা ভাবা যাক। সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তান যে নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছে তাতে ভয় হয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ জানি পথ খুঁজেই না পায়। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে না হোক, টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ দল যথেষ্ট প্রতিযোগিতা করবে বলে আশাবাদী দলের প্রধান নির্বাচক আকরাম খান। তিনি বলেন, ‘ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে আমরা যথেষ্ট ভালো দল। তবে টেস্ট ক্রিকেটে আমরা এত অভিজ্ঞ নই। পাকিস্তানের মতো একটি অভিজ্ঞ দলের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেট খেলা আমাদের জন্য কঠিনই হবে বলে আমি মনে করি।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষেও দলের অনুশীলনে অনেক গুরুত্ব দেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে আকরাম বলেন, ‘দলকে যথাসময়ে প্রস্তুত করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। বিশেষ করে টেস্ট সিরিজ উপলক্ষে দলের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানকে নেটে পর্যাপ্ত পরিমাণ অনুশীলন করানো হবে।’ পাকিস্তান সিরিজে মাহ্মুদ উল্লাহ রিয়াদ ও ইলিয়াস সানি দলে ফিরলে দল আরও শক্তিশালী হবে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচক। বর্তমান দলের সার্বিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি দলে একটা ভারসাম্য আনতে। মুশফিক অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে দলে কোনো অভ্যন্তরীণ সমস্যা বা কোন্দল নেই। সবকিছুই এখন সুন্দরভাবে চলছে।’

No comments

Powered by Blogger.