রাজনীতিবিদরা কে কোথায় ঈদ করবেন

রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ঈদ করবেন ঢাকায়। ঈদের দিন তারা কূটনীতিক, বিশিষ্ট নাগরিক ও দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ঈদের নামাজ পড়বেন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। নামাজ শেষে সকালে বঙ্গভবনে কূটনীতিক ও দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের দিন সকালে দলের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ অনুষ্ঠান হবে।


বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ঈদের দিন সোয়া ১২টায় প্রথমে কূটনীতিক ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এরপরই দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ইস্কাটন গার্ডেনে লেডিস ক্লাবে এ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি শেরেবাংলা নগরে শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করবেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা ঢাকা এবং নির্বাচনী এলাকায় ভাগাভাগি করে ঈদ পালন করবেন। এবারের ঈদে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় থাকার কারণে সিনিয়র নেতাদের বেশিরভাগই ঢাকা ছাড়ছেন না। তবে দলের মধ্যম সারির নেতা ও সংসদ সদস্যদের অনেকেই যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি ও নির্বাচনী এলাকায়। কেউ কেউ আবার ঈদের দিন প্রথম প্রহর ঢাকায় অবস্থান করে বিকালের দিকে যাবেন গ্রামের বাড়িতে। অনেকে আবার ঈদের আগেই নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এসে ঈদের সময়টা অবস্থান করবেন ঢাকাতেই। কয়েকজন নেতা ঈদের সময়ে দেশের বাইরে থাকছেন বলেও জানা গেছে। নেতাদের অনেকেই ঢাকা ও গ্রামের বাড়ি উভয় স্থানে পশু কোরবানি দিচ্ছেন।
দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীদের মধ্যে যারা ঢাকায় থাকবেন, তারা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ঈদের তিনদিন ছুটিতে এলাকায় অবস্থানকালে নেতারা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাত্ ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ঢাকা, তোফায়েল আহমেদ ভোলা, আবদুুল জলিল নওগাঁয় ঈদ করবেন। অপর সদস্য আবদুর রাজ্জাক গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দীর্ঘদিন লন্ডনে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।
বিএনপিসহ চারদলীয় জোটের অধিকাংশ নেতা ঢাকাতেই ঈদ করবেন। তবে ঈদের পরে তারা গ্রামের বাড়ি যাবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের বাইরে রয়েছেন। ঈদের দিন ভোরে ঢাকায় পৌঁছবেন। ঈদের নামাজ শেষে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ঈদের কয়েকদিন পর তিনি তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও যাবেন। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার ঢাকাতেই ঈদ করবেন। তবে এম কে আনোয়ার ঈদের পরদিন কুমিল্লায় তার নির্বাচনী এলাকায় যাবেন। স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি নোয়াখালীতে তার গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবেন। তিনি আজ নোয়াখালী যাচ্ছেন। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট শওকত মাহমুদ তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ঈদ করবেন। আজই তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যাবেন।
চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনী ঢাকায় ঈদ করবেন। তিনি লালবাগ মাদরাসায় ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন। গ্রামের বাড়িতে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, মাদরাসার চৌহদ্দি থেকে বের হতে পারি না। ইচ্ছা থাকার পরও সরকারের বাধার কারণে গ্রামের বাড়িতে যেতে পারছি না। খেলাফত মজলিসের আমির সাবেক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক তার গ্রামের বাড়ি পাবনায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন। তিনি এরই মধ্যে সেখানে চলে গেছেন। পাবনার মধুপুর মাদরাসার ঈদগাহে তিনি ইমামতি করেন।
আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে আরও যারা ঢাকায় ঈদ উদযাপন করছেন তাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, কাজী জাফরুল্লাহ, আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, দলের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীতে ঈদ করবেন। নির্বাচনী এলাকায় কুমিল্লায় যাবেন আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম যাচ্ছেন মাদারীপুর, নেত্রকোনায় ঈদ করবেন অপর সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক শরীয়তপুর, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুর, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাট, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেট, দফতর সম্পাদক ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান দোহার, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন পটুয়াখালী ঈদ করবেন।
এছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ঢাকা, সিপিবি সভাপতি মনজুরুল আহসান খান জামালপুর, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ঢাকা, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ঢাকায় ঈদ করবেন।
বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই কারাগারে ঈদ করবেন। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা লুত্ফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, খায়রুল কবীর খোকন ও নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু কারাগারে ঈদ করবেন। জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা বরাবরের মতো কারাগারে ঈদ করবেন। তবে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি তাসনীম আলম, কেন্দ্রীয় নেতা ইজ্জত উল্লাহসহ আরও বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা কারাগারে প্রথম ঈদ করবেন। জামায়াত নেতাদের মধ্যে কারাগারের বাইরে যারা আছেন, তাদের অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। তারা কোথায় ঈদ করবেন তা জানা যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.