নিহত হালিমের পরিবারের আকুতি-'এবার ঈদ বলতে কিছু নেই আমাদের ঈদ শেষ' by কৌশিক দে,

মাদের সব ঈদ শেষ হয়ে গেছে। সন্ত্রাসীরা আমাদের ঈদ করতে দিল না। ওরা খুব আনন্দে ঈদ করবে। আমরা আর কিছু চাই না, আমাদের কিছু লাগবে না। শুধু হত্যাকারীদের বিচার চাই, শুধু বিচার। ৪ নভেম্বর আমাকে আনতে যাওয়ার কথা ছিল বাবার। আগের দিন বাবা ফোন করে বলছিলেন, 'টেনশন করো না। তোমাকে ৪ তারিখ নিয়ে আসব। ৫ তারিখ ঈদের মার্কেটিং করব, তার আগে কিছু কিনব না। কিন্তু আমাদের তো ঈদের বাজার করা হলো না।'


সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত খুলনার দীঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক গাজী আবদুল হালিমের বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া অশ্রুসিক্ত নিলয় এভাবেই বলে যাচ্ছিল তার প্রিয় বাবার শেষ সময়ের স্বপ্নের কথাগুলো। নিলয় তার বাবাকে হারানোর কথা বুঝতে পারলেও তার চার বছরের ছোট ভাই অলিন ও আড়াই বছরের ভাই হৃদয় এখনো বুঝতে পারছে না, তাদের বাবা আর ফিরে আসবে না।
আবদুল হালিমের স্ত্রী ফারহানা হালিম বলেন, 'আর একদিন পরেই ঈদ। ঈদ নিয়ে হালিমের আয়োজনের চিন্তার কমতি ছিল না। কোরবানির গরুও দেখে এসেছিল। কথা ছিল বড় ছেলেকে নিয়ে ঈদের বাজার করবে। সন্ত্রাসীরা আমার সন্তানদের ঈদ করতে দিল না। আমার মতো যেন আর কাউকে এভাবে বিধাবা হতে না হয়। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই। আমার ছোট তিনটা বাচ্চা। ওরা এখনো বুঝতে পারছে না ওদের বাবা আর ফিরে আসবে না। ওরা বাবার কথা বললে আমি ওদের কী জবাব দেব?'
প্রসংগত, গত ৩০ অক্টোবর বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গাজী আবদুল হালিম বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাঁকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, এরপর যশোর সিএমএইচ ও সর্বশেষ ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। ১ নভেম্বর গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

No comments

Powered by Blogger.