পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের জেল-ক্রীড়াজগৎ কলঙ্কমুক্ত হোক

ন্ডনের একটি আদালত বৃহস্পতিবার তিন পাকিস্তানি ক্রিকেটার এবং এক জুয়াড়িকে নজিরবিহীনভাবে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত বছরের আগস্টে ক্রিকেটের মক্কা হিসেবে খ্যাত লর্ডসে অনুষ্ঠিত একটি টেস্ট ম্যাচে ইচ্ছাকৃতভাবে নো বল করার সঙ্গে তারা যুক্ত ছিলেন। অধিনায়ক সালমান বাট এবং দু'জন বোলার মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমের পরস্পরের যোগসাজশে এ অপরাধ করেছিলেন।


স্পট ফিক্সিং নামে পরিচিত এ অপরাধ সংঘটনের জন্য তাদের প্রচুর অর্থ ঘুষ হিসেবে দেওয়া হয় এবং নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড সংবাদপত্রের অনুসন্ধানে তা ধরা পড়ে। পরে পুলিশি তদন্ত চলে এবং অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ মেলে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলও তদন্ত চালায়।
ক্রীড়াজগতে নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য গ্রহণের পাশাপাশি পাতানো খেলার অভিযোগও বিস্তর। জাতীয়ভাবে বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণকারী দল ও খেলোয়াড়দের সম্পর্কে এ ধরনের অভিযোগ ওঠে। আন্তর্জাতিক আসরেও অভিযোগ ওঠে। এমনকি বিশ্বকাপ ফুটবলেও ঘটে সন্দেহজনক খেলা। এর পেছনে প্রচুর অর্থের লেনদেন হয়। বাংলাদেশের ফুটবলে পাতানো খেলার অভিযোগ পুরনো। নামিদামি দলগুলোও এ থেকে মুক্ত নয়। চলতি বছর ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর জাতীয় ফুটবল লীগে চ্যাম্পিয়ন দলটির বিরুদ্ধে পাতানো খেলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে এবং তদন্তে তার প্রমাণ মিললে তাদের অর্থদণ্ড হয়। এ পদক্ষেপ প্রশংসিত হয়েছে সর্বমহলে। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের জেলদণ্ডের ঘটনাটি পাতানো খেলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত সবার জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে, এটাই আমরা আশা করব। ক্রিকেট দুনিয়ার বরণীয়-স্মরণীয় অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে জেন্টলম্যানস গেম বলে স্বীকৃত এ খেলাকে দুর্নীতিমুক্ত করায় আরও কঠোর ভূমিকা গ্রহণের দাবি করেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটও এখন বিশ্ব আসরে সমাদৃত। টেস্ট অঙ্গনে স্বীকৃত সেরা দশের একটি বাংলাদেশ। আমাদের খেলোয়াড়রা যেন এমন আত্মঘাতী ফাঁদে ধরা না দেন সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে কেউ অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়লে তাকে দিতে হবে কঠোর দণ্ড। শুধু ক্রিকেট নয়, সব ধরনের খেলাধুলা সম্পর্কেই থাকা চাই একই মনোভাব।
 

No comments

Powered by Blogger.