জাল-ভেজালে নাজেহাল by মোঃ তবিউর রহমান
চারদিক শুধু ভেজাল আর ভেজাল। খাবার থেকে শুরু করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বা ওষুধ খেতে যে পানি লাগে তাতে পর্যন্ত ভেজাল। এ ভেজাল থেকে কবে আমরা মুক্তি পাব, নাকি আদৌ পাব না তা নিয়ে জনমনে চরম সংশয় বিরাজ করছে। পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু তা বিশুদ্ধ হওয়া চাই। ইদানীং বোতলের গায়ে কোনো রকম একটা লেভেল লাগিয়ে জেনারেল ওয়াটারকে মিনারেল বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে! মাঝে মধ্যে বোতলে যেভাবে শ্যাওলাসহ
ওয়াসার পানির প্রমাণ পাওয়া যায় তাতে আতঙ্কিত না হয়ে উপায় কী? নর্দমা-ড্রেনে চাষ করে আর কৃত্রিম খাবার খাইয়ে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দ্রুত বড় করা মাছ স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আবার সরাসরি নদী বা বাইরে থেকে আমদানি করা মাছে ফরমালিন! কৃত্রিম সার, কীটনাশক আর প্রিজারভেটিভযুক্ত শাকসবজি কি স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ?
বিদেশে পাড়ি জমানোর আগে পাসপোর্ট এবং টাকা-পয়সা জাল কি-না যাচাই-বাছাই করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। টানা পার্টি, মলম পার্টি আর অজ্ঞান পার্টির যে উৎপাত তাতে বেখেয়াল হলেই কুপোকাত! ছিনতাইকারী থাকতে পারে আশপাশে ছদ্মবেশে। অতএব, প্রতি কদম আস্তে আস্তে অতিসাবধানে ফেলে বিদেশ যাওয়ার চেয়ে দেশের এ সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে সমাধান দেওয়া অনেক ভালো। সাধ্য আছে যার তিনি বিদেশ গেলেন কিন্তু এ দেশের মানুষ কি অসাধু-জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ে চিরকাল নাজেহাল হবে? আবার যে দেশে যাওয়া হবে তা কি আদৌ নিরাপদ? তারা কেমন ভালো যে, দুধের মতো শিশুখাদ্যে মেলামিন পাউডার মেশায়? অস্ট্রেলিয়ায় বন্যায় যেখানে মানুষ পানিবন্দি, অসহায়, সেখানে লুটতরাজ ঠেকাতে স্পিডবোটে করে টহল দিতে হয়! আমেরিকায় ঘূর্ণিঝড় রিটা-ক্যাটরিনায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক লুটতরাজ করা হয়েছিল ওই অসহায় মানুষদের কাছ থেকে। লন্ডনে দাঙ্গায় লুট হওয়া সামগ্রী প্রকাশ্যে বাজারে বিক্রি হয়েছে। এতে সারাবিশ্বেই মানুষ কমবেশি নাজেহাল হচ্ছে।
একথা সত্য, বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে কমবেশি দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে। তবে একটু চেষ্টা করলেই আমরা এর থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি। তাতে মানুষও নিরাপত্তা পাবে, দেশও বাঁচবে। মাত্র দুটি কাজ_ সুশিক্ষা ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণ হলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আজকে ভেজালের সঙ্গে কারা জড়িত? সাইবার আক্রমণ, জাল টাকা, জাল সার্টিফিকেট, জাল পাসপোর্ট, জাল দলিল, বিভিন্ন ডকুমেন্টে জাল স্বাক্ষর কারা করছে? মোটা চাল ছেঁটে ও পাথর কেটে চিকন চালের মতো রূপদানের মেশিন কে তৈরি করল? বাহ্যিক গন্ধ-বর্ণ অক্ষুণ্ন রেখে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, তেল, দুধ ও বিভিন্ন প্রকার খাদ্যে কারা ভেজাল দিচ্ছে? বিভিন্ন নথিপত্রে সই আর চাকরি দিতে ঘুষ নিচ্ছে কারা? এ হীন কাজ থেকে বিরত করতে আমাদের শিক্ষা কতটুকু উপযুক্ত? বুঝে বা না বুঝে ছেলেবেলায় তোতা পাখির মতো মুখস্থ করেছিলাম_ সকালে উঠে আমি মনে মনে বলি, সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি। কিন্তু মনে মনে বলাটা শিক্ষার উচ্চ পর্যায়ে উচ্চস্বরে না বলায় তা মনের মধ্যেই মরে গেছে। যখন আমরা উচ্চ পর্যায়ে, কোনো বিষয় নিয়ে অ্যানালাইসিস করার দক্ষতা অর্জন করলাম, তখন ওই আসল বিদ্যাটা পেলাম না, যা আমাদের অপরাধপ্রবণ হতে বাধা দেবে। আজ আইনের লোকেরা জেলে যাচ্ছে_ হয় ওই আইনজীবী বেআইনি কাজ করেছে নয়তো ক্ষমতার বিপরীতে আইনের শাসন দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু আইন তো সবার জন্যই সমান হওয়ার কথা। গ্রাম্য সালিশে নারীদের যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে তা কেবল নারী বলে নয় বরং অসহায় ও দুর্বল বলে। ওই নারীরা কোনো ক্ষমতাসীন দলের হলে কখনোই এ রকম হতো না। দল ক্ষমতায় থাকতে অপরাধী বহাল-তবিয়তে থাকে অথচ বিরোধী দলে গেলেই মামলার আসামি হয়। আইন যদি আইনের গতিতেই চলত, অপরাধী যেই হোক উপযুক্ত শাস্তি হতো, সুশিক্ষায় মানুষের বিবেকবোধের উদয় হতো, তবে জাল-ভেজালে মানুষকে আর নাজেহাল হতে হতো না।
mtabiur_ku@yahoo.com
বিদেশে পাড়ি জমানোর আগে পাসপোর্ট এবং টাকা-পয়সা জাল কি-না যাচাই-বাছাই করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। টানা পার্টি, মলম পার্টি আর অজ্ঞান পার্টির যে উৎপাত তাতে বেখেয়াল হলেই কুপোকাত! ছিনতাইকারী থাকতে পারে আশপাশে ছদ্মবেশে। অতএব, প্রতি কদম আস্তে আস্তে অতিসাবধানে ফেলে বিদেশ যাওয়ার চেয়ে দেশের এ সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে সমাধান দেওয়া অনেক ভালো। সাধ্য আছে যার তিনি বিদেশ গেলেন কিন্তু এ দেশের মানুষ কি অসাধু-জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ে চিরকাল নাজেহাল হবে? আবার যে দেশে যাওয়া হবে তা কি আদৌ নিরাপদ? তারা কেমন ভালো যে, দুধের মতো শিশুখাদ্যে মেলামিন পাউডার মেশায়? অস্ট্রেলিয়ায় বন্যায় যেখানে মানুষ পানিবন্দি, অসহায়, সেখানে লুটতরাজ ঠেকাতে স্পিডবোটে করে টহল দিতে হয়! আমেরিকায় ঘূর্ণিঝড় রিটা-ক্যাটরিনায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক লুটতরাজ করা হয়েছিল ওই অসহায় মানুষদের কাছ থেকে। লন্ডনে দাঙ্গায় লুট হওয়া সামগ্রী প্রকাশ্যে বাজারে বিক্রি হয়েছে। এতে সারাবিশ্বেই মানুষ কমবেশি নাজেহাল হচ্ছে।
একথা সত্য, বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে কমবেশি দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে। তবে একটু চেষ্টা করলেই আমরা এর থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি। তাতে মানুষও নিরাপত্তা পাবে, দেশও বাঁচবে। মাত্র দুটি কাজ_ সুশিক্ষা ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণ হলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আজকে ভেজালের সঙ্গে কারা জড়িত? সাইবার আক্রমণ, জাল টাকা, জাল সার্টিফিকেট, জাল পাসপোর্ট, জাল দলিল, বিভিন্ন ডকুমেন্টে জাল স্বাক্ষর কারা করছে? মোটা চাল ছেঁটে ও পাথর কেটে চিকন চালের মতো রূপদানের মেশিন কে তৈরি করল? বাহ্যিক গন্ধ-বর্ণ অক্ষুণ্ন রেখে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, তেল, দুধ ও বিভিন্ন প্রকার খাদ্যে কারা ভেজাল দিচ্ছে? বিভিন্ন নথিপত্রে সই আর চাকরি দিতে ঘুষ নিচ্ছে কারা? এ হীন কাজ থেকে বিরত করতে আমাদের শিক্ষা কতটুকু উপযুক্ত? বুঝে বা না বুঝে ছেলেবেলায় তোতা পাখির মতো মুখস্থ করেছিলাম_ সকালে উঠে আমি মনে মনে বলি, সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি। কিন্তু মনে মনে বলাটা শিক্ষার উচ্চ পর্যায়ে উচ্চস্বরে না বলায় তা মনের মধ্যেই মরে গেছে। যখন আমরা উচ্চ পর্যায়ে, কোনো বিষয় নিয়ে অ্যানালাইসিস করার দক্ষতা অর্জন করলাম, তখন ওই আসল বিদ্যাটা পেলাম না, যা আমাদের অপরাধপ্রবণ হতে বাধা দেবে। আজ আইনের লোকেরা জেলে যাচ্ছে_ হয় ওই আইনজীবী বেআইনি কাজ করেছে নয়তো ক্ষমতার বিপরীতে আইনের শাসন দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু আইন তো সবার জন্যই সমান হওয়ার কথা। গ্রাম্য সালিশে নারীদের যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে তা কেবল নারী বলে নয় বরং অসহায় ও দুর্বল বলে। ওই নারীরা কোনো ক্ষমতাসীন দলের হলে কখনোই এ রকম হতো না। দল ক্ষমতায় থাকতে অপরাধী বহাল-তবিয়তে থাকে অথচ বিরোধী দলে গেলেই মামলার আসামি হয়। আইন যদি আইনের গতিতেই চলত, অপরাধী যেই হোক উপযুক্ত শাস্তি হতো, সুশিক্ষায় মানুষের বিবেকবোধের উদয় হতো, তবে জাল-ভেজালে মানুষকে আর নাজেহাল হতে হতো না।
mtabiur_ku@yahoo.com
No comments