লিবিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি-অবৈধ পথ রুদ্ধ করতে হবে

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতে দুরবস্থা কাটেনি এখনো। দেশের সবচেয়ে বড় জনশক্তি বাজার মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমাগত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সূত্র ধরে সরকার পরিবর্তন হয়, আর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে। ওই সময় লিবিয়ায় কর্মরত শ্রমিকদের বেশির ভাগই প্রাণের মায়ায় দেশে চলে আসেন। গাদ্দাফিবিরোধী আন্দোলন সফল হওয়ার পর সেই দেশে আবার স্থিতিশীলতা ফিরে আসার সুবাদে বাংলাদেশের কর্মীদের আবারও স্বপদে চাকরি


করার সুযোগ তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিল, যাতে বাংলাদেশের হারানো বাজারটি ফিরে পেতে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু সরকারের অসতর্কতার কারণে লিবিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশের জন্য এই সংবাদ অবশ্যই নেতিবাচক। কারণ রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার যে প্রবণতা বাংলাদেশে অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে তাকে বদলাতে হলে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু লিবিয়ায় সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে অবৈধ পথে শ্রমিক পাঠানো শুরু হয়েছে। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে সম্প্রতি ১৩ জন বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিক সেখানকার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর। এ পরিস্থিতিতে লিবিয়ায় অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ অনেক শ্রমিকই লিবিয়ার গোলযোগ চলাকালে তাঁদের পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছেন। যেকোনো সময় তাঁরা সেখানকার পুলিশের দৃষ্টিতে পড়তে পারেন_এ ধরনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর হওয়ার প্রয়োজন আছে। অবৈধ জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করা তেমন কঠিন নয়। আগেও বাংলাদেশের শ্রমবাজার নষ্ট করার জন্য এসব প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকেই সেসব প্রতারককে ধরতে হবে এবং তাদের অবৈধ কাজ করা থেকে বিরত রাখতে হবে। অবৈধ রপ্তানিকারকদের ব্যাপারে আগেও কথা হয়েছে। প্রতিবারই তাদের শাস্তি বিধানের দাবি ওঠে। কিন্তু এর আগে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে খুবই কম। সেই সুযোগটিই অবৈধ ব্যবসায়ীরা কাজে লাগিয়েছে এবারও। এখনই তাদের অপকর্ম বন্ধ করতে হবে। তা না হলে লিবিয়ার বাইরেও বাংলাদেশের শ্রমবাজার নষ্ট হতে পারে। একই সঙ্গে লিবিয়ায় অবস্থানকারী শ্রমিকদের যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয় বাংলাদেশ সরকারকে সেদিকে নজর দিতে হবে। লিবিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে অতি দ্রুত।

No comments

Powered by Blogger.