ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আরোয়ো গ্রেপ্তার

ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট গ্লোরিয়া ম্যাকাপাগাল আরোয়োকে (৬৪) গতকাল শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০০৭ সালের সিনেট নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। গতকাল রাতে রাজধানী ম্যানিলার একটি হাসপাতাল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আপাতত পুলিশ পাহারায় তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।


আরোয়ো ২০০১ সাল থেকে গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের পদে ছিলেন। তিনি দেশটির দ্বিতীয় নারী প্রেসিডেন্ট। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি অভিসংশন ও সামরিক অভ্যুত্থানের বেশ কয়েকটি চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। সর্বশেষ নির্বাচনে তিনি কংগ্রেস সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতি বা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠতে পারে বলে গত কয়েক মাস ধরে জল্পনা চলছিল। চিকিৎসার কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আরোয়ো। ম্যানিলা বিমানবন্দর থেকে গত মঙ্গলবার তাঁকে ফেরত পাঠানো হয় এবং সুপ্রিম কোর্ট তাঁর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। নির্বাচন কমিশনের অভিযোগের ভিত্তিতে গতকালই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ম্যানিলার একটি আদালত।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট বেনিনো অ্যাকুইনো গত বছর নির্বাচনী প্রচারণার সময় অঙ্গীকার করেন, ক্ষমতায় এলে আরায়োকে বিচারের মুখোমুখি করবেন তিনি। ক্ষমতায় থাকার সময় আরো কয়েকটি নির্বাচনে জালিয়াতি, ঘুষ নেওয়াসহ বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে আরোয়োর বিরুদ্ধে।
নির্বাচন কমিশনের অভিযোগ, ২০০৭ সালের নির্বাচনে দক্ষিণাঞ্চলীয় মিগুইনদানাও প্রদেশের প্রভাবশালী এক প্রার্থীকে জেতানোর জন্য বড় ধরনের ভোট জালিয়াতির নির্দেশ দেন আরোয়ো। ওই প্রার্থী স্থানীয় আমপাতুয়ান পরিবারের সদস্য, যাঁরা নিজস্ব বাহিনীর মাধ্যমে প্রায় এক দশক প্রদেশটি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ২০০৯ সালে ৫৭ ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ ওঠে পরিবারটির বিরুদ্ধে। গতকাল আরোয়োসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে আমপাতুয়ান পরিবারের এক সদস্যও রয়েছেন।
গতকাল আরোয়োর গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবর দেওয়ার সময় বিচারমন্ত্রী লেইলা দে লিমা সাংবাদিকদের বলেন, 'মিসেস আরোয়োকে দেশে থাকতে এবং ভোট জালিয়াতির অভিযোগের সম্মুখীন হতে বাধ্য করা হয়েছে। এ মামলাটি শুধু নির্বাচন ব্যবস্থাই নয়, বরং গণতন্ত্রের মূলনীতিগুলোর শুদ্ধতার প্রমাণ রাখবে। ফিলিপাইনের জনগণকে ন্যায়বিচার দিতে চাই আমরা।' পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার করা হলেও আরোয়োকে আপাতত হাসপাতালেই রাখা হবে। হাড়ের বিরল এক রোগের কারণে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। এ বছর তাঁর মেরুদণ্ডে তিনটি অস্ত্রোপচার হলেও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। আরোয়োর আইনজীবী রাউল লামবিনো নির্বাচন কমিশনের অভিযোগকে 'অবিচার' বলে অভিহিত করেছেন। আরোয়োকে দেশে আটক রাখার ব্যাপারে সরকার বেপরোয়া আচরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, 'তারা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করেছে। শুরু থেকেই বিষয়টির ওপর জোর খাটাচ্ছে তারা।' সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.