পবিত্র কোরআনের আলো-আ'দ গোত্র ও তাদের হুদ নবীর প্রসঙ্গ অবতারণা
৬৪. ফাকায্যাবূহু ফাআনজাইনাহু ওয়াল্লাযীনা মাআ'হূ ফিল ফুলকি ওয়া আগ্রাক্বনাল্লাযীনা কায্যাবূ বিআয়াতিনা; ইন্নাহুম কানূ ক্বাওমান আ'মীন।৬৫. ওয়া ইলা আ'-দিন আখাহুম হূদান; ক্বালা ইয়া ক্বাওমি'বুদুল্লাহা মালাকুম্ মিন ইলাহিন গাইরুহূ; আফালা তাত্তাক্বূন।৬৬. ক্বালাল মালাউল্লাযীনা কাফারূ মিন ক্বাওমিহি ইন্না লানারা-কা ফী ছাফা-হাতিন ওয়া ইন্না লানাযুন্নুকা মিনাল কা-যিবীন।
৬৭. ক্বালা ইয়া-ক্বাওমি লাইছা বী ছাফা-হাতুন ওয়ালা কিন্নী রাসূলুম্ মির্ রাবি্বল আ'-লামীন। [সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ৬৪-৬৭]
অনুবাদ
৬৪. তথাপি তারা তাঁকে (নুহকে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। আমি তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গে যারা নৌকায় আরোহণ করেছিল তাদের সবাইকে শাস্তি থেকে উদ্ধার করলাম। আর যারা আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, তাদের আমি পানিতে ডুবিয়ে মারলাম। এরা ছিল একেবারেই এক অন্ধগোষ্ঠী।
৬৫. আমি আ'দ গোত্রের কাছে তাদের এক ভাই হুদকে নবী বানিয়ে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বললেন, 'হে আমার গোত্র, তোমরা এক আল্লাহর আনুগত্য করো। তিনি ছাড়া তোমাদের দ্বিতীয় কোনো মাবুদ নেই। তোমরা কি তাঁর কাছে জবাবদিহিতার ব্যাপারে দায়িত্বনিষ্ঠ নও?'
৬৬. তাঁর গোত্রের সরদাররা যারা তাঁর অবাধ্য হলো, তারা বলল, আমরা তো দেখছি তুমি নিশ্চিত নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত আছ এবং আমাদের ধারণা, তুমি নিশ্চিত মিথ্যাবাদীদেরই একজন।
৬৭. হুদ (আ.) বললেন, হে আমার গোত্রের লোকরা, আমার মধ্যে কোনো রকম নির্বুদ্ধিতা নেই। বরং আমি বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসুল।
ব্যাখ্যা
৬৪ নম্বর আয়াত আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। এখানে নুহ (আ.)-এর অবাধ্য কওমের প্লাবনে ডুবে মরা ও কিছুসংখ্যক সৎ অনুসারী নিয়ে নৌকায় চড়ে তাঁর রক্ষা পাওয়ার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। ৬৫ নম্বর আয়াতে অবতারণা করা হয়েছে, আ'দগোষ্ঠী ও তাদের নবী হুদ (আ.)-এর কাহিনী। আ'দ ছিল আরবের প্রাথমিক যুগের একটি জাতি। খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক দুই হাজার বছর আগে ইয়ামানের হাজরামাউত অঞ্চলে তাদের বসবাস ছিল বলে অনুমান করা হয়। দীর্ঘাকৃতি, দৈহিক শক্তি ও পাথর ছেদনশিল্পে তাদের বিশেষ খ্যাতি ছিল। কালক্রমে তারা কুসংস্কারাচ্ছন্নতা ও মূর্তি পূজার দিকে ঝুঁকে পড়ে। দৈহিক শক্তির কারণেও তারা অত্যাচার ও উচ্ছৃঙ্খলতায় লিপ্ত হয়। এই পরিস্থিতিতে নবী হজরত হুদ (আ.) তাদের সামনে তাওহিদের শিক্ষা পেশ করে আল্লাহর শোকরগোজার ও সৎ বান্দা হওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু সামান্য কিছু অনুসারী ছাড়া বাকি সবাই তাঁকে প্রত্যাখ্যান করল এবং আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত থাকল। এ অবস্থায় আল্লাহর শাস্তি তাদের ওপর নেমে আসতে লাগল। প্রথমে তারা দীর্ঘস্থায়ী খরার কবলে পড়ল। হুদ (আ.) তাদের বললেন, এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তোমাদের সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু অত্যাচারী এ জাতির ওপর তাঁর উপদেশের কোনো আছর হলো না। তারা কুফর, শিরক ও উচ্ছৃঙ্খলতার পথেই এগিয়ে চলল। পরিশেষে তাদের প্রতি প্রচণ্ড ঝড়-ঝঞ্ঝা পাঠানো হলো। এই শাস্তি একাধারে আট দিন তাদের ওপর প্রবাহিত হলো এবং এভাবে গোটা কওম ধ্বংস হয়ে গেল। এ জাতির ধ্বংসের ঘটনা কোরআন মজিদের আরো অনেক সুরায় আলোচিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ
৬৪. তথাপি তারা তাঁকে (নুহকে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। আমি তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গে যারা নৌকায় আরোহণ করেছিল তাদের সবাইকে শাস্তি থেকে উদ্ধার করলাম। আর যারা আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, তাদের আমি পানিতে ডুবিয়ে মারলাম। এরা ছিল একেবারেই এক অন্ধগোষ্ঠী।
৬৫. আমি আ'দ গোত্রের কাছে তাদের এক ভাই হুদকে নবী বানিয়ে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বললেন, 'হে আমার গোত্র, তোমরা এক আল্লাহর আনুগত্য করো। তিনি ছাড়া তোমাদের দ্বিতীয় কোনো মাবুদ নেই। তোমরা কি তাঁর কাছে জবাবদিহিতার ব্যাপারে দায়িত্বনিষ্ঠ নও?'
৬৬. তাঁর গোত্রের সরদাররা যারা তাঁর অবাধ্য হলো, তারা বলল, আমরা তো দেখছি তুমি নিশ্চিত নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত আছ এবং আমাদের ধারণা, তুমি নিশ্চিত মিথ্যাবাদীদেরই একজন।
৬৭. হুদ (আ.) বললেন, হে আমার গোত্রের লোকরা, আমার মধ্যে কোনো রকম নির্বুদ্ধিতা নেই। বরং আমি বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসুল।
ব্যাখ্যা
৬৪ নম্বর আয়াত আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। এখানে নুহ (আ.)-এর অবাধ্য কওমের প্লাবনে ডুবে মরা ও কিছুসংখ্যক সৎ অনুসারী নিয়ে নৌকায় চড়ে তাঁর রক্ষা পাওয়ার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। ৬৫ নম্বর আয়াতে অবতারণা করা হয়েছে, আ'দগোষ্ঠী ও তাদের নবী হুদ (আ.)-এর কাহিনী। আ'দ ছিল আরবের প্রাথমিক যুগের একটি জাতি। খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক দুই হাজার বছর আগে ইয়ামানের হাজরামাউত অঞ্চলে তাদের বসবাস ছিল বলে অনুমান করা হয়। দীর্ঘাকৃতি, দৈহিক শক্তি ও পাথর ছেদনশিল্পে তাদের বিশেষ খ্যাতি ছিল। কালক্রমে তারা কুসংস্কারাচ্ছন্নতা ও মূর্তি পূজার দিকে ঝুঁকে পড়ে। দৈহিক শক্তির কারণেও তারা অত্যাচার ও উচ্ছৃঙ্খলতায় লিপ্ত হয়। এই পরিস্থিতিতে নবী হজরত হুদ (আ.) তাদের সামনে তাওহিদের শিক্ষা পেশ করে আল্লাহর শোকরগোজার ও সৎ বান্দা হওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু সামান্য কিছু অনুসারী ছাড়া বাকি সবাই তাঁকে প্রত্যাখ্যান করল এবং আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত থাকল। এ অবস্থায় আল্লাহর শাস্তি তাদের ওপর নেমে আসতে লাগল। প্রথমে তারা দীর্ঘস্থায়ী খরার কবলে পড়ল। হুদ (আ.) তাদের বললেন, এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তোমাদের সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু অত্যাচারী এ জাতির ওপর তাঁর উপদেশের কোনো আছর হলো না। তারা কুফর, শিরক ও উচ্ছৃঙ্খলতার পথেই এগিয়ে চলল। পরিশেষে তাদের প্রতি প্রচণ্ড ঝড়-ঝঞ্ঝা পাঠানো হলো। এই শাস্তি একাধারে আট দিন তাদের ওপর প্রবাহিত হলো এবং এভাবে গোটা কওম ধ্বংস হয়ে গেল। এ জাতির ধ্বংসের ঘটনা কোরআন মজিদের আরো অনেক সুরায় আলোচিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments