বিদেশিদের পায়ে ঝলক নেই, শুধুই মুখে

হাট নানা রকমের হয়। ব্রাদার্স ইউনিয়ন গত বছর থেকে শুরু করেছে বিদেশি ফুটবলারের হাট। ব্রাদার্স মাঠে কাল বসেছিল এবারের হাট। তা অবশ্য মোটেও জমেনি, কারণ জমানোর মতো কোনো বিদেশিকে চোখে পড়েনি। পারফরম্যান্সে না জমলেও গল্পে অবশ্য জমে গেছে।জেনেলসন নামের এক অখ্যাত ব্রাজিলিয়ানের বিখ্যাত নেইমার-দর্শনের গল্প। এই উঠতি ফুটবল সেনসেশনকে দেখেছিলেন তিনি সান্তোস সকার একাডেমীতে।


জেনেলসনের চোখে নেইমার তখনো বাচ্চা, জীর্ন-শীর্ণ শরীরের ছেলেটিকে নিয়ে যে এখন এত টানাটানি হবে, সেটি ভাবতেই পারেননি। ১৯ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান এখনই ঠাঁই করে নিয়েছেন হাজার ফুটবলপ্রেমীর হৃদয়। তাঁকে দলে ভেড়াতে ইউরোপের নামি-দামি ক্লাবগুলো কাড়ি কাড়ি টাকা নিয়ে ছুটছে তাঁর পেছনে। অথচ একই একাডেমীতে বেড়ে ওঠা জেনেলসন রয়ে গেছেন অখ্যাতদের দলে। তাই তো আন্তর্জাতিক ফুটবল অঙ্গনে অখ্যাত বাংলাদেশে আসা তাঁর। প্রথমার্ধে মাঝমাঠে তাঁর খেলায় গায়ের ১০ নম্বর জার্সিটাই বেমানান দেখাচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আবার ফরোয়ার্ড লাইনে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি এক-আধটু খেলতে পেরেছেন। তাঁর মতো আরো ১৬ ফুটবলারকে দেখা গেছে ব্রাদার্স মাঠে। তাঁরা এসেছেন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে।
প্রথম দিনের ট্রায়াল দেখে ব্রাদার্স কোচ নাইমুদ্দিন অবশ্য এখনই কারো ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ। এই ভারতীয় কোচের যুক্তি_'এখনো আমাদের হাতে সময় আছে। আজই (কাল) তাঁদের প্রথম দেখালাম, আরো দু-এক দিন দেখে ঠিক করব।' আসলে মন কাড়ার মতো কাউকে দেখা যায়নি কাল। আফ্রিকানদের দম আছে, দৌড়-ঝাঁপ করে খেলেন, কিন্তু পায়ে এমন আহামারি কিছু নেই যে কারো নাম আলাদা করে বলা যাবে। ব্রাদার্স ম্যানেজার আমের খানের আশা, 'সামনে আরো কয়েকজন বিদেশি ফুটবলার আসবে। তাদের মধ্য থেকে দেখেশুনে আমরা পাঁচজনকে নেব।'
আবাহনী, মুক্তিযোদ্ধা, শেখ জামালের দৌড়ে তাল মেলাতে না পেরে ব্রাদার্স ইউনিয়ন হয়েছে বেশ সাদামাটা। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মালেক ও অনীক ছাড়াও গোপীবাগের দলটি যাঁদের নিয়েছে তাঁরা অচেনাই। তাই ভালো মানের বিদেশি তাদের পরম প্রার্থিত। তাদের বিদেশি কোচের পরিকল্পনাটা হলো, 'ভালো বিদেশি দিয়ে দলের দুর্বলতা ঢেকে দিতে হবে। আর স্থানীয় ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করতে হবে। তাদের আরো পরিশ্রম করতে হবে, এর বিকল্প নেই।'

No comments

Powered by Blogger.