বাঁশখালীতে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা-আট বছরেও বিচার হয়নি ঘাতকদের

বাঁশখালীর সাধনপুরের শীলপাড়ায় ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার আট বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল শুক্রবার। ঘটনার পর আট বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ঘাতকদের বিচার হয়নি। প্রতিবছরের মতো এবারও দিনটি স্মরণে গতকাল সাধনপুর পোড়াবাড়িতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।


মামলার বাদী ডা. বিমল শীল অভিযোগ করেন, মামলায় অভিযোগ গঠন করা হলেও এখনো কোনো কূলকিনারা হয়নি। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীকে বারবার তদন্তে বাদ দেওয়ায় পুনঃ তদন্তের দাবি জানিয়ে আসায় প্রকৃত খুনিদের মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে গত ১২ সেপ্টেম্বর শুনানি ও অভিযোগ গঠন করা হয়। সর্বশেষ শুনানি হয় ১৭ অক্টোবর। আগামী বছরের ২ জানুয়ারি এ মামলার সাক্ষীর শুনানি হবে।
বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের শীলপাড়ায় ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা তেজেন্দ্র শীলের বাড়িতে আগুন দেয়। এতে শিশুসহ ১১ জন পুড়ে মারা যান। তাঁরা হলেন_তেজেন্দ্র শীল (৭০), বকুল বালা শীল (৬০), অনীল শীল (৪২), রুমি শীল (১১), সোনিয়া শীল (৭), স্মৃতি শীল (৩০), চার দিনের নবজাতক কার্তিক, দেবেন্দ্র শীল (৭৫), বাবুটি শীল (২৫), প্রসাধী শীল (১৭) ও এ্যানি শীল (১৫)।
এ ঘটনার পর সারা দেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালীপুর এজহারুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সভা করে অভিযুক্ত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ ঘটনায় প্রথম থেকেই বাদী বিমল শীল ও স্থানীয় লোকজন ঘটনার মূল হোতা হিসেবে চেয়ারম্যান আমিনুর রহমানকে অভিযুক্ত করে আসছিলেন। মামলার তদন্তে মূল আসামিকে বাদ দেওয়ায় বারবার নারাজিও দেন বাদী।
আদালত সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত মামলাটির চারবার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এ মামলার ১৫ আসামি কারাগারে থাকলেও আমিন চেয়ারম্যানসহ বাকি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে। আটজন রয়েছে পলাতক।
মামলার বাদী বিমল শীল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মামলার আসামিরা জামিনে থাকায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।'
মামলার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বাঁশখালী আদালতের সরকারি এপিপি অধ্যাপক বিকাশ রঞ্জন ধর বলেন, মামলাটি বর্তমানে জজ আদালতে বিচারাধীন। যথাযথ সাক্ষী পাওয়া গেলে আসামিরা আইনের আওতায় আসবে।

No comments

Powered by Blogger.