গুজবে বিব্রত আওয়ামী লীগ by শামীম খান
মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। পাশাপাশি রয়েছে নানামুখী গুঞ্জন- মন্ত্রীদের কেউ কেউ বাদ পরাসহ নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত, দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দল ও মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা এ গুঞ্জনের কোনো বাস্তবতা না থাকায় তা বার বারই গুজবে পরিণত হচ্ছে।
তবে এ ধরণের গুজব দলের নেতাকর্মীর গন্ডি ছাড়িয়ে সাধারণ আলোচনায় পরিণত হয়েছে। তবে এই গুজব ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য বেশ বিব্রতকর হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দলের নেতারা মনে করছেন।
এই রদবদলের গুঞ্জনের কারণে সরকার নিয়ে নেতিবাচক আলোচনাও উঠে আসছে। গুঞ্জনের বাস্তব কোনো ভিত্তি না থাকলেও পরিবর্তনের কারণ খুঁজতে গিয়ে সরকারের ব্যর্থতার দিকগুলোই বার বার তুলে ধরা হচ্ছে।
এটা সরকার ও দলের জন্য বিব্রতকর বলে নেতারা মন্তব্য করেন। কেননা এতে আস্থাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নেতুত্বাধীন ৩৪ মাসের মহাজোট সরকারের ক্ষমতায় আসার পর এক বছরের মাথায় মন্ত্রিসভায় রদবদের গুঞ্জন শুরু হয়। অচিরেই মন্ত্রীদের দফতর পরিবর্তন, মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত এমন কি কোনো কোনো মন্ত্রী বাদ পড়ছেন বলে দীর্ঘদিন ধরেই থেমে থেমে গুঞ্জন উঠছে।
এখন পর্যন্ত মন্ত্রীদর দফতর পরিবর্তন ও মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে অনেকের নামেই গুঞ্জন ছড়িয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পদত্যাগ গুঞ্জন নিয়ে সর্বমহলে আলোচনার ঝড় ওঠে।
হঠাৎ করেই গত ১৩ নভেম্বর রাত থেকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দল ও মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন। পর দিন ১৪ নভেম্বর এই গুঞ্জন জোরালো হয়ে ওঠে। গুঞ্জনটি দ্রুত মানুষের মুখে মুখে ঘুরতে ঘুরতে সর্বমহলে ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও গুঞ্জনের সময় সৈয়দ আশরাফ ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের কর্মসূচিতে দৃশ্যমান ছিলেন তারপর গুঞ্জনের মাত্রা থামাতে তার পদত্যাগ গুজব বলে আওয়ামী লীগ থেকে শেষ মুহুর্তে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
তবে এ ধরণের গুজব উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাড়ানো হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা মন্তব্য করেছেন। শেখ হাসিনার কাছ থেকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সরিয়ে দেয়ার জন্য দলের ভেতর ও বাইরে থেকে এ ধরণের গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তারা দাবি করেছেন।
গুজবের পাশাপাশি গুজবের কারণ নিয়েও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা ব্যাখা বিশ্লেষণ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ট ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ। তাকে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
জাতীয় চার নেতার একজন সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তাকে শেখ হাসিনার কাছ থেকে সরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে এ ধরণের গুজব মাঠে ছেড়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলেও এই নেতা মন্তব্য করেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পদত্যাগ গুঞ্জনের রেশ থামতে না থামতেই ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় আবারো মন্ত্রিসভায় রদবদলের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। মন্ত্রিসভায় যখন রদবদলের জোর গুঞ্জন চলছে তখন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে চলছিল শেয়ারবজার নিয়ে বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন।
একের পর এক এ গুঞ্জন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের কারো কারো মতে- কোনো কোনো মন্ত্রীর কর্মকান্ড সরকার এবং দলকে বির্তকের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
প্রত্যাশা অনুযায়ী তারা কাজ দেখাতে পারছেন না উল্টো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ এবং নেতা-কর্মীদের বিব্রত হতে হচ্ছে।
ফলে প্রত্যাশা ও ক্ষোভের জায়গায় থেকে কর্মীদের মধ্যে এ ধরণের গুঞ্জন ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করছেন।
আবার কারো কারো মতে, মন্ত্রিসভা গঠনের আগে অনেকেরই প্রত্যাশা ছিলো মন্ত্রী হওয়ার। আলোচিত নামগুলো মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ে যায়। তাদের অনুগত নেতাকর্মীদের ভেতর থেকেই মন্ত্রিসভায় রদবদল, নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত ও কোনো কোনো মন্ত্রীকে বাদ দেয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে।
এদিকে সব গুঞ্জনকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া হলেও মন্ত্রিসভার পরিবর্তন অত্যাসন্ন বলে আবার কেউ কেউ বাংলানিউজের কাছে মন্তব্য করেছেন। কোনো তথ্য বা ভিত্তি ছাড়াই দলের মাঝারি সারির একাধিক নেতা দৃঢ়তার সঙ্গেই পরিবর্তনের কথা জানান।
চলতি মাসেই মন্ত্রিসভায় রদবদল, নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত এবং কেউ কেউ বাদও পড়তে পারেন বলে তারা ধারণা করছেন। তবে কারা আসছেন, কারা যাচ্ছেন কাদের দফতর রদবদল হবে সে বিষয়ে একেক জন একেক রকম মন্তব্য করেছেন।
তবে দফতর পরিবর্তন, বাদ পড়ার তালিকায় এখন পর্যন্ত যাদের নাম গুঞ্জনে উঠে এসেছে তারা হলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপটেন (অব.) তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা ড. হোসেন তৌফিক ইমাম, অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু প্রমুখ।
এদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়ে আসা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও বন প্রতিমন্ত্রীকে পূর্ণমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করার গুঞ্জন রয়েছে।
আবার নতুন মন্ত্রী হিসেবে যাদের অন্তর্ভুক্তির কথা এখন পর্যন্ত গুঞ্জন হয়ে এসেছে তারা হলেন- দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলির সদস্য ওবায়দুল কাদের, ড. মহউদ্দিন খান আলমগীর ও কাজী জাফরুল্লাহ, আইন বিষয়ক সম্পাদক সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম।
মন্ত্রিসভার পরিবর্তন সাম্প্রতিক গুঞ্জনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, `মিডিয়াতে এ ধরণের কথা লেখা হচ্ছে আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই গুজবের বাস্তব কোনো ভিত্তি দেখছি না।`
মতিয়া বলেন, `এই কেবিনেট শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রী যাকে মনে করেন রাখতে পারেন, যাকে মনে করেন বাদ দিতে পারেন। যাকে মনে করেন অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। সব কিছুর এখতিয়ার তাঁর।`
সভাপতিমন্ডলির সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, `গত এক বছর ধরেই এই রিউমার শুনে আসছি। এ ধরণের গুজব দল ও সরকারের জন্য বিব্রতকর। মিডিয়া রিউমার দিয়ে গরম করে রাখছে। সব কিছু জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই রয়েছে। এ ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত হলে জানাই যাবে।`
সভাপতিমন্ডলির অপর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, `গুজবে কান দেওয়া ঠিক হবে না। আমি কোনো গুজবে কান দিই না। পরিবর্তন হলে নিশ্চয়ই জানা যাবে। মন্ত্রিসভার পরিবর্তন হবে কি হবে না, সেটা নেত্রীই (শেখ হাসিনা) জানেন।`
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিবর্তন হতে হলে কাউন্সিল ডাকতে হবে। ইচ্ছা করলেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিবর্তন করা যায় না।
এই রদবদলের গুঞ্জনের কারণে সরকার নিয়ে নেতিবাচক আলোচনাও উঠে আসছে। গুঞ্জনের বাস্তব কোনো ভিত্তি না থাকলেও পরিবর্তনের কারণ খুঁজতে গিয়ে সরকারের ব্যর্থতার দিকগুলোই বার বার তুলে ধরা হচ্ছে।
এটা সরকার ও দলের জন্য বিব্রতকর বলে নেতারা মন্তব্য করেন। কেননা এতে আস্থাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নেতুত্বাধীন ৩৪ মাসের মহাজোট সরকারের ক্ষমতায় আসার পর এক বছরের মাথায় মন্ত্রিসভায় রদবদের গুঞ্জন শুরু হয়। অচিরেই মন্ত্রীদের দফতর পরিবর্তন, মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত এমন কি কোনো কোনো মন্ত্রী বাদ পড়ছেন বলে দীর্ঘদিন ধরেই থেমে থেমে গুঞ্জন উঠছে।
এখন পর্যন্ত মন্ত্রীদর দফতর পরিবর্তন ও মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে অনেকের নামেই গুঞ্জন ছড়িয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পদত্যাগ গুঞ্জন নিয়ে সর্বমহলে আলোচনার ঝড় ওঠে।
হঠাৎ করেই গত ১৩ নভেম্বর রাত থেকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দল ও মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন। পর দিন ১৪ নভেম্বর এই গুঞ্জন জোরালো হয়ে ওঠে। গুঞ্জনটি দ্রুত মানুষের মুখে মুখে ঘুরতে ঘুরতে সর্বমহলে ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও গুঞ্জনের সময় সৈয়দ আশরাফ ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের কর্মসূচিতে দৃশ্যমান ছিলেন তারপর গুঞ্জনের মাত্রা থামাতে তার পদত্যাগ গুজব বলে আওয়ামী লীগ থেকে শেষ মুহুর্তে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
তবে এ ধরণের গুজব উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাড়ানো হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা মন্তব্য করেছেন। শেখ হাসিনার কাছ থেকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সরিয়ে দেয়ার জন্য দলের ভেতর ও বাইরে থেকে এ ধরণের গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তারা দাবি করেছেন।
গুজবের পাশাপাশি গুজবের কারণ নিয়েও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা ব্যাখা বিশ্লেষণ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ট ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ। তাকে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
জাতীয় চার নেতার একজন সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তাকে শেখ হাসিনার কাছ থেকে সরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে এ ধরণের গুজব মাঠে ছেড়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলেও এই নেতা মন্তব্য করেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পদত্যাগ গুঞ্জনের রেশ থামতে না থামতেই ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় আবারো মন্ত্রিসভায় রদবদলের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। মন্ত্রিসভায় যখন রদবদলের জোর গুঞ্জন চলছে তখন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে চলছিল শেয়ারবজার নিয়ে বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন।
একের পর এক এ গুঞ্জন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের কারো কারো মতে- কোনো কোনো মন্ত্রীর কর্মকান্ড সরকার এবং দলকে বির্তকের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
প্রত্যাশা অনুযায়ী তারা কাজ দেখাতে পারছেন না উল্টো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ এবং নেতা-কর্মীদের বিব্রত হতে হচ্ছে।
ফলে প্রত্যাশা ও ক্ষোভের জায়গায় থেকে কর্মীদের মধ্যে এ ধরণের গুঞ্জন ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করছেন।
আবার কারো কারো মতে, মন্ত্রিসভা গঠনের আগে অনেকেরই প্রত্যাশা ছিলো মন্ত্রী হওয়ার। আলোচিত নামগুলো মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ে যায়। তাদের অনুগত নেতাকর্মীদের ভেতর থেকেই মন্ত্রিসভায় রদবদল, নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত ও কোনো কোনো মন্ত্রীকে বাদ দেয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে।
এদিকে সব গুঞ্জনকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া হলেও মন্ত্রিসভার পরিবর্তন অত্যাসন্ন বলে আবার কেউ কেউ বাংলানিউজের কাছে মন্তব্য করেছেন। কোনো তথ্য বা ভিত্তি ছাড়াই দলের মাঝারি সারির একাধিক নেতা দৃঢ়তার সঙ্গেই পরিবর্তনের কথা জানান।
চলতি মাসেই মন্ত্রিসভায় রদবদল, নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত এবং কেউ কেউ বাদও পড়তে পারেন বলে তারা ধারণা করছেন। তবে কারা আসছেন, কারা যাচ্ছেন কাদের দফতর রদবদল হবে সে বিষয়ে একেক জন একেক রকম মন্তব্য করেছেন।
তবে দফতর পরিবর্তন, বাদ পড়ার তালিকায় এখন পর্যন্ত যাদের নাম গুঞ্জনে উঠে এসেছে তারা হলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপটেন (অব.) তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা ড. হোসেন তৌফিক ইমাম, অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু প্রমুখ।
এদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়ে আসা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও বন প্রতিমন্ত্রীকে পূর্ণমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করার গুঞ্জন রয়েছে।
আবার নতুন মন্ত্রী হিসেবে যাদের অন্তর্ভুক্তির কথা এখন পর্যন্ত গুঞ্জন হয়ে এসেছে তারা হলেন- দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলির সদস্য ওবায়দুল কাদের, ড. মহউদ্দিন খান আলমগীর ও কাজী জাফরুল্লাহ, আইন বিষয়ক সম্পাদক সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম।
মন্ত্রিসভার পরিবর্তন সাম্প্রতিক গুঞ্জনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, `মিডিয়াতে এ ধরণের কথা লেখা হচ্ছে আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই গুজবের বাস্তব কোনো ভিত্তি দেখছি না।`
মতিয়া বলেন, `এই কেবিনেট শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রী যাকে মনে করেন রাখতে পারেন, যাকে মনে করেন বাদ দিতে পারেন। যাকে মনে করেন অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। সব কিছুর এখতিয়ার তাঁর।`
সভাপতিমন্ডলির সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, `গত এক বছর ধরেই এই রিউমার শুনে আসছি। এ ধরণের গুজব দল ও সরকারের জন্য বিব্রতকর। মিডিয়া রিউমার দিয়ে গরম করে রাখছে। সব কিছু জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই রয়েছে। এ ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত হলে জানাই যাবে।`
সভাপতিমন্ডলির অপর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, `গুজবে কান দেওয়া ঠিক হবে না। আমি কোনো গুজবে কান দিই না। পরিবর্তন হলে নিশ্চয়ই জানা যাবে। মন্ত্রিসভার পরিবর্তন হবে কি হবে না, সেটা নেত্রীই (শেখ হাসিনা) জানেন।`
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিবর্তন হতে হলে কাউন্সিল ডাকতে হবে। ইচ্ছা করলেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিবর্তন করা যায় না।
No comments