দ. আফ্রিকায় তথ্য সংরক্ষণ বিল পাস-গোপনীয়তা রক্ষার নামে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ!

ক্ষিণ আফ্রিকার পার্লামেন্টে গত মঙ্গলবার 'রাষ্ট্রীয় তথ্য সংরক্ষণ বিল' পাস হয়েছে। বর্ণবাদ আমলের 'তথ্য সংরক্ষণ আইন' হালনাগাদের নামে এ আইন করলেও ধারণা করা হচ্ছে, গণমাধ্যমের ওপর বড় ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতেই সরকার এমন উদ্যোগ নিয়েছে।নতুন আইনে রাষ্ট্রীয় গোপনীয় হিসেবে বিবেচিত কোনো তথ্য প্রকাশের কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। প্রতিবাদ হিসেবে দিনটিকে 'কালো মঙ্গলবার' হিসেবে পালন করেছেন সাংবাদিকরা।


দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো প্রায়ই সরকারি কর্মকর্তাদের বড় ধরনের দুর্নীতির খবর ফাঁস করে দেয়, যা অনেক সময় সরকারের সর্বোচ্চ মহলকেও জড়িয়ে ফেলে। ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) ২০০৮ সালে 'রাষ্ট্রীয় তথ্য সংরক্ষণ' আইনের নামে একটি খসড়া তৈরি করে। প্রস্তাবিত আইনে 'গোপন' হিসেবে বিবেচিত সরকারি যেকোনো তথ্য প্রকাশের বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এর দায়ে যেকোনো ব্যক্তির পাঁচ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
আইনের খসড়াটি শুরু থেকেই ব্যাপক সমালোচনায় পড়ে। 'জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট যেকোনো তথ্য প্রকাশের' একটি বিধান ওই আইনে যুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সাংবাদিকরা। কিন্তু এএনসি তা প্রত্যাখ্যান করে। এ বছর পার্লামেন্টের বিশেষ এক কমিটি প্রস্তাবিত খসড়াটি কিছুটা ঘষামাজা করে।
সেই খসড়াটিই 'রাষ্ট্রীয় তথ্য সংরক্ষণ বিল' নামে গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে তোলা হয়। বিলের পক্ষে ২২৯টি এবং বিপক্ষে ১০৭টি ভোট পড়ে। তবে আইনে পরিণত হওয়ার জন্য উচ্চকক্ষ ন্যাশনাল কাউন্সিল অব প্রভিন্সেসের অনুমোদন লাগবে বিলটির। তারপর প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা সই করলে বিলটি আইনে পরিণত হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাংবাদিক, বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজ এ বিল পাসের প্রতিবাদ করেছে। গণতন্ত্র ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য আইনটিকে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা বিবেচনা করছে তারা। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী গত মঙ্গলবার কেপ টাউনে পার্লামেন্ট ভবন ও জোহানেসবার্গে নেলসন ম্যান্ডেলার বাসভবনের সামনে কালো পোশাক পরে বিক্ষোভ করে। সূত্র : এএফপি, নিউ ইয়র্ক টাইমস।

No comments

Powered by Blogger.