উপজেলা পরিষদ-স্থায়ী কমিটিগুলো সক্রিয় হোক by ফয়জুর রহমান ফকির
স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা হিসেবে উপজেলা পরিষদকে গড়ে তুলতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন উপজেলা পরিষদ আইনটিকে যথাযথভাবে অনুসরণ করা। আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অথবা সাংঘর্ষিক কোনো বিধিমালা বা পরিপত্র প্রেরণ মন্ত্রণালয় থেকে বন্ধ করতে হবে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ৩-৪টি কমিটিতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে সভাপতি করা হয়েছে, সেগুলোর সভাও নিয়মিত হয় না।
দুটি কমিটির সভা দু'এক মাস পরপর হয়ে থাকে ভাসা ভাসা কিছু বিষয় নিয়ে দায়সারাভাবে। তাই বিভাগগুলোর কার্যক্রমও পরিষদের গোচরীভূত হয় না
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে উপজেলা পরিষদ অধ্যাদেশ যারা রচনা করেছিলেন, তারা একটি চমৎকার কাজ করেছিলেন। বর্তমান নবম সংসদে অধ্যাদেশটিকে আইনে রূপান্তরের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজনের পরও এর চমৎকারিত্বের দিকগুলো নূ্যনতম খর্বিত হয়নি। দিকগুলোর অন্যতম একটি হচ্ছে সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আদলে উপজেলা পরিষদের ১৪টি স্থায়ী কমিটি এবং উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে বিশেষ বিশেষ কমিটি গঠন। এসব কমিটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের চলমান কার্যক্রমের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের জন্য সুপারিশমালা তৈরি করবে এবং তা উপজেলা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য।
উপজেলা পরিষদে হস্তান্তরিত ১০টি মন্ত্রণালয়ের ১৩টি বিভাগ ছাড়া আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কিছু বিভাগকে নিয়ে ওই ১৪টি স্থায়ী কমিটি গঠন করার আইনি নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি কমিটির সভাপতি হবেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, সদস্য সচিব হবেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা এবং সদস্য হবেন ২-৩ ইউপি চেয়ারম্যান এবং একজন সদস্য হবেন পরিষদের বাইরে থেকে নেওয়া বিশেষজ্ঞ সদস্য। জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততায় স্থায়ী কমিটিগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগের চলমান অথবা ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের ওপর সুপারিশমালা তৈরি করবে। স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা বিকাশের জন্য পদ্ধতিটি অত্যন্ত উপযোগী। জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রের ভিত্তি কাঠামোর জন্য এটি একটি শক্তিশালী পদ্ধতি হিসেবে কাজ করতে বাধ্য।
আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে এই যে, আইনের ওই বিষয়গুলো আমাদের আমলাতন্ত্রের চিরায়ত কাঠামো এবং ভাবনায় প্রবলভাবে আঘাত করে বিধায় আইনটিকে এখন পর্যন্ত অকার্যকর রাখা হয়েছে। সে লক্ষ্যে যে কৌশলটি গ্রহণ করা হয়েছে তাহলো আইনটি যে হয়েছে তাই ভুলে যাওয়া। আইনটি হওয়ার আগে উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চলছিল এখনও সেভাবেই চলা।
এখানে যে বিষয়টি আমাদের মনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন তাহলো বিগত দুই-আড়াই বছর ধরে উপজেলা এবং এর ক্ষমতায়ন নিয়ে যে এত কথাবার্তা হচ্ছে, আইন আছে কিন্তু এর কার্যকারিতা নেই ইত্যাদি, এগুলো কেন? কারণটি হচ্ছে ব্রিটিশ আমল থেকে আজ পর্যন্ত আমলাতন্ত্রের প্রভুত্বের মৌরুসি পাট্টায় অন্য কোনো আইন এতটুকু আঘাত করেনি, যা উপজেলা পরিষদ আইন করেছে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার অন্য স্তরগুলোতে (ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ) কোনো মন্ত্রণালয় হস্তান্তরিত হয়নি, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের কার্যাবলি হস্তান্তরিত হয়নি, যা উপজেলা পরিষদ আইনে হয়েছে। অন্য স্তরগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় আমলাতন্ত্র দ্বারা কিন্তু উপজেলা পরিষদ আইনে জনপ্রতিনিধিরা নিয়ন্ত্রণ করেন আমলাতন্ত্রকে। এ কারণেই আইনটিকে আমলারা ভুলে যাওয়াই শ্রেয় মনে করেন। তাই একদিকে আইন কার্যকর করার জন্য বিধি, পরিপত্র জারি করেন আর অন্যদিকে এগুলো ভুলে যাওয়ার জন্য নিম্নপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না।
তাহলে বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন চলছে কীভাবে? আইনের উপরোলি্লখিত স্থায়ী কমিটির কাঠামো এবং এর কার্যক্রম বেমালুম উপেক্ষা করে মন্ত্রণালয় থেকে মূলত উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে এবং চেয়ারম্যানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য ৩-৪টি কমিটিতে চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ১৪টি স্থায়ী কমিটির বিপরীতে মূলত সংসদ সদস্য, ডিসি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত অনির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে প্রায় সমসংখ্যক কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা আগেও ছিল।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে আইনবহির্ভূত ওই কমিটিগুলো মন্ত্রণালয় হতে সচিব কর্তৃক প্রেরিত বিধায় আমলাতন্ত্রের চেইন অব কমান্ড অনুযায়ী তাদের সিদ্ধান্তগুলোই বাস্তবায়িত হয়। ওই সিদ্ধান্ত উপজেলা পরিষদের সভায় উপস্থাপিত হয় না এবং এর অনুমোদন নেওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। সরাসরি সিদ্ধান্তগুলো আমলাতন্ত্রের উপরিস্তরে প্রেরিত হয়ে থাকে এবং এভাবেই পরিষদে সংরক্ষিত এবং হস্তান্তরিত সব বিভাগে কার্যক্রম উপজেলা পরিষদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সম্পূর্ণ আমলানির্ভর হয়ে পড়ে এবং জনপ্রতিনিধিরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন পরিষদের সব কর্মযজ্ঞ থেকে।
স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা হিসেবে উপজেলা পরিষদকে গড়ে তুলতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন উপজেলা পরিষদ আইনটিকে যথাযথভাবে অনুসরণ করা। আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অথবা সাংঘর্ষিক কোনো বিধিমালা বা পরিপত্র প্রেরণ মন্ত্রণালয় থেকে বন্ধ করতে হবে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ৩-৪টি কমিটিতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে সভাপতি করা হয়েছে, সেগুলোর সভাও নিয়মিত হয় না। দুটি কমিটির সভা দু'এক মাস পরপর হয়ে থাকে ভাসা ভাসা কিছু বিষয় নিয়ে দায়সারাভাবে। তাই বিভাগগুলোর কার্যক্রমও পরিষদের গোচরীভূত হয় না।
স্থায়ী কমিটিগুলোকে সক্রিয় করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত অবৈধ কমিটিগুলো শুধু বাতিলই যথেষ্ট নয়, স্থায়ী কমিটিগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সব নথিপত্র উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হস্তান্তরিত বিভাগগুলোর সম্পর্কে আইনে তা বলা আছে নিম্নোক্ত ভাষায়, 'তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে কাজ করিবেন। হস্তান্তরিত বিষয়ে নথিপত্র উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে অনুমোদনের জন্য পেশ করিবেন।' পরিপত্রে আরও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে যেগুলো আমলারা ভুলে গেছেন।
যদি বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া না হতো এবং স্থায়ী কমিটিগুলো কার্যকর হতো তাহলে প্রতিটি বিভাগে সব সমস্যা জনপ্রতিনিধিদের ধারণার আওতায় আসতে বাধ্য ছিল। সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের নতুন নতুন ধারণা জন্মের একটি অন্তহীন প্রক্রিয়ার সূচনা হতে পারত। পরিষদ তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে জীবন্ত হতে পারত। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা হিসেবে তা বিকশিত হতো।
ফয়জুর রহমান ফকির : চেয়ারম্যান ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদ ময়মনসিংহ
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে উপজেলা পরিষদ অধ্যাদেশ যারা রচনা করেছিলেন, তারা একটি চমৎকার কাজ করেছিলেন। বর্তমান নবম সংসদে অধ্যাদেশটিকে আইনে রূপান্তরের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজনের পরও এর চমৎকারিত্বের দিকগুলো নূ্যনতম খর্বিত হয়নি। দিকগুলোর অন্যতম একটি হচ্ছে সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আদলে উপজেলা পরিষদের ১৪টি স্থায়ী কমিটি এবং উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে বিশেষ বিশেষ কমিটি গঠন। এসব কমিটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের চলমান কার্যক্রমের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের জন্য সুপারিশমালা তৈরি করবে এবং তা উপজেলা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য।
উপজেলা পরিষদে হস্তান্তরিত ১০টি মন্ত্রণালয়ের ১৩টি বিভাগ ছাড়া আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কিছু বিভাগকে নিয়ে ওই ১৪টি স্থায়ী কমিটি গঠন করার আইনি নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি কমিটির সভাপতি হবেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, সদস্য সচিব হবেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা এবং সদস্য হবেন ২-৩ ইউপি চেয়ারম্যান এবং একজন সদস্য হবেন পরিষদের বাইরে থেকে নেওয়া বিশেষজ্ঞ সদস্য। জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততায় স্থায়ী কমিটিগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগের চলমান অথবা ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের ওপর সুপারিশমালা তৈরি করবে। স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা বিকাশের জন্য পদ্ধতিটি অত্যন্ত উপযোগী। জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রের ভিত্তি কাঠামোর জন্য এটি একটি শক্তিশালী পদ্ধতি হিসেবে কাজ করতে বাধ্য।
আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে এই যে, আইনের ওই বিষয়গুলো আমাদের আমলাতন্ত্রের চিরায়ত কাঠামো এবং ভাবনায় প্রবলভাবে আঘাত করে বিধায় আইনটিকে এখন পর্যন্ত অকার্যকর রাখা হয়েছে। সে লক্ষ্যে যে কৌশলটি গ্রহণ করা হয়েছে তাহলো আইনটি যে হয়েছে তাই ভুলে যাওয়া। আইনটি হওয়ার আগে উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চলছিল এখনও সেভাবেই চলা।
এখানে যে বিষয়টি আমাদের মনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন তাহলো বিগত দুই-আড়াই বছর ধরে উপজেলা এবং এর ক্ষমতায়ন নিয়ে যে এত কথাবার্তা হচ্ছে, আইন আছে কিন্তু এর কার্যকারিতা নেই ইত্যাদি, এগুলো কেন? কারণটি হচ্ছে ব্রিটিশ আমল থেকে আজ পর্যন্ত আমলাতন্ত্রের প্রভুত্বের মৌরুসি পাট্টায় অন্য কোনো আইন এতটুকু আঘাত করেনি, যা উপজেলা পরিষদ আইন করেছে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার অন্য স্তরগুলোতে (ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ) কোনো মন্ত্রণালয় হস্তান্তরিত হয়নি, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের কার্যাবলি হস্তান্তরিত হয়নি, যা উপজেলা পরিষদ আইনে হয়েছে। অন্য স্তরগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় আমলাতন্ত্র দ্বারা কিন্তু উপজেলা পরিষদ আইনে জনপ্রতিনিধিরা নিয়ন্ত্রণ করেন আমলাতন্ত্রকে। এ কারণেই আইনটিকে আমলারা ভুলে যাওয়াই শ্রেয় মনে করেন। তাই একদিকে আইন কার্যকর করার জন্য বিধি, পরিপত্র জারি করেন আর অন্যদিকে এগুলো ভুলে যাওয়ার জন্য নিম্নপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না।
তাহলে বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন চলছে কীভাবে? আইনের উপরোলি্লখিত স্থায়ী কমিটির কাঠামো এবং এর কার্যক্রম বেমালুম উপেক্ষা করে মন্ত্রণালয় থেকে মূলত উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে এবং চেয়ারম্যানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য ৩-৪টি কমিটিতে চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ১৪টি স্থায়ী কমিটির বিপরীতে মূলত সংসদ সদস্য, ডিসি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত অনির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে প্রায় সমসংখ্যক কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা আগেও ছিল।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে আইনবহির্ভূত ওই কমিটিগুলো মন্ত্রণালয় হতে সচিব কর্তৃক প্রেরিত বিধায় আমলাতন্ত্রের চেইন অব কমান্ড অনুযায়ী তাদের সিদ্ধান্তগুলোই বাস্তবায়িত হয়। ওই সিদ্ধান্ত উপজেলা পরিষদের সভায় উপস্থাপিত হয় না এবং এর অনুমোদন নেওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। সরাসরি সিদ্ধান্তগুলো আমলাতন্ত্রের উপরিস্তরে প্রেরিত হয়ে থাকে এবং এভাবেই পরিষদে সংরক্ষিত এবং হস্তান্তরিত সব বিভাগে কার্যক্রম উপজেলা পরিষদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সম্পূর্ণ আমলানির্ভর হয়ে পড়ে এবং জনপ্রতিনিধিরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন পরিষদের সব কর্মযজ্ঞ থেকে।
স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা হিসেবে উপজেলা পরিষদকে গড়ে তুলতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন উপজেলা পরিষদ আইনটিকে যথাযথভাবে অনুসরণ করা। আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অথবা সাংঘর্ষিক কোনো বিধিমালা বা পরিপত্র প্রেরণ মন্ত্রণালয় থেকে বন্ধ করতে হবে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ৩-৪টি কমিটিতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে সভাপতি করা হয়েছে, সেগুলোর সভাও নিয়মিত হয় না। দুটি কমিটির সভা দু'এক মাস পরপর হয়ে থাকে ভাসা ভাসা কিছু বিষয় নিয়ে দায়সারাভাবে। তাই বিভাগগুলোর কার্যক্রমও পরিষদের গোচরীভূত হয় না।
স্থায়ী কমিটিগুলোকে সক্রিয় করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত অবৈধ কমিটিগুলো শুধু বাতিলই যথেষ্ট নয়, স্থায়ী কমিটিগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সব নথিপত্র উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হস্তান্তরিত বিভাগগুলোর সম্পর্কে আইনে তা বলা আছে নিম্নোক্ত ভাষায়, 'তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে কাজ করিবেন। হস্তান্তরিত বিষয়ে নথিপত্র উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে অনুমোদনের জন্য পেশ করিবেন।' পরিপত্রে আরও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে যেগুলো আমলারা ভুলে গেছেন।
যদি বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া না হতো এবং স্থায়ী কমিটিগুলো কার্যকর হতো তাহলে প্রতিটি বিভাগে সব সমস্যা জনপ্রতিনিধিদের ধারণার আওতায় আসতে বাধ্য ছিল। সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের নতুন নতুন ধারণা জন্মের একটি অন্তহীন প্রক্রিয়ার সূচনা হতে পারত। পরিষদ তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে জীবন্ত হতে পারত। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা হিসেবে তা বিকশিত হতো।
ফয়জুর রহমান ফকির : চেয়ারম্যান ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদ ময়মনসিংহ
No comments