যাত্রাপালা 'আমি অমলেন্দু বিশ্বাস' by মামুন মিজানুর রহমান

৮ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর পরীক্ষণ থিয়েটার হলে দেওয়া হয় 'অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতি পদক'। একই সঙ্গে মঞ্চস্থ হয় অমলেন্দু বিশ্বাসের জীবনভিত্তিক একক যাত্রা অভিনয় 'আমি অমলেন্দু বিশ্বাস'। বিস্তারিত লিখেছেন মামুন মিজানুর রহমানশিল্পকলা একাডেমীর পরীক্ষণ থিয়েটার হল সন্ধ্যা হতে না হতেই যাত্রাশিল্পীদের আগমনে মুখর। সেদিন যাত্রাশিল্পীরা জমায়েত হয়েছিলেন 'অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতি পদক' প্রদান অনুষ্ঠানে।


বাংলাদেশের যাত্রাশিল্পের বিকাশে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন ক্ষণজন্মা প্রতিভা অমলেন্দু বিশ্বাস। যাত্রার উন্নয়নের জন্য নিজেকে তিনি নিমগ্ন করেছিলেন পুরোমাত্রায়। তাঁর স্মৃতি রক্ষা ও যাত্রাশিল্পে তাঁর অবদানকে মূল্যায়ন করার জন্য বাংলাদেশ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদ ২০০৩ সাল থেকে প্রদান করে আসছে 'অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতি পদক'। প্রতিবছর তিনজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও একজন যাত্রা ব্যক্তিত্বকে দেওয়া হয় এই পদক। গত বছর অবশ্য অনিবার্য কারণে এ পদক প্রদান সম্ভব হয়নি। এ বছর এ পদকে ভূষিত হয়েছেন সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার, আহমদ জামান চৌধুরী, নাট্যজন আতাউর রহমান এবং বাসন্তী অপেরার মালিক প্রয়াত নারায়ণ দত্ত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ব আইটিআইয়ের সভাপতি রামেন্দু মজুমদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি রমজান আলী মিয়া। যাত্রাশিল্পে অমলেন্দু বিশ্বাসের অবদান এবং যাত্রার নানা সংকট ও উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
পদক প্রদানের পর মঞ্চস্থ হয় অমলেন্দু বিশ্বাসের জীবনভিত্তিক যাত্রাপালা 'আমি অমলেন্দু বিশ্বাস'। দেড় ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের একক অভিনয়ের এ পালা রচনা, নির্দেশনা এবং এতে অভিনয় করেন মিলন কান্তি দে। এটি মঞ্চে আসে দেশ অপেরার ব্যানারে। 'দেশের লোকনাট্য যদি যাত্রাপালা, দেশের সংস্কৃতি যদি যাত্রাপালা/সেই যাত্রা কেন বন্ধ বারবার/ওগো নগরবাসী কী জবাব দিবে তোমরা তার?' এই গানের মাধ্যমে শুরু হয় যাত্রাপালাটি। এতে তুলে ধরা হয়েছে অমলেন্দু বিশ্বাসের নেতৃত্বে যাত্রা আন্দোলন। অমলেন্দু যাত্রা বন্ধের সরকারি নির্দেশে যাত্রাশিল্পীদের নিয়ে প্রতিবাদী সমাবেশ করেন। এ নাটকে এভাবেই অমলেন্দু বিশ্বাসের পাশাপাশি ফুটে উঠেছে যাত্রার নানা সংগ্রামের ইতিহাস।
চমৎকার অভিনয়ের ফলে দর্শকদের মধ্যে হাততালির ঝড় ওঠে। নাট্যজন আতাউর রহমান অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে মিলন কান্তি দে-কে জড়িয়ে ধরেন। মিলন কান্তি রচিত অন্যান্য যাত্রার মধ্যে আছে, 'এই দেশ এই মাটি', 'দাতা হাতেমতাই', 'বিদ্রোহী নজরুল' ইত্যাদি।
এই পদক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদ নিজেদের কার্যক্রম আরো বেগবান করতে সচেষ্ট থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে।

No comments

Powered by Blogger.