সৃষ্টিশীল কিছু করে যেতে চাই by কামরুজ্জামান মিলু
আরণ্যক নাট্যদলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী শামীম জামান। মঞ্চের সঙ্গে কাজ করেছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। একজন শিল্পী, সফল অভিনেতা এবং নাট্য রচয়িতা হিসেবে মিডিয়ায় বেশ পরিচিত তিনি। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আলোচিত বহু নাটকে অভিনয় করেছেন। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন কামরুজ্জামান মিলুএকজন অভিনেতার শিল্পের মধ্যেই জন্ম। শিল্পের সঙ্গেই তাঁর বসবাস। তবে 'শিল্পী' শব্দটাকে অনেক বড় করে ভাবেন শামীম জামান।
'অভিনয় অনেকটা ম্যাজিকের মতো। একজন জাদুশিল্পী যখন সবার সামনে জাদু দেখান, তখন উপস্থিত দর্শকরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন। একজন অভিনেতাও যখন অভিনয় করেন, তাঁর অভিনয়ে দর্শক মুগ্ধ হন এবং তাঁকে ভালোবাসেন। আমি শুধু অভিনয় করতে জানি এবং প্রতিনিয়তই এর চর্চা করে এসেছি। একজন অভিনেতা হিসেবে অভিনয়ে শতভাগ সৎ থাকার চেষ্টা করি।'_বলেছেন শামীম জামান।
সময়কে জয় করে এখনো তিনি একই রকম আদর্শের পথে হাঁটছেন।
মণিপুরিপাড়ার একটি ফ্ল্যাট। বাড়ির চতুর্থ তলায় থাকেন এই অভিনেতা। ফ্ল্যাটের ভেতরেই এক রুমে তাঁর নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান 'শরৎ টেলিফিল্ম'। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের প্রযোজনায় বৃন্দাবন দাসের রচনা এবং সালাউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় বাংলাভিশনে প্রচারিত হবে নতুন ধারাবাহিক 'হাড়কিপটে'। আর এই মেগাসিরিয়ালে অভিনয়ও করেছেন তিনি। তাই একটু বেশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
"তখন আমি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। গ্রামের যাত্রানাটক দিয়েই মূলত আমার অভিনয় শুরু। ওই সময় রবীন্দ্রনাথের 'ছুটি' নাটকে অভিনয় করেছিলাম। মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার জোতকাসি গ্রামে আমার জন্ম হলেও নানাবাড়ি (বাঙালা) নামের একটি এলাকায় বড় হয়েছি। সেখানে স্কাউটস এবং নিয়মিত যাত্রানাটকের শিল্পী ছিলাম। তারপর পুরান ঢাকায় এক বন্ধুর সঙ্গে 'সৃষ্টি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র' নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন অভিনয় করলাম। এরপর ১৯৯০ সালের প্রথম দিকে আমার মূল নাট্যচর্চা শুরু হলো 'আরণ্যক নাট্যদল'-এর মাধ্যমে"_এভাবেই অভিনয় জীবনের শুরুর কথা বলছিলেন তিনি।
নাট্যচর্চার দর্শন ও কাজের প্রতি নিষ্ঠার কারণে তিনি অনেকটাই পরিপূর্ণ শিল্পী, আর মঞ্চ থেকেই সে শিক্ষাটা পেয়েছেন তিনি। মঞ্চের প্রথম দিকে 'খেলা খেলা' নাটকের ব্যাকগ্রাউন্ড সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। আরণ্যকের 'পাথর' নাটকের তোতলা কুদ্দুস চরিত্রের মধ্য দিয়ে মঞ্চে তাঁর অভিনয় শুরু। এরপর 'ময়ূর সিংহাসন', 'প্রাকৃতজন কথা' এবং 'সংক্রান্তি'র চরিত্রগুলো তাঁকে ব্যাপক আলোচনায় নিয়ে আসে। মঞ্চের পাশাপাশি ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর মামুনুর রশীদের পরিচালনায় বিটিভিতে প্রচারিত একটি জনসতর্কতামূলক 'বাল্য বিবাহ' নামের তথ্যচিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত আবদুল্লাহ আল-মামুনের 'দ্রোহ বিনাশ' নামের বিটিভির একটি নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ ঘটে তাঁর। শুধু তাই নয়, আবদুল্লাহ আল-মামুনের পরিচালনায় দেশের প্রথম ডেইলি সোপ 'জোয়ারভাটা' নাটকে অভিনেত্রী তারিনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে সেই সময় জনপ্রিয়তা পান। একুশে টেলিভিশনে মান্নান হীরার পরিচালনায় 'দয়াগঞ্জ' নাটকে অভিনয় করেন। হঠাৎ একুশে টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার পর কিছুদিন অভিনয়ে বিরতি ঘটে। এরপর এনটিভিতে প্রচারিত সালাউদ্দিন লাভলুর মেগাসিরিয়াল 'ভবের হাট'-এ অভিনয় করে অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পান। শামীম বলেন, 'সত্যি বলতে কি, আজকের এই শামীম জামানকে যদি টিভির দর্শকরা অভিনেতা হিসেবে চিনে থাকেন, তার পেছনে বড় অবদান সালাউদ্দিন লাভলুর।'
শুধু নাটকেই নয়, চলচ্চিত্রেও অভিনয়ের সুযোগ ঘটে তাঁর। ২০০৩ সালে সাইদুল আনাম টুটুল পরিচালিত 'আধিয়ার' ছবিতে 'মাধব' নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এ ছাড়া বাদল রহমানের শিশুতোষ চলচ্চিত্র 'ছানা ও মুক্তিযুদ্ধ' এবং কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী নিয়ে রফিকুল বারী চৌধুরীর নির্মিত ছবি 'বাংলা মায়ের দামাল ছেলে'তে অভিনয় করেও প্রশংসিত হয়েছেন। বেশ কিছু জনপ্রিয় নাটকও রচনা করেছেন তিনি। প্রচারিত এসব নাটকের মধ্যে 'আশ্রয়', 'হত্যা', 'রজব আলী ও তার কাফনের কথা', 'বৃত্তবাস' ইত্যাদি নাটক দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিতব্য কিছু নাটক আমি নিজেই লিখছি। তা ছাড়া আমি একজন অভিনয়শিল্পী, দর্শকদের সৃষ্টিশীল কিছু কাজ উপহার দিয়ে যেতে চাই।'
সময়কে জয় করে এখনো তিনি একই রকম আদর্শের পথে হাঁটছেন।
মণিপুরিপাড়ার একটি ফ্ল্যাট। বাড়ির চতুর্থ তলায় থাকেন এই অভিনেতা। ফ্ল্যাটের ভেতরেই এক রুমে তাঁর নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান 'শরৎ টেলিফিল্ম'। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের প্রযোজনায় বৃন্দাবন দাসের রচনা এবং সালাউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় বাংলাভিশনে প্রচারিত হবে নতুন ধারাবাহিক 'হাড়কিপটে'। আর এই মেগাসিরিয়ালে অভিনয়ও করেছেন তিনি। তাই একটু বেশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
"তখন আমি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। গ্রামের যাত্রানাটক দিয়েই মূলত আমার অভিনয় শুরু। ওই সময় রবীন্দ্রনাথের 'ছুটি' নাটকে অভিনয় করেছিলাম। মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার জোতকাসি গ্রামে আমার জন্ম হলেও নানাবাড়ি (বাঙালা) নামের একটি এলাকায় বড় হয়েছি। সেখানে স্কাউটস এবং নিয়মিত যাত্রানাটকের শিল্পী ছিলাম। তারপর পুরান ঢাকায় এক বন্ধুর সঙ্গে 'সৃষ্টি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র' নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন অভিনয় করলাম। এরপর ১৯৯০ সালের প্রথম দিকে আমার মূল নাট্যচর্চা শুরু হলো 'আরণ্যক নাট্যদল'-এর মাধ্যমে"_এভাবেই অভিনয় জীবনের শুরুর কথা বলছিলেন তিনি।
নাট্যচর্চার দর্শন ও কাজের প্রতি নিষ্ঠার কারণে তিনি অনেকটাই পরিপূর্ণ শিল্পী, আর মঞ্চ থেকেই সে শিক্ষাটা পেয়েছেন তিনি। মঞ্চের প্রথম দিকে 'খেলা খেলা' নাটকের ব্যাকগ্রাউন্ড সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। আরণ্যকের 'পাথর' নাটকের তোতলা কুদ্দুস চরিত্রের মধ্য দিয়ে মঞ্চে তাঁর অভিনয় শুরু। এরপর 'ময়ূর সিংহাসন', 'প্রাকৃতজন কথা' এবং 'সংক্রান্তি'র চরিত্রগুলো তাঁকে ব্যাপক আলোচনায় নিয়ে আসে। মঞ্চের পাশাপাশি ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর মামুনুর রশীদের পরিচালনায় বিটিভিতে প্রচারিত একটি জনসতর্কতামূলক 'বাল্য বিবাহ' নামের তথ্যচিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত আবদুল্লাহ আল-মামুনের 'দ্রোহ বিনাশ' নামের বিটিভির একটি নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ ঘটে তাঁর। শুধু তাই নয়, আবদুল্লাহ আল-মামুনের পরিচালনায় দেশের প্রথম ডেইলি সোপ 'জোয়ারভাটা' নাটকে অভিনেত্রী তারিনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে সেই সময় জনপ্রিয়তা পান। একুশে টেলিভিশনে মান্নান হীরার পরিচালনায় 'দয়াগঞ্জ' নাটকে অভিনয় করেন। হঠাৎ একুশে টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার পর কিছুদিন অভিনয়ে বিরতি ঘটে। এরপর এনটিভিতে প্রচারিত সালাউদ্দিন লাভলুর মেগাসিরিয়াল 'ভবের হাট'-এ অভিনয় করে অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পান। শামীম বলেন, 'সত্যি বলতে কি, আজকের এই শামীম জামানকে যদি টিভির দর্শকরা অভিনেতা হিসেবে চিনে থাকেন, তার পেছনে বড় অবদান সালাউদ্দিন লাভলুর।'
শুধু নাটকেই নয়, চলচ্চিত্রেও অভিনয়ের সুযোগ ঘটে তাঁর। ২০০৩ সালে সাইদুল আনাম টুটুল পরিচালিত 'আধিয়ার' ছবিতে 'মাধব' নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এ ছাড়া বাদল রহমানের শিশুতোষ চলচ্চিত্র 'ছানা ও মুক্তিযুদ্ধ' এবং কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী নিয়ে রফিকুল বারী চৌধুরীর নির্মিত ছবি 'বাংলা মায়ের দামাল ছেলে'তে অভিনয় করেও প্রশংসিত হয়েছেন। বেশ কিছু জনপ্রিয় নাটকও রচনা করেছেন তিনি। প্রচারিত এসব নাটকের মধ্যে 'আশ্রয়', 'হত্যা', 'রজব আলী ও তার কাফনের কথা', 'বৃত্তবাস' ইত্যাদি নাটক দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিতব্য কিছু নাটক আমি নিজেই লিখছি। তা ছাড়া আমি একজন অভিনয়শিল্পী, দর্শকদের সৃষ্টিশীল কিছু কাজ উপহার দিয়ে যেতে চাই।'
No comments