১০০ দিনে সরকার ঋণ নিল ৯৫০০ কোটি টাকা by মনজুর আহমেদ
ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ বেড়েই চলেছে। রাষ্ট্রীয় আয়-ব্যয়ের এই ভারসাম্যহীনতা সামগ্রিক অর্থনীতিকে দুর্বল করে তুলছে। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতির চাপও বাড়ছে। বড় অঙ্কের ধার দিয়েই বছরটি শুরু করেছিল সরকার। দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে নতুন অর্থবছরের মাত্র ১০০ দিনে ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণ হয়েছে প্রায় সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকা। এর আগে গেল বছরটিতে ব্যাংক-ব্যবস্থায় সরকারের নিট ঋণ সব পরিকল্পনাকে ছাপিয়ে যায়।
সে সময় ব্যাংক খাত থেকে সরকার ঋণ করে প্রায় ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা ওই অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং সংশোধিত বাজেট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হাজার কোটি টাকা বেশি ছিল। সরকারের এই ঋণের প্রায় অর্ধেকটা নেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংক যা নতুন টাকা ছেপে সরকারকে দিয়েছে। আর নতুন অর্থবছরের ১০০ দিনেও সরকারের ঋণের ৬০ ভাগের বেশি অর্থ জুগিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে বর্তমানে যে নগদ অর্থের টানাটানি রয়েছে, তাতে ধারণা করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংককে এ দফাতেও পুরোটাই নতুন টাকা ছেপে বাজারে দিতে হবে।
এ বছর ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৮ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা। কিন্তু ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সরকার নিট ঋণ করেছে নয় হাজার ৪৭০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার নিয়েছে ছয় হাজার ৪৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের ট্রেজারি বিল ও বন্ড বিক্রি করে তুলে দিয়েছে তিন হাজার ৪২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বলা হয়, তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকার বেশি ঋণ করলে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ কমে আসে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ করলে, যদি বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তীকালে তফসিলি ব্যাংকের কাছ থেকে সরকারি ট্রেজারি বিল বা বন্ড বিক্রি করে তা তুলে নিতে না পারে, তবে শেষ পর্যন্ত নতুন টাকা বাজারে বেড়ে যায়। আর এতে বাড়ে দ্রব্যমূল্য। সেই আশঙ্কাও রয়েছে।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সরকারের এই বড় অঙ্কের ঋণে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘টাকা ধার নেওয়া নিয়ে যতটা না চিন্তিত, তার চেয়ে বেশি চিন্তিত টাকা আসলে যাচ্ছে কোথায়?’
চলতি অর্থবছরের ইতিমধ্যেই অতিবাহিত সময়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অগ্রগতি গতানুগতিক। ফলে বৈদেশিক সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে দেশীয় অর্থায়ন দিয়ে উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে, এমন প্রমাণ মিলছে না। দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘তার মানে হলো, কোনো না কোনোভাবে অনুন্নয়ন খাতের ব্যয় মেটানো হচ্ছে ধার করে।’
অর্থবছরের প্রথম কয়েক মাসে রাজস্ব আদায় ভালো থাকে না। অন্যদিকে ভর্তুকি, সুদ ও সেবা খাতের ব্যয় মেটাতেই এই ধার করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, সরকারের রাষ্ট্রীয় আয়-ব্যয়ের এই ভারসাম্যহীনতা সামগ্রিক অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করছে। এ কারণে এটি মূল্যস্ফীতিসহ গোটা অর্থনীতিকে দুর্বল করছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, প্রথম তিন মাসে বিভিন্ন দাতা সংস্থা মোট ২৪ কোটি ৬২ লাখ ডলারের বৈদেশিক সাহায্য ছাড় করেছে। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। কিন্তু একই সময়ে আসল ও সুদ হিসেবে সরকারকে পরিশোধ করতে হয়েছে মোট ২২ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। ফলে নিট সাহায্য এসেছে দুই কোটি ২৮ লাখ ডলার।
ধারণা করা হচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরের ১০০ দিনে সরকার ব্যাংক খাত থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ করেছে। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে সরকারের নিট ঋণ ছিল মাত্র ২৮৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
এ বছর ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৮ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা। কিন্তু ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সরকার নিট ঋণ করেছে নয় হাজার ৪৭০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার নিয়েছে ছয় হাজার ৪৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের ট্রেজারি বিল ও বন্ড বিক্রি করে তুলে দিয়েছে তিন হাজার ৪২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বলা হয়, তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকার বেশি ঋণ করলে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ কমে আসে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ করলে, যদি বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তীকালে তফসিলি ব্যাংকের কাছ থেকে সরকারি ট্রেজারি বিল বা বন্ড বিক্রি করে তা তুলে নিতে না পারে, তবে শেষ পর্যন্ত নতুন টাকা বাজারে বেড়ে যায়। আর এতে বাড়ে দ্রব্যমূল্য। সেই আশঙ্কাও রয়েছে।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সরকারের এই বড় অঙ্কের ঋণে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘টাকা ধার নেওয়া নিয়ে যতটা না চিন্তিত, তার চেয়ে বেশি চিন্তিত টাকা আসলে যাচ্ছে কোথায়?’
চলতি অর্থবছরের ইতিমধ্যেই অতিবাহিত সময়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অগ্রগতি গতানুগতিক। ফলে বৈদেশিক সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে দেশীয় অর্থায়ন দিয়ে উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে, এমন প্রমাণ মিলছে না। দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘তার মানে হলো, কোনো না কোনোভাবে অনুন্নয়ন খাতের ব্যয় মেটানো হচ্ছে ধার করে।’
অর্থবছরের প্রথম কয়েক মাসে রাজস্ব আদায় ভালো থাকে না। অন্যদিকে ভর্তুকি, সুদ ও সেবা খাতের ব্যয় মেটাতেই এই ধার করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, সরকারের রাষ্ট্রীয় আয়-ব্যয়ের এই ভারসাম্যহীনতা সামগ্রিক অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করছে। এ কারণে এটি মূল্যস্ফীতিসহ গোটা অর্থনীতিকে দুর্বল করছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, প্রথম তিন মাসে বিভিন্ন দাতা সংস্থা মোট ২৪ কোটি ৬২ লাখ ডলারের বৈদেশিক সাহায্য ছাড় করেছে। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। কিন্তু একই সময়ে আসল ও সুদ হিসেবে সরকারকে পরিশোধ করতে হয়েছে মোট ২২ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। ফলে নিট সাহায্য এসেছে দুই কোটি ২৮ লাখ ডলার।
ধারণা করা হচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরের ১০০ দিনে সরকার ব্যাংক খাত থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ করেছে। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে সরকারের নিট ঋণ ছিল মাত্র ২৮৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
No comments