নাসিক নির্বাচন-শেষ পর্যন্ত শামীম ওসমান by পাভেল হায়দার চৌধুরী,
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সমর্থন নিয়ে অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে শামীম ওসমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রাজধানীর কাছে এই সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ ও ওবায়দুল কাদেরকে। শামীম ওসমানের বিজয় নিশ্চিত করতে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, 'নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলটির সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমান। আজ থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নিয়ে আর কোনো বিভ্রান্তির সুযোগ নেই।'হানিফ আরো বলেন, 'দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের শামীম ওসমানের পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণের পর সমর্থন কার পক্ষে, তা নিয়ে বিভ্রান্তির আর কোনো অবকাশ নেই।' শামীম ওসমানকে বিজয়ী করতে দল ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সর্বাত্মক ভূমিকা নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দায়িত্ব পাওয়া কাজী জাফর উল্যাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানকে প্রয়োজন রয়েছে।'
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার দলের শীর্ষ নেতারা সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন। সেখান থেকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম ওসমানের পক্ষে কাজ করে তাঁকে মেয়র নির্বাচিত করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অপর প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভীকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার প্রস্তাব পাঠানোর কথা বলেন। আইভী সমঝোতায় না এলে তাঁকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবেই দেখা হবে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হওয়া ওই অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের শামীম ওসমানের পক্ষে প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কাজী জাফর উল্যাহ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য সুজিত রায় নন্দী।
এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন দলের মুখপাত্র। আমি কিছু বলব না।'
নির্বাচনী কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কাজের মাধ্যমে সব কিছুর প্রমাণ পাওয়া যাবে। ওয়েট অ্যান্ড সি।'
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শামীম ওসমান ও আইভী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর দলীয় সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগে জটিলতার সৃষ্টি হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে থেকে দুই সপ্তাহ ধরে দলের শীর্ষ নেতারা দফায় দফায় বৈঠক, দুই প্রার্থীকে দলীয় পদ দেওয়া, প্রতিমন্ত্রী কিংবা সংসদ সদস্য বানানোর মতো নানা প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁদের দুই দফা কথা হয়। ১২ অক্টোবর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দেখা করেন শামীম ওসমান ও আইভী। দুজনই শেষ পর্যন্ত নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকেন।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার পরের দিন ১৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ গিয়ে শামীম ওসমানের পক্ষে দলের সমর্থনের বিষয়টি ঘোষণা করেন তিন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তাঁরা শামীমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায়ও অংশ নেন।
কিন্তু পরদিন আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র মাহবুব-উল-আলম হানিফ জানান, কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়নি। তিন সাংগঠনিক সম্পাদকের সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলীয়ভাবে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
ওই দিন দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে কাউকে দলীয় সমর্থন দেয়নি আওয়ামী লীগ।
এর পরও যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাত নেতা নারায়ণগঞ্জে যান এবং শামীম ওসমানের পক্ষে সংগঠনের সমর্থন ঘোষণা করেন। জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভায় তাঁরা জানান, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জরুরি বৈঠক করে শামীম ওসমানকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি তাঁরা আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকেও জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, শেখ হাসিনার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই তাঁরা নারায়ণগঞ্জ এসেছেন।
শেষ পর্যন্ত শামীম ওসমানকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর তাঁর সমর্থকরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি তাঁরা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে আমাদের প্রতিনিধি জানান।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান দীপু বলেন, 'শামীম ওসমানের বিজয় আর কেউ ঠেকাতে পারবে না, ইনশা আল্ল্লাহ।'
শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা জানান, শামীম ওসমানকে যথাযোগ্য সম্মানটি দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াছিন মিয়া জানান, দলের ঘোষণায় তাঁদের এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আনন্দিত।
বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম সাগর বলেন, 'যারা দলের সঙ্গে বেইমানি করেছে, তাদের জন্য এই ঘোষণা একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।'
এদিকে গতকাল শামীম ওসমানের বাসভবন হীরা মহলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সদস্য সুজিত রায় নন্দী, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা প্রমুখ।
আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, শামীম ওসমান গতকাল সকালের দিকে শহরের পুরান পালপাড়া, দিগু বাবুর বাজার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক, নয়ামাটি, করিম মার্কেট, মণ্ডলপাড়া, সূতারপাড়া, নিমতলা, ওল্ড ব্যাংক রোড, কেরোসিন ঘাট, ডাইলপট্টি, মিনাবাজার, রেলী বাগান, ফলপট্টি, সিরাজদ্দৌলা রোড ও পুরান কোর্ট এলাকায় ভোট প্রার্থনা করে গণসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠক করেন। নারায়ণগঞ্জ কলেজে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন। বিকেলে বন্দরের ২১ নং ওয়ার্ডের শাহী মসজিদ, সালেহনগর, বৌবাজার, কলোনি, ঋষিপাড়া, নামাপাড়া, চৌধুরীপাড়া, রূপালী আবাসিক এলাকা ও বৃন্দাবন আখড়ায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও পথসভা করেন।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা মো. আবু কাউসার ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় শামীম ওসমানের সমর্থনে গণসংযোগ ও পথসভা করেন।
তৈমূরের গণসংযোগ
বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার গতকাল গোদনাইল, কদমতলী, উত্তর পাড়া, কাশেমপাড়া, সফর আলী ভূঁইয়ার বাড়ি, কলেজপাড়া, আদমজী গোরস্থান সংলগ্ন এলাকা, কদমতলী, দক্ষিণ কদমতলী এলাকায় গণসংযোগ করেন।
আইভীর গণসংযোগ
অপর মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভী গতকাল সকালে হাজীগঞ্জ এলাকা ও বিকেলে ১৬ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি কয়েকটি উঠান বৈঠক করেন। তাঁর পক্ষে যুবলীগের আ. কাদির, সিদ্ধিরগঞ্জের শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনও গণসংযোগ চালান।
সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও নারায়ণগঞ্জ শহরের মোট ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ৩০ অক্টোবর।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার দলের শীর্ষ নেতারা সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন। সেখান থেকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম ওসমানের পক্ষে কাজ করে তাঁকে মেয়র নির্বাচিত করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অপর প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভীকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার প্রস্তাব পাঠানোর কথা বলেন। আইভী সমঝোতায় না এলে তাঁকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবেই দেখা হবে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হওয়া ওই অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের শামীম ওসমানের পক্ষে প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কাজী জাফর উল্যাহ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য সুজিত রায় নন্দী।
এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন দলের মুখপাত্র। আমি কিছু বলব না।'
নির্বাচনী কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কাজের মাধ্যমে সব কিছুর প্রমাণ পাওয়া যাবে। ওয়েট অ্যান্ড সি।'
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শামীম ওসমান ও আইভী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর দলীয় সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগে জটিলতার সৃষ্টি হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে থেকে দুই সপ্তাহ ধরে দলের শীর্ষ নেতারা দফায় দফায় বৈঠক, দুই প্রার্থীকে দলীয় পদ দেওয়া, প্রতিমন্ত্রী কিংবা সংসদ সদস্য বানানোর মতো নানা প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁদের দুই দফা কথা হয়। ১২ অক্টোবর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দেখা করেন শামীম ওসমান ও আইভী। দুজনই শেষ পর্যন্ত নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকেন।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার পরের দিন ১৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ গিয়ে শামীম ওসমানের পক্ষে দলের সমর্থনের বিষয়টি ঘোষণা করেন তিন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তাঁরা শামীমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায়ও অংশ নেন।
কিন্তু পরদিন আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র মাহবুব-উল-আলম হানিফ জানান, কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়নি। তিন সাংগঠনিক সম্পাদকের সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলীয়ভাবে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
ওই দিন দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে কাউকে দলীয় সমর্থন দেয়নি আওয়ামী লীগ।
এর পরও যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাত নেতা নারায়ণগঞ্জে যান এবং শামীম ওসমানের পক্ষে সংগঠনের সমর্থন ঘোষণা করেন। জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভায় তাঁরা জানান, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জরুরি বৈঠক করে শামীম ওসমানকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি তাঁরা আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকেও জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, শেখ হাসিনার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই তাঁরা নারায়ণগঞ্জ এসেছেন।
শেষ পর্যন্ত শামীম ওসমানকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর তাঁর সমর্থকরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি তাঁরা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে আমাদের প্রতিনিধি জানান।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান দীপু বলেন, 'শামীম ওসমানের বিজয় আর কেউ ঠেকাতে পারবে না, ইনশা আল্ল্লাহ।'
শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা জানান, শামীম ওসমানকে যথাযোগ্য সম্মানটি দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াছিন মিয়া জানান, দলের ঘোষণায় তাঁদের এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আনন্দিত।
বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম সাগর বলেন, 'যারা দলের সঙ্গে বেইমানি করেছে, তাদের জন্য এই ঘোষণা একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।'
এদিকে গতকাল শামীম ওসমানের বাসভবন হীরা মহলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সদস্য সুজিত রায় নন্দী, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা প্রমুখ।
আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, শামীম ওসমান গতকাল সকালের দিকে শহরের পুরান পালপাড়া, দিগু বাবুর বাজার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক, নয়ামাটি, করিম মার্কেট, মণ্ডলপাড়া, সূতারপাড়া, নিমতলা, ওল্ড ব্যাংক রোড, কেরোসিন ঘাট, ডাইলপট্টি, মিনাবাজার, রেলী বাগান, ফলপট্টি, সিরাজদ্দৌলা রোড ও পুরান কোর্ট এলাকায় ভোট প্রার্থনা করে গণসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠক করেন। নারায়ণগঞ্জ কলেজে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন। বিকেলে বন্দরের ২১ নং ওয়ার্ডের শাহী মসজিদ, সালেহনগর, বৌবাজার, কলোনি, ঋষিপাড়া, নামাপাড়া, চৌধুরীপাড়া, রূপালী আবাসিক এলাকা ও বৃন্দাবন আখড়ায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও পথসভা করেন।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা মো. আবু কাউসার ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় শামীম ওসমানের সমর্থনে গণসংযোগ ও পথসভা করেন।
তৈমূরের গণসংযোগ
বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার গতকাল গোদনাইল, কদমতলী, উত্তর পাড়া, কাশেমপাড়া, সফর আলী ভূঁইয়ার বাড়ি, কলেজপাড়া, আদমজী গোরস্থান সংলগ্ন এলাকা, কদমতলী, দক্ষিণ কদমতলী এলাকায় গণসংযোগ করেন।
আইভীর গণসংযোগ
অপর মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভী গতকাল সকালে হাজীগঞ্জ এলাকা ও বিকেলে ১৬ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি কয়েকটি উঠান বৈঠক করেন। তাঁর পক্ষে যুবলীগের আ. কাদির, সিদ্ধিরগঞ্জের শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনও গণসংযোগ চালান।
সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও নারায়ণগঞ্জ শহরের মোট ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ৩০ অক্টোবর।
No comments