জামায়াতের শক্তি প্রদর্শন by লিমন বাসার,
বিকেল ৩টায় বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার জনসভা। কিন্তু সকাল ৮টা থেকেই সভাস্থলে আসার জন্য শুরু হয় জামায়াতের সহযোগী সংগঠন ছাত্রশিবিরের তৎপরতা। বগুড়ায় জামায়াত-শিবিরের শক্ত অবস্থান দেখাতেই মূলত শহরে বিশাল শোডাউনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।গত তিন বছর জামায়াত-শিবির বগুড়ায় প্রকাশ্যে কোনো মিছিল-সমাবেশ করতে পারেনি। কিন্তু খালেদার জনসভাকে কেন্দ্র করে সারা শহরের তিনটি প্রান্ত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকের মাথায় ছিল টুপি। স্লোগান ছিল, 'জামায়াতের বন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তি চাই', 'ফ্যাসিবাদি সরকারের পতন চাই'।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি উত্তরাঞ্চল অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করে ঢাকার উত্তরা থেকে। বগুড়ায় পেঁৗছানোর পর সেখানে খালেদা জিয়া জনসভা করেন। আজ বুধবার রোডমার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জে পেঁৗছানোর কথা। সেখানেও জনসভার কর্মসূচি রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বগুড়া শহর জামায়াতের একজন নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, খালেদা জিয়ার জনসভাকে কেন্দ্র করে তাঁরা মূলত একটি 'সূক্ষ্ম' পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সারা জেলা থেকে কমপক্ষে এক লাখ নেতা-কর্মীকে হাজির করার কাজ শুরু করেন তাঁরা।
জামায়াতের ওই নেতা বলেন, যেহেতু প্রকাশ্য মিছিলে পুলিশ বরাবরই বাধা দিয়ে এসেছে, এ কারণে সকালে পুলিশ সদস্যরা যখন জনসভায় দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত তখনই মিছিল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শহরের তিনটি প্রান্ত মাটিডালি, বনানী ও আযিযুল হক কলেজ এলাকা থেকে ছাত্রশিবিরের প্রায় ৩০ হাজার নেতা-কর্মী টুপি পরে মিছিল বের করে। তারা জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি এবং খালেদা জিয়ার জনসভা সফল করার আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে বেলা ১১টার মধ্যে এসব মিছিল বগুড়া আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জনসভাস্থলে প্রবেশ করে।
এরপর খণ্ড খণ্ডভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ড জামায়াতের মিছিলও আসে। তবে জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো মিছিল করা হয়নি। দলের পক্ষ থেকে মূল শোডাউনের দায়িত্ব ছিল ছাত্রশিবিরের ওপর।
প্রসঙ্গত, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতা আটক রয়েছেন।
এত সকালে জনসভাস্থলে কেন_জানতে চাইলে একজন শিবিরকর্মী জানান, তাঁদের ওপর নির্দেশ রয়েছে মাঠের সম্মুখভাগে থাকতে হবে আর প্রত্যেকের মাথায় টুপি রাখতে হবে। জামায়াত শিবিরের উপস্থিতি শনাক্ত করতে টুপি প্রয়োজন।
ওই কর্মী আরো জানান, যেহেতু সকাল থেকেই মাঠ দখলে রাখতে হবে সে কারণে অধিকাংশ শিবিরকর্মী গতকাল নফল রোজা রেখেছেন, যাতে খাবার ও অন্যান্য কোনো প্রয়োজনে কাউকে মাঠ ছেড়ে বাইরে যেতে না হয়। দুপুরে তাঁরা সম্মিলিতভাবে জোহরের নামাজ আদায় করেছেন মাঠের মধ্যেই। জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টিও দেখছেন ছাত্রশিবিরের নির্দিষ্ট কয়েকজন।
জনসভা ও রোডমার্চ সফল করতে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের এক হাজার স্বেচ্ছাসেবকও নিয়োজিত ছিলেন।
জানা যায়, বগুড়ায় জনসভা মাঠের চারদিকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের টানানো ব্যানার সোমবার মধ্যরাতে পুলিশ খুলে নিয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি জানান, রাত দেড়টার দিকে মাঠে গিয়ে খুঁজে খুঁজে জামায়াত ও এর সহযোগী সংগঠন শিবিরের ১৮-২০টি ব্যানার পুলিশ খুলে নিয়ে যায়। ওইসব ব্যানারে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবি সংবলিত স্লোগান লেখা ছিল।
জামায়াত নেতারা অভিযোগ করেন, তাঁরা যে প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যানার করিয়েছেন পুলিশ মধ্যরাতে সেখানে হানা দেয়। তাঁরা যন্ত্র থেকে ব্যানারের সব ডিজাইন মুছে ফেলে। পরে আর কাজ না করে দেওয়ার ব্যাপারেও প্রতিষ্ঠানটিকে সতর্ক করে দেয় পুলিশ।
জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির আবদুল হক সরকার সাংবাদিকদের বলেন, জনসভাস্থল থেকে ব্যানার খুলে নেওয়ার ঘটনা গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের শামিল।
অন্যদিকে, বগুড়া সদর থানার ওসি এ কে এম খালেকুজ্জামান ব্যানার খুলে নেওয়া এবং ডিজাইন মুছে ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
জামায়াতের শোডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ছাত্রশিবির মিছিল করবে_এটা তাঁদের আগে থেকে জানানো ছিল না। তাঁদের বলা হয়েছিল, চারদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানার নিয়ে জামায়াত-শিবির জনসভাস্থলে আসবে। তবে মিছিল করবে না। কিন্তু তারা নিজেদের দলীয় ব্যানার নিয়ে মিছিল করেছে বলে তিনি শুনেছেন।
একজনের মৃত্যু : সোমবার রাতে জামায়াত-শিবিরের ব্যানার টানাতে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বারকুনা গ্রামের জাহাঙ্গীর (৩৫) রাতে মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ব্যানার টানাতে গিয়ে মই থেকে পা পিছলে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে চিকিৎসার জন্য মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
হাটিকুমরুলের পথসভা : রোডমার্চ উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে আয়োজিত পথসভায় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সিরাজগঞ্জ ও পাবনার বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে পথসভায় যোগ দেয় বলে আমাদের প্রতিনিধি জানান। সকাল থেকেই তারা পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে সভাস্থলে আসতে থাকে। একপর্যায়ে মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। তবে পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বগুড়া শহর জামায়াতের একজন নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, খালেদা জিয়ার জনসভাকে কেন্দ্র করে তাঁরা মূলত একটি 'সূক্ষ্ম' পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সারা জেলা থেকে কমপক্ষে এক লাখ নেতা-কর্মীকে হাজির করার কাজ শুরু করেন তাঁরা।
জামায়াতের ওই নেতা বলেন, যেহেতু প্রকাশ্য মিছিলে পুলিশ বরাবরই বাধা দিয়ে এসেছে, এ কারণে সকালে পুলিশ সদস্যরা যখন জনসভায় দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত তখনই মিছিল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শহরের তিনটি প্রান্ত মাটিডালি, বনানী ও আযিযুল হক কলেজ এলাকা থেকে ছাত্রশিবিরের প্রায় ৩০ হাজার নেতা-কর্মী টুপি পরে মিছিল বের করে। তারা জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি এবং খালেদা জিয়ার জনসভা সফল করার আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে বেলা ১১টার মধ্যে এসব মিছিল বগুড়া আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জনসভাস্থলে প্রবেশ করে।
এরপর খণ্ড খণ্ডভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ড জামায়াতের মিছিলও আসে। তবে জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো মিছিল করা হয়নি। দলের পক্ষ থেকে মূল শোডাউনের দায়িত্ব ছিল ছাত্রশিবিরের ওপর।
প্রসঙ্গত, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতা আটক রয়েছেন।
এত সকালে জনসভাস্থলে কেন_জানতে চাইলে একজন শিবিরকর্মী জানান, তাঁদের ওপর নির্দেশ রয়েছে মাঠের সম্মুখভাগে থাকতে হবে আর প্রত্যেকের মাথায় টুপি রাখতে হবে। জামায়াত শিবিরের উপস্থিতি শনাক্ত করতে টুপি প্রয়োজন।
ওই কর্মী আরো জানান, যেহেতু সকাল থেকেই মাঠ দখলে রাখতে হবে সে কারণে অধিকাংশ শিবিরকর্মী গতকাল নফল রোজা রেখেছেন, যাতে খাবার ও অন্যান্য কোনো প্রয়োজনে কাউকে মাঠ ছেড়ে বাইরে যেতে না হয়। দুপুরে তাঁরা সম্মিলিতভাবে জোহরের নামাজ আদায় করেছেন মাঠের মধ্যেই। জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টিও দেখছেন ছাত্রশিবিরের নির্দিষ্ট কয়েকজন।
জনসভা ও রোডমার্চ সফল করতে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের এক হাজার স্বেচ্ছাসেবকও নিয়োজিত ছিলেন।
জানা যায়, বগুড়ায় জনসভা মাঠের চারদিকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের টানানো ব্যানার সোমবার মধ্যরাতে পুলিশ খুলে নিয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি জানান, রাত দেড়টার দিকে মাঠে গিয়ে খুঁজে খুঁজে জামায়াত ও এর সহযোগী সংগঠন শিবিরের ১৮-২০টি ব্যানার পুলিশ খুলে নিয়ে যায়। ওইসব ব্যানারে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবি সংবলিত স্লোগান লেখা ছিল।
জামায়াত নেতারা অভিযোগ করেন, তাঁরা যে প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যানার করিয়েছেন পুলিশ মধ্যরাতে সেখানে হানা দেয়। তাঁরা যন্ত্র থেকে ব্যানারের সব ডিজাইন মুছে ফেলে। পরে আর কাজ না করে দেওয়ার ব্যাপারেও প্রতিষ্ঠানটিকে সতর্ক করে দেয় পুলিশ।
জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির আবদুল হক সরকার সাংবাদিকদের বলেন, জনসভাস্থল থেকে ব্যানার খুলে নেওয়ার ঘটনা গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের শামিল।
অন্যদিকে, বগুড়া সদর থানার ওসি এ কে এম খালেকুজ্জামান ব্যানার খুলে নেওয়া এবং ডিজাইন মুছে ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
জামায়াতের শোডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ছাত্রশিবির মিছিল করবে_এটা তাঁদের আগে থেকে জানানো ছিল না। তাঁদের বলা হয়েছিল, চারদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানার নিয়ে জামায়াত-শিবির জনসভাস্থলে আসবে। তবে মিছিল করবে না। কিন্তু তারা নিজেদের দলীয় ব্যানার নিয়ে মিছিল করেছে বলে তিনি শুনেছেন।
একজনের মৃত্যু : সোমবার রাতে জামায়াত-শিবিরের ব্যানার টানাতে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বারকুনা গ্রামের জাহাঙ্গীর (৩৫) রাতে মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ব্যানার টানাতে গিয়ে মই থেকে পা পিছলে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে চিকিৎসার জন্য মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
হাটিকুমরুলের পথসভা : রোডমার্চ উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে আয়োজিত পথসভায় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সিরাজগঞ্জ ও পাবনার বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে পথসভায় যোগ দেয় বলে আমাদের প্রতিনিধি জানান। সকাল থেকেই তারা পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে সভাস্থলে আসতে থাকে। একপর্যায়ে মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। তবে পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
No comments