ভাংচুর অগ্নিসংযোগ পুলিশের গুলি আহত ১৫, মামুনের দাফন সম্পন্ন : সিলেটে ব্যবসায়ীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা : নগরজুড়ে আতঙ্ক
সিলেটে গতকাল সন্ধ্যায় নগরীর তালতলায় ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে সংর্ঘষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়। এছাড়া ৪/৫টি যানবাহন ভাংচুর এবং ৩ ব্যবসায়ী আটকের খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৮-১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে।মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের মিছিল থেকে নগরীর তালতলায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে ভাংচুরের প্রতিবাদে গতকাল বিকালে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মাঝে মাগরিবের নামাজের জন্য কিছুক্ষণ বিরতির পর বিক্ষোভকারীরা আবার সমবেত হলে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
ছাত্রলীগের কর্মীরা রাস্তার পাশের দোকান ও মার্কেট লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে ও গুলশান সেন্টারের সামনে পার্ক করে রাখা একটি মাইক্রোবাস ও ৪টি অটোরিকশা ভাংচুর করে। এ সময় গুলশান হোটেলের ক্লিনার শাহিন আহত হয়। তাকে সিওমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তালতলা মসজিদেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় মুসল্লিরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে পুলিশ তালতলা অভিমুখে সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায, ছাত্রলীগের এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপে মুসল্লিসহ ১০ ব্যবসায়ী ও কর্মচারী আহত হন। এ সময় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৭টার দিকে পুলিশ পুরো তালতলা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। এদিকে সিলেটে গত দুই দিনে দুই বড়
ছাত্র সংগঠনের মধ্য সৃষ্ট ঘটনায় তিন জন আহত হওয়ায় গতকাল নগরজুড়ে ছিল দিনভর আতঙ্ক। গত মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী আল মামুন (শিহাব) নিহত এবং আগের দিন দুই ছাত্রদল কর্মী গুরুতর আহত হওয়ার জের ধরে দুই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলের কর্মী হত্যার ঘটনায় রাতেই ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ কর্মীরা নগরীতে ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে শতাধিক যানবাহনসহ অর্ধশত দোকানের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর থেকে নগরীতে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এসব ঘটনায় গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা করা হয়নি। তবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করেছে। মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পীযূষ কান্তি দে হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে খুন করেছে ছাত্রলীগ কর্মী শিহাবকে। তিনি এই হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন।
অপর দিকে মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ জানান, আল মামুন শিহাব হত্যার সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এদিকে গতকাল ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তরের পর আল মামুনের লাশ প্রথমে বাসায় নিয়ে আসা হয়। বাদ আসর নয়াসড়ক মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে মানিকপীর গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
অপর দিকে রাতের ভাংচুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ীরা গতকালও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে মেয়র ও চেম্বার নেতাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মসূচি তুলে নেন।
বিকালে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ রেজিস্টারি মাঠ থেকে এক শোক র্যালি বের করে। র্যালিটি জিন্দাবাজার হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা অবিলম্বে আল মামুন হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে জোরালো দাবি জানান।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর জিন্দাবাজার কাজী ম্যানশনে বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দাড়িয়াপাড়ার বাসায় ফেরার পথে নজরুল একাডেমির সামনে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী আল মামুনকে (১৮) উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। তাকে দ্রুত সিওমেক হাসপাতালে নেয়া হয়। ১৫ মিনিটের মধ্যে অপারেশন থিয়েটারে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মামুন নগরীর দাড়িয়াপাড়ার (মেঘনা-বি-১৪) আবু জাহেরের ছেলে। ৪ ভাই ও বোনের মধ্যে মামুন ছিল সবার ছোট। তাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। সে মদন মোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগের বিধান গ্রুপের কর্মী। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ছাত্রদলের জিন্দাবাজার গ্রুপের সন্ত্রাসীদের হামলায় সে খুন হয়েছে।
রাতের ঘটনাবলী : আল মামুন নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ছাত্রলীগের বিধান গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তারা ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া শতাধিক যানবাহন ও বাসায় ভাংচুর চালায়। রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে ছাত্রলীগের মিছিলকারীরা জিন্দাবাজার সিতারা ম্যানশনে যায়। এ সময় ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মীকে না পেয়ে বিপণি বিতানের সামনে রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। মোটরসাইকেলে লাগানো আগুনের শিখা জিন্দাবাজারস্থ ইকবাল সেন্টার ও পার্শ্ববর্তী ইউনাইটেড ক্লিনিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকলে দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর তারা জিন্দাবাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে হামলা চালায়। এতে জিন্দাবাজারে ফিজা অ্যান্ড কোং, ফটো সেন্টার, ভেনাস জুয়েলার্স, সানমুন হেয়ার, ইকবাল স্টোরসহ অর্ধশতাধিক দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছাত্রলীগের মিছিল জামতলায় গিয়ে অ্যাডভোকেট সজল দাশের বাসায় ভাংচুর করে। তার ছেলে ছাত্রদলের কর্মী। এরপর সশস্ত্র ছাত্রলীগ কর্মীরা নগরীর তালতলাস্থ গুলশান সেন্টারের সামনে চারটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার এবং ৫টি দোকান ভাংচুর করে। এ সময় ছাত্রদলের সাবেক নেতা মবিনুল হক রাহী ও তার প্রতিবেশী তৌহিদুল বাসিত চৌধুরীর বাসায় হামলা চালানো হয়। এরপর ছাত্রলীগের অপর একটি গ্রুপের নেতা আক্তারকে মারধর ও তার মোটরসাইকেলে ভাংচুর করে বলে জানা যায়। পরে মিছিলকারীরা ওসমানী হাসপাতালে গিয়েও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
আগের ঘটনা : গত সোমবার বেলা ৩টায় ছাত্রলীগের (বিধান গ্রুপ) হাতে তিলক ও আজাদ নামের ছাত্রদলের ২ কর্মী আহত হয়। নগরীর জল্লারপাড়ে এ দু’জনকে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এই হামলার প্রতিবাদে ছাত্রদলের জিন্দাবাজার গ্রুপ সন্ধ্যায় নগরীতে একটি মিছিল বের করে।
হাসপাতালে নেতারা : এদিকে ছাত্রলীগ কর্মী আল মামুন (শিহাব) হত্যার খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কাউন্সিলর জগদীশ দাশ, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জামিল, আওয়ামী লীগ নেতা বিধান কুমার সাহা, অ্যাডভোকেট নাসির আহমদ খান, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা ওসমানী হাসপাতালে ছুটে যান। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা পীযূষ কান্তি, জগতজ্যোতি তালুকদারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মামুনের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচার চেয়ে হাসপাতাল চত্বরেই বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ : জিন্দাবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা তাত্ক্ষণিক প্রতিবাদে নামেন। তারা জিন্দাবাজার পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টায় বিপুলসংখ্যক র্যাব-পুলিশ জিন্দাবাজারে ছুটে আসে। প্রশাসনের আশ্বাসে পরে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
মিসবাহ সিরাজ : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ছাত্রলীগ নেতা আল মামুন শিহাবের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায, ছাত্রলীগের এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপে মুসল্লিসহ ১০ ব্যবসায়ী ও কর্মচারী আহত হন। এ সময় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৭টার দিকে পুলিশ পুরো তালতলা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। এদিকে সিলেটে গত দুই দিনে দুই বড়
ছাত্র সংগঠনের মধ্য সৃষ্ট ঘটনায় তিন জন আহত হওয়ায় গতকাল নগরজুড়ে ছিল দিনভর আতঙ্ক। গত মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী আল মামুন (শিহাব) নিহত এবং আগের দিন দুই ছাত্রদল কর্মী গুরুতর আহত হওয়ার জের ধরে দুই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলের কর্মী হত্যার ঘটনায় রাতেই ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ কর্মীরা নগরীতে ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে শতাধিক যানবাহনসহ অর্ধশত দোকানের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর থেকে নগরীতে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এসব ঘটনায় গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা করা হয়নি। তবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করেছে। মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পীযূষ কান্তি দে হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে খুন করেছে ছাত্রলীগ কর্মী শিহাবকে। তিনি এই হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন।
অপর দিকে মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ জানান, আল মামুন শিহাব হত্যার সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এদিকে গতকাল ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তরের পর আল মামুনের লাশ প্রথমে বাসায় নিয়ে আসা হয়। বাদ আসর নয়াসড়ক মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে মানিকপীর গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
অপর দিকে রাতের ভাংচুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ীরা গতকালও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে মেয়র ও চেম্বার নেতাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মসূচি তুলে নেন।
বিকালে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ রেজিস্টারি মাঠ থেকে এক শোক র্যালি বের করে। র্যালিটি জিন্দাবাজার হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা অবিলম্বে আল মামুন হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে জোরালো দাবি জানান।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর জিন্দাবাজার কাজী ম্যানশনে বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দাড়িয়াপাড়ার বাসায় ফেরার পথে নজরুল একাডেমির সামনে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী আল মামুনকে (১৮) উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। তাকে দ্রুত সিওমেক হাসপাতালে নেয়া হয়। ১৫ মিনিটের মধ্যে অপারেশন থিয়েটারে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মামুন নগরীর দাড়িয়াপাড়ার (মেঘনা-বি-১৪) আবু জাহেরের ছেলে। ৪ ভাই ও বোনের মধ্যে মামুন ছিল সবার ছোট। তাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। সে মদন মোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগের বিধান গ্রুপের কর্মী। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ছাত্রদলের জিন্দাবাজার গ্রুপের সন্ত্রাসীদের হামলায় সে খুন হয়েছে।
রাতের ঘটনাবলী : আল মামুন নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ছাত্রলীগের বিধান গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তারা ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া শতাধিক যানবাহন ও বাসায় ভাংচুর চালায়। রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে ছাত্রলীগের মিছিলকারীরা জিন্দাবাজার সিতারা ম্যানশনে যায়। এ সময় ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মীকে না পেয়ে বিপণি বিতানের সামনে রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। মোটরসাইকেলে লাগানো আগুনের শিখা জিন্দাবাজারস্থ ইকবাল সেন্টার ও পার্শ্ববর্তী ইউনাইটেড ক্লিনিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকলে দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর তারা জিন্দাবাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে হামলা চালায়। এতে জিন্দাবাজারে ফিজা অ্যান্ড কোং, ফটো সেন্টার, ভেনাস জুয়েলার্স, সানমুন হেয়ার, ইকবাল স্টোরসহ অর্ধশতাধিক দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছাত্রলীগের মিছিল জামতলায় গিয়ে অ্যাডভোকেট সজল দাশের বাসায় ভাংচুর করে। তার ছেলে ছাত্রদলের কর্মী। এরপর সশস্ত্র ছাত্রলীগ কর্মীরা নগরীর তালতলাস্থ গুলশান সেন্টারের সামনে চারটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার এবং ৫টি দোকান ভাংচুর করে। এ সময় ছাত্রদলের সাবেক নেতা মবিনুল হক রাহী ও তার প্রতিবেশী তৌহিদুল বাসিত চৌধুরীর বাসায় হামলা চালানো হয়। এরপর ছাত্রলীগের অপর একটি গ্রুপের নেতা আক্তারকে মারধর ও তার মোটরসাইকেলে ভাংচুর করে বলে জানা যায়। পরে মিছিলকারীরা ওসমানী হাসপাতালে গিয়েও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
আগের ঘটনা : গত সোমবার বেলা ৩টায় ছাত্রলীগের (বিধান গ্রুপ) হাতে তিলক ও আজাদ নামের ছাত্রদলের ২ কর্মী আহত হয়। নগরীর জল্লারপাড়ে এ দু’জনকে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এই হামলার প্রতিবাদে ছাত্রদলের জিন্দাবাজার গ্রুপ সন্ধ্যায় নগরীতে একটি মিছিল বের করে।
হাসপাতালে নেতারা : এদিকে ছাত্রলীগ কর্মী আল মামুন (শিহাব) হত্যার খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কাউন্সিলর জগদীশ দাশ, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জামিল, আওয়ামী লীগ নেতা বিধান কুমার সাহা, অ্যাডভোকেট নাসির আহমদ খান, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা ওসমানী হাসপাতালে ছুটে যান। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা পীযূষ কান্তি, জগতজ্যোতি তালুকদারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মামুনের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচার চেয়ে হাসপাতাল চত্বরেই বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ : জিন্দাবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা তাত্ক্ষণিক প্রতিবাদে নামেন। তারা জিন্দাবাজার পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টায় বিপুলসংখ্যক র্যাব-পুলিশ জিন্দাবাজারে ছুটে আসে। প্রশাসনের আশ্বাসে পরে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
মিসবাহ সিরাজ : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ছাত্রলীগ নেতা আল মামুন শিহাবের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
No comments