তবু ৩ রানের আফসোস by নোমান মোহাম্মদ,
প্রতিশোধের মিশন ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। বছর দুয়েক আগে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে ধবল ধোলাইয়ের বদলা নেওয়ার সুযোগ ছিল তাদের সামনে। সেখানে উল্টো বাংলাদেশই কিনা প্রতিশোধ নিয়ে নিল! মাস ছয়েক আগে বিশ্বকাপে ৫৮ রানে অল আউট হওয়ার জবাব যে এবার দেওয়া গেল ক্যারিবীয়দের ৬১ রানে গুটিয়ে দিয়ে।বশ্বকাপে ওই ৫৮-কাণ্ড নিয়ে কথা বলতে ঘোর আপত্তি মুশফিকুর রহিমের। আগেও কয়েকবার ঠারেঠোরে জানিয়েছেন তা। কাল সংবাদ সম্মেলনে জানালেন স্পষ্ট করে। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক যাই বলুন, এই সিরিজের আবহজুড়ে কিন্তু ওই ৫৮ ফ্যাক্টর! সেটি বাংলাদেশ টোয়েন্টি টোয়েন্টি জেতার পরও ছিল।
প্রথম দুটো ওয়ানডেতে হারের পর তো আরো বেশি করে। বিশেষত দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের ১৮ রানে ৪ উইকেট চলে যাওয়ার পর শঙ্কার মেঘের আনাগোনা প্রবলভাবেই ছিল বিদ্যমান। কাল উল্টো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬১ রানে গুটিয়ে দিয়ে তা ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক মুশফিক তাই স্বস্তির সঙ্গে বলতে পারছেন, 'আশা করি, আজকের (গতকাল) পর ওই ৫৮-এর কথা আর কেউ বলবে না। বললেও সঙ্গে বলবে, ওদেরও আমরা ৬১ রানে অল আউট করেছিলাম।'
অথচ তৃতীয় ওয়ানডের আগে তেমন কোনো সম্ভাবনার কথা ঘুণাক্ষরেও কি ভেবেছিলেন মুশফিক? প্রশ্নই ওঠে না। প্রথম দুই ওয়ানডের নতজানু-বিধ্বস্ত দলকে চাঙ্গা করতেই তো ব্যস্ত ছিলেন তিনি। গলায় চাপ হয়ে বসে থাকা হাঁসফাঁস ভাবটা একটু কেটে যায় চট্টগ্রামে এসে। এই শহর যে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে ফিরিয়েছে কমই। দুই হাতে ভরিয়ে দিয়েছে বরাবর। তাই বলে এতটা!
পরশু দুপুরের আধ ঘণ্টার বৃষ্টির প্রতিক্রিয়ায় কাল খেলা শুরু হয়েছে আধ ঘণ্টা পর। প্রায় ১৭-১৮ ঘণ্টা ঢাকা থাকায় উইকেটে কিছুটা ময়েশ্চার থাকা স্বাভাবিক। টস জিতে বোলিং বেছে নিতে তাই ভাবতে হয়নি মুশফিককে। নতুন বলে শফিউল ইসলাম নতুন সঙ্গী নাজমুল হোসেনকে নিয়ে ভালোই চেপে ধরেছিলেন ক্যারিবীয়দের। তার পরও তো ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৩১ রানে পেঁৗছে যায় সফরকারীরা। ওই দশম ওভারে কিয়েরান পাওয়েল নাজমুলকে দুটো বাউন্ডারি মেরে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শেকল ছেঁড়ার। তখনো তো তাঁরা জানেন না সামনে কী সুনামি অপেক্ষা করে আছে!
একাদশ ওভারের পঞ্চম বলে সিরিজে বাংলাদেশের দুঃস্বপ্ন মারলন স্যামুয়েলসকে ফিরিয়ে দেন শফিউল। পরের ওভারে অধিনায়ক বল তুলে দিলেন নাসির হোসেনের হাতে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে যাঁর আগে কোনো উইকেট নেই। সেই অফস্পিনার টানা দুই বলে ফেরালেন পাওয়েল ও পোলার্ডকে। ১ উইকেটে ৩৩ থেকে ৫ বলের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরিণত হলো ৪ উইকেটে ৩৪-এ। মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট পতনের সেই যে শুরু, তাতে আর শেষ পর্যন্ত বাঁধ দিতে পারেনি তারা।
তবে সত্যি বলতে, ৫৮-এর কথা হয়তো তখনো ভাবেনি বাংলাদেশ। ৩৪ রানে ৪ উইকেট তুলে নেওয়া আর এমন কী! আগের ম্যাচেও তো বাংলাদেশ ১৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ২২০ রানে পেঁৗছে গিয়েছিল। কিন্তু কাল যে বাংলাদেশের বোলাররা ছিলেন দুর্বার। বিশেষ করে স্পিনাররা। শুরুর দুই উইকেট নিয়েছেন পেসাররা, মাঝে একটি উইকেটও_বাদবাকি ৭ উইকেট স্পিনারদের। ঢাকার উইকেটে বল ঘোরে না বলে ভীষণ আপত্তি ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের। চট্টগ্রামে রীতিমতো সর্পিল হয়ে গেল বলের দিক। নাসির হোসেন হয়ে উঠলেন মুত্তিয়া মুরালিধরন (অন্তত পাওয়েলের উইকেট নেওয়ার বলটিতে)। সাকিব আল হাসান ছিলেন স্বমহিমায় উজ্জ্বল। আর সোহরাওয়ার্দী শুভর জন্য খুব বেশি কাজ বাকি রাখেননি সতীর্থরা। সব মিলিয়ে তিন স্পিনারের মিলিত বোলিং বিশ্লেষণ ১০-১-২১-৭! বিস্ময় আরো বাড়বে যখন জানবেন, প্রথম দুই ওয়ানডেতে সেটি ছিল ৩০-০-১৬৪-০ এবং ২৫.৪-৩-১১২-২।
১২.৪ ওভারে ৩৬ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তখনো সাকিব কোনো উইকেট পাননি। পাবেন কী করে, তাঁকে বোলিংয়ে আনার সুযোগটাই যে পাচ্ছিলেন না অধিনায়ক। ত্রয়োদশ ওভারে তিনি এলেন, প্রথম বলেই তুলে নিলেন ড্যারেন সামির উইকেট, আর স্বাগতিকরাও তখন যেন প্রথমবারের মতো ঘ্রাণ পেল ৫৮-এর। মেতে উঠলেন তাঁরা শিকারের নেশায়। বল হাতে নেতৃত্বটা দিলেন বিশ্বকাপের অধিনায়ক সাকিব। ক্যারিবিয়ানদের শেষ পাঁচটি উইকেটের চারটিই তাঁর। ৫-০-১৬-৪ তাঁর ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। আর সে পথে আবদুর রাজ্জাক ও মাশরাফি বিন মর্তুজার পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে দেড় শ উইকেট পুরো করলেন এ বাঁহাতি স্পিন জাদুকর।
৪৮ রানে অষ্টম উইকেট পতনের পর ক্যারিবীয়রা গড়ে তুলেছিল প্রতিরোধ। প্রতিরোধ বলতে টানা ১৮ বলে উইকেট হারায়নি তারা! কার্লোস ব্রাথওয়েইটকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে আবার ৫৮-এর প্রতিশোধের কক্ষপথে ফেরান সাকিব। কিন্তু ওয়াইড থেকে ৪ রান দিয়ে নিজেই সেই সম্ভাবনা দেন মুছে। পরে সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে রসিকতা করতেও ছাড়েননি সাকিব। করবেনই তো! ২২তম ওভারের শেষ বলে তিনিই যে তুলে নেন ক্যারিবিয়ানদের শেষ উইকেট।
না হয় ৩ রান বেশিই করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার পরও ৫৮-এর বদলা হিসেবে ৬১ মন্দ কী!
অথচ তৃতীয় ওয়ানডের আগে তেমন কোনো সম্ভাবনার কথা ঘুণাক্ষরেও কি ভেবেছিলেন মুশফিক? প্রশ্নই ওঠে না। প্রথম দুই ওয়ানডের নতজানু-বিধ্বস্ত দলকে চাঙ্গা করতেই তো ব্যস্ত ছিলেন তিনি। গলায় চাপ হয়ে বসে থাকা হাঁসফাঁস ভাবটা একটু কেটে যায় চট্টগ্রামে এসে। এই শহর যে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে ফিরিয়েছে কমই। দুই হাতে ভরিয়ে দিয়েছে বরাবর। তাই বলে এতটা!
পরশু দুপুরের আধ ঘণ্টার বৃষ্টির প্রতিক্রিয়ায় কাল খেলা শুরু হয়েছে আধ ঘণ্টা পর। প্রায় ১৭-১৮ ঘণ্টা ঢাকা থাকায় উইকেটে কিছুটা ময়েশ্চার থাকা স্বাভাবিক। টস জিতে বোলিং বেছে নিতে তাই ভাবতে হয়নি মুশফিককে। নতুন বলে শফিউল ইসলাম নতুন সঙ্গী নাজমুল হোসেনকে নিয়ে ভালোই চেপে ধরেছিলেন ক্যারিবীয়দের। তার পরও তো ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৩১ রানে পেঁৗছে যায় সফরকারীরা। ওই দশম ওভারে কিয়েরান পাওয়েল নাজমুলকে দুটো বাউন্ডারি মেরে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শেকল ছেঁড়ার। তখনো তো তাঁরা জানেন না সামনে কী সুনামি অপেক্ষা করে আছে!
একাদশ ওভারের পঞ্চম বলে সিরিজে বাংলাদেশের দুঃস্বপ্ন মারলন স্যামুয়েলসকে ফিরিয়ে দেন শফিউল। পরের ওভারে অধিনায়ক বল তুলে দিলেন নাসির হোসেনের হাতে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে যাঁর আগে কোনো উইকেট নেই। সেই অফস্পিনার টানা দুই বলে ফেরালেন পাওয়েল ও পোলার্ডকে। ১ উইকেটে ৩৩ থেকে ৫ বলের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরিণত হলো ৪ উইকেটে ৩৪-এ। মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট পতনের সেই যে শুরু, তাতে আর শেষ পর্যন্ত বাঁধ দিতে পারেনি তারা।
তবে সত্যি বলতে, ৫৮-এর কথা হয়তো তখনো ভাবেনি বাংলাদেশ। ৩৪ রানে ৪ উইকেট তুলে নেওয়া আর এমন কী! আগের ম্যাচেও তো বাংলাদেশ ১৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ২২০ রানে পেঁৗছে গিয়েছিল। কিন্তু কাল যে বাংলাদেশের বোলাররা ছিলেন দুর্বার। বিশেষ করে স্পিনাররা। শুরুর দুই উইকেট নিয়েছেন পেসাররা, মাঝে একটি উইকেটও_বাদবাকি ৭ উইকেট স্পিনারদের। ঢাকার উইকেটে বল ঘোরে না বলে ভীষণ আপত্তি ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের। চট্টগ্রামে রীতিমতো সর্পিল হয়ে গেল বলের দিক। নাসির হোসেন হয়ে উঠলেন মুত্তিয়া মুরালিধরন (অন্তত পাওয়েলের উইকেট নেওয়ার বলটিতে)। সাকিব আল হাসান ছিলেন স্বমহিমায় উজ্জ্বল। আর সোহরাওয়ার্দী শুভর জন্য খুব বেশি কাজ বাকি রাখেননি সতীর্থরা। সব মিলিয়ে তিন স্পিনারের মিলিত বোলিং বিশ্লেষণ ১০-১-২১-৭! বিস্ময় আরো বাড়বে যখন জানবেন, প্রথম দুই ওয়ানডেতে সেটি ছিল ৩০-০-১৬৪-০ এবং ২৫.৪-৩-১১২-২।
১২.৪ ওভারে ৩৬ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তখনো সাকিব কোনো উইকেট পাননি। পাবেন কী করে, তাঁকে বোলিংয়ে আনার সুযোগটাই যে পাচ্ছিলেন না অধিনায়ক। ত্রয়োদশ ওভারে তিনি এলেন, প্রথম বলেই তুলে নিলেন ড্যারেন সামির উইকেট, আর স্বাগতিকরাও তখন যেন প্রথমবারের মতো ঘ্রাণ পেল ৫৮-এর। মেতে উঠলেন তাঁরা শিকারের নেশায়। বল হাতে নেতৃত্বটা দিলেন বিশ্বকাপের অধিনায়ক সাকিব। ক্যারিবিয়ানদের শেষ পাঁচটি উইকেটের চারটিই তাঁর। ৫-০-১৬-৪ তাঁর ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। আর সে পথে আবদুর রাজ্জাক ও মাশরাফি বিন মর্তুজার পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে দেড় শ উইকেট পুরো করলেন এ বাঁহাতি স্পিন জাদুকর।
৪৮ রানে অষ্টম উইকেট পতনের পর ক্যারিবীয়রা গড়ে তুলেছিল প্রতিরোধ। প্রতিরোধ বলতে টানা ১৮ বলে উইকেট হারায়নি তারা! কার্লোস ব্রাথওয়েইটকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে আবার ৫৮-এর প্রতিশোধের কক্ষপথে ফেরান সাকিব। কিন্তু ওয়াইড থেকে ৪ রান দিয়ে নিজেই সেই সম্ভাবনা দেন মুছে। পরে সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে রসিকতা করতেও ছাড়েননি সাকিব। করবেনই তো! ২২তম ওভারের শেষ বলে তিনিই যে তুলে নেন ক্যারিবিয়ানদের শেষ উইকেট।
না হয় ৩ রান বেশিই করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার পরও ৫৮-এর বদলা হিসেবে ৬১ মন্দ কী!
No comments