ব্ল্যাকের এক যুগ by কল্লোল মেহেদী
শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিন বন্ধু—জাহান, টনি আর জন। একই ক্লাসের একই শাখার ছাত্র ছিলেন তাঁরা। টনি ছিলেন খুব চঞ্চল, জাহান নিজেকে সব সময়ই একটু জ্ঞানী ভাবতেন আর জনের মধ্যে ছিল সিদ্ধান্তহীনতার একটা ব্যাপার। এই তিন বন্ধু মিলেই একদিন গড়ে তুললেন একটি ব্যান্ড, ব্ল্যাক। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে অনেকটা সময়, এক যুগ। বেরিয়েছে চারটি অ্যালবাম—আমার পৃথিবী (২০০২), উৎসবের পর (২০০৩), আবার (২০০৮) আর এবার রোজার ঈদে ব্ল্যাক।
ব্ল্যাক ব্যান্ডের কথা মনে হলেই শ্রোতাদের কানের কাছে বেজে ওঠে ‘তুমি কি সাড়া দেবে’, ‘হাত বাড়াও’, ‘আমরা’, ‘আমার পৃথিবী’, ‘পেপার রেডিও টিভি’ গানগুলো।
গত ১০ বছরে তাঁরা অংশ নিয়েছেন প্রায় হাজার তিনেক কনসার্টে। আসছে বছর গোড়ার দিকে নিজেদের শুরুর যুগপূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্ল্যাক।
যুগপূর্তির আগে একসঙ্গে পাওয়া গেল ব্ল্যাকের চার সদস্যকে। টনি, জাহান, জন তো ছিলেনই, তাঁদের সঙ্গে এই আড্ডায় আরও ছিলেন টিটো, নতুন সদস্য। সম্প্রতি এক শুক্রবার দুপুরের পর তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয় প্রথম আলো কার্যালয়ে।
আড্ডার শুরুতেই চলে এল যুগপূর্তির প্রসঙ্গ। যুগপূর্তি অনুষ্ঠানটি কেমন হবে? জন বললেন, ‘একটা কনসার্ট করব। শুধু কনসার্ট বললে ভুল হবে, আমরা বলছি পুনর্মিলনী। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় নানাভাবে ব্ল্যাকের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সবার অংশগ্রহণ থাকবে এই কনসার্টে। শুধু যে গান হবে তা নয়, দেখানো হবে ব্ল্যাকের ওপর তৈরি তথ্যচিত্রও। ব্ল্যাকের নানা গল্প থাকবে তাতে। ব্ল্যাকের শুধু চারজন সদস্যকেই সবাই চেনে। কিন্তু আজকের ব্ল্যাকের পেছনে অনেকের অবদান রয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে তাঁরা সহযোগিতা করেছেন। থাকবে সেসব মানুষের সাক্ষাৎকার, কথা।’
ব্ল্যাক এখন অনেক অভিজ্ঞ। অভিজ্ঞতার ছাপ তাদের গানে, পরিবেশনায়। তাই তো এবার ব্যান্ডের নামেই অ্যালবাম করেছে ব্ল্যাক। জন বললেন, ‘দেশে ও বিদেশে প্রায় সব নামী ব্যান্ডেরই নিজেদের নামে অ্যালবাম রয়েছে। আর ওই অ্যালবামটি ব্যান্ডের জন্য খুব উল্লেখযোগ্য একটি ব্যাপার। ব্যান্ডটিকে শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরে অ্যালবামটি। এক যুগ পেরিয়ে এসে আমরা এখন মনে করছি, আমাদের শব্দ, সুর আর তা প্রকাশ করার ভঙ্গি—সবকিছু আলাদা। এ সময়ে এসে তা নিজস্ব একটা মাত্রা তৈরি করেছে। ব্ল্যাক অ্যালবামে আমরা তেমনই কিছু গান করেছি। আমরা বলব, ব্ল্যাক অ্যালবামটি ব্ল্যাক ব্যান্ডের একটা পরিচিতি।’
এক যুগ পূর্তি হচ্ছে। তাই শুরুর দিকের গল্প শোনার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। জাহান বললেন, ‘আমরা প্রথম গান করেছিলাম নিজেদের স্কুলের এক ক্লাস পার্টিতে। এরপর নিজেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়—আমরা তো বাজাতে পারি।’
জন বললেন, ‘আমরা প্রথম মঞ্চে গান করেছিলাম ২০০০ সালে, কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে। মজার ব্যাপার হলো, গান গাওয়ার পর আমরা ছয় হাজার টাকা পেয়েছিলাম। শুরুর দিকে প্র্যাকটিস করতাম জাহানের বাসায়। রক মিউজিক, তার ওপর আমরা নতুন, আশপাশের সবার কী অবস্থা বুঝতেই পারছেন। এরপর চলে যাই শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের বেজমেন্টে। ওখানে ছিল একটা ভুতুড়ে পরিবেশ। তার পরও প্র্যাকটিসটা ভালোই হচ্ছিল। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর চার ঘণ্টা। একদিন সেখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সেখান থেকে চলে এলাম মগবাজারের বিভিন্ন প্র্যাকটিস প্যাডে।’
আরও অনেক ধারা থাকতে রক মিউজিক পছন্দ হলো কেন? টনি বললেন, ‘রক গান হলো লাইফস্টাইল। আর ওই বয়সে রক গান সবাইকে খুব টানে। রক গান শোনার জন্য কান থাকতে হয়। এখন তো নানা ধরনের রক গান হচ্ছে, আমরা কিন্তু শুরু থেকেই বেসিক রক ধারাটা চর্চা করছি। পাশাপাশি কথার মেজাজ, আশপাশের আবহ, নিজেদের মনের অবস্থা, ভাবনা—সবকিছু বুঝে তবেই গানটা কোন ধারার রক গান হবে, সেটা চূড়ান্ত করি।’
আর জাহান বললেন, ‘আমাদের ধারাটা বিদেশি, তবে ভাষাটা দেশি। আর প্রকাশ করছি আমরা, এ দেশের তরুণেরা। পুরো ব্যাপারটার মধ্যে একটা ফিউশন কাজ করে।’
অনেক শ্রোতার কাছেই ব্ল্যাকের সঙ্গে তাহসান নামটা এখনো জড়িয়ে আছে। জন বললেন, ‘শুরুর দিকে কিছুটা সময় ও আমাদের সঙ্গে ছিল। পরে ওর ব্যস্ততার কারণে আর পারেনি। তবে তাহসান এখনো আমাদের ভালো বন্ধু।’
বছর দুয়েক হলো ব্ল্যাকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন টিটো, বেস গিটার বাজান। আড্ডার প্রায় পুরো সময়টাই তিনি শুধু শুনেছেন।
বিকেল খুব দ্রুত গড়িয়ে সন্ধ্যার দিকে যাচ্ছে। একটু দেরি হলে দিনের আলোয় ছবি তোলা সম্ভব হবে না। বারবার তাড়া দিচ্ছেন আলোকচিত্রী। আড্ডা শেষ করতে হবে।
জন জানালেন, এবার ব্ল্যাক জার্মানির এক পপ ব্যান্ডের সঙ্গে দুটি কনসার্ট করবে। ব্যান্ডটির নাম ইয়ানস ফ্রিবে। কনসার্ট দুটির প্রথমটি হবে ১১ অক্টোবর চট্টগ্রামে, আর দ্বিতীয়টি ১৩ অক্টোবর ঢাকায়। আয়োজন করেছে জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। জার্মানির এই ইয়ানস ফ্রিবে ব্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে অ্যালবাম করবে ব্ল্যাক। আর তা বাজারজাত হবে বাংলাদেশ ও জার্মানিতে।
গত ১০ বছরে তাঁরা অংশ নিয়েছেন প্রায় হাজার তিনেক কনসার্টে। আসছে বছর গোড়ার দিকে নিজেদের শুরুর যুগপূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্ল্যাক।
যুগপূর্তির আগে একসঙ্গে পাওয়া গেল ব্ল্যাকের চার সদস্যকে। টনি, জাহান, জন তো ছিলেনই, তাঁদের সঙ্গে এই আড্ডায় আরও ছিলেন টিটো, নতুন সদস্য। সম্প্রতি এক শুক্রবার দুপুরের পর তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয় প্রথম আলো কার্যালয়ে।
আড্ডার শুরুতেই চলে এল যুগপূর্তির প্রসঙ্গ। যুগপূর্তি অনুষ্ঠানটি কেমন হবে? জন বললেন, ‘একটা কনসার্ট করব। শুধু কনসার্ট বললে ভুল হবে, আমরা বলছি পুনর্মিলনী। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় নানাভাবে ব্ল্যাকের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সবার অংশগ্রহণ থাকবে এই কনসার্টে। শুধু যে গান হবে তা নয়, দেখানো হবে ব্ল্যাকের ওপর তৈরি তথ্যচিত্রও। ব্ল্যাকের নানা গল্প থাকবে তাতে। ব্ল্যাকের শুধু চারজন সদস্যকেই সবাই চেনে। কিন্তু আজকের ব্ল্যাকের পেছনে অনেকের অবদান রয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে তাঁরা সহযোগিতা করেছেন। থাকবে সেসব মানুষের সাক্ষাৎকার, কথা।’
ব্ল্যাক এখন অনেক অভিজ্ঞ। অভিজ্ঞতার ছাপ তাদের গানে, পরিবেশনায়। তাই তো এবার ব্যান্ডের নামেই অ্যালবাম করেছে ব্ল্যাক। জন বললেন, ‘দেশে ও বিদেশে প্রায় সব নামী ব্যান্ডেরই নিজেদের নামে অ্যালবাম রয়েছে। আর ওই অ্যালবামটি ব্যান্ডের জন্য খুব উল্লেখযোগ্য একটি ব্যাপার। ব্যান্ডটিকে শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরে অ্যালবামটি। এক যুগ পেরিয়ে এসে আমরা এখন মনে করছি, আমাদের শব্দ, সুর আর তা প্রকাশ করার ভঙ্গি—সবকিছু আলাদা। এ সময়ে এসে তা নিজস্ব একটা মাত্রা তৈরি করেছে। ব্ল্যাক অ্যালবামে আমরা তেমনই কিছু গান করেছি। আমরা বলব, ব্ল্যাক অ্যালবামটি ব্ল্যাক ব্যান্ডের একটা পরিচিতি।’
এক যুগ পূর্তি হচ্ছে। তাই শুরুর দিকের গল্প শোনার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। জাহান বললেন, ‘আমরা প্রথম গান করেছিলাম নিজেদের স্কুলের এক ক্লাস পার্টিতে। এরপর নিজেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়—আমরা তো বাজাতে পারি।’
জন বললেন, ‘আমরা প্রথম মঞ্চে গান করেছিলাম ২০০০ সালে, কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে। মজার ব্যাপার হলো, গান গাওয়ার পর আমরা ছয় হাজার টাকা পেয়েছিলাম। শুরুর দিকে প্র্যাকটিস করতাম জাহানের বাসায়। রক মিউজিক, তার ওপর আমরা নতুন, আশপাশের সবার কী অবস্থা বুঝতেই পারছেন। এরপর চলে যাই শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের বেজমেন্টে। ওখানে ছিল একটা ভুতুড়ে পরিবেশ। তার পরও প্র্যাকটিসটা ভালোই হচ্ছিল। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর চার ঘণ্টা। একদিন সেখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সেখান থেকে চলে এলাম মগবাজারের বিভিন্ন প্র্যাকটিস প্যাডে।’
আরও অনেক ধারা থাকতে রক মিউজিক পছন্দ হলো কেন? টনি বললেন, ‘রক গান হলো লাইফস্টাইল। আর ওই বয়সে রক গান সবাইকে খুব টানে। রক গান শোনার জন্য কান থাকতে হয়। এখন তো নানা ধরনের রক গান হচ্ছে, আমরা কিন্তু শুরু থেকেই বেসিক রক ধারাটা চর্চা করছি। পাশাপাশি কথার মেজাজ, আশপাশের আবহ, নিজেদের মনের অবস্থা, ভাবনা—সবকিছু বুঝে তবেই গানটা কোন ধারার রক গান হবে, সেটা চূড়ান্ত করি।’
আর জাহান বললেন, ‘আমাদের ধারাটা বিদেশি, তবে ভাষাটা দেশি। আর প্রকাশ করছি আমরা, এ দেশের তরুণেরা। পুরো ব্যাপারটার মধ্যে একটা ফিউশন কাজ করে।’
অনেক শ্রোতার কাছেই ব্ল্যাকের সঙ্গে তাহসান নামটা এখনো জড়িয়ে আছে। জন বললেন, ‘শুরুর দিকে কিছুটা সময় ও আমাদের সঙ্গে ছিল। পরে ওর ব্যস্ততার কারণে আর পারেনি। তবে তাহসান এখনো আমাদের ভালো বন্ধু।’
বছর দুয়েক হলো ব্ল্যাকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন টিটো, বেস গিটার বাজান। আড্ডার প্রায় পুরো সময়টাই তিনি শুধু শুনেছেন।
বিকেল খুব দ্রুত গড়িয়ে সন্ধ্যার দিকে যাচ্ছে। একটু দেরি হলে দিনের আলোয় ছবি তোলা সম্ভব হবে না। বারবার তাড়া দিচ্ছেন আলোকচিত্রী। আড্ডা শেষ করতে হবে।
জন জানালেন, এবার ব্ল্যাক জার্মানির এক পপ ব্যান্ডের সঙ্গে দুটি কনসার্ট করবে। ব্যান্ডটির নাম ইয়ানস ফ্রিবে। কনসার্ট দুটির প্রথমটি হবে ১১ অক্টোবর চট্টগ্রামে, আর দ্বিতীয়টি ১৩ অক্টোবর ঢাকায়। আয়োজন করেছে জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। জার্মানির এই ইয়ানস ফ্রিবে ব্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে অ্যালবাম করবে ব্ল্যাক। আর তা বাজারজাত হবে বাংলাদেশ ও জার্মানিতে।
No comments