ভোটের হিসাব কষছেন প্রার্থীরা
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তিন হেভিওয়েট প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা এখন ব্যস্ত ভোটের হিসাব মেলাতে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় কোন দলের কত ভোট রয়েছে এবং কীভাবে সে ভোট নিজেদের পক্ষে আনা যায় তার কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত তারা। আওয়ামী লীগ এখনও প্রকাশ্যে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি।
এ কারণে দলীয় নেতাকর্মীরা এখনও কারও পক্ষে ভোট চাইতে পারছেন না। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার দলীয় নেতাকর্মীদের কাজে লাগিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের নির্ধারিত ভোট আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষেই যাবে বলে আশা করছেন দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। কিন্তু দেশের রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট হয়ে ওঠা এ নির্বাচনে দল না কি ব্যক্তি ইমেজই
শেষ পর্যন্ত বড় হয়ে উঠবে
ভোটারদের কাছে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশী সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান দাবি করেছেন, ভোটের হিসাবে তিনি এগিয়ে আছেন। কারণ বিলুপ্ত যে ৩টি পৌর এলাকা নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠিত হয়েছে তার একটি এলাকার সাবেক সাংসদ তিনি। এ ছাড়া ওই সময় তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফলে ৩টি এলাকাতেই তার দলীয় কর্মী রয়েছে, যারা নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ করবে। এ ছাড়া বন্দর এলাকার বর্তমান সাংসদ নাসিম ওসমান তার আপন বড় ভাই হওয়ায় ভাইয়ের রিজার্ভ ভোট শামীম ওসমানের পক্ষে যাবে বলে তিনি দাবি করেন। আর নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকায় আওয়ামী লীগের মধ্যে অতীত থেকেই উত্তর আর দক্ষিণের বিভাজন থাকায় উত্তর এলাকার সন্তান হিসেবে শামীম ওসমান উত্তর এলাকার বেশির ভাগ ভোট পাওয়ার আশা করছেন। আর শহরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট যাবে আওয়ামী লীগের সমর্থন যে পাবে তার বাক্সে। ফলে দলীয় সমর্থন অনেকটা নিশ্চিত হওয়ায় শামীম ওসমান অনায়াসে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
এদিকে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে ভিন্ন চিত্র। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শামীম ওসমান '৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সাংসদ থাকাকালে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় নূর হোসেন এবং নজরুল ইসলামদের সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিল। শামীম ওসমান সিটি মেয়র নির্বাচিত হলে নূর হোসেন এবং নজরুল গং আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে ওই এলাকায়।
বন্দরে শামীম ওসমানের বড় ভাই নাসিম ওসমান সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর গত আড়াই বছরে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক উন্নয়ন করতে পারেননি। বন্দরবাসী নাসিম ওসমানের ওপর ক্ষুব্ধ। তাদের এ ক্ষোভের আগুন শামীম ওসমানের নির্বাচনে বুমেরাং হতে পারে। তাছাড়া নাসিম ওসমান জাপা থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হওয়ায় বন্দরের আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এ কারণে বন্দরবাসী তাদের মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া শামীম ওসমানকে ভোট দেবেন_ এমন নিশ্চয়তা নেই।
বন্দরের ফরাজীকান্দার বাসিন্দা বাদশাহ জানান, তাদের পরিবারে ২৮টি ভোট রয়েছে। সংসদ নির্বাচন হলে ভোটগুলো বিএনপির পক্ষে যেত। কিন্তু সিটি নির্বাচনে ভোটগুলো আইভীর পক্ষে যাবে। কারণ আইভী নারায়ণগঞ্জ পৌর এলাকার উন্নয়ন করে দেখিয়েছেন তিনি উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চান। বন্দরবাসী জলাবদ্ধতা এবং বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট নিয়ে বিপাকে রয়েছে। ওই এলাকায় যানবাহন নিয়ে চলাচলই দায় হয়ে পড়েছে। যদিও সাংসদ নাসিম ওসমানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তার উন্নয়ন কাজ শত্রুপক্ষ বন্ধ করে রেখেছে।
আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশী অপর প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ভোটের হিসাব নিয়ে অবশ্য ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের দিন যদি ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সে ক্ষেত্রে তিনি বিজয়ী হবেনই। কারণ তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ এবং বন্দরের যেসব এলাকাতেই গেছেন সেখানেই প্রয়াত আলী আহাম্মদ চুনকার মেয়ে হিসেবে তাকে সবাই কাছে টেনে নিচ্ছে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ পৌর এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের চেষ্টা করায় সাধারণ মানুষ তাকে নিয়ে আশাবাদী। আর নারায়ণগঞ্জ পৌর এলাকার মেয়র হিসেবে তিনি কতটা পৌরবাসীর জন্য করতে পেরেছেন সেটা পৌরবাসীই মূল্যায়ন করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ১৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক চিকিৎসক জানান, তার পোস্টিং জেলার বাইরে। ছুটিতে তিনি নারায়ণগঞ্জ এসেছেন। কিন্তু তিনি আগামী ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ আসবেন ডা. আইভীকে ভোট দিতে। আইভীর প্রতি ওই চিকিৎসকের মূল্যায়ন শুধু উন্নয়ন করার জন্য। বন্দরের সোনাকান্দা হাজিপুর এলাকার গৃহবধূ দীপা জানান, বন্দরের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। অথচ পাশেই নারায়ণগঞ্জ শহরের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি জানতে পেরেছেন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আইভী নারায়ণগঞ্জের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইভীকে ভোট দেবেন। অন্যদিকে আইভী নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হওয়ায় এবং নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় সিদ্ধিরগঞ্জে তার তেমন কোন নেতাকর্মী নেই। সেদিক বিবেচনায় সিদ্ধিরগঞ্জে এগিয়ে রয়েছেন শামীম ওসমান।
এদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার দাবি করেছেন, গত পৌনে ৩ বছর আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের জন্য ভালো বা কল্যাণকর কোনো কিছু করেনি। তাই সাধারণ ভোটাররা আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। গ্যাস আর বিদ্যুৎ সংকটেই মানুষের ত্রাহি অবস্থা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এ জন্য আওয়ামী লীগ কাকে সমর্থন দেবে সেটা নিয়ে তিনি মোটেও চিন্তিত নন। সাধারণ ভোটাররা আওয়ামী দুঃশাসনের জবাব এ নির্বাচনের মাধ্যমে দিতে মুখিয়ে রয়েছে।
চেয়ারপারসন দলের কোন্দল মিটিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত তৈমুর আলমের সঙ্গে অতীতের বিরোধের রেশ ধরে যদি দলের ভেতরে থাকা বিরোধী ওই শক্তিটি ঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে তা তৈমুর আলমের পরাজয়ের জন্য যথেষ্ট। দলটির স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ করার শর্তে এমনটাই আভাস দিয়েছেন।
সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার সাধারণ ভোটার যারা সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, তারা চান একজন ভালো মেয়র। যার কাছে তারা সহজেই যেতে এবং কাজ করিয়ে আনতে পারবেন। যার কাছে সব সময় যাওয়া যাবে। নির্বাচনের আগে কোনো উন্নয়নের ফুলঝুরি ভোটাররা শুনতে চান না। তারা চান নির্বাচিত ব্যক্তিটি যেন এলাকার চাহিদা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন কাজটি সঠিকভাবে করেন।
২৭ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে
২৪৩ মনোনয়ন বৈধ
নারায়ণগঞ্জে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার ২১টি ওয়ার্ডের (৭ থেকে ২৭নং) সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ১২৫ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকা ও ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন অভিযোগে গতকাল ১৯ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কাগজপত্রে ত্রুটির কারণে ৮ জনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ২ দিনে ২৭৮ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ২৪৩ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বাতিল হয়েছে ২৭ জনের মনোনয়ন। তবে যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা আগামী ৩ দিনের মধ্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করতে পারবেন। পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে আপিলের নিষ্পত্তি হবে।
শেষ পর্যন্ত বড় হয়ে উঠবে
ভোটারদের কাছে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশী সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান দাবি করেছেন, ভোটের হিসাবে তিনি এগিয়ে আছেন। কারণ বিলুপ্ত যে ৩টি পৌর এলাকা নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠিত হয়েছে তার একটি এলাকার সাবেক সাংসদ তিনি। এ ছাড়া ওই সময় তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফলে ৩টি এলাকাতেই তার দলীয় কর্মী রয়েছে, যারা নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ করবে। এ ছাড়া বন্দর এলাকার বর্তমান সাংসদ নাসিম ওসমান তার আপন বড় ভাই হওয়ায় ভাইয়ের রিজার্ভ ভোট শামীম ওসমানের পক্ষে যাবে বলে তিনি দাবি করেন। আর নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকায় আওয়ামী লীগের মধ্যে অতীত থেকেই উত্তর আর দক্ষিণের বিভাজন থাকায় উত্তর এলাকার সন্তান হিসেবে শামীম ওসমান উত্তর এলাকার বেশির ভাগ ভোট পাওয়ার আশা করছেন। আর শহরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট যাবে আওয়ামী লীগের সমর্থন যে পাবে তার বাক্সে। ফলে দলীয় সমর্থন অনেকটা নিশ্চিত হওয়ায় শামীম ওসমান অনায়াসে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
এদিকে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে ভিন্ন চিত্র। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শামীম ওসমান '৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সাংসদ থাকাকালে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় নূর হোসেন এবং নজরুল ইসলামদের সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিল। শামীম ওসমান সিটি মেয়র নির্বাচিত হলে নূর হোসেন এবং নজরুল গং আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে ওই এলাকায়।
বন্দরে শামীম ওসমানের বড় ভাই নাসিম ওসমান সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর গত আড়াই বছরে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক উন্নয়ন করতে পারেননি। বন্দরবাসী নাসিম ওসমানের ওপর ক্ষুব্ধ। তাদের এ ক্ষোভের আগুন শামীম ওসমানের নির্বাচনে বুমেরাং হতে পারে। তাছাড়া নাসিম ওসমান জাপা থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হওয়ায় বন্দরের আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এ কারণে বন্দরবাসী তাদের মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া শামীম ওসমানকে ভোট দেবেন_ এমন নিশ্চয়তা নেই।
বন্দরের ফরাজীকান্দার বাসিন্দা বাদশাহ জানান, তাদের পরিবারে ২৮টি ভোট রয়েছে। সংসদ নির্বাচন হলে ভোটগুলো বিএনপির পক্ষে যেত। কিন্তু সিটি নির্বাচনে ভোটগুলো আইভীর পক্ষে যাবে। কারণ আইভী নারায়ণগঞ্জ পৌর এলাকার উন্নয়ন করে দেখিয়েছেন তিনি উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চান। বন্দরবাসী জলাবদ্ধতা এবং বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট নিয়ে বিপাকে রয়েছে। ওই এলাকায় যানবাহন নিয়ে চলাচলই দায় হয়ে পড়েছে। যদিও সাংসদ নাসিম ওসমানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তার উন্নয়ন কাজ শত্রুপক্ষ বন্ধ করে রেখেছে।
আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশী অপর প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ভোটের হিসাব নিয়ে অবশ্য ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের দিন যদি ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সে ক্ষেত্রে তিনি বিজয়ী হবেনই। কারণ তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ এবং বন্দরের যেসব এলাকাতেই গেছেন সেখানেই প্রয়াত আলী আহাম্মদ চুনকার মেয়ে হিসেবে তাকে সবাই কাছে টেনে নিচ্ছে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ পৌর এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের চেষ্টা করায় সাধারণ মানুষ তাকে নিয়ে আশাবাদী। আর নারায়ণগঞ্জ পৌর এলাকার মেয়র হিসেবে তিনি কতটা পৌরবাসীর জন্য করতে পেরেছেন সেটা পৌরবাসীই মূল্যায়ন করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ১৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক চিকিৎসক জানান, তার পোস্টিং জেলার বাইরে। ছুটিতে তিনি নারায়ণগঞ্জ এসেছেন। কিন্তু তিনি আগামী ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ আসবেন ডা. আইভীকে ভোট দিতে। আইভীর প্রতি ওই চিকিৎসকের মূল্যায়ন শুধু উন্নয়ন করার জন্য। বন্দরের সোনাকান্দা হাজিপুর এলাকার গৃহবধূ দীপা জানান, বন্দরের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। অথচ পাশেই নারায়ণগঞ্জ শহরের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি জানতে পেরেছেন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আইভী নারায়ণগঞ্জের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইভীকে ভোট দেবেন। অন্যদিকে আইভী নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হওয়ায় এবং নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় সিদ্ধিরগঞ্জে তার তেমন কোন নেতাকর্মী নেই। সেদিক বিবেচনায় সিদ্ধিরগঞ্জে এগিয়ে রয়েছেন শামীম ওসমান।
এদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার দাবি করেছেন, গত পৌনে ৩ বছর আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের জন্য ভালো বা কল্যাণকর কোনো কিছু করেনি। তাই সাধারণ ভোটাররা আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। গ্যাস আর বিদ্যুৎ সংকটেই মানুষের ত্রাহি অবস্থা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এ জন্য আওয়ামী লীগ কাকে সমর্থন দেবে সেটা নিয়ে তিনি মোটেও চিন্তিত নন। সাধারণ ভোটাররা আওয়ামী দুঃশাসনের জবাব এ নির্বাচনের মাধ্যমে দিতে মুখিয়ে রয়েছে।
চেয়ারপারসন দলের কোন্দল মিটিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত তৈমুর আলমের সঙ্গে অতীতের বিরোধের রেশ ধরে যদি দলের ভেতরে থাকা বিরোধী ওই শক্তিটি ঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে তা তৈমুর আলমের পরাজয়ের জন্য যথেষ্ট। দলটির স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ করার শর্তে এমনটাই আভাস দিয়েছেন।
সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার সাধারণ ভোটার যারা সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, তারা চান একজন ভালো মেয়র। যার কাছে তারা সহজেই যেতে এবং কাজ করিয়ে আনতে পারবেন। যার কাছে সব সময় যাওয়া যাবে। নির্বাচনের আগে কোনো উন্নয়নের ফুলঝুরি ভোটাররা শুনতে চান না। তারা চান নির্বাচিত ব্যক্তিটি যেন এলাকার চাহিদা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন কাজটি সঠিকভাবে করেন।
২৭ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে
২৪৩ মনোনয়ন বৈধ
নারায়ণগঞ্জে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার ২১টি ওয়ার্ডের (৭ থেকে ২৭নং) সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ১২৫ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকা ও ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন অভিযোগে গতকাল ১৯ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কাগজপত্রে ত্রুটির কারণে ৮ জনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ২ দিনে ২৭৮ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ২৪৩ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বাতিল হয়েছে ২৭ জনের মনোনয়ন। তবে যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা আগামী ৩ দিনের মধ্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করতে পারবেন। পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে আপিলের নিষ্পত্তি হবে।
No comments