সচেতনতায় প্রতিরোধ সম্ভবঃ ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে by হামিদ উল্লাহ
চট্টগ্রামে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। মশার কামড় থেকে রক্ষায় জনসচেতনতার অভাব এবং ময়লা-আবর্জনা অপসারণে সিটি করপোরেশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় মারাত্মক এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চট্টগ্রামে এ বছর ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। এসব রোগীর তালিকায় সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও আছেন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহম্মদ এবং বিআরটিএর একজন সহকারী পরিচালকও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
চমেক হাসপাতালের ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে ডেঙ্গু-আক্রান্ত ২৮ জন রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। অথচ গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১১। নগরের কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, এগুলোয় মোট শয্যাসংখ্যার বেশির ভাগ ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীর দখলে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, রোগনির্ণয়কেন্দ্রগুলোর (ডায়াগনোসিস সেন্টার) বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনের কারণে অনেক সময় ডেঙ্গু রোগীকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। টাইফয়েড কিংবা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগী বলে শনাক্ত করে চিকিৎসা দেওয়ার কিছুদিন পর দেখা যাচ্ছে, আসলে তারা ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগী। আবার ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগী বলে শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরুর পর দেখা গেছে, ভাইরাস কিংবা অন্য কারণে রোগীর শরীরে জ্বর এসেছে। রোগনির্ণয় ও চিকিৎসাব্যবস্থায় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কারণে এসব হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন আবু তৈয়ব ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত ভোররাত (চারটা-পাঁচটা) ও সন্ধ্যার আগে আগে এডিস মশা কাউকে কামড় দিলে ডেঙ্গু রোগ সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। এ কারণে দিন-রাতের এ দুই সময়ে মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য মশারি ব্যবহার কিংবা অন্য কোনো ব্যবস্থা নিলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি কমে যায়। তিনি আরও বলেন, ঘরের মধ্যে ফুলের টব, ফ্রিজস্ট্যান্ডে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশ বিস্তার করে। অনেক সময় রাস্তাঘাটে ফেলে দেওয়া ডাবের খোসায় পানি জমলে সেখান থেকেও এডিস মশার বিস্তার হতে পারে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, বর্ষার শেষে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকা ছাড়াও স্যাঁতসেঁতে জায়গা ও ময়লার ভাগাড়কে কেন্দ্র করে মশার আবাস গড়ে ওঠে। এ সময় অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছ পানিতে জন্ম নেয় এডিস মশা, যার আক্রমণে ডেঙ্গু রোগ হয়। এ রোগ থেকে বাঁচতে হলে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের ওপরই বেশি গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য বাড়ির আশপাশের পরিবেশ, ফুলের টবসহ স্বচ্ছ পানি জমে থাকা পাত্র, ডাবের খোসা ইত্যাদি পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক তারিক আল নাসির এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, এডিস মশা কামড়ালে রোগীর ডেঙ্গু হয়। তবে বারবার কামড়ালে রোগীর জন্য তা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এতে রোগীর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়। এ জন্য এডিস মশা যাতে কামড়াতে না পারে, সেটাই সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম আকতার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে যেসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে, সেখানে আসা রোগীদের আমরা নিয়মিত তথ্য দিচ্ছি। তবে ডেঙ্গুরোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভয়ের কিছু নেই।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান বলেন, মশা নিধনের লক্ষ্যে প্রতিদিন নগরের তিনটি ওয়ার্ডে ১২০ জন কর্মী মশার ডিম ধ্বংসকারী ওষুধ (লারবিসাইড) ছিটাচ্ছেন। এতে বেশির ভাগ এলাকায় মশার প্রাদুর্ভাব কমেছে। তিনি বলেন, সাধারণ মশার চেয়ে এডিশ মশার কামড় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়। কিন্তু এডিশ মশা নালা-নর্দমায় ডিম ছাড়ে না। ফলে এডিশ মশার আস্তানা ধ্বংস করতে জনগণের সচেতনতার বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে শিগগিরই সংবাদপত্রে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও এখনো বৃষ্টিপাত একেবারে বন্ধ হয়নি। নগরের নালা-নর্দমা ছাড়াও বিচ্ছিন্ন খোলা জায়গায় এখনো পানি জমে আছে। ফলে মশা নিধনের জন্য এ সময়টাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মশা নিধনের কার্যক্রম সত্ত্বেও কিছু কিছু জায়গায় তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাঁরা বলেন, যেসব এলাকায় নালার পানি দ্রুত নিষ্কাশন হয় না, সেখানে নিরাপদে মশা ডিম ছাড়ে। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে বৃহত্তর চান্দগাঁও, ষোলশহর, বাকলিয়া, কাতালগঞ্জ, হালিশহর ইত্যাদি। চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মশা তাড়ানোর জন্য নানাভাবে উদ্যোগ নিয়েছি। খাল-নালা পরিষ্কার করেছি। তবে নালার পানি দ্রুত সরে না যাওয়ায় চান্দগাঁও এলাকায় ব্যাপক মশা জন্মায়।’
অভিযোগ পাওয়া গেছে, রোগনির্ণয়কেন্দ্রগুলোর (ডায়াগনোসিস সেন্টার) বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনের কারণে অনেক সময় ডেঙ্গু রোগীকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। টাইফয়েড কিংবা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগী বলে শনাক্ত করে চিকিৎসা দেওয়ার কিছুদিন পর দেখা যাচ্ছে, আসলে তারা ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগী। আবার ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগী বলে শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরুর পর দেখা গেছে, ভাইরাস কিংবা অন্য কারণে রোগীর শরীরে জ্বর এসেছে। রোগনির্ণয় ও চিকিৎসাব্যবস্থায় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কারণে এসব হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন আবু তৈয়ব ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত ভোররাত (চারটা-পাঁচটা) ও সন্ধ্যার আগে আগে এডিস মশা কাউকে কামড় দিলে ডেঙ্গু রোগ সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। এ কারণে দিন-রাতের এ দুই সময়ে মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য মশারি ব্যবহার কিংবা অন্য কোনো ব্যবস্থা নিলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি কমে যায়। তিনি আরও বলেন, ঘরের মধ্যে ফুলের টব, ফ্রিজস্ট্যান্ডে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশ বিস্তার করে। অনেক সময় রাস্তাঘাটে ফেলে দেওয়া ডাবের খোসায় পানি জমলে সেখান থেকেও এডিস মশার বিস্তার হতে পারে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, বর্ষার শেষে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকা ছাড়াও স্যাঁতসেঁতে জায়গা ও ময়লার ভাগাড়কে কেন্দ্র করে মশার আবাস গড়ে ওঠে। এ সময় অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছ পানিতে জন্ম নেয় এডিস মশা, যার আক্রমণে ডেঙ্গু রোগ হয়। এ রোগ থেকে বাঁচতে হলে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের ওপরই বেশি গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য বাড়ির আশপাশের পরিবেশ, ফুলের টবসহ স্বচ্ছ পানি জমে থাকা পাত্র, ডাবের খোসা ইত্যাদি পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক তারিক আল নাসির এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, এডিস মশা কামড়ালে রোগীর ডেঙ্গু হয়। তবে বারবার কামড়ালে রোগীর জন্য তা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এতে রোগীর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়। এ জন্য এডিস মশা যাতে কামড়াতে না পারে, সেটাই সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম আকতার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে যেসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে, সেখানে আসা রোগীদের আমরা নিয়মিত তথ্য দিচ্ছি। তবে ডেঙ্গুরোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভয়ের কিছু নেই।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান বলেন, মশা নিধনের লক্ষ্যে প্রতিদিন নগরের তিনটি ওয়ার্ডে ১২০ জন কর্মী মশার ডিম ধ্বংসকারী ওষুধ (লারবিসাইড) ছিটাচ্ছেন। এতে বেশির ভাগ এলাকায় মশার প্রাদুর্ভাব কমেছে। তিনি বলেন, সাধারণ মশার চেয়ে এডিশ মশার কামড় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়। কিন্তু এডিশ মশা নালা-নর্দমায় ডিম ছাড়ে না। ফলে এডিশ মশার আস্তানা ধ্বংস করতে জনগণের সচেতনতার বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে শিগগিরই সংবাদপত্রে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও এখনো বৃষ্টিপাত একেবারে বন্ধ হয়নি। নগরের নালা-নর্দমা ছাড়াও বিচ্ছিন্ন খোলা জায়গায় এখনো পানি জমে আছে। ফলে মশা নিধনের জন্য এ সময়টাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মশা নিধনের কার্যক্রম সত্ত্বেও কিছু কিছু জায়গায় তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাঁরা বলেন, যেসব এলাকায় নালার পানি দ্রুত নিষ্কাশন হয় না, সেখানে নিরাপদে মশা ডিম ছাড়ে। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে বৃহত্তর চান্দগাঁও, ষোলশহর, বাকলিয়া, কাতালগঞ্জ, হালিশহর ইত্যাদি। চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মশা তাড়ানোর জন্য নানাভাবে উদ্যোগ নিয়েছি। খাল-নালা পরিষ্কার করেছি। তবে নালার পানি দ্রুত সরে না যাওয়ায় চান্দগাঁও এলাকায় ব্যাপক মশা জন্মায়।’
No comments