জ্বলেই নিভে গেছে বিনা মূল্যের বাল্ব
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সরকার গত বছর বেশ ঘটা করে দেশের ৩৮টি জেলায় যে এক কোটি পাঁচ লাখ এনার্জি সেভিং বাল্ব বিনা মূল্যে বিতরণ করেছিল, এর ৮০ শতাংশই নষ্ট হয়ে গেছে বাতি জ্বালানোর এক সপ্তাহের মধ্যে। জলে গেছে ১০৩ কোটি টাকার প্রায় পুরোটাই। ভেস্তে গেছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সাধের প্রকল্পটির প্রথম পর্ব। অথচ প্রতিটি বাতির আয়ুষ্কাল ছিল ১০ হাজার ঘণ্টা, যা একনাগাড়ে চললেও ৪১৬ দিন পর্যন্ত টিকে থাকার কথা। অভিযোগ উঠেছে, দুর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের বাল্ব কেনার কারণেই এ কাণ্ড ঘটেছে। রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় কালের কণ্ঠের সরেজমিন অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে এমন তথ্য।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে ও কার্বন নিঃসরণ কমাতে সরকার পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (আরইবি) মাধ্যমে 'এফিশিয়েন্ট লাইটিং ইনিশিয়েটিভ ফর বাংলাদেশ (ইএলআইবি)' নামের প্রকল্প গ্রহণ করে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায়। গত বছর প্রকল্পটির প্রথম পর্ব শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্ব মিলিয়ে মোট দুই কোটি ৮০ লাখ বাতি বিতরণের কথা। এ জন্য বরাদ্দ ২৭৯ কোটি ২৮ লাখ টাকার মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ২৭৫ কোটি টাকা। বাকিটা জোগান দেবে সরকার। বিশ্বব্যাংক প্রথম দফায় ১০৩ কোটি টাকা দিয়েছে।
সরকার ও জাতিসংঘ আশা করেছিল, এ বাতি ব্যবহারে দেশে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। কিন্তু প্রথম দফায় নিম্নমানের বাতি সরবরাহের অভিযোগ ওঠায় দ্বিতীয় দফা দরপত্রের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক এখন কড়াকড়ি আরোপ করেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রথম বছরে বাংলাদেশে কার্বন নিঃসরণ কমবে ৩১ হাজার ৫০৭ টন। এভাবে তৃতীয় বছরে গিয়ে কমে যাওয়া
কার্বনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৮৮ হাজার ৭৭১ টন। এর পাশাপাশি প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। এ উদ্যোগে জাতিসংঘ কারিগরি ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে নীতিও ঠিক করে দেয়। বাতির আয়ুষ্কালের ব্যাপারে নির্দেশনার পাশাপাশি এসব বাতি যাতে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ না হয়, সে ব্যাপারে তারা দিকনির্দেশনাও দেয়। কিন্তু বাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পরিকল্পনামতো কার্বন নিঃসরণ কমছে না। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না। অথচ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার পর ওই 'কার্বন ক্রেডিট' সুইডেনের কাছে বিক্রি করতে পারলে বড় ধরনের লাভের মুখ দেখা সম্ভব হতো। বিশ্বব্যাংক থেকে এ প্রকল্প বাবদ নেওয়া ঋণের প্রায় পুরোটাই ওই খাত থেকে পরিশোধের একটা সুযোগ তৈরি হতো। কিন্তু সবই ভেস্তে যেতে বসেছে নিম্নমানের বাতি সরবরাহের কারণে।
বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি মেহরিন এ মাহবুব কালের কণ্ঠকে বলেন, ইডকলের (ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কম্পানি) অভ্যন্তরীণ জরিপে দেখা গেছে, গড়ে ৩৩ শতাংশ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এটা যেকোনো বিবেচনায় উচ্চহার নির্দেশ করে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নষ্ট বাতি পরিবর্তনের ব্যাপারে কথা বলেছে পল্লী বিদ্যুৎ। তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফা দরপত্রের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। তবে প্রথম দফার অভিজ্ঞতা ভালো না হওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ দ্বিতীয় দফায় বাতি কেনার ব্যাপারে অনেক সতর্ক রয়েছে। বিশ্বব্যাংকও প্রকল্পটি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে বলে জানা গেছে। তবে এ জরিপ কয়টি জেলায় ও কতজনের মধ্যে করা হয়েছে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে রাজি হয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাতি নষ্ট হওয়ার হার ৮০ শতাংশের কম নয়।
নিম্নমানের বাতি সরবরাহের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইএলআইবি প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইডকলের জরিপকাজে অংশ নেওয়া এক গবেষক কালের কণ্ঠকে জানান, র্যানডম স্যাম্পলের ভিত্তিতে এ জরিপ করা হয়েছে। এ জরিপের আওতায় এক কোটি পাঁচ লাখ বাতির মধ্যে মাত্র এক হাজার ৫০০ বাতি জরিপ করা হয়েছে, যার ভিত্তিতে দেখা গেছে ৩৩ শতাংশ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকৃত চিত্র এর অনেক বেশি হবে বলে তিনিও জানান।
বাতির আয়ুষ্কাল কম হওয়ার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহিদ হাসান মাহমুদ বলেন, বাতিগুলো এত দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে, এগুলো নিম্নমানের ছিল।
নিম্নমানের বাতি সরবরাহের পেছনে বড় ধরনের দুর্নীতি রয়েছে বলে মনে করেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা। নাম না প্রকাশের শর্তে এক প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, চীন থেকে নিম্নমানের কম দামি বাতি এনেছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব বাতির লাইফটাইম ছিল খুবই কম। তদন্ত করলে আরো কঠিন সত্য বেরিয়ে আসতে পারে।
সাশ্রয়ী বাল্ব বিতরণের পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ডিপিডিসির ১৩টি অঞ্চলের ১১ কেভি ফিডারে বিদ্যুতের লোড বিশ্লেষণ করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের একটি হিসাব বের করে। তাতে দেখা গেছে, সাশ্রয়ী বাতি বিতরণের পর সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দাবি করা হলেও বাস্তবে তা ছিল মাত্র ১১ মেগাওয়াট।
জানা গেছে, ঢাকায় বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতি বিতরণ করা হয় ২৩টি এলাকায়, যার বেশির ভাগই এখন নষ্ট। কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিরা সরেজমিনে অনুসন্ধানেও দেখেছেন, বিভিন্ন জেলায় সংযোজনের এক সপ্তাহের মধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে গড়ে ৮০ শতাংশ বাতি।
আমাদের ফরিদপুর প্রতিনিধি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী শংকর জানান, গত বছর অক্টোবর মাসে ৯টি উপজেলায় মোট সাত হাজার ১৪৮টি বাতি বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ, গ্রাহকপ্রতি সরবরাহ করা দুটি বাল্বই নিম্নমানের ছিল। সংযোজনের দু-এক দিনের মধ্যেই সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। কোনো কোনো বাল্ব জ্বলেইনি। নষ্টগুলো ফেরত দিয়ে কেউ কেউ পাল্টে নিলেও সেগুলোর স্থায়িত্বও খুব কম ছিল।
সদর উপজেলার ব্যবসায়ী শাহিদউদ্দিন আহম্মেদ জানান, তাঁর দুটি বাল্বই নষ্ট ছিল। পরে একটি পাল্টে নিয়েছিলেন। শহরের ঝিলটুলী এলাকার বাসিন্দা দেবদাস গুপ্ত জানান, তাঁর দুটি বাল্বের একটি এক দিন পর, অন্যটি সাত দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। গোয়ালচামট এলাকার বাসিন্দা বিভাষ দত্ত জানান, একটি বাল্ব নষ্ট হয়ে গেলেও অন্যটি ভালো আছে। ভাঙ্গা উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের দিলীপ দাস ও মোশাররফ মুন্সী জানান, এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁদের ঘরের দুটি বাল্বই নষ্ট হয়ে যায়। পরে আবার পাল্টে নিয়েছিলেন। একই বক্তব্য সদরপুর উপজেলার আবদুল মজিদ মিয়ার।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আবদুল খালেক ফারুক জানান, জেলায় বিতরণ করা ৩২ হাজার এনার্জি সেভিং বাল্বের প্রায় সবই নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয় পিডিবি সূত্র জানায়, গত বছরের এপ্রিল ও জুনে দুই দফায় পাঁচটি ক্যাম্পের মাধ্যমে জেলা শহরের আট হাজার গ্রাহকের প্রত্যেককে চারটি করে এনার্জি সেভিং বাল্ব বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ, বিতরণের কয়েক দিন পর থেকে বাল্বগুলো নষ্ট হতে থাকে। বর্তমানে প্রায় ৮০ ভাগ বাল্বই নষ্ট হয়ে গেছে। কলেজপাড়ার নুরুন্নবী খন্দকার ও খলিলগঞ্জ এলাকার অ্যাডভোকেট নজীর হোসেন সরকার জানান, দুই মাসের মাথায় তাঁদের বাড়ির সব বাল্বই নষ্ট হয়ে যায়।
পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী রুবেল আহমেদ জানান, বাল্বগুলো তাঁরা কেবল বিতরণ করেছেন। মনিটরিংয়ের দায়িত্ব তাঁদের নয়। ফলে কী পরিমাণ বাল্ব নষ্ট হয়েছে, এর সঠিক পরিসংখ্যান তাঁদের কাছে নেই। তবে বেশির ভাগ বাল্ব নষ্ট হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন বলে জানান।
মাগুরা প্রতিনিধি শামীম খান জানান, জেলায় সরবরাহ করা ২৪ হাজার বাতির কোনোটি এক সপ্তাহ না যেতেই কেটে গেছে। আবার কোনো কোনোটি এক মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত টিকেছে। কেউ কেউ বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে নষ্ট বাল্ব জমা দিয়ে নতুন বাল্ব নিয়েছেন। কিন্তু সেগুলোর পরিণতিও হয়েছে একই রকম।
নান্দুয়ালী ডিইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ টি এম আনিসুর রহমান জানান, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি দুটি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতি নিয়েছিলেন গত বছরের ২৩ অক্টোবর। সপ্তাহ না ঘুরতেই বাল্ব দুটি কেটে যায়। সেগুলো জমা দিয়ে নতুন দুটি বাল্ব নেন। সেগুলোও দুই মাসের মধ্যে কেটে যায়। পরে যোগাযোগ করেও তিনি আর বাল্ব পাননি।
শহরের এম আর রোডের বাসিন্দা অধ্যাপক ওলিউজ্জামান মন্তব্য করেন, সরকার অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাল্ব বিতরণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের চেষ্টা করলেও নিম্নমানের বাল্ব বিতরণের কারণে এ ব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে হয়। সরকারের উচিত ছিল প্রতিষ্ঠিত কম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাল্ব সংগ্রহ করা।
শহরের ভায়নার জাকির হোসেন, জামরুলতলার তপন কুমার, নিজনান্দুয়ালীর আবু জাফর, ইয়াছির আরাফাত, ভিটাসাইরের সোহানসহ আরো অনেকে একই ধরনের কথা বলেছেন।
বাল্ব বিতরণ কার্যক্রমে নিয়োজিত মাগুরা বিদ্যুৎ অফিসের হিসাবরক্ষক আয়ুব হোসেন বলেন, 'সরকারিভাবে পাওয়া মোট ২৪ হাজার বাল্বের মধ্যে প্রথম দফায় ১২টি কেন্দ্রে ১১ হাজার ৯৪৪টি বাল্ব বিতরণ করা হয়। সেগুলো দ্রুত কেটে যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় বাকি ১২ হাজার ৪৬টি বাল্বও দ্রুত ফুরিয়ে যায়। মান ভালো না হওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাল্বগুলো টেকসই হয়নি।
সাতক্ষীরা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী জানান, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এনার্জি বাল্ব ব্যবহার শুরুর পরই নষ্ট হতে শুরু করে। তবে কিছু গ্রাহকের বাড়িতে দু-একটি বাল্ব এখনো জ্বলতে দেখা যায়। পিডিবি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শহরে ১৬ হাজার আবাসিক গ্রাহকের প্রত্যেককে দুটি করে বাল্ব বিতরণ করা হয়। শহরের মুনজিতপুর এলাকার রুহুল কুদ্দুস জানান, দফায় দফায় চারটি বাল্ব সংগ্রহ করলেও তিনটিই নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারপাড়ার আসাদুল ও পলাশপোলের সুরেশ পাণ্ডে জানালেন, তাঁদের দুটি বাল্বের একটি করে নষ্ট হয়ে গেছে। সুলতানপুরের বাসিন্দা কামরুল হাসান জানান, তাঁর দুটি বাল্বই কয়েক দিন যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে গেছে। কামালনগরের বায়েজীদ জানান, মধ্যপাড়ার বাসিন্দারা ১২৫টি বাল্ব পেয়েছিল। এর মধ্যে একটি বাদে বাকিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারী আবিদুর রহমান নষ্ট বাল্বের মোড়ক দেখিয়ে বলেন, এই বাল্ব খুবই নিম্নমানের। গ্রাহকরা নষ্ট বাল্বগুলো ফেরত দিয়ে গেছে। সেগুলো সংরক্ষিত রয়েছে।
পটুয়াখালী প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেল জানান, স্থানীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জেলার আট হাজার ৭০০ গ্রাহকের মধ্যে ২৬ হাজার ১০০ বাল্ব বিতরণ করা হয়। গ্রাহকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করা হচ্ছে, এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ বাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। ওই বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বাল্বগুলো নিম্নমানের হওয়ায় অল্প সময়ের ব্যবধানে তা অকেজো হয়ে যায়। বর্তমানে ১০ শতাংশ বাল্বও ভালো নেই।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি গণেশ চন্দ্র পাল জানান, উপজেলায় সাত হাজার ২২০টি বৈদ্যুতিক এনার্জি বাল্ব বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলোর স্থায়িত্বকাল খুবই কম। ময়ছের মাতবরপাড়া গ্রামের সাঈদুল ইসলাম সাঈদ জানান, বাল্ব দুটি সংযোজনের পর মাত্র আড়াই ঘণ্টা আলো দিয়েছে। পৌর আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন বলেন, এ বাল্ব নিয়ে এলাকার অনেকের মতো তিনি নিজেও ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। এ প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত।
পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী মো. মোহসীন বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের সিএফএল বাল্ব বিতরণ প্রকল্পটি চমৎকার। তবে বিতরণ করা বাল্বগুলো নিম্নমানের।
সরকার ও জাতিসংঘ আশা করেছিল, এ বাতি ব্যবহারে দেশে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। কিন্তু প্রথম দফায় নিম্নমানের বাতি সরবরাহের অভিযোগ ওঠায় দ্বিতীয় দফা দরপত্রের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক এখন কড়াকড়ি আরোপ করেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রথম বছরে বাংলাদেশে কার্বন নিঃসরণ কমবে ৩১ হাজার ৫০৭ টন। এভাবে তৃতীয় বছরে গিয়ে কমে যাওয়া
কার্বনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৮৮ হাজার ৭৭১ টন। এর পাশাপাশি প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। এ উদ্যোগে জাতিসংঘ কারিগরি ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে নীতিও ঠিক করে দেয়। বাতির আয়ুষ্কালের ব্যাপারে নির্দেশনার পাশাপাশি এসব বাতি যাতে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ না হয়, সে ব্যাপারে তারা দিকনির্দেশনাও দেয়। কিন্তু বাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পরিকল্পনামতো কার্বন নিঃসরণ কমছে না। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না। অথচ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার পর ওই 'কার্বন ক্রেডিট' সুইডেনের কাছে বিক্রি করতে পারলে বড় ধরনের লাভের মুখ দেখা সম্ভব হতো। বিশ্বব্যাংক থেকে এ প্রকল্প বাবদ নেওয়া ঋণের প্রায় পুরোটাই ওই খাত থেকে পরিশোধের একটা সুযোগ তৈরি হতো। কিন্তু সবই ভেস্তে যেতে বসেছে নিম্নমানের বাতি সরবরাহের কারণে।
বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি মেহরিন এ মাহবুব কালের কণ্ঠকে বলেন, ইডকলের (ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কম্পানি) অভ্যন্তরীণ জরিপে দেখা গেছে, গড়ে ৩৩ শতাংশ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এটা যেকোনো বিবেচনায় উচ্চহার নির্দেশ করে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নষ্ট বাতি পরিবর্তনের ব্যাপারে কথা বলেছে পল্লী বিদ্যুৎ। তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফা দরপত্রের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। তবে প্রথম দফার অভিজ্ঞতা ভালো না হওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ দ্বিতীয় দফায় বাতি কেনার ব্যাপারে অনেক সতর্ক রয়েছে। বিশ্বব্যাংকও প্রকল্পটি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে বলে জানা গেছে। তবে এ জরিপ কয়টি জেলায় ও কতজনের মধ্যে করা হয়েছে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে রাজি হয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাতি নষ্ট হওয়ার হার ৮০ শতাংশের কম নয়।
নিম্নমানের বাতি সরবরাহের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইএলআইবি প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইডকলের জরিপকাজে অংশ নেওয়া এক গবেষক কালের কণ্ঠকে জানান, র্যানডম স্যাম্পলের ভিত্তিতে এ জরিপ করা হয়েছে। এ জরিপের আওতায় এক কোটি পাঁচ লাখ বাতির মধ্যে মাত্র এক হাজার ৫০০ বাতি জরিপ করা হয়েছে, যার ভিত্তিতে দেখা গেছে ৩৩ শতাংশ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকৃত চিত্র এর অনেক বেশি হবে বলে তিনিও জানান।
বাতির আয়ুষ্কাল কম হওয়ার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহিদ হাসান মাহমুদ বলেন, বাতিগুলো এত দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে, এগুলো নিম্নমানের ছিল।
নিম্নমানের বাতি সরবরাহের পেছনে বড় ধরনের দুর্নীতি রয়েছে বলে মনে করেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা। নাম না প্রকাশের শর্তে এক প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, চীন থেকে নিম্নমানের কম দামি বাতি এনেছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব বাতির লাইফটাইম ছিল খুবই কম। তদন্ত করলে আরো কঠিন সত্য বেরিয়ে আসতে পারে।
সাশ্রয়ী বাল্ব বিতরণের পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ডিপিডিসির ১৩টি অঞ্চলের ১১ কেভি ফিডারে বিদ্যুতের লোড বিশ্লেষণ করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের একটি হিসাব বের করে। তাতে দেখা গেছে, সাশ্রয়ী বাতি বিতরণের পর সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দাবি করা হলেও বাস্তবে তা ছিল মাত্র ১১ মেগাওয়াট।
জানা গেছে, ঢাকায় বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতি বিতরণ করা হয় ২৩টি এলাকায়, যার বেশির ভাগই এখন নষ্ট। কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিরা সরেজমিনে অনুসন্ধানেও দেখেছেন, বিভিন্ন জেলায় সংযোজনের এক সপ্তাহের মধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে গড়ে ৮০ শতাংশ বাতি।
আমাদের ফরিদপুর প্রতিনিধি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী শংকর জানান, গত বছর অক্টোবর মাসে ৯টি উপজেলায় মোট সাত হাজার ১৪৮টি বাতি বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ, গ্রাহকপ্রতি সরবরাহ করা দুটি বাল্বই নিম্নমানের ছিল। সংযোজনের দু-এক দিনের মধ্যেই সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। কোনো কোনো বাল্ব জ্বলেইনি। নষ্টগুলো ফেরত দিয়ে কেউ কেউ পাল্টে নিলেও সেগুলোর স্থায়িত্বও খুব কম ছিল।
সদর উপজেলার ব্যবসায়ী শাহিদউদ্দিন আহম্মেদ জানান, তাঁর দুটি বাল্বই নষ্ট ছিল। পরে একটি পাল্টে নিয়েছিলেন। শহরের ঝিলটুলী এলাকার বাসিন্দা দেবদাস গুপ্ত জানান, তাঁর দুটি বাল্বের একটি এক দিন পর, অন্যটি সাত দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। গোয়ালচামট এলাকার বাসিন্দা বিভাষ দত্ত জানান, একটি বাল্ব নষ্ট হয়ে গেলেও অন্যটি ভালো আছে। ভাঙ্গা উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের দিলীপ দাস ও মোশাররফ মুন্সী জানান, এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁদের ঘরের দুটি বাল্বই নষ্ট হয়ে যায়। পরে আবার পাল্টে নিয়েছিলেন। একই বক্তব্য সদরপুর উপজেলার আবদুল মজিদ মিয়ার।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আবদুল খালেক ফারুক জানান, জেলায় বিতরণ করা ৩২ হাজার এনার্জি সেভিং বাল্বের প্রায় সবই নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয় পিডিবি সূত্র জানায়, গত বছরের এপ্রিল ও জুনে দুই দফায় পাঁচটি ক্যাম্পের মাধ্যমে জেলা শহরের আট হাজার গ্রাহকের প্রত্যেককে চারটি করে এনার্জি সেভিং বাল্ব বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ, বিতরণের কয়েক দিন পর থেকে বাল্বগুলো নষ্ট হতে থাকে। বর্তমানে প্রায় ৮০ ভাগ বাল্বই নষ্ট হয়ে গেছে। কলেজপাড়ার নুরুন্নবী খন্দকার ও খলিলগঞ্জ এলাকার অ্যাডভোকেট নজীর হোসেন সরকার জানান, দুই মাসের মাথায় তাঁদের বাড়ির সব বাল্বই নষ্ট হয়ে যায়।
পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী রুবেল আহমেদ জানান, বাল্বগুলো তাঁরা কেবল বিতরণ করেছেন। মনিটরিংয়ের দায়িত্ব তাঁদের নয়। ফলে কী পরিমাণ বাল্ব নষ্ট হয়েছে, এর সঠিক পরিসংখ্যান তাঁদের কাছে নেই। তবে বেশির ভাগ বাল্ব নষ্ট হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন বলে জানান।
মাগুরা প্রতিনিধি শামীম খান জানান, জেলায় সরবরাহ করা ২৪ হাজার বাতির কোনোটি এক সপ্তাহ না যেতেই কেটে গেছে। আবার কোনো কোনোটি এক মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত টিকেছে। কেউ কেউ বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে নষ্ট বাল্ব জমা দিয়ে নতুন বাল্ব নিয়েছেন। কিন্তু সেগুলোর পরিণতিও হয়েছে একই রকম।
নান্দুয়ালী ডিইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ টি এম আনিসুর রহমান জানান, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি দুটি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতি নিয়েছিলেন গত বছরের ২৩ অক্টোবর। সপ্তাহ না ঘুরতেই বাল্ব দুটি কেটে যায়। সেগুলো জমা দিয়ে নতুন দুটি বাল্ব নেন। সেগুলোও দুই মাসের মধ্যে কেটে যায়। পরে যোগাযোগ করেও তিনি আর বাল্ব পাননি।
শহরের এম আর রোডের বাসিন্দা অধ্যাপক ওলিউজ্জামান মন্তব্য করেন, সরকার অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাল্ব বিতরণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের চেষ্টা করলেও নিম্নমানের বাল্ব বিতরণের কারণে এ ব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে হয়। সরকারের উচিত ছিল প্রতিষ্ঠিত কম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাল্ব সংগ্রহ করা।
শহরের ভায়নার জাকির হোসেন, জামরুলতলার তপন কুমার, নিজনান্দুয়ালীর আবু জাফর, ইয়াছির আরাফাত, ভিটাসাইরের সোহানসহ আরো অনেকে একই ধরনের কথা বলেছেন।
বাল্ব বিতরণ কার্যক্রমে নিয়োজিত মাগুরা বিদ্যুৎ অফিসের হিসাবরক্ষক আয়ুব হোসেন বলেন, 'সরকারিভাবে পাওয়া মোট ২৪ হাজার বাল্বের মধ্যে প্রথম দফায় ১২টি কেন্দ্রে ১১ হাজার ৯৪৪টি বাল্ব বিতরণ করা হয়। সেগুলো দ্রুত কেটে যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় বাকি ১২ হাজার ৪৬টি বাল্বও দ্রুত ফুরিয়ে যায়। মান ভালো না হওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাল্বগুলো টেকসই হয়নি।
সাতক্ষীরা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী জানান, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এনার্জি বাল্ব ব্যবহার শুরুর পরই নষ্ট হতে শুরু করে। তবে কিছু গ্রাহকের বাড়িতে দু-একটি বাল্ব এখনো জ্বলতে দেখা যায়। পিডিবি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শহরে ১৬ হাজার আবাসিক গ্রাহকের প্রত্যেককে দুটি করে বাল্ব বিতরণ করা হয়। শহরের মুনজিতপুর এলাকার রুহুল কুদ্দুস জানান, দফায় দফায় চারটি বাল্ব সংগ্রহ করলেও তিনটিই নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারপাড়ার আসাদুল ও পলাশপোলের সুরেশ পাণ্ডে জানালেন, তাঁদের দুটি বাল্বের একটি করে নষ্ট হয়ে গেছে। সুলতানপুরের বাসিন্দা কামরুল হাসান জানান, তাঁর দুটি বাল্বই কয়েক দিন যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে গেছে। কামালনগরের বায়েজীদ জানান, মধ্যপাড়ার বাসিন্দারা ১২৫টি বাল্ব পেয়েছিল। এর মধ্যে একটি বাদে বাকিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারী আবিদুর রহমান নষ্ট বাল্বের মোড়ক দেখিয়ে বলেন, এই বাল্ব খুবই নিম্নমানের। গ্রাহকরা নষ্ট বাল্বগুলো ফেরত দিয়ে গেছে। সেগুলো সংরক্ষিত রয়েছে।
পটুয়াখালী প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেল জানান, স্থানীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জেলার আট হাজার ৭০০ গ্রাহকের মধ্যে ২৬ হাজার ১০০ বাল্ব বিতরণ করা হয়। গ্রাহকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করা হচ্ছে, এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ বাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। ওই বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বাল্বগুলো নিম্নমানের হওয়ায় অল্প সময়ের ব্যবধানে তা অকেজো হয়ে যায়। বর্তমানে ১০ শতাংশ বাল্বও ভালো নেই।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি গণেশ চন্দ্র পাল জানান, উপজেলায় সাত হাজার ২২০টি বৈদ্যুতিক এনার্জি বাল্ব বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলোর স্থায়িত্বকাল খুবই কম। ময়ছের মাতবরপাড়া গ্রামের সাঈদুল ইসলাম সাঈদ জানান, বাল্ব দুটি সংযোজনের পর মাত্র আড়াই ঘণ্টা আলো দিয়েছে। পৌর আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন বলেন, এ বাল্ব নিয়ে এলাকার অনেকের মতো তিনি নিজেও ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। এ প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত।
পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী মো. মোহসীন বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের সিএফএল বাল্ব বিতরণ প্রকল্পটি চমৎকার। তবে বিতরণ করা বাল্বগুলো নিম্নমানের।
No comments