বিভক্তির কবলে বিশ্বাস by উৎপল রায়
সিভিল
সোসাইটি। ১৮ শতকে এ ধারণা দুনিয়াব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে
নিশ্চিতভাবেই এর ইতিহাস আরও দীর্ঘ। সক্রেটিসও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি
ছিলেন। যিনি বিশ্বাস করতেন পাবলিক আর্গুমেন্টের মাধ্যমে দ্বন্দ্বের নিরসন
সম্ভব। রাষ্ট্রের দেয়া মৃত্যুদণ্ড মেনে যিনি হেমলক পান করেন, কিন্তু নিজের
আদর্শ থেকে বিচ্যুত হন না। ধারণাগতভাবে মনে করা হয়, সিভিল সোসাইটি হচ্ছে
বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যারা জনগণের ইচ্ছা এবং কল্যাণের জন্য কাজ
করে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সিভিল সোসাইটি পশ্চিমা গণতন্ত্রের অপরিহার্য
অংশ।
বাংলাদেশেও সিভিল সোসাইটির গৌরবোজ্জ্বল অতীত রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের জীবন বলিদান করেছেন সিভিল সোসাইটির বহু মানুষ। তাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় প্রিয় পতাকা। লোভ ছিল, কিছুটা হলেও বিভক্তি অতীতেও ছিল। তবে এখনকার মতো কখনওই নয়। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামল থেকেই এ প্রচলন শুরু হয়। নানা সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে ‘রাজার’ প্রতি সমর্থন জানান সিভিল সোসাইটির কিছু কিছু সদস্য। এরপর ক্রমশ বিভক্তি জোরালো হয়েছে বাংলাদেশে। ভেতর থেকে অনেকটা দুই ভাগ হয়ে যান মানুষ। এ বিভক্তির কালো ছায়া এসে পড়ে সিভিল সোসাইটির ওপরও। কিছুদিন আগেতো অনেকটা ঘটা করেই দুই ভাগ হয়ে যান বাংলাদেশে সিভিল সোসাইটির একটি বড় অংশ। একদিকে শত নাগরিক, অন্যদিকে সহস্র নাগরিক। এ বিভক্তি সবচেয়ে বড় আঘাত হানে বিশ্বাসে। সিভিল সোসাইটির বক্তব্য এখন আর সেভাবে নাড়া দেয় না জনসাধারণকে। এ যেন বিভক্তির এক অন্ধকার কালো অধ্যায়। এ বিভক্তি নিয়ে কি বলছেন সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা। ধারাবাহিকভাবে এ প্রশ্নের জবাব খুঁজবে মানবজমিন। আজ ছাপা হলো সিভিল সোসাইটির পাঁচ উজ্জ্বল প্রতিনিধির বক্তব্য-
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাদের দেশে শুরু থেকেই সিভিল সোসাইটি তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি। সুশীল সমাজের বিভক্তির কারণটাও অত্যন্ত সহজ ও স্পষ্ট। কেউ এ দলের, নয়তো ও দলের রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, নিচ্ছে। ছোটখাটো সুবিধার জন্যই মূলত এ বিভক্তি। এটা সবাই জানে। তিনি বলেন, দেশের কমন কোন ইস্যুতে সুশীল সমাজের উদ্যোগ যে একেবারে ছিল না তেমন নয়। দেশের স্বার্থে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। যেমন কিছুদিন আগে শামসুল হুদা সাহেবের (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা) একটি ভাল উদ্যোগ ছিল। সুশীল সমাজের অনেকেই তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া টিআইবি (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ), সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক), সিপিডি (সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগ) এ ধরনের সংগঠনও জাতীয় ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই যোগ্য ব্যক্তি ও সংগঠন যদি উদ্যোগ নেয় তাহলে হয়তো সুশীল সমাজ বা বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর বিভক্তিটা কমে আসবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, সুশীল সমাজ আলোকিত মানুষের একটা অংশ তারা ব্যক্তি বা দলের ঊর্ধ্বে ওঠে নিরপক্ষেভাবে কাজ করবে এটাই নিয়ম। তবে, বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা সবসময়ই একই রকম হবে বিষয়টি এমন নয়। আমাদের দেশে যেমন বিভক্তি রয়েছে। পশ্চিমা দেশেও সুশীল সমাজে বিভক্তি রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলদেশের সিভিল সোসাইটিতে বিভক্তিও দেখছি আবার একতাবদ্ধতাও দেখছি। ব্যক্তির আদর্শিক অবস্থান, দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য, একমুখিতার কারণে সুশীল সমাজে বিভক্তি থাকে। মতবাদে ভিন্নতা থাকে। তবে, একটা বিষয়ে তারা সবাই এক। তারা দেশের ও জনগণের মঙ্গল চায়। হয়তো একেকজন একেকভাবে চায়। কিন্তু গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রায় সবাই কথা বলে। আশা করবো তারা ব্যক্তি ও দলের ঊর্ধ্বে ওঠে তারা কাজ করবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমিতো এখন কোন সিভিল সোসাইটি দেখি না। এখন সব রাজনৈতিক সোসাইটি। সব ফায়দাতন্ত্রের রাজনীতির কবলে পড়েছে। রাজনীতির কারণেই সিভিল সোসাইটি বিভক্ত হয়ে গেছে। রাজনীতির কবলে ফেলে আমাদের সিভিল সোসাইটি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগে এতটা বিভক্তি ছিল না। ১৯৯১ সালের পর থেকেই সুশীল সমাজের অনেকেই রাজনৈতিক দলের পদলেহন করেছে। নিজের সুবিধার জন্য রাজনৈতিক দলের সাফাই গাইছে। শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, আইনজীবী কেউ বাদ যাচ্ছে না। সবার মধ্যেই বিভক্তি। যখন যে দল সরকারে যায় তখনই সুশীল সমাজের কিছু অংশ সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে। বিভিন্ন সময়ে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। কেউ উত্তরা, গুলশানে প্লট নিচ্ছে, কেউ ইউনিভার্সিটির ভিসি হয়ে রাজনৈতিক দল ও সরকারের গুণগান করছে। এ কারণেই আমাদের সিভিল সোসাইটিটা এতদিনেও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এ থেকে উত্তরণের কোন পথতো আমি দেখছি না। তবে, ফায়দাতন্ত্রের রাজনীতি যদি বন্ধ করা যায়, রাজনৈতিক সুবিধা নেয়া থেকে বিরত থাকা যায় তবেই সিভিল সোসাইটির বিভক্তি কমে আসবে। না হলে এ বিভক্তি ঘুচবে না।
সুশীল সমাজের বিভক্তির কারণ রাজনৈতিক বলে মনে করেন নারীনেত্রী খুশী কবির। তিনি বলেন, সুশীল সমাজের বিভক্তি আগেও ছিল, এখনও আছে। এরমধ্যে কিছুটা রাজনৈতিক কারণতো অবশ্যই আছে। তবে, সুশীল সমাজ যে একীভূত ছিলনা তা নয়। স্বৈরশাসক এরশাদের আমলে, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে, নিকট অতীতে শাহবাগ জাগরণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতে সুশীল সমাজের ইতিবাচক ভূমিকা আমরা দেখেছি। এক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজেকে কিভাবে দেখছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। খুশী কবির বলেন, যখন কেউ চিন্তা করে যে, তার কর্মকাণ্ড কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার মতপার্থক্যের কারণ হতে পারে বা তার কাজকর্মে তা প্রভাব হিসেবে কাজ করে তখনই তার চিন্তা-ভাবনা বদলে যায়। তাই আমাদের দেখতে হবে ব্যক্তি রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে না রাজনীতি ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, সুশীল সমাজ বলতে আমরা বুঝি যারা কোন রাজনৈতিক দলের নয়। তারা কোন দলও সমর্থন করে না। যারা মূলত কোন রাজনৈতিক দলের বক্তব্য সমর্থন করে, রাজনৈতিক দলের কথার পুনরাবৃত্তি করে তারা আসলে সুশীল সমাজের পর্যায়ে পড়ে না। যারা দলীয় সমর্থক তারাতো তাদের দলীয় অবস্থানটাকে পুনর্ব্যক্ত করার চেষ্টা করবেই। এর বাইরে যারা বিভিন্ন ইস্যুতে ভূমিকা পালন করে কিন্তু কোন দলের সমর্থক নন তাদের মধ্যে কিছুটা ভিন্নমত থাকতেই পারে। তবে, এটাকে আমি বিভক্তি বলবো না।
বাংলাদেশেও সিভিল সোসাইটির গৌরবোজ্জ্বল অতীত রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের জীবন বলিদান করেছেন সিভিল সোসাইটির বহু মানুষ। তাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় প্রিয় পতাকা। লোভ ছিল, কিছুটা হলেও বিভক্তি অতীতেও ছিল। তবে এখনকার মতো কখনওই নয়। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামল থেকেই এ প্রচলন শুরু হয়। নানা সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে ‘রাজার’ প্রতি সমর্থন জানান সিভিল সোসাইটির কিছু কিছু সদস্য। এরপর ক্রমশ বিভক্তি জোরালো হয়েছে বাংলাদেশে। ভেতর থেকে অনেকটা দুই ভাগ হয়ে যান মানুষ। এ বিভক্তির কালো ছায়া এসে পড়ে সিভিল সোসাইটির ওপরও। কিছুদিন আগেতো অনেকটা ঘটা করেই দুই ভাগ হয়ে যান বাংলাদেশে সিভিল সোসাইটির একটি বড় অংশ। একদিকে শত নাগরিক, অন্যদিকে সহস্র নাগরিক। এ বিভক্তি সবচেয়ে বড় আঘাত হানে বিশ্বাসে। সিভিল সোসাইটির বক্তব্য এখন আর সেভাবে নাড়া দেয় না জনসাধারণকে। এ যেন বিভক্তির এক অন্ধকার কালো অধ্যায়। এ বিভক্তি নিয়ে কি বলছেন সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা। ধারাবাহিকভাবে এ প্রশ্নের জবাব খুঁজবে মানবজমিন। আজ ছাপা হলো সিভিল সোসাইটির পাঁচ উজ্জ্বল প্রতিনিধির বক্তব্য-
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাদের দেশে শুরু থেকেই সিভিল সোসাইটি তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি। সুশীল সমাজের বিভক্তির কারণটাও অত্যন্ত সহজ ও স্পষ্ট। কেউ এ দলের, নয়তো ও দলের রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, নিচ্ছে। ছোটখাটো সুবিধার জন্যই মূলত এ বিভক্তি। এটা সবাই জানে। তিনি বলেন, দেশের কমন কোন ইস্যুতে সুশীল সমাজের উদ্যোগ যে একেবারে ছিল না তেমন নয়। দেশের স্বার্থে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। যেমন কিছুদিন আগে শামসুল হুদা সাহেবের (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা) একটি ভাল উদ্যোগ ছিল। সুশীল সমাজের অনেকেই তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া টিআইবি (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ), সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক), সিপিডি (সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগ) এ ধরনের সংগঠনও জাতীয় ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই যোগ্য ব্যক্তি ও সংগঠন যদি উদ্যোগ নেয় তাহলে হয়তো সুশীল সমাজ বা বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর বিভক্তিটা কমে আসবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, সুশীল সমাজ আলোকিত মানুষের একটা অংশ তারা ব্যক্তি বা দলের ঊর্ধ্বে ওঠে নিরপক্ষেভাবে কাজ করবে এটাই নিয়ম। তবে, বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা সবসময়ই একই রকম হবে বিষয়টি এমন নয়। আমাদের দেশে যেমন বিভক্তি রয়েছে। পশ্চিমা দেশেও সুশীল সমাজে বিভক্তি রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলদেশের সিভিল সোসাইটিতে বিভক্তিও দেখছি আবার একতাবদ্ধতাও দেখছি। ব্যক্তির আদর্শিক অবস্থান, দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য, একমুখিতার কারণে সুশীল সমাজে বিভক্তি থাকে। মতবাদে ভিন্নতা থাকে। তবে, একটা বিষয়ে তারা সবাই এক। তারা দেশের ও জনগণের মঙ্গল চায়। হয়তো একেকজন একেকভাবে চায়। কিন্তু গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রায় সবাই কথা বলে। আশা করবো তারা ব্যক্তি ও দলের ঊর্ধ্বে ওঠে তারা কাজ করবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমিতো এখন কোন সিভিল সোসাইটি দেখি না। এখন সব রাজনৈতিক সোসাইটি। সব ফায়দাতন্ত্রের রাজনীতির কবলে পড়েছে। রাজনীতির কারণেই সিভিল সোসাইটি বিভক্ত হয়ে গেছে। রাজনীতির কবলে ফেলে আমাদের সিভিল সোসাইটি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগে এতটা বিভক্তি ছিল না। ১৯৯১ সালের পর থেকেই সুশীল সমাজের অনেকেই রাজনৈতিক দলের পদলেহন করেছে। নিজের সুবিধার জন্য রাজনৈতিক দলের সাফাই গাইছে। শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, আইনজীবী কেউ বাদ যাচ্ছে না। সবার মধ্যেই বিভক্তি। যখন যে দল সরকারে যায় তখনই সুশীল সমাজের কিছু অংশ সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে। বিভিন্ন সময়ে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। কেউ উত্তরা, গুলশানে প্লট নিচ্ছে, কেউ ইউনিভার্সিটির ভিসি হয়ে রাজনৈতিক দল ও সরকারের গুণগান করছে। এ কারণেই আমাদের সিভিল সোসাইটিটা এতদিনেও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এ থেকে উত্তরণের কোন পথতো আমি দেখছি না। তবে, ফায়দাতন্ত্রের রাজনীতি যদি বন্ধ করা যায়, রাজনৈতিক সুবিধা নেয়া থেকে বিরত থাকা যায় তবেই সিভিল সোসাইটির বিভক্তি কমে আসবে। না হলে এ বিভক্তি ঘুচবে না।
সুশীল সমাজের বিভক্তির কারণ রাজনৈতিক বলে মনে করেন নারীনেত্রী খুশী কবির। তিনি বলেন, সুশীল সমাজের বিভক্তি আগেও ছিল, এখনও আছে। এরমধ্যে কিছুটা রাজনৈতিক কারণতো অবশ্যই আছে। তবে, সুশীল সমাজ যে একীভূত ছিলনা তা নয়। স্বৈরশাসক এরশাদের আমলে, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে, নিকট অতীতে শাহবাগ জাগরণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতে সুশীল সমাজের ইতিবাচক ভূমিকা আমরা দেখেছি। এক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজেকে কিভাবে দেখছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। খুশী কবির বলেন, যখন কেউ চিন্তা করে যে, তার কর্মকাণ্ড কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার মতপার্থক্যের কারণ হতে পারে বা তার কাজকর্মে তা প্রভাব হিসেবে কাজ করে তখনই তার চিন্তা-ভাবনা বদলে যায়। তাই আমাদের দেখতে হবে ব্যক্তি রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে না রাজনীতি ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, সুশীল সমাজ বলতে আমরা বুঝি যারা কোন রাজনৈতিক দলের নয়। তারা কোন দলও সমর্থন করে না। যারা মূলত কোন রাজনৈতিক দলের বক্তব্য সমর্থন করে, রাজনৈতিক দলের কথার পুনরাবৃত্তি করে তারা আসলে সুশীল সমাজের পর্যায়ে পড়ে না। যারা দলীয় সমর্থক তারাতো তাদের দলীয় অবস্থানটাকে পুনর্ব্যক্ত করার চেষ্টা করবেই। এর বাইরে যারা বিভিন্ন ইস্যুতে ভূমিকা পালন করে কিন্তু কোন দলের সমর্থক নন তাদের মধ্যে কিছুটা ভিন্নমত থাকতেই পারে। তবে, এটাকে আমি বিভক্তি বলবো না।
No comments