এসপি মিজানের ক্ষমতার উস!- বাড়ি বিশেষ জেলায় by শঙ্কর কুমার দে
দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের রাহুগ্রাসে পুলিশ প্রশাসন। যখন যে সরকার ৰমতায় আসে তখন মুখোশ পাল্টে সেই দলের পুলিশ বনে যান দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তারা।
তদ্বির তোষামদে আখের গোছাতে গিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ৰুণ্ন করছে দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তারা। দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তার সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে বাগেরহাটের এসপি মিজানুর রহমান। সরকার তার ভাবমূর্তি রৰার জন্য শনিবার এই দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তাকে কোজ করেছে। কে এই দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তা? অনুসন্ধানে দলবাজ এসপি মিজানুর রহমানের উত্থান কাহিনী জানা গেছে।বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে জোটের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমান উলস্নাহ্ আমানের বড় ভাইয়ের মেয়ে বিয়ে করে মিজানুর রহমান জোটের পুলিশ কর্মকর্তা বনে যান। এটা তার দ্বিতীয় বিয়ে। দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে নারায়ণগঞ্জে মোলস্না মিশ্র সার কারখানা নামে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। জোট আমলে তিনি পদোন্নতি, প্রাইজ পোস্টিং পেয়েছেন, দেখিয়েছেন ৰমতার দাপট।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ৰমতায় আসার পর তিনি আওয়ামী লীগার বনে যান। কারণ তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায়। টুঙ্গিপাড়ায় বাড়ি হওয়ার কারণে পুলিশ প্রশাসনে কি ধরনের ৰমতার দাপট দেখিয়েছেন তা শুনলে রীতিমতো চোখ চড়কগাছ হয়ে ওঠার মতো অবস্থা হবে।
এরশাদ আমলে পুলিশের সার্জেন্ট পদে ভর্তি হন মিজানুর রহমান। আওয়ামী লীগ সরকার ৰমতায় আসার পর পরই মিজানুর রহমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর পদ সৃষ্টি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি নেয়ার ব্যবস্থা পাকাপাকি করে ফেলেন। পুলিশ সদর দফতর এই খবর পেয়ে তাতে বাধা দেয়। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। প্রচার মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হওয়ার পর তাঁর এই অপচেষ্টা ভেসত্মে যায়। তাঁর এই অপচেষ্টা ভেসত্মে যাওয়ার পর ৰমতার দাপট আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। পুলিশ সদর দফতরের আপত্তি সত্ত্বেও তিনি নিজের পছন্দমতো নিজ জেলা গোপালগঞ্জের পাশের ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে নিয়োগ নেন।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার হয়ে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম, ৰমতার অপব্যবহার, দুর্ব্যবহারসহ সব রকম অপর্কীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তার এই অপকর্ীতিতে ৰমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকজন পর্যনত্ম অতিষ্ঠ হয়ে সভা সমাবেশ ও বিৰোভ মিছিল করে। তারপর সে আবারও নিজের পছন্দ মতো নিজ জেলা গোপালগঞ্জের পাশের জেলা বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পদে নিয়োগ নেন। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হয়ে তিনি মধুমতি তীরে ৭শ' বিঘা জমি দখল করেন। এই জমি দখল করতে গিয়ে গ্রামবাসীর বাধা পেয়ে তাদের অত্যাচার নির্যাতন করেন। তারপরও না পেরে উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নামে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে তাদের সুনাম নষ্ট করেন। এই ঘটনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে শনিবার তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে কোজড করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ইতোপূর্বে যেখানে তার কর্মস্থল ছিল সেখানেই ঘুষ, দুর্নীতি এমনকি নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অপর্কীতি করে পার পেয়ে গেছেন। এবারও শুধুমাত্র গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তার বাড়ির দোহাই দিয়ে হেন কোন অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি।
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি বেনজির আহমেদের স্ত্রীর নামে যখন গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট জেলার সীমানত্মে সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয় তখন তিনি সপরিবারে বেড়ানোর জন্য অবস্থান করছিলেন কক্সবাজারে। তিনি এই ঘটনা শুনে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান। পুলিশ প্রশাসনে একজন সৎ, কর্মঠ, নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা হিসাবে তাঁর সুনাম নষ্ট করার জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ধরনের কাজ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি মোঃ মনিরম্নল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাঁর নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে তাঁকে বস্ন্যাকমেল করা হয়েছে। যে এলাকার জমিতে তাঁর নামে সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়েছে সেখানে তাঁর কোন আত্মীয়স্বজন তো নেই, এমনকি জীবনেও তিনি সেখানে কখনও যাননি। এভাবে তাঁকে বস্ন্যাকমেল করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের এসপি মিজানুর রহমান যখন যে দল ৰমতায় আসে তখন সেই দলের হয়ে আখের গোছানোর জন্য হেন কো্ন অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। প্রশ্ন উঠেছে, বছরের পর বছর ধরে তাঁর এই অপকর্ম করার খুঁটির জোর কোথায় ?
No comments