বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সম্পদ চিহ্নিত হচ্ছে
আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত ৬ আসামির কিছু সম্পদ চিহ্নিত করা হয়েছে। কানাডায় অবস্থানরত নূর চৌধুরী এবং আমেরিকায় অবস্থানরত রাশেদ চৌধুরীকে মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আবেদন জানানো হবে।
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত ৬ আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গঠন করা টাস্ক ফোর্সের ১৩তম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত টাস্কফোর্সের এই ১৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিকিউকে মোশতাক, এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকারসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।ব্যারিস্টার শফিক বলেন, সম্পত্তি চিহ্নিত করতে ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাজউকের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে, ঢাকার কোথায় তাদের সম্পত্তি রয়েছে তার হিসেব দেয়ার জন্য। আর ব্যাংক হিসেব জানাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। সব কিছু যাচাই করে কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পত্তি ও সম্পদের হিসাব জানানো হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, কানাডায় নূর চৌধুরী এবং আমেরিকায় রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান নিশ্চিত হলেও অন্যরা কোথায় কিভাবে রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নূর ও রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বলেন, ক্যানাডায় নূর চৌধুরীর করা রিস্ক এসেসমেন্ট আবেদনের নিষ্পত্তি হলে তাকেও ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশী মিশনের সহায়তায় মানবতা বিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানানো হবে। তাদের জানানো হবে এই খুনীরা নারী ও শিশুদের খুন করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।
আইনমন্ত্রী জানান, রাশেদ চৌধুরীর বিষয়েও আবেদন জানানো হবে। কানাডা ও আমেরিকাকে জানানো হবে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনেই ফাঁসি দেয়া হবে, তা নয়। তাদের জন্য আপীল, রিভিউ এবং রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। মন্ত্রী জানান, পলাতক সাজাপ্রাপ্ত খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে যে আইনজীবী নিয়োগ করা আছে তাদের মাধ্যমে নূর ও রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ২১ নবেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। টাস্কফোর্সের ১২তম সভায় বিদেশে পালিয়ে থাকা আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার কার্যকর করতে বিদেশী মিশনকে তৎপর হওয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।
পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশী মিশনের মাধ্যমে পালিয়ে থাকা আসামিদের পাসপোর্ট ভিসা না দেয়ার ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয় টাস্কফোর্স। এর আগে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে আনতে আমেরিকা ও কানাডায় দু’টি আইনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয় সরকার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এর প্রায় ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এসে বিচার শুরু করে আওয়ামী লীগ। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি সুপ্রীমকোর্টের রায়ের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। চূড়ান্ত বিচারে ১২ জনকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়।
No comments