শান্তি মিশনে বাংলাদেশী সেনাদের ভূমিকা বিস্তৃত করার আলোচনা চলছে সংবাদ সম্মেলনে by আমিরাহ হক
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশী সেনাদের সংখ্যা কমানোর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামীতে শান্তিরক্ষা মিশন আরও বহুমাত্রিক কাজে বিস্তৃত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশী সেনাদের আরও কার্যকরভাবে অংশগ্রহণের বিষয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ে আইডিবি ভবনে ইউএনডিপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জাতিসংঘের সফররত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ড সাপোর্ট আমিরাহ হক। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গত ৪ জানুয়ারি সাতদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আমিরাহ হক বলেন, এটা সত্যি যে, বেশ কিছু মিশন এখন নেই। বিভিন্ন কারণে শান্তিরক্ষা বাহিনী থেকে সদস্য সংখ্যা কমানো হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের সদস্যদের কমানোর এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশী সেনাসদস্যদের একটি বড় অংশ রয়েছে। তাঁরা অত্যন্ত দক্ষভাবে কাজ করছেন। তাঁদের কিভাবে আরও বিভিন্ন কাজে দক্ষতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যায় তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘ আলোচনা করছে।
আমিরাহ হক বলেন, শুরুতে জাতিসংঘ যখন বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় কাজ শুরু করে তখন খুবই গৎবাঁধা প্রচলিত ধারায় কাজ করা হতো। সদস্যরা শুধু বাইনোকুলার চোখে নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কাজ করতেন। তবে এখন সেই ধারণা থেকে কাজের পরিধি অনেক বেশি বিস্তৃত। শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণের পাশাপাশি রাজনীতি সংশ্লিষ্ট কাজেও সম্পৃক্ত হয়েছেন। কঙ্গো, দারফুর, তিমুরের মতো যুদ্ধকালীন সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শান্তি রক্ষায় কাজ করছেন সদস্যরা। সিরিয়ায় রাজনৈতিক মিশনের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সামরিক পর্যবেক্ষকের কাজ করছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশী সদস্যরা সেখানে পর্যবেক্ষক হিসেবে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া আফ্রিকান ইউনিয়নের সঙ্গে মিশন উন্নয়নমূলক কাজও করছে। বিভিন্ন আঞ্চলিক, উপআঞ্চলিক সংস্থার সঙ্গে মিশন কাজ করছে যাতে সংঘাতময় সেসব সমাজকে একতাবদ্ধ হতে সচেতন করা যায়।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলে কোন একটি ইস্যুতে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত যে কোন একটি দেশের আপত্তিতে কোন একটি বিষয় অমীমাংসিত অবস্থায় ঝুলে যায়, এ ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতিসংঘ আগামীতে কোন ব্যবস্থা নেবে কি না প্রশ্ন করা হলে আমিরাহ হক বলেন, এটি আসলে দীর্ঘমেয়াদী সমঝোতার বিষয়।
এদিকে অতীতের মতো বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে চায় কি না প্রশ্ন করা হলে সেটি তাঁর বিভাগীয় বিষয় নয় বলে এড়িয়ে যান আমিরাহ হক। এ ছাড়া একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন জামায়াত নেতা গোলাম আযমসহ কয়েকজনকে মুক্ত করে দিতে তুরস্কের রাষ্ট্রপতির চিঠি এবং পরিচয় গোপন করে আগমন ভিসার সুযোগ নিয়ে তুরস্কের ১৪ আইনজীবীর বাংলাদেশে প্রবেশ ও ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন নিয়ে আমিরাহ হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কোন প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। তিনি বলেন, এটা আমার এখতিয়ারভুক্ত নয়।
উল্লেখ্য, গত ৪ জানুয়ারি ঢাকায় আসার পর আমিরাহ হক ৬ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। ১১ জানুয়ারি তাঁর নিউইয়র্ক ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
No comments