গ্যাস সঙ্কট দ্রম্নত কাটছে না, সরবরাহ আরও কমেছে- ১২ নং কূপ সচলের চেষ্টা ব্যর্থ
রিয়াজউদ্দিন জামি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আপাতত সচল হচ্ছে না তিতাস গ্যাস েেত্রর ১২ নং কূপ। জাতীয় গ্রিডেও বাড়তি গ্যাস সরবরাহের আর কোন পথ নেই । তবে অত্যধিক চেষ্টা করলে ২/৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাড়তি সরবরাহ করা যেতে পারে।
এ েেত্র বিপদেরও কারণ রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে দেশের গ্যাস সঙ্কট দ্রম্নত কাটছে না- এমন আভাস দিয়েছে দেশের অন্যতম বড় গ্যাসত্রে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের সংশিস্নষ্টরা। এ গ্যাস েেত্রর ১২ নং কূপটি সংশিস্নষ্ট অপারেটরদের অসতর্কতার কারণে বন্ধ করতে হয়েছে বলে গ্যাস সংশিস্নষ্ট সূত্র জানিয়েছে। গ্যাস সংশিস্নষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, কূপের দায়িত্বপ্রাপ্ত অপারেটররা সতর্ক না থাকায় ফো মনিটরিং করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর এ ধরনের কূপে যে কোন সময় অতিমাত্রায় গ্যাস বা পানি বের হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে নিবিড় পর্যবেণে রাখতে হয়। এ কূপের বেলায় তা ছিল ভিন্ন। সূত্র জানায়, সেদিন রাতে যারা দায়িত্বে ছিল তারা সঠিকভাবে দেখভাল করেনি। তাতে কূপটি পরিস্থিতি তাৎণিকভাবে জানা যায়নি। ফলে সকালে মাত্রাতিরিক্ত পানি ওঠার ঘটনা ধরা পড়ে। তবে তিতাস গ্যাস েেত্রর শীর্ষ এক কর্মকতর্া এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার কূপটি সচল করার জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। দুপুরের পর কূপের সেফটি বাল্ব ওঠানো হয়। সংশিস্নষ্টরা জানায়, এ কূপের সেফটিবাল্ব ওঠানোর পর গ্যাস দিয়ে কূপটি চার্জ করা হবে। তখন কূপের ভেতরে জমে থাকা পানি বেরিয়ে আসবে। আর তখন যদি তা না হয় তবে ওয়ার্ক ওভার করতে হবে। আর তাতে সময় লাগবে ২/৩ মাস। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই এর মেরামত সংক্রানত্ম ফাইল ওয়ার্ক শুরম্ন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস গ্যাস েেত্রর বন্ধের আগে তা থেকে উৎপাদন হতো ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। আকস্মিক ভাবে কূপ থেকে মাত্রাতিরিক্ত পানি বের হওয়ায় এর উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয় সংশিস্নষ্টরা। সূত্র জানায়, ২২ মিলিয়ন ঘনফুট উৎপাদন মতাসম্পন্ন তিতাসের এ কূপে আকস্মিকভাবে ১শ' ব্যারেল পানি প্রতিমিলিয়নে বের হতে থাকে। কোন উপায় না থাকায় এটি বন্ধ করা হয়। তিনি জানান, ২০০২ সাল থেকে এ কূপ থেকে অস্বাভাবিক পানি আসছিল। তখন থেকেই কূপে ১শ' ব্যারেল পানি ছিল। মধ্য সত্মর থেকে বিপুল পরিমাণ পানি বের হচ্ছে। তিতাস ফিল্ডের একজন শীর্ষ কর্মকতর্া জনকণ্ঠকে বলেন, শুরম্ন থেকে এ কূপের রিজার্ভ থেকে বেশি পানি আসত। তখন ৯০/৯৬ ব্যারেল ছিল। ২০০৭ সাল থেকে তা কমে আসে ৩০/৪০ ব্যারেল। আমরা ১০ বছর এটি চালিয়েছি। এখন ওভার হোলিং করতে হবে। বন্ধের আগে ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হতো। অপারেটরদের অবহেলায় গ্যাস ওভার ফো হওয়ার কথাও তিনি নাকচ করে দেন। এদিকে মঙ্গলবার তিতাসের গ্যাস ত্রে থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ আরও কমেছে। ৪০৬ থেকে ৪০৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। সোমবার গ্রিডে সরবরাহ ছিল ৪২৪ মিলিয়ন ঘনফুট।দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস েেত্র বিপর্যয় ঘটছেই। গুরম্নত্বপূর্ণ গ্যাস ত্রে একের পর এক বিপর্যয়ে সংশিস্নষ্টরা উদ্বিগ্ন। জাতীয় গ্যাস গ্রিডে গ্যাস সরবরাহও কমে আসছে। দেশজুড়ে গ্যাস সঙ্কট বাড়ছে। গ্যাসনির্ভর শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্যাস ত্রেগুলোতে গত কয়েক বছরে হরহামেশাই বিপর্যয় ঘটছে। এ ঘটনায় সংশিস্নষ্টদেরও ভাবিয়ে তুলছে। গত আড়াই বছরে ৫০ মিলিয়নেরও বেশি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এ পরিমাণ গ্যাস জাতীয় গ্রিডেও সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। গ্যাসেেত্র বিপর্যয়ের কারণে সারাদেশে গ্যাস সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সংশিস্নষ্ট সূত্র জানায়, মেঘনা গ্যাস ফিল্ড, তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ৩নং কূপ এবং তিতাসের ১২নং কূপটি বিপর্যয়জনিত কারণেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মেঘনা গ্যাস ফিল্ড থেকে প্রতিদিন ৩ মিলিয়ন ঘনফুট উৎপাদন হতো। এ অবস্থায় কূপ থেকে বিপজ্জনক মাত্রায় পানি ও বালি বের হয়ে আসায় কতর্ৃপ কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তিতাস গ্যাস ত্রে ৩নং কূপটি গত ২ বছর আগে কিলিং করা হয়। এ গ্যাস েেত্রর আশপাশে বিসত্মীর্ণ অঞ্চলজুড়ে হাজার হাজার ছিদ্র দিয়ে বিপজ্জনক মাত্রায় গ্যাস বের হওয়ায় এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। বিজিএফসিএল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এর ত্রম্নটি মেরামত করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। কূপের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে আনত্মর্জাতিক গ্যাস বিশারদদের তলব করা হয়। ৫২ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে এ কূপটি কিল করা হয়। এ কূপটি থেকে প্রতিদিন ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হতো। সর্বশেষ সোমবার সকালে তিতাস গ্যাস েেত্রর ১২ নং কূপটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়।
এদিকে আনত্মর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থার ২ সদস্যের প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ জিয়া সারকারখানার ল্যাবরেটরী পরিদর্শন করেছেন। জাতিসংঘের রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থার টিমলিডার মার্টিন হক এবং অপর সদস্য জয়নত্ম কুমার প্রতিনিধি দলে রয়েছেন। বিশ্বব্যাপী রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ অনুসন্ধান চালানোই এর ল্য। প্রতিনিধি দলটি জিয়া সারকারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান গণির সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেন।
No comments