শুনানিতে ৫ম সংশোধনীকে বৈধ বললেন টিএইচ খান
সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এবং তিন আইনজীবীর আবেদনের ওপর শুনানি শুরম্ন হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বে আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মঙ্গলবার শুনানির শুরম্নতেই খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের আইনজীবী টিএইচ খান বক্তব্য রাখেন। আদালত টিএইচ খানের বক্তব্য শোনার পর বৃহস্পতিবার শুনানির পরবতর্ী দিন নির্ধারণ করেছে।শুনানির সময় সরকার পৰে উপস্থিত ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং আবেদনকারীদের পৰে টিএইচ খান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। শুনানি শেষে টিএইচ খান সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৭৯ সালে পার্লামেন্ট আইনজীবী এবং সামরিক আইনের অধীনে জারিকৃত বিধি ঘোষণা সরকারের সিদ্ধানত্ম সকল কিছুকে বৈধতা দিয়েছে। পার্লামেন্টের বৈধতা দেয়ার বিষয়গুলোকে সুপ্রীমকোর্টেও তিন বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, মোসত্মফা কামাল ও বিচারপতি মোনেম তারা বিভিন্ন রায়ে ঐ সামরিক আইনগুলোকে বিভিন্ন রায়ের মাধ্যমে বৈধতা দিয়েছেন। এই বৈধ বিষয়টাকে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করতে পারে না।
উলেস্নখ্য, গত রবিবার খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পৰে টিএইচ খান এবং তিন আইনজীবীর পৰে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক পৃথক পৃথকভাবে আপীল বিভাগের সংশিস্নষ্ট শাখায় ৮ সপ্তাহের জন্য শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। এ সময় আদালত একদিন সময় দিলে মঙ্গলবার শুনানির দিন নির্ধারণ করে।
এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ঐদিন বলেছিলেন, একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে বিষয়টি আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। সময় চেয়ে আবেদন করেছেন, যাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর ব্যাহত হয়।
সামরিক সরকারের বৈধতা দিয়ে ১৯৭৭ সালের ৭ নম্বর মার্শাল ল রেগুলেশন (এমএলআর) চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেৰিতে হাইকোর্ট ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক ও বিচারপতি এবিএম ফজলে কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। সে দিনই রায় স্থগিতের আবেদন জানায় তৎকালীন বিএনপি সরকার।
হাইকোর্টের রায়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যনত্ম খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম এবং জিয়াউর রহমানের শাসনকে বেআইনী ঘোষণা করা হয়। হাইকোর্টের ঐ রায়ে আরও বলা হয়, সামরিক আইন সামগ্রিকভাবে অবৈধ ও অসাংবিধানিক এবং সামরিক আইনের অধীনে করা সব কার্যক্রম-আইন ও বিধিও অবৈধ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগ পর্যনত্ম সরকারে পরিবর্তন সংবিধানসম্মতভাবে হয়নি বলে হাইকোর্টের ঐ রায়ে অভিমতে বলা হয়।
বিগত সরকার পৰ যে আপীল আবেদন করেছিল, বর্তমান সরকার তা প্রত্যাহারের আবেদন জানায়। ৩ জানুয়ারি আপীল বিভাগ তা মঞ্জুর করে। ৫ জানুয়ারি বিএনপি মহাসচিব ও তিন আইনজীবী হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। এর ওপরই এখন শুনানি শুরম্ন হয়েছে।
No comments