আওয়ামী লীগ কখনও দেশবিরোধী চুক্তি করতে পারে না- সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ আলোচনা
বিরোধী দলহীন নিষপ্রাণ সংসদ গরম করে তুলেছিলেন সরকারী দলের সংসদ সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে মিথ্যাচার করায় বিরোধী দল নেত্রী খালেদা জিয়ার সমালোচনায় মুখর ছিলেন তাঁরা।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা বলেন, আওয়ামী লীগ সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। তাই আওয়ামী লীগ কখনও দেশবিরোধী চুক্তি করতে পারে না। যারা রাষ্ট্রদ্রোহী গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব দেয়, যুদ্ধাপরাধী-স্বাধীনতাবিরোধী নিয়ে জোট করে, মন্ত্রিত্ব দিয়ে রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তুলে দেয়- সেই বিএনপিই দেশবিরোধী চুক্তি করতে পারে। খালেদা জিয়া চুক্তি না পড়েই মিথ্যাচার করছেন। এদের হাতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কখনও নিরাপদ হতে পারে না।সোমবার কার্যসূচী অনুযায়ী প্রশ্নোত্তর পর্ব, আইন প্রণয়ন কার্যাবলী শেষে ডেপুটি স্পীকার কর্নেল (অব) শওকত আলীর সভাপতিত্বে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রসত্মাবের ওপর আলোচনা শুরম্ন হয়। আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দলের নুরম্নল ইসলাম বিএসসি, জুনায়েদ আহমেদ পলক, মাহবুব আরা বেগম গিনি, তহুরা আলী, আবু জাহির, গোলাম ফারম্নক খন্দকার প্রিন্স, মীর শওকত আলী বাদশা, মোছাম্মৎ ফরিদা আখতার ও আশরাফুন্নেসা মোশাররফ। আলোচনা শেষে আজ মঙ্গলবার বিকেল তিনটা পর্যনত্ম সংসদ মুলতবি করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের নুরম্নল ইসলাম বিএসসি বর্তমান সরকারের এক বছরের বিভিন্ন সফলতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রাথমিক শিৰায় অভিন্ন পদ্ধতি ও সমাপনী পরীৰার বিধান সরকারের অন্যতম বড় সাফল্য। বিরোধী দলের সংসদে অনুপস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা সংসদে আসবে না। অথচ প্রশ্ন পাঠাবেন, মন্ত্রী উত্তর দেবেন_ এটা হতে পারে না। তিনি সংসদে না আসা পর্যনত্ম বিরোধী দলের প্রশ্ন দিনের কার্যসূচীতে না রাখার প্রসত্মাব দেন।
সরকারী দলের জুনায়েদ আহমেদ পলক সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ৰমতালিপ্সু বিএনপি-জামায়াতের কারণেই দেশে ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি হয়েছিল। তারা সব সময় বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করে। দেশের মানুষকে বিভ্রানত্ম করতে খালেদা জিয়া চরম মিথ্যাচার করছেন। চুক্তি না দেখে-পড়েই খালেদা জিয়া বলে বেড়াচ্ছেন শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে এসেছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা কখনও দেশ বিক্রি বা দেশবিরোধী চুক্তি করতে পারেন না। দেশবিরোধী চুক্তি তারাই করতে পারে যারা রাষ্ট্রদ্রোহী গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব দেয়, যুদ্ধাপরাধী-স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে জোট করে, তাদের মন্ত্রিত্ব দিয়ে রক্তস্নাত লাল-সবুজ পতাকা ওড়াবার সুযোগ দেয়। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে আঘাত করার শক্তি খালেদা জিয়ার নেই।
আওয়ামী লীগের মাহবুব আরা বেগম গিনি ওয়ান ইলেভেনে বিএনপির কালো দিবস পালনের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতই ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করেছিল। খালেদা জিয়া কাদের বিচার চান? তিনিই তো ওয়ান ইলেভেনের নায়কদের ৰমতায় বসিয়েছিলেন। ওই সময় খালেদা জিয়াকে গেস্খফতার-সাজানো নাটক উলেস্নখ করে বলেন, কারাগারে থাকার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেবাদাসী। কার্টনে করে তাঁর পছন্দের জুস পাঠানো হতো। আর শেখ হাসিনাকে বিনা কারণে গ্রেফতার করে দিনের পর দিন আদালতে টানাহেঁচড়া করে মাইনাস করার চেষ্টা চলেছে।
তহুরা আলী বলেন, বিএনপির ঝুলনত্ম মহাসচিব চোখ, নাক ও মুখের জলের সঙ্গে তিসত্মার জল মিশিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, সরকারের ওপর জনগণ ত্যক্ত-বিরক্ত। কিন্তু সত্য কথা এই যে, জনগণ তাঁদের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় দিশেহারা হয়ে আবোলতাবোল বকছেন।
আবু জাহের বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রানত্ম করতে চাইছেন। অথচ তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ভারত সফরে গিয়ে দেশের স্বার্থের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। সাংবাদিকদের সামনে তিনি নিজেই তা স্বীকার করেছেন।
No comments