ঢাবিতে ছাত্রদলের যুদ্ধ- ০ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রণৰেত্র- ০ বিদ্রোহী গ্রম্নপের হাতে আহত সভাপতি টুকু- ০ সশস্ত্র ক্যাডার নিয়ে ঢুকেছিল টুকু ও তার মহাসচিব- ০ ছাত্রদল দু' দিনের ধর্মঘট ডেকেছে, ছাত্রলীগ বলেছে তারা পরিবেশ অশানত্ম করতে দেবে না
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ছাত্রদলের বিবদমান দুই গ্রম্নপের মধ্যে গোলাগুলি, ককটেল নিৰেপ, সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় সোমবার রণৰেত্রে পরিণত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
সংঘর্ষে ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, বিদ্রোহী গ্রম্নপের নেতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ খান পারভেজসহ উভয় পৰের প্রায় অর্ধশত নেতা- কমর্ী আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কেএম সাইফুল ইসলাম, রমনা জোনের এসি (পেট্রোল) আহাদ, শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিমসহ আরও ৫-৭ জন পুলিশ সদস্য। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পৰের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়। বিস্ফোরণ ঘটে ৩০ থেকে ৩৫টি ককটেলের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক দফায় অর্ধশতের বেশি টিয়ার শেল ও রবার বুলেট ছোড়ে।ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ত্যাগী কিছু নেতার বাদ পড়া নিয়ে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত ও মূল কমিটিতে পদপ্রাপ্ত নেতা- কমর্ীদের সঙ্গে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল সভাপতি টুকুকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, বিদ্রোহী নেতা মাসুদকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে বঙ্গবন্ধু হাসপাতাল ও ওসি রেজাউলকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে অন্যান্যের নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ছাত্রলীগকে দায়ী করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুই দিনের (১৯ ও ২১ জানুয়ারি) ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ছাত্রদলের মূল কমিটি। এর মধ্যে দায়ীদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে লাগাতার ধর্মঘটে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি। তাদের দাবি, 'ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা করেছে।' এ ঘটনার পর বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ারও এক বিবৃতিতে এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
অন্যদিকে তাদের এ দাবির বিপরীতে ডাকসু কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত বিদ্রোহী গ্রম্নপের নেতা আহসান উদ্দিন খান শিপন বলেছেন, 'টুকু-আলিম 'উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে' চাপানোর চেষ্টা করছে। কারও ইন্ধন বা সাহায্যে নয়, সাধারণ শিৰাথর্ীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গী, নারী কেলেঙ্কারির দায়ে অভিযুক্ত টুকু আলিম ও তাদের বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডারদের ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছে ছাত্রদলেরই ত্যাগী নেতা-কমর্ীরা। তারা টুকু-আলিমকে আজীবনের জন্য ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। তিনি বলেন, জঙ্গী টুকু, নারী কেলেঙ্কারিতে যুক্ত আলিম বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডার এনে ক্যাম্পাসে অস্ত্রের প্রদর্শনী করেছে। বোমাবাজি করেছে। এর মাধ্যমে তারা ছাত্রদলের সুনাম ৰুণ্ন করেছে। তারা এ দু'জনের বহিষ্কার দাবি করেন।
এদিকে ছাত্রদলের ডাকা ধর্মঘটকে চ্যালেঞ্জ করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার কোন ধরনের ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। যে কেউ শিৰার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘি্নত করার চেষ্টা করলে সাধারণ শিৰাথর্ীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রলীগ তাদের প্রতিহত করবে।
সুলতান সালাউদ্দীন টুকুকে সভাপতি ও আমিরম্নল ইসলাম খান আলিমকে সাধারণ সম্পাদক রেখে গত ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। এর পরদিন থেকেই টুকুর বিরম্নদ্ধে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ এনে টুকু আলিম কমিটির নেতৃবৃন্দকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান না পাওয়া নেতা-কমর্ীরা আন্দোলন শুরম্ন করে। পদবঞ্চিত নেতাদের হামলার শিকার হন একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। কমিটি ঘোষণার পর গত শনিবার পদপ্রাপ্ত নেতারা ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে বিদ্রোহীদের প্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হয়।
সূত্র জানায়, এরপর রবিবার রাতে টুকু আলিম সিদ্ধানত্ম নেন, যে কোন মূল্যে সোমবার তারা ক্যাম্পাসে আসবে। এজন্য বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করতে তারা কিছু চিহ্নিত সশস্ত্র ক্যাডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। রবিবার ভোর রাতেই বেশ কিছু বহিরাগত ক্যাডার ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। সকাল ছয়টার দিকে পদপ্রাপ্ত কয়েক নেতা বেশ কিছু কমর্ী নিয়ে ক্যাম্পাসে আসে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে বিদ্রোহীদের কয়েকজনকে দেখতে পেয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। সেখানে বিৰিপ্ত সংঘর্ষে আহত হয় বিদ্রোহী গ্রম্নপের এক কর্মী। এরপর পদবঞ্চিত নেতা-কমর্ীরা সূর্য সেন হলের সামনে ও আশ পাশে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে টুকু গ্রম্নপ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে বহিরাগতদের জড়ো করতে থাকে। সকাল ১১টা পর্যনত্ম টুকু গ্রম্নপের নেতা-কমর্ীদের বেশ কিছু বহিরাগতসহ ক্যাম্পাস শ্যাডো, কলা ভবন, নীলৰেত মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়। আর অধিকাংশ নেতা-কমর্ী অবস্থান নেয় মধুর ক্যান্টিনে। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে মধুর ক্যান্টিনে আসেন ছাত্রদল সভাপতি টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আলিম। এসময় তাদের পেছনে একটি মাইক্রোবাসে আসে বেশ কয়েকজন বহিরাগত। সংশিস্নষ্ট সূত্র জানায়, এদের মধ্যে চারজন ছিল সশস্ত্র।
এরপর ছাত্রদল নেতা-কমর্ীরা টুকু আলিমের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সঙ্গে সাৰাত করতে তার কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের কাছাকাছি পেঁৗছলে সূর্য সেন হলের সামনে থেকে শিপন, খোকন, মাসুদের নেতৃত্বে তাদের লৰ্য করে বেশ কয়েকটি ককটেল ছুড়ে বিদ্রোহীরা। এক পর্যায়ে উভয় পৰের মধ্যে গোলাগুলি শুরম্ন হয়ে যায়। বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণও ঘটে এসময়। তারপর শুরম্ন হয় রড, কিরিচ, রাম দা নিয়ে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ইটপাটকেল নিৰেপ। একপর্যায়ে পুলিশ বিদ্রোহীদের লৰ্য করে সূর্য সেন হলের দিকে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রবার বুলেট ছোড়ে। হলের ভেতর টিয়ার নিৰেপ করা ও টুকু গ্রম্নপের কমর্ীদের ছোড়া গুলি ও ইট হলের ভেতরে পড়াতে হলের সাধারণ ছাত্ররা ৰুব্ধ হয়ে ওঠে। এসময় তাদেরও টুকু গ্রম্নপের বিরম্নদ্ধে অবস্থান নিতে দেখা যায়। পুলিশের টিয়ারশেলের মুখে সংঘর্ষ বন্ধ থাকলেও কিছুৰণ পড়ে বিদ্রোহীরা সংগঠিত হয়ে টুকু আলিমসহ তাদের নেতা-কমর্ীদের ধাওয়া দেয়।
বেশিরভাগ নেতা-কমর্ী দোয়েল চত্বর হয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে গেলেও কলা ভবনের ভেতরে আশ্রয় নেয় সভাপতি টুকু, সাধারণ সম্পাদক আলিম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল হক নাসির, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহীদুল ইসলাম হীরম্নসহ বেশ কয়েকজন নেতা- কমর্ী। এ খবর পেয়ে বিদ্রোহীরা কলাভবনের সব গেটের সামনে অবস্থান নেয়। দীর্ঘৰণ কলাভবনের ১০৫৯ নম্বর কৰে লুকিয়ে থাকার পর ছাত্রদল নেতাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বিপুল সংখ্যক পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে তাদের কলা ভবনের পেছনের গেট দিয়ে বের করে আনতে গেলে গেটের সামনে বিদ্রোহীরা সেখানে তাদের ঘিরে ফেলে। তারা টুকুকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করে। এসসময় বিদ্রোহীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রকে যোগ দিতে দেখা যায়। পুলিশ তাদের কাছে ঘেষতে বাধা দিলে আইবিএর ভেতর থেকে কেউ একজন কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এ সুযোগে অন্যরা পুলিশের বেষ্টনী টপকে টুকুর উপর হামলে পড়ে। একজনের হাতে থাকা রেঞ্জের আঘাতে টুকুর মাথা ফেটে যায়। 'জঙ্গী টুকুকে মার' 'জঙ্গীর কোন স্থান নাই' এ ধরনের নানা শেস্নাগান দিয়ে সাধারণ শিৰার্থীরাও টুকুর উপর চড়াও হয়। পুলিশের বেষ্টনীর উপর দিয়ে টুকুকে লৰ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে কয়েক হাত দূরত্ব থেকে। একাধিক পাথর টুকুর মাথায় জখম করে। পেছনে দেয়ালের ফাঁক দিয়েও টুকুকে লৰ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে, লাঠি দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায়। এসময় টুকুর সঙ্গে থাকা ওবায়দুল হক নাসির, হীরম্নসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কমর্ী আহত হয়। মরা গরম্নকে যেভাবে শকুন ঘিরে ধরে সেভাবেই টুকুকে ঘিরে ধরে ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করে বিৰুব্ধ আক্রমণকারীরা। তাকে বাঁচাতে তাকে ঘিরে থাকা পুলিশ এক পর্যায়ে হঠাৎ সামনের দিকে রওনা হয়। দৌড়ে কিছুদূর গেলে আক্রমণকারীরা তাদের লৰ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে ছুড়তে তাদের পিছু নেয়। তাদের থামাতে পুলিশ এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ছুড়ে। পরে পুলিশ বেষ্ঠনীতে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু।
টুকুকে লৰ্য করে বিৰুব্ধদের এ আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে সেখানে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, এসি আহাদ ও শাহবাগ থানার ওসি রেজাউল করিমসহ ৫-৭ জন পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে প্রক্টর পেটে, আহাদ ও রেজাউল মাথায় আঘাত পান।
অন্যদিকে কোন এক ফাঁকে পালিয়ে যায় ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আমিরম্নল ইসলাম খান আলিম। প্রত্যৰদশর্ীরা জানায়, মধুর ক্যান্টিনের সামনে কিছু বিদ্রোহী নেতা-কমর্ী তাকে পেয়ে লাঞ্ছিত করে। পরে তিনি একটি মোটর সাইকেলে করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, মনে হচ্ছে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার জন্য ছাত্রদলের বিবদমান দুটি পৰ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরম্নদ্ধে কর্তৃপৰ ব্যবস্থা নেবে। আর বহিরাগতদের বিরম্নদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, যে কোন মূল্যে ক্যাম্পাসের শিৰার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।
সাংবাদিকের ক্যামেরা ভাংচুর
সংঘর্ষ চলাকালে টুকুর বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডারদের ছবি তুলতে গেলে তারা দৈনিক জনকণ্ঠের ফটো সাংবাদিক মীর আনিসের নিকন ৩০০ মডেলের একটি ক্যামেরা ভাংচুর করে এবং তাদের হামলায় ওই সাংবাদিক আহত হন।
পদপ্রাপ্তদের সংবাদ সম্মেলন
সোমবার বিকাল ৪টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আমিরম্নল ইসলাম খান আলিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু আহত হওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ দিনের ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় এবং উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
তিনি বলেন, অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাসত্মি এবং ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করা না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার কর্মসূচি দেয়া হবে।
লিখিত বক্তেব্যে আলিম অভিযোগ করেন, উপাচার্যের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত সৌজন্য সাাত করতে গেলে প্রশাসন ও পুলিশের প্রত্য সহযোগিতায় ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বোমা আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, চাপাতিসহ মারাত্মক আস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছাত্রদলের উপর হামলা করে।
এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগের সূর্য সেন হল সভাপতি সাঈদ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক তুহিন, মুহসিন হল সভাপতি শেখ মোঃ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন এবং জসীম উদ্দিন হল সভাপতি আব্দুর রহমান জীবনকে দায়ী করেন।
তবে ছাত্রদলের বিদ্রোহের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হলেও তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেননি। পরে অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ছাত্রদলের ুব্ধ নেতা-কমর্ী ও ছাত্রলীগের সমন্বয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে উলেস্নখ করেন।
টুকুকে রা করতে গিয়ে প্রক্টর আহত হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কিভাবে ষড়যন্ত্রকারী বলছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আলিম বলেন, প্রশাসন জড়িত না থাকলে টুকু আহত হতেন না।
বিদ্রোহীদের সংবাদ সম্মেলন
অন্যদিকে প্রায় একই সময়ে ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্রোহীরা। এসময় অন্যান্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রশীদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমরান হোসেন মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য নাসিমা আক্তার শিমু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিদ্রোহী নেতা ছাত্রদলের বিগত কমিটির সমাজ সেবা সম্পাদক আহসান উদ্দীন খান শিপন বলেন, টুকু আলিম ছাত্রদলকে দুর্বল করার লৰ্যে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসাবে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবসায়ী,সন্ত্রাসী, অছাত্রদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। টুকুর ব্যর্থতাই এ ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি দাবি করেন, তাদের কিছু নেতা-কমর্ী যখন ক্যাম্পাসে সকালে হাঁটছিল তখন হঠাৎ করেই টুকুর বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডার তাদের ওপর হামলা চালায়। এর প্রতিবাদেই সাধারণ শিৰার্থীদের নিয়ে তারা টুকু আলিমকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছেন।
ছাত্রলীগ এ ঘটনা ঘঠিয়েছে- পদপ্রাপ্তদের এমন বক্তব্যের প্রেৰিতে তিনি বলেন, 'টুকু-আলিম 'উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে' চাপানোর চেষ্টা করছে। কারও ইন্ধন বা সাহায্যে নয় সাধারণ শিৰাথর্ীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গী, নারী কেলেঙ্কারীর দায়ে অভিযুক্ত টুকু আলিম ও তাদের বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডারদের ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছে ছাত্রদলেরই ত্যাগী নেতা-কর্মীরা।' তিনি বলেন, জঙ্গী টুকু, নারী কেলেঙ্কারিতে যুক্ত আলিম বহিরাগত সশস্ত্র ক্যাডার এনে ক্যাম্পাসে অস্ত্রের প্রদর্শনী করেছে। বোমাবাজি করেছে। এর মাধ্যমে তারা ছাত্রদলের সুনাম ৰুণ্ন করেছে। তারা এ দু'জনের বহিষ্কার দাবি করেন। তিনি টুকু আলিমকে আজীবনের জন্য ক্যম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।
বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতি
এ ঘটনার পর বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার এক বিবৃতিতে এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ছাত্রদল সভাপতি টুকু ও অন্য নেতৃবৃন্দের উপর ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা উস্কানিতে গুলি ও হামলা চালায়। জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এ হামলা চালানো হয়েছে।
ধর্মঘট প্রতিহত করবে ছাত্রলীগ
ছাত্রদলের ডাকা ধর্মঘট সাধারণ শিৰাথর্ীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করবে ছাত্রলীগ। ছাত্রদলের ধর্মঘট আহ্বানের পর ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ তাদের প্রতিক্রিয়ায় জনকণ্ঠকে এ কথা জানান। ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সোহলে রানা টিপু ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা বলেন, ছাত্রলীগ সবসময় ছাত্রবান্ধব, সুস্থ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বর্তমান সরকার ৰমতায় আসার পর থেকে গত এক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এক দিনের জন্যও অনাকাঙ্খিতভাবে বন্ধ হয়নি। শিৰার পরিবেশ নষ্ট হয়নি। তার কারণ ছাত্রলীগের সুস্থ রাজনীতি। ছাত্রদল নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ করেছে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে। নিজেরা মারামারি করে শিৰার পরিবেশ নষ্ট করবে বা সাধারণ শিৰাথর্ীদের কাস পরীৰা বন্ধ করে শিৰা কার্যক্রম ব্যাহত করবে তা কোনভাবেই হতে দেয়া যায় না। শিৰার সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করার যে কোন ষড়যন্ত্র ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিৰার্থীদের নিয়ে প্রতিহত করবে।
No comments