স্বাস্থ্যনীতির খসড়া
জাতি, ধর্ম, গোত্র, আয়, লিঙ্গ ও ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে সকলের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার। এর আলোকে গত শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের ওপর গুরম্নত্ব দিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১০-এর মতামত সংবলিত খসড়া প্রকাশ করেছে।
আগামী তিন মাসের মধ্যে স্বাস্থ্যনীতি চূড়ানত্ম করা হবে। প্রতি পাঁচ বছর পর পরিবর্তিত সময়, সম্পদ ও অবস্থা বিবেচনা করে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে হালনাগাদ করার কথাও এই খসড়ায় উলিস্নখিত হয়েছে। খসড়া স্বাস্থ্যনীতিটি বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে প্রেরণ করা হবে মতামত প্রদানের জন্য। অতঃপর চূড়ানত্ম করা হবে।স্বাস্থ্য খাত এমন একটি কার্যকর পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করতে চায় যেখানে বাংলাদেশের জনগণের বৃহত্তর অংশ সুস্বাস্থ্য অর্জন ও তা ধরে রাখার সুযোগ পায়। স্বাস্থ্যনীতির প্রতিবন্ধকতা অধ্যায়ে মাতৃ ও শিশুমৃতু্য হার, এইচআইভি, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, কালাজ্বর, আর্সেনিক দূষণ, অপুষ্টির েেত্র যথেষ্ট অর্জন থাকলেও তা আনত্মর্জাতিক পর্যায়ের নয় বলে উলেস্নখ করা হয়েছে। এসব ছাড়া আরও কিছু বিষয়কে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখানো হয়েছে, যেমন প্রাকৃতিক দুযের্াগ ও জলবায়ু পরিবর্তন, মানবসম্পদ, অনানুষ্ঠানিক স্বাস্থ্য সেবা, কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য গবেষণা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। খসড়া স্বাস্থ্যনীতিকে মোট দশটি অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে_ প্রসত্মাবনা, প্রোপট ও প্রবণতা, রূপকল্প, ল্য, উদ্দেশ্য, নীতি, কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা। স্বাস্থ্যনীতি বাসত্মবায়নের জন্য বিশটি সুনির্দিষ্ট ল্য স্থির করা হয়েছে। ল্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য বিশটি নীতি অনুসরণ করা হবে। আর এসব নীতি অনুসরণ করে ল্য অর্জনের জন্য ৪৮টি কৌশল অবলম্বনের কথা উলেস্নখ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টার মতে, একটি বাসত্মবভিত্তিক স্বাস্থ্যনীতি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে দেশে স্বাস্থ্য সেবার ব্যয় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বিগত সাত বছরে দেশের স্বাস্থ্যসেবা একেবারেই ভেঙে পড়েছিল। স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে খুব শীঘ্রই চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরম্ন হবে। দেশের সকল হাসপাতালে যাতে চিকিৎসকদের সমবণ্টন হয় জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির খসড়াতে সে ব্যাপারে গুরম্নত্বারোপ করা হয়েছে।
স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর দেশে একটি জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণীত হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০০ সালে উদ্যোগ নিয়েছিল, তা পরবতর্ীতে চারদলীয় জোট সরকার মতায় এসে ভ-ুল করে দেয়। এখন মহাজোট সরকারের যুগের চাহিদা মোতাবেক নবায়ন করে একটি স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের প্রতিশ্রম্নতি রয়েছে। নতুন স্বাস্থ্যনীতির প্রাথমিক খসড়া গত জুন মাসে ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে প্রাপ্ত ও সংগৃহীত মতামত বিশেস্নষণ করে সংশোধিত এই খসড়া প্রণয়ন করা হয়। সরকার জনগণের সুস্বাস্থ্য অর্জন ও তা রার জন্য একটি সময়োপযোগী এবং গ্রহণযোগ্য জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি বাসত্মবায়ন করলে এটি হবে আরেক সাফল্য। স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া নাগরিকের মৌলিক অধিকার, সুতরাং সরকারের এ উদ্যোগ বাসত্মবায়নে কালপেণ না করাই শ্রেয়।
No comments