বিশ্বজিৎ হত্যাকা- ॥ সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে ভিডিও ফুটেজের মিল নেই ॥ হাইকোর্ট
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকায় নিহত বিশ্বজিৎ দাসের লাশের তৈরি করা সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে হত্যাকা-ের ভিডিও ফুটেজের মিল নেই বলে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট।
আদালত প্রশ্ন করে বলে, কাউকে বাঁচানোর জন্যই কি এ ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে? বৃহস্পতিবার বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিচারপতি মাহমুদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী চিকিৎসক ডা. মাকসুদুর রহমান ও সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশের এসআই জাহিদুল হক আদালতে হাজির হন। পরে আদালত এসব মন্তব্য করেন। এ সময় এটিএন নিউজের ধারণকৃত বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ের ভিডিও ফুটেজও উপস্থাপন করা হয়।
শুনানিতে আদালত বলে, প্রতিবেদনে বিশ্বজিতের পিঠে কোমরের ওপর ও পায়ে হাল্কা জখম দেখা যায়। ডান হাতের পাখনার নিচে তিন ইঞ্চি কাটা জখম, বাম পায়ের হাঁটুর নিচে ছেঁড়া জখম। এ সময় আদালতের এক প্রশ্নের জবাবে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সূত্রাপুর থানার এসআই মোঃ জাহিদুল হক বলেন, পৌনে ১২টায় আমি লাশের সুরতহাল করেছি। সকাল নয়টায় এ ঘটনা ঘটেছে। লাশের সুরতহাল করার সময় ডান হাতের পাখনার নিচে জখম দেখতে পেয়েছি। তা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণেই সে মারা গেছে। এ পর্যায়ে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. মাকসুদুর রহমান আদালতকে বলেন, পাখনার নিচে ধমনীটা (আর্টারি) কেটে যাওয়ার কারণেই বিশ্বজিৎ মারা যায়।
এ পর্যায়ে আদালত ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদারের কাছে জানতে চান, ঢাকা মেডিক্যালের জরুরী বিভাগে কি বিশ্বজিৎকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়েছিল কি না? জবাবে অমিত তালুকদার বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে সঠিক কোন তথ্য নেই। তবে তিনি বলেন, সকাল নয়টা ২৫ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেয়া হয়। এর ২৫ মিনিট পর নয়টা ৫০ মিনিটে মারা যায়।
এরপর বিশ্বজিতের ঘটনায় ধারণকৃত এটিএন নিউজের ভিডিও ফুটেজটি আদালতে প্রদর্শন করা হয়। এটা দেখার পর আদালত ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে বলেন, ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে আপনার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন কি সামঞ্জস্যপূর্ণ? জবাবে চিকিৎসক বলেন, ডান পাখনার নিচে একই জায়গায় একাধিক কোপ পড়েছে। শরীরে বড় আঘাত একটিই পেয়েছি।
এ সময় আদালতে উপস্থিত আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বলেন, এক জায়গায় একাধিক কোপ পড়তে পারে না। ভিডিও ফুটেজ সে সাক্ষ্য দেয় না।
এরপর আদালত বলে, ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ভিকটিম কখনই এক জায়গায় স্থির ছিল না। অধিকাংশ সময়ই সে দৌড়াচ্ছিল। ফুটেজ তো ভিন্ন কথা বলছে। এ পর্যায়ে আদালত চিকিৎসকের কাছে জানতে চান, কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন? জবাবে চিকিৎসক না বলেন। আমি পৌনে দুটায় লাশ পরীক্ষা করেছি। শরীরে আঘাতের চিহ্ন যা পেয়েছি তাই লিখেছি।
আদালত বলে, আপনি কি কাউকে বাঁচানো চেষ্টা করছেন? জবাবে চিকিৎসক বলেন, না। এ পর্যায়ে আদালত বলে, ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভিকটিমের বাম পাশে চাপাতি দিয়ে কোপদেয়া হচ্ছে। এটাত আপনার প্রতিবেদনে নেই। আদালত বলে, ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তখন চিকিৎসক বলেন, শরীরে যা দেখেছি তাই লিখেছি। এ সময় আদালত আরও বলেন, সে মারা গেছে। তাই মামলাটি বিচারের জন্য এক কোপ আর দশ কোপ বড় বিষয় নয়। প্রশ্ন হচ্ছে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের ভূমিকা যথাযথ ছিল কিনা? একজন মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে। এটা বড় কথা।
পরে আদালত বলেন, আমরা যদি এখন কোন আদেশ দেই তবে তা মামলার বিচারে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। এ বিষয়ে আদালত আব্দুল মতিন খসরু ও সংশ্লিষ্ট ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য জানতে চান।
ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার বলেন, মামলাটি মুলতবি থাকুক। পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করতে দেরি হলে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারবে। এ পর্যায়ে আদালত সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চার্জশীট দিতে দেরি করছেন কেন? জবাবে বলা হয়, মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিতে ন্যস্ত করা হয়েছে। এ সময় আদালত এ মামলায় কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানতে চান। জবাবে সাতজনকে আটক করা হয়েছে বলে শুনেছি। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি তো জানি নয়জন। পত্রিকায় যাদের ছবি এসেছে তাদের সকলকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? জবাবে তিনি বলেন, জ্বী। তখন আদালত বলে, অভিযোগপত্র দাখিলে বিলম্ব হোক এটা আমরা চাই না। তবে চার্জশীট দিতে কেন দেরি হচ্ছে? ভিডিও ফুটেজ আছে। আসামিপক্ষের স্বীকারোক্তি জবানবন্দী আছে। চাক্ষুষ সাক্ষী আছে। দেড়মাস হয়ে গেল। কেন চার্জশীট দিতে দেরি হচ্ছে। এরপর আদালত শুনানি ২ মাসের জন্য মুলতবি করেন।
উল্লেখ্য, এক ফোজদারি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সকল আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি জড়িতদের কেন গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছিল। পরে গত রবিবার হাইকোর্টে বিশ্বজিতের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপর মঙ্গলবার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী পুলিশ কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার এসআই মোঃ জাহিদুল হককে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পাশাপাশি বেসরকারী টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজ কর্তৃপক্ষে ফুটেজ জমা দিতে বলা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী চিকিৎসক ডা. মাকসুদুর রহমান ও সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশের এসআই জাহিদুল হক আদালতে হাজির হন। পরে আদালত এসব মন্তব্য করেন। এ সময় এটিএন নিউজের ধারণকৃত বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ের ভিডিও ফুটেজও উপস্থাপন করা হয়।
শুনানিতে আদালত বলে, প্রতিবেদনে বিশ্বজিতের পিঠে কোমরের ওপর ও পায়ে হাল্কা জখম দেখা যায়। ডান হাতের পাখনার নিচে তিন ইঞ্চি কাটা জখম, বাম পায়ের হাঁটুর নিচে ছেঁড়া জখম। এ সময় আদালতের এক প্রশ্নের জবাবে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সূত্রাপুর থানার এসআই মোঃ জাহিদুল হক বলেন, পৌনে ১২টায় আমি লাশের সুরতহাল করেছি। সকাল নয়টায় এ ঘটনা ঘটেছে। লাশের সুরতহাল করার সময় ডান হাতের পাখনার নিচে জখম দেখতে পেয়েছি। তা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণেই সে মারা গেছে। এ পর্যায়ে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. মাকসুদুর রহমান আদালতকে বলেন, পাখনার নিচে ধমনীটা (আর্টারি) কেটে যাওয়ার কারণেই বিশ্বজিৎ মারা যায়।
এ পর্যায়ে আদালত ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদারের কাছে জানতে চান, ঢাকা মেডিক্যালের জরুরী বিভাগে কি বিশ্বজিৎকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়েছিল কি না? জবাবে অমিত তালুকদার বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে সঠিক কোন তথ্য নেই। তবে তিনি বলেন, সকাল নয়টা ২৫ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেয়া হয়। এর ২৫ মিনিট পর নয়টা ৫০ মিনিটে মারা যায়।
এরপর বিশ্বজিতের ঘটনায় ধারণকৃত এটিএন নিউজের ভিডিও ফুটেজটি আদালতে প্রদর্শন করা হয়। এটা দেখার পর আদালত ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে বলেন, ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে আপনার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন কি সামঞ্জস্যপূর্ণ? জবাবে চিকিৎসক বলেন, ডান পাখনার নিচে একই জায়গায় একাধিক কোপ পড়েছে। শরীরে বড় আঘাত একটিই পেয়েছি।
এ সময় আদালতে উপস্থিত আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বলেন, এক জায়গায় একাধিক কোপ পড়তে পারে না। ভিডিও ফুটেজ সে সাক্ষ্য দেয় না।
এরপর আদালত বলে, ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ভিকটিম কখনই এক জায়গায় স্থির ছিল না। অধিকাংশ সময়ই সে দৌড়াচ্ছিল। ফুটেজ তো ভিন্ন কথা বলছে। এ পর্যায়ে আদালত চিকিৎসকের কাছে জানতে চান, কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন? জবাবে চিকিৎসক না বলেন। আমি পৌনে দুটায় লাশ পরীক্ষা করেছি। শরীরে আঘাতের চিহ্ন যা পেয়েছি তাই লিখেছি।
আদালত বলে, আপনি কি কাউকে বাঁচানো চেষ্টা করছেন? জবাবে চিকিৎসক বলেন, না। এ পর্যায়ে আদালত বলে, ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভিকটিমের বাম পাশে চাপাতি দিয়ে কোপদেয়া হচ্ছে। এটাত আপনার প্রতিবেদনে নেই। আদালত বলে, ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তখন চিকিৎসক বলেন, শরীরে যা দেখেছি তাই লিখেছি। এ সময় আদালত আরও বলেন, সে মারা গেছে। তাই মামলাটি বিচারের জন্য এক কোপ আর দশ কোপ বড় বিষয় নয়। প্রশ্ন হচ্ছে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের ভূমিকা যথাযথ ছিল কিনা? একজন মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে। এটা বড় কথা।
পরে আদালত বলেন, আমরা যদি এখন কোন আদেশ দেই তবে তা মামলার বিচারে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। এ বিষয়ে আদালত আব্দুল মতিন খসরু ও সংশ্লিষ্ট ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য জানতে চান।
ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার বলেন, মামলাটি মুলতবি থাকুক। পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করতে দেরি হলে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারবে। এ পর্যায়ে আদালত সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চার্জশীট দিতে দেরি করছেন কেন? জবাবে বলা হয়, মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিতে ন্যস্ত করা হয়েছে। এ সময় আদালত এ মামলায় কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানতে চান। জবাবে সাতজনকে আটক করা হয়েছে বলে শুনেছি। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি তো জানি নয়জন। পত্রিকায় যাদের ছবি এসেছে তাদের সকলকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? জবাবে তিনি বলেন, জ্বী। তখন আদালত বলে, অভিযোগপত্র দাখিলে বিলম্ব হোক এটা আমরা চাই না। তবে চার্জশীট দিতে কেন দেরি হচ্ছে? ভিডিও ফুটেজ আছে। আসামিপক্ষের স্বীকারোক্তি জবানবন্দী আছে। চাক্ষুষ সাক্ষী আছে। দেড়মাস হয়ে গেল। কেন চার্জশীট দিতে দেরি হচ্ছে। এরপর আদালত শুনানি ২ মাসের জন্য মুলতবি করেন।
উল্লেখ্য, এক ফোজদারি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সকল আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি জড়িতদের কেন গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছিল। পরে গত রবিবার হাইকোর্টে বিশ্বজিতের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপর মঙ্গলবার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী পুলিশ কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার এসআই মোঃ জাহিদুল হককে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পাশাপাশি বেসরকারী টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজ কর্তৃপক্ষে ফুটেজ জমা দিতে বলা হয়।
No comments