১৮তম জাতীয় টিকা দিবস
গতকাল রবিবার ছিল ১৮তম জাতীয় টিকা দিবস। টিকাদানের প্রচারাভিযানকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত প্রতিটি শিশু যেন সময়মতো টিকা পেতে পারে সে জন্য লৰ্যমাত্রা নির্ধারণ ও কর্মসূচী নিয়েছে ডিসিসি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ডিসিসি ভবনে ১৮তম জাতীয় টিকা দিবস এবং হাম টিকাদান প্রচারাভিযান ২০১০-এর প্রস্তুতি বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।গতকাল ১৮তম জাতীয় টিকা দিবস উপলৰে শূন্য থেকে ৫৯ মাসবয়সী সব শিশুকে দুই ফোঁটা পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়। ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে উচ্চৰমতাসম্পন্ন ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। ২৪ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে খাওয়ানো হবে একটি করে কৃমিনাশক ট্যাবলেট। আগামী ১৪ থেকে ২৮ ফেব্রম্নয়ারি সারাদেশে পালিত হবে হাম টিকাদান প্রচারাভিযান। এ সময় নয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী সব শিশুকে হামের টিকা দেয়া হবে। জানা গেছে, এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৭ লাখ ৮১ হাজার ৯৯৫ জন শিশু হামের টিকা পাবে। টিকাদান কর্মসূচীতে প্রশিৰিত ৯২৭ জন কমর্ী কাজ করছেন। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন ১৪ হাজার ৬৭৪ জন। উলেস্নখ্য, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট ২ হাজার ৪৬২টি টিকাদান কেন্দ্র রয়েছে।
শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই সচেতনতাকে দেশে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া দরকার। শিশুরাই জাতির ভবিষ্যত। অসুস্থ ও রোগাক্রানত্ম শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে জাতির ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনেকাংশে ৰতিগ্রসত্ম হবে। তাই দেশব্যাপী শিশুস্বাস্থ্যের সুরৰার জন্য টিকাদান কর্মসূচী সফল করা দরকার। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, বিগত বছরগুলোর তুলনায় গত বছরে দেশের আরও প্রত্যনত্ম অঞ্চলের শিশু টিকা পেয়েছে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকার শিশুরা টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় এসেছে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে ৭৮ শতাংশ শিশু সময়মতো টিকা পেয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের হিসেবেও এগিয়ে আছে রাজশাহী। অন্যদিকে সিলেট বিভাগে ৬৯ শতাংশ শিশুকে টিকা দেয়া হয়েছে, যা বিভাগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। জরিপে দেখা গেছে, ২৫ শতাংশ শিশু গত বছরে টিকা পায়নি। সাত শতাংশ শিশু পূর্ণাঙ্গভাবে ডিপিটি-১ ও হামের টিকা নিতে পারেনি। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মহিলাদের মাত্র ২৯ শতাংশ ধনুস্ট্রংকার প্রতিরোধে সব টিকা নিচ্ছে।
আমাদের সবসময় টিকা না নেয়া ২৫ শতাংশ শিশুর কথা মনে রাখতে হবে। আমরা মনে করি, শিশুমৃতু্য কমাতে টিকাদান কর্মসূচীর মতো অন্যান্য রোগ প্রতিরোধেও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াস চালাতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে মৃতু্য হার আরও কমিয়ে আনতে হবে। তবে এর পাশাপাশি দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার হওয়া দরকার। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ছাড়া আমাদের সব উন্নয়ন পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে।
No comments