‘মৃত্যুঘড়ি’

 পাঠক হয়ত অবাক হবেন। সখের জিনিসের ভয়ঙ্কর কোন নামকরণ হতে পারে। তবে অবাক হওয়ার তেমন কিছুই থাকবে না, যখন নামের ব্যাখ্যাটুকু আপনার সামনে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এবার মূল বিষয়ে রয়েছে- ধূমপানের কুফল তুলে ধরে রাজধানীর বিজয় সরণিতে একটি ঘড়ি স্থাপন করা হয়েছে। যার নামকরণ করা হয়েছে ‘মৃত্যুঘড়ি’। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে প্রতিদিন কতজনের মৃত্যু হচ্ছে এই ঘড়ি তা জানাবে। অর্থাৎ ধূমপানসহ তামাক ব্যবহারে গোটাবিশ্বে কতজন মারা যাচ্ছে বছর শেষে সে পরিসংখ্যান বলে দেবে ঘড়িটি। সেই আদলেই ঘড়িটি তৈরি করা হয়েছে। এজন্য জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চোখ রাখতে হবে ঘড়ির দিকে। দিনে কতজন মারা যাচ্ছে সে পরিসংখ্যানও দেবে এই ঘড়ি। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেখে তামাক ব্যবহারে হয়ত নিরুৎসাহিত হবেন অনেকে। পরিবর্তন আসবে আমাদের গোটা সমাজ ব্যবস্থায়। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শনিবার সকালে এই ‘মৃত্যুঘড়ি’ উদ্বোধন করেন। ধূমপানবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই ঘড়িটি স্থাপন করেছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংসদের আগামী অধিবেশনে ধূমপান ও তামাক দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) সংশোধনী আইন পাসের উদ্যোগ নেয়া হবে। গত ২৭ অগাস্ট সংশোধিত এই আইন মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়।
ইনু বলেন, অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এখনও তামাকজাত দ্রব্যের দাম কম। এর দাম বাড়িয়ে ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার থেকে মানুষকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। তামাকের ওপর শুল্ক সরকারের রাজস্ব আদায়ের বড় উৎস হলেও এ ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা ভিন্ন। সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে মন্ত্রীর বক্তব্য হলো তামাকের টাকা দিয়ে সরকারের বড়লোক হওয়ার ইচ্ছা নেই।
অনুষ্ঠানে প্রজ্ঞার চেয়ারম্যান সাঈদ বদরুল করিম সাংবাদিকদের জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে প্রতিদিন ১৫৬ জন ধূমপানের কারণে মারা যায়। ধূমপানের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরিতে এই ঘড়ি স্থাপন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের সামনে ‘মৃত্যুঘড়িটি’ একটি বিলবোর্ডে বসানো হয়েছে। প্রতি নয় দশমিক ১৩ সেকেন্ড পর এর কাঁটা একটি করে সংখ্যা পরিবর্তন করবে। এর মাধ্যমে দিনে ১৫৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি বোঝানো হবে।

No comments

Powered by Blogger.