শেয়ারবাজারের টাকা যাচ্ছে আইপিওতে by তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু
মাত্র তিন পয়েন্ট সূচক বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সাত দিনের টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আগের সাত দিনে ডিএসইর সূচক কমেছিল ২৩০.৩৫ পয়েন্ট। ঈদ ও পূজার ছুটির পর বাজারের এমন টানা পতনে বিনিয়োগকারীরা আবার হতাশ হয়ে পড়েছেন।
তারল্য সংকটের সঙ্গে সঙ্গে বাজারে দেখা দিয়েছে আস্থাহীনতা। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২৮৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার ২৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এ সময়ে লেনদেন কমেছে এক হাজার ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ২০১০ সালের ভয়াবহ ধসের পর এভাবে আরো তিনবার উত্থান ও পতন ঘটেছে। প্রতিবারই লেনদেন বৃদ্ধির একটা পর্যায়ে শুরু হয়েছে দরপতন।
তিন বার একই ধারায় পতন : ২০১১ সালের ২৫ মে ডিএসইর সাধারণ সূচক নামে ৫২৯২.৫৩ পয়েন্টে। লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩২৪ কোটি ২৪ লাখে। এরপর আবার একটু একটু করে দর বাড়তে থাকে শেয়ারের। এই অবস্থান থেকে দুই মাস পর ২৪ জুলাই সূচক বেড়ে ৬৭১০ পয়েন্টে পৌঁছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয় এক হাজার ৯৫৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এরপর শুরু হয় পতন। আট মাস ধরে থেমে থেমে দরপতন ঘটে। ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সূচক নামে ৩৮৮৭.১৮ পয়েন্টে। সঙ্গে কমে যায় লেনদেনও। এদিন লেনদেন হয় ২৬৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এরপর থেকে থেকে আবার দর বাড়তে থাকে শেয়ারের। দুই মাস পর ৪ এপ্রিল ডিএসইর সূচক ওঠে ৫৪৬৪.১৬ পয়েন্টে। লেনদেন হয় এক হাজার ২০১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আবার দর পতন শুরু হয়। ২০১২ সালের ১০ জুলাই সূচক নামে ৩৯৮৯ পয়েন্টে। লেনদেন হয় মাত্র ১৮৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এরপর ঈদুল ফিতরের পর থেকে বাজারে আবার লেনদেন বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে সূচকও। ১৯ সেপ্টেম্বর সূচক ওঠে ৪৬৭৮.৮৩ পয়েন্টে। লেনদেন হয় এক হাজার ২৮৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ফের লেনদেন কমতে থাকে। কমতে থাকে সূচকও।
বার বার তারল্য সংকটের কথা বলা হলেও এ তিনবার দর বৃদ্ধির সঙ্গে তারল্য ঘাটতির বিষয়টি আর প্রমাণ হয়নি। বাজারের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, বারবার বাজারে নানা ধরনের হুজুগ ওঠেছে। কখনো ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াবে বলে প্রচার করা হয়েছে। কখনো পদ্মা সেতুকে ইস্যু করা হয়েছে, আবার কখনো বিদেশি বিনিয়োগ পুঁজি বাজারে আসছে বলে প্রচার করা হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করতে প্রতিবারই বাজারে নন ইস্যুকে ইস্যু বানানো হয়েছে। এর ফাঁদে পা দিয়ে দর বৃদ্ধির সময় নতুন করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বাজারে প্রবেশ করেছে। আর নতুন করে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। বাজারের লেনদেন কমে যাওয়াকে বাজারের জন্য খারাপ বলে মনে করেন তিনি।
ফারুক আহমেদ আরো বলেন, পুঁজি বাজারের ধর্ম এক সময় দর বাড়বে আবার কমবে। তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে এই উত্থান-পতন অস্বাভাবিক। বাজার ছোট বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, এখনো প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ বাড়েনি এই বাজারে। তাদের অংশগ্রহণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মুদ্রানীতি। সে ব্যাপারে এসইসি উদ্যোগ নিতে পারে। তবে বর্তমানের উত্থান পতনকে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসার পূর্ব মুহূর্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আগে সূচক এক দিন ২৫০ পয়েন্ট বেড়েছে, পরের দিন ২০০ পয়েন্ট কমেছে। তবে ইদানীং এত ব্যাপক উত্থান-পতন হচ্ছে না।
শার্প সিকিউরিটিজ হাউসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ গোলাম ওয়াদুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, নিম্নমুখী প্রবণতার কারণে বিনিয়োগকারীরা পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তার পেছনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম ইপিএস বা শেয়ারপ্রতি আয় দেখিয়েছে। বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচটি নতুন কম্পানির আইপিওতে আবেদন করতে বিনিয়োগকারীরা সেকেন্ডারি মার্কেটের টাকা নিয়ে প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ করছে।
এদিকে অব্যাহত এই দরপতনের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ পুঁজি বাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কিছু বিনিয়োগকারী। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক জানান, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর থেকে বাজারে একটানা দরপতন অব্যাহত রয়েছে। এসইসির কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বাজারের এই দশা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে গতকাল লেনদেন হওয়া ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে দাম কমেছে ১৭৭টির বেড়েছে ৭৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হওয়া ১৮৪টি কম্পানির শেয়ারের মধ্যে দাম কমেছে ১৩৫টির, বেড়েছে ৩৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ২০১০ সালের ভয়াবহ ধসের পর এভাবে আরো তিনবার উত্থান ও পতন ঘটেছে। প্রতিবারই লেনদেন বৃদ্ধির একটা পর্যায়ে শুরু হয়েছে দরপতন।
তিন বার একই ধারায় পতন : ২০১১ সালের ২৫ মে ডিএসইর সাধারণ সূচক নামে ৫২৯২.৫৩ পয়েন্টে। লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩২৪ কোটি ২৪ লাখে। এরপর আবার একটু একটু করে দর বাড়তে থাকে শেয়ারের। এই অবস্থান থেকে দুই মাস পর ২৪ জুলাই সূচক বেড়ে ৬৭১০ পয়েন্টে পৌঁছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয় এক হাজার ৯৫৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এরপর শুরু হয় পতন। আট মাস ধরে থেমে থেমে দরপতন ঘটে। ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সূচক নামে ৩৮৮৭.১৮ পয়েন্টে। সঙ্গে কমে যায় লেনদেনও। এদিন লেনদেন হয় ২৬৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এরপর থেকে থেকে আবার দর বাড়তে থাকে শেয়ারের। দুই মাস পর ৪ এপ্রিল ডিএসইর সূচক ওঠে ৫৪৬৪.১৬ পয়েন্টে। লেনদেন হয় এক হাজার ২০১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আবার দর পতন শুরু হয়। ২০১২ সালের ১০ জুলাই সূচক নামে ৩৯৮৯ পয়েন্টে। লেনদেন হয় মাত্র ১৮৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এরপর ঈদুল ফিতরের পর থেকে বাজারে আবার লেনদেন বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে সূচকও। ১৯ সেপ্টেম্বর সূচক ওঠে ৪৬৭৮.৮৩ পয়েন্টে। লেনদেন হয় এক হাজার ২৮৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ফের লেনদেন কমতে থাকে। কমতে থাকে সূচকও।
বার বার তারল্য সংকটের কথা বলা হলেও এ তিনবার দর বৃদ্ধির সঙ্গে তারল্য ঘাটতির বিষয়টি আর প্রমাণ হয়নি। বাজারের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, বারবার বাজারে নানা ধরনের হুজুগ ওঠেছে। কখনো ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াবে বলে প্রচার করা হয়েছে। কখনো পদ্মা সেতুকে ইস্যু করা হয়েছে, আবার কখনো বিদেশি বিনিয়োগ পুঁজি বাজারে আসছে বলে প্রচার করা হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করতে প্রতিবারই বাজারে নন ইস্যুকে ইস্যু বানানো হয়েছে। এর ফাঁদে পা দিয়ে দর বৃদ্ধির সময় নতুন করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বাজারে প্রবেশ করেছে। আর নতুন করে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। বাজারের লেনদেন কমে যাওয়াকে বাজারের জন্য খারাপ বলে মনে করেন তিনি।
ফারুক আহমেদ আরো বলেন, পুঁজি বাজারের ধর্ম এক সময় দর বাড়বে আবার কমবে। তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে এই উত্থান-পতন অস্বাভাবিক। বাজার ছোট বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, এখনো প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ বাড়েনি এই বাজারে। তাদের অংশগ্রহণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মুদ্রানীতি। সে ব্যাপারে এসইসি উদ্যোগ নিতে পারে। তবে বর্তমানের উত্থান পতনকে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসার পূর্ব মুহূর্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আগে সূচক এক দিন ২৫০ পয়েন্ট বেড়েছে, পরের দিন ২০০ পয়েন্ট কমেছে। তবে ইদানীং এত ব্যাপক উত্থান-পতন হচ্ছে না।
শার্প সিকিউরিটিজ হাউসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ গোলাম ওয়াদুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, নিম্নমুখী প্রবণতার কারণে বিনিয়োগকারীরা পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তার পেছনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম ইপিএস বা শেয়ারপ্রতি আয় দেখিয়েছে। বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচটি নতুন কম্পানির আইপিওতে আবেদন করতে বিনিয়োগকারীরা সেকেন্ডারি মার্কেটের টাকা নিয়ে প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ করছে।
এদিকে অব্যাহত এই দরপতনের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ পুঁজি বাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কিছু বিনিয়োগকারী। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক জানান, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর থেকে বাজারে একটানা দরপতন অব্যাহত রয়েছে। এসইসির কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বাজারের এই দশা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে গতকাল লেনদেন হওয়া ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে দাম কমেছে ১৭৭টির বেড়েছে ৭৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হওয়া ১৮৪টি কম্পানির শেয়ারের মধ্যে দাম কমেছে ১৩৫টির, বেড়েছে ৩৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির।
No comments