দ্বিতীয় মেয়াদেও গুরুত্ব পাবে এশিয়া by মীর মোশাররফ হোসেন
বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের চালকের আসন ধরে রাখায় এশিয়ার প্রতি দেশটির আগ্রহ তার প্রথম মেয়াদের মতোই অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সেটা কতখানি জোরদার থাকবে তা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার কারণে ওয়াশিংটনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং কংগ্রেসের বাজেট বরাদ্দের ওপরও নির্ভর করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন প্রেসিডেন্টের গত মেয়াদে এশীয় অঞ্চলে সফর করেছিলেন এক ডজনেরও বেশিবার, যাতে এশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ ফুটে উঠেছিল। হিলারির জায়গায় নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলেও এশিয়ায় তাঁর সফরের সংখ্যাও কম হবে না। কারণ এ অঞ্চলের সম্পদ, অর্থনীতি ও সামরিক গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাড়ছে দিন দিন। নতুন মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার কারণে এশিয়ায় তাঁর আগের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার সুযোগ পাচ্ছেন ওবামা। এশিয়ার বেশির ভাগ দেশই মিট রমনির চেয়ে ওবামার প্রতিই সমর্থন দেখিয়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রথম ওবামা বিদেশ সফরে সেনা-নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারকে বেছে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। মূলত 'গণতন্ত্রমুখী' মিয়ানমারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ জোরালো করতেই তাঁর এ সফর। শুধু মিয়ানমারই নয়, পূর্ব এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন করে ঝালাই করে নেওয়ার জন্য প্রথম সুযোগেই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন পুনর্নির্বাচিত ওবামা। এই নভেম্বরেই পূর্ব এশিয়ার নেতাদের এক যৌথ আলোচনায় অংশ নেবেন তিনি। তবে এই মেয়াদে ইরানের সঙ্গে বিরোধের বিষয়ে ফয়সালাও দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে হবে তাঁকে।
চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি ও সামরিক অগ্রগামিতা অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মার্কিনদের ৬০ শতাংশ নৌশক্তি প্রশান্ত মহাসাগরে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও চীনের সামরিক শক্তি নতুন মাথাব্যথার কারণ হয়েছে হোয়াইট হাউসের জন্য। দুই বছর আগে ওয়াশিংটন ঘোষণা করেছিল, দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিবদমান পক্ষগুলোর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সহায়তা করবে। চীন এ ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। অন্যদিকে সম্পর্কিত বিতর্কিত দ্বীপের মালিকানাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ চীন সাগরে ব্যাপক নৌশক্তি মোতায়েন করেছে চীন।
কমিউনিস্ট চীন অবশ্য ওবামাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও পেয়ে বেশ খুশি। কেননা নির্বাচনী প্রচারণায় রমনি চীনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মুদ্রা 'অবৈধ ব্যবহারের' অভিযোগ তুলেছিলেন। এশিয়ায় এ ধরনের তৎপরতা নতুন অর্থনৈতিক যুদ্ধেরও দামামা বাজাতে বসেছিল প্রায়। সে তুলনায় ওবামার সঙ্গে চীনের নেতৃত্বের সম্পর্ক অনেক মধুর। চীন তাই ওবামার পুনর্নির্বাচনে অভিনন্দনের বার্তা পাঠিয়ে বলেছে, দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির গতি অব্যাহত থাকবে।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের এশিয়া-বিষয়ক পরিচালক ওয়াটার লোম্যানের মতে, আমেরিকার অর্থনীতির জন্য চীন দীর্ঘ মেয়াদে কৌশলগত হুমকি হলেও ইরানের ব্যাপারে তাকে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সম্পদের পাশাপাশি গ্যাসলাইনের ট্রান্স-এশিয়ান যোগাযোগ নিরাপদ রাখতে সিরিয়ায় নিয়ন্ত্রণের সুরাহাও ওবামা দ্রুত করবেন বলে লোম্যানের বিশ্বাস।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০১৪ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়েও ওবামাকে ভাবতে হবে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে সেনা প্রত্যাহারের পরপরই সে দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রকট। এ ক্ষেত্রে আফগানিস্তান আবারও তালেবানের কব্জায় পতিত হতে পারে। গত কয়েক বছরে ইরাকের পরিস্থিতিও জটিল হতে শুরু করেছে। দুই দেশেই মার্কিন সেনাদের হতাহতের ঘটনা সেনাদের অবস্থানের ব্যাপারেও শঙ্কিত করছে মার্কিন প্রশাসনকে।
নিজের দেশেও ওবামাকে তীব্র বাজেট সংকট মোকাবিলায় তৎপর হতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ওবামাকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে করের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। এর ফলে মার্কিন সামরিক বাজেটের পরিমাণ কমাতে হবে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার।
গত মেয়াদে ওবামা চীনের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে সময় দিয়েছিলেন। তিনি অর্থনীতি ও সামরিক- উভয় ইস্যুতেই চীনের সঙ্গে বিবাদের তুলনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচনাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন; যদিও নিজ দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চীনে সহজে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধার অভিযোগও নিয়মিতই করেছেন তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত চীনকে এশিয়ায় একঘরে করার নীতিই নিতে হবে নতুন প্রেসিডেন্টকে। এ জন্য ১১ দেশীয় এশীয়-ইউরোপীয় সম্পর্ক জোরদারের নীতি অব্যাহত রাখতে চাইবে তারা, যেখানে থাকবে না চীন। এই একটি কর্মসূচিতে রিপাবলিকানদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্যের সুরও তুলতে পারে ডেমোক্র্যাটরা। কেননা এটি এশিয়ায় তাদের শিল্পোদ্যোক্তাদের অন্যতম প্রধান চাহিদা। নতুন প্রশাসনকে এশিয়ার এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তি মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থাও নিতে হবে ওবামা প্রশাসনকে।
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রথম ওবামা বিদেশ সফরে সেনা-নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারকে বেছে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। মূলত 'গণতন্ত্রমুখী' মিয়ানমারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ জোরালো করতেই তাঁর এ সফর। শুধু মিয়ানমারই নয়, পূর্ব এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন করে ঝালাই করে নেওয়ার জন্য প্রথম সুযোগেই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন পুনর্নির্বাচিত ওবামা। এই নভেম্বরেই পূর্ব এশিয়ার নেতাদের এক যৌথ আলোচনায় অংশ নেবেন তিনি। তবে এই মেয়াদে ইরানের সঙ্গে বিরোধের বিষয়ে ফয়সালাও দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে হবে তাঁকে।
চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি ও সামরিক অগ্রগামিতা অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মার্কিনদের ৬০ শতাংশ নৌশক্তি প্রশান্ত মহাসাগরে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও চীনের সামরিক শক্তি নতুন মাথাব্যথার কারণ হয়েছে হোয়াইট হাউসের জন্য। দুই বছর আগে ওয়াশিংটন ঘোষণা করেছিল, দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিবদমান পক্ষগুলোর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সহায়তা করবে। চীন এ ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। অন্যদিকে সম্পর্কিত বিতর্কিত দ্বীপের মালিকানাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ চীন সাগরে ব্যাপক নৌশক্তি মোতায়েন করেছে চীন।
কমিউনিস্ট চীন অবশ্য ওবামাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও পেয়ে বেশ খুশি। কেননা নির্বাচনী প্রচারণায় রমনি চীনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মুদ্রা 'অবৈধ ব্যবহারের' অভিযোগ তুলেছিলেন। এশিয়ায় এ ধরনের তৎপরতা নতুন অর্থনৈতিক যুদ্ধেরও দামামা বাজাতে বসেছিল প্রায়। সে তুলনায় ওবামার সঙ্গে চীনের নেতৃত্বের সম্পর্ক অনেক মধুর। চীন তাই ওবামার পুনর্নির্বাচনে অভিনন্দনের বার্তা পাঠিয়ে বলেছে, দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির গতি অব্যাহত থাকবে।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের এশিয়া-বিষয়ক পরিচালক ওয়াটার লোম্যানের মতে, আমেরিকার অর্থনীতির জন্য চীন দীর্ঘ মেয়াদে কৌশলগত হুমকি হলেও ইরানের ব্যাপারে তাকে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সম্পদের পাশাপাশি গ্যাসলাইনের ট্রান্স-এশিয়ান যোগাযোগ নিরাপদ রাখতে সিরিয়ায় নিয়ন্ত্রণের সুরাহাও ওবামা দ্রুত করবেন বলে লোম্যানের বিশ্বাস।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০১৪ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়েও ওবামাকে ভাবতে হবে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে সেনা প্রত্যাহারের পরপরই সে দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রকট। এ ক্ষেত্রে আফগানিস্তান আবারও তালেবানের কব্জায় পতিত হতে পারে। গত কয়েক বছরে ইরাকের পরিস্থিতিও জটিল হতে শুরু করেছে। দুই দেশেই মার্কিন সেনাদের হতাহতের ঘটনা সেনাদের অবস্থানের ব্যাপারেও শঙ্কিত করছে মার্কিন প্রশাসনকে।
নিজের দেশেও ওবামাকে তীব্র বাজেট সংকট মোকাবিলায় তৎপর হতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ওবামাকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে করের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। এর ফলে মার্কিন সামরিক বাজেটের পরিমাণ কমাতে হবে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার।
গত মেয়াদে ওবামা চীনের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে সময় দিয়েছিলেন। তিনি অর্থনীতি ও সামরিক- উভয় ইস্যুতেই চীনের সঙ্গে বিবাদের তুলনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচনাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন; যদিও নিজ দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চীনে সহজে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধার অভিযোগও নিয়মিতই করেছেন তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত চীনকে এশিয়ায় একঘরে করার নীতিই নিতে হবে নতুন প্রেসিডেন্টকে। এ জন্য ১১ দেশীয় এশীয়-ইউরোপীয় সম্পর্ক জোরদারের নীতি অব্যাহত রাখতে চাইবে তারা, যেখানে থাকবে না চীন। এই একটি কর্মসূচিতে রিপাবলিকানদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্যের সুরও তুলতে পারে ডেমোক্র্যাটরা। কেননা এটি এশিয়ায় তাদের শিল্পোদ্যোক্তাদের অন্যতম প্রধান চাহিদা। নতুন প্রশাসনকে এশিয়ার এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তি মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থাও নিতে হবে ওবামা প্রশাসনকে।
No comments