উচ্চপ্রযুক্তির শৌচাগার!
মানুষের আদিমতম সমস্যাগুলোর মধ্যে শৌচাগার (টয়লেট) একটি। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, পৃথিবীর ২৫০ কোটি মানুষের কাছে এখনো পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা পৌঁছায়নি। এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। তাদের লক্ষ্য, মানুষের ঘরে ঘরে উচ্চপ্রযুক্তির এমন শৌচাগার গড়ে তোলা, যা হবে পরিবেশবান্ধব।
এতে পরিবেশ দূষিত তো হবেই না, বরং বর্জ্য থেকে পাওয়া গ্যাস অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা না থাকায় যে ধরনের রোগব্যাধি ছড়ায়, তাতে প্রতিবছর ১৫ লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটে। এর সঠিক সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়টি কেবল মানবিক কাজ নয়, বরং এতে আছে ব্যবসার অনেক সুযোগ।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে উন্নত পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে ৬৬০ কোটি ডলার বাঁচানো যাবে। এতে প্রতি ডলার ব্যয়ে নয়গুণ পর্যন্ত আর্থিক উন্নতি ঘটে। স্বাস্থ্যের উন্নতি হলে উত্পাদনের ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
শৌচাগারে পানির ব্যবহারের ইতিহাস অনেক পুরোনো। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর ইন্দুস ভ্যালি সভ্যতায় এর প্রমাণ পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। বর্তমান সভ্যতায় শৌচাগারে ফ্ল্যাশ পদ্ধতিতে প্রচুর পানি খরচ হয়, যা মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদার ১০ গুণ পর্যন্ত হতে পারে। দরিদ্র ও পানির সুবিধাবঞ্চিত দেশগুলোর জন্য এটি মোটেও সুখকর নয়। গুরুত্বপূর্ণ অথচ আকর্ষণহীন এই বিষয়টির সমাধান করতে এগিয়ে এসেছেন বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞানীরা। তাঁরা প্রযুক্তিজ্ঞান ও উদ্ভাবন দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০১১ সালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে টয়লেটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, টেকসই ও কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য ‘রিইনভেন্ট দ্য টয়লেট চ্যালেঞ্জ’ নামে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত উদ্ভাবকদের ৩২ লাখ ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। প্রতিযোগিতার শর্ত ছিল বেশ কঠিন। প্রতিযোগিতায় এমন শৌচাগারের নকশা করতে বলা হয়, যার পরিবেশ হতে হবে জীবাণুমুক্ত, টয়লেট হতে হবে টেকসই, টয়লেট তৈরিতে খরচ হতে হবে কম। পানি, বিদ্যুত্ বা পয়োনিষ্কাশনের সুবিধার আওতার বাইরে থেকে কাজ চালানোর মতো হতে হবে এই শৌচাগারের নকশা।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে বিল গেটসের কাছ থেকে শৌচাগারের নকশা করে প্রথম পুরস্কার হিসেবে এক লাখ মার্কিন ডলার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষক মাইকেল হফম্যান। তাঁর গবেষক দলটি সৌরশক্তিনির্ভর টয়লেটের নকশা করেছে। এ টয়লেটে ব্যবহূত হবে ইলেকট্রোকেমিক্যাল রিঅ্যাক্টর, যা বর্জ্যকে সার ও হাইড্রোজেন গ্যাসে রূপান্তরিত করতে সক্ষম। পরবর্তী সময় বৈদ্যুতিক জ্বালানি হিসেবে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে হাইড্রোজেন গ্যাসকে। টয়লেটে ব্যবহূত পানি পরিশোধন প্রক্রিয়ায় আবারও ফ্ল্যাশ হিসেবে বা জমিতে সেচ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা যাবে। সৌরশক্তির ব্যবহারে টয়লেটে বাতি জ্বলবে এবং সৌরশক্তি ব্যাটারিতে ধরে রাখা যাবে, যা দিনরাত কাজ করবে।
বিল গেটস ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছেন যুক্তরাজ্যের লাফবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। তাঁরা মানববর্জ্য ব্যবহার করে জ্বালানি কয়লা, পুষ্টিকর পানি তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। তাঁদের উদ্ভাবিত প্রক্রিয়াটি উচ্চচাপে রান্না করার মতো একটি পদ্ধতি, যার নাম ‘কন্টিনিউয়াস হাইড্রোথার্মাল কার্বনাইজেশন’।
শৌচাগারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করার ক্ষেত্রে যে খরচ, তা কি উন্নয়নশীল দেশগুলোর সীমিত আয়ের মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব? গবেষকেরা জানিয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যায়ে এখন খরচ অনেক বেশি হলেও পরে খুব অল্প খরচেই এ ধরনের শৌচাগার বসানো যাবে।
লাফবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সোহায়িল খান জানিয়েছেন, পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা বাস্তবায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ব্যবসার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিল গেটস এ প্রসঙ্গে বলেন, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, রোগ প্রতিরোধ ও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে উন্নত প্রযুক্তির পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা না থাকায় যে ধরনের রোগব্যাধি ছড়ায়, তাতে প্রতিবছর ১৫ লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটে। এর সঠিক সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়টি কেবল মানবিক কাজ নয়, বরং এতে আছে ব্যবসার অনেক সুযোগ।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে উন্নত পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে ৬৬০ কোটি ডলার বাঁচানো যাবে। এতে প্রতি ডলার ব্যয়ে নয়গুণ পর্যন্ত আর্থিক উন্নতি ঘটে। স্বাস্থ্যের উন্নতি হলে উত্পাদনের ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
শৌচাগারে পানির ব্যবহারের ইতিহাস অনেক পুরোনো। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর ইন্দুস ভ্যালি সভ্যতায় এর প্রমাণ পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। বর্তমান সভ্যতায় শৌচাগারে ফ্ল্যাশ পদ্ধতিতে প্রচুর পানি খরচ হয়, যা মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদার ১০ গুণ পর্যন্ত হতে পারে। দরিদ্র ও পানির সুবিধাবঞ্চিত দেশগুলোর জন্য এটি মোটেও সুখকর নয়। গুরুত্বপূর্ণ অথচ আকর্ষণহীন এই বিষয়টির সমাধান করতে এগিয়ে এসেছেন বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞানীরা। তাঁরা প্রযুক্তিজ্ঞান ও উদ্ভাবন দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০১১ সালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে টয়লেটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, টেকসই ও কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য ‘রিইনভেন্ট দ্য টয়লেট চ্যালেঞ্জ’ নামে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত উদ্ভাবকদের ৩২ লাখ ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। প্রতিযোগিতার শর্ত ছিল বেশ কঠিন। প্রতিযোগিতায় এমন শৌচাগারের নকশা করতে বলা হয়, যার পরিবেশ হতে হবে জীবাণুমুক্ত, টয়লেট হতে হবে টেকসই, টয়লেট তৈরিতে খরচ হতে হবে কম। পানি, বিদ্যুত্ বা পয়োনিষ্কাশনের সুবিধার আওতার বাইরে থেকে কাজ চালানোর মতো হতে হবে এই শৌচাগারের নকশা।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে বিল গেটসের কাছ থেকে শৌচাগারের নকশা করে প্রথম পুরস্কার হিসেবে এক লাখ মার্কিন ডলার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষক মাইকেল হফম্যান। তাঁর গবেষক দলটি সৌরশক্তিনির্ভর টয়লেটের নকশা করেছে। এ টয়লেটে ব্যবহূত হবে ইলেকট্রোকেমিক্যাল রিঅ্যাক্টর, যা বর্জ্যকে সার ও হাইড্রোজেন গ্যাসে রূপান্তরিত করতে সক্ষম। পরবর্তী সময় বৈদ্যুতিক জ্বালানি হিসেবে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে হাইড্রোজেন গ্যাসকে। টয়লেটে ব্যবহূত পানি পরিশোধন প্রক্রিয়ায় আবারও ফ্ল্যাশ হিসেবে বা জমিতে সেচ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা যাবে। সৌরশক্তির ব্যবহারে টয়লেটে বাতি জ্বলবে এবং সৌরশক্তি ব্যাটারিতে ধরে রাখা যাবে, যা দিনরাত কাজ করবে।
বিল গেটস ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছেন যুক্তরাজ্যের লাফবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। তাঁরা মানববর্জ্য ব্যবহার করে জ্বালানি কয়লা, পুষ্টিকর পানি তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। তাঁদের উদ্ভাবিত প্রক্রিয়াটি উচ্চচাপে রান্না করার মতো একটি পদ্ধতি, যার নাম ‘কন্টিনিউয়াস হাইড্রোথার্মাল কার্বনাইজেশন’।
শৌচাগারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করার ক্ষেত্রে যে খরচ, তা কি উন্নয়নশীল দেশগুলোর সীমিত আয়ের মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব? গবেষকেরা জানিয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যায়ে এখন খরচ অনেক বেশি হলেও পরে খুব অল্প খরচেই এ ধরনের শৌচাগার বসানো যাবে।
লাফবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সোহায়িল খান জানিয়েছেন, পয়োনিষ্কাশনের সুবিধা বাস্তবায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ব্যবসার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিল গেটস এ প্রসঙ্গে বলেন, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, রোগ প্রতিরোধ ও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে উন্নত প্রযুক্তির পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
No comments