ইসলাম কুসংস্কার সমর্থন করে না by মুফতি এনায়েতুল্লাহ
এক সঙ্গে কয়েকজন বন্ধু বসে গল্প-গুজব করছে। তাদের মধ্যে কেউ উপস্থিত না হলে তার সম্পর্কে পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ হতে থাকে, এমতাবস্থায় সে উপস্থিত হলে অনেকেই বলে ওঠে, 'আপনি অনেকদিন বাঁচবেন।' কারণ একটু আগেই আপনার কথা বলছিলাম! এমনই বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।
সমাজ জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কুসংস্কার সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস ইমানের জন্য মারাত্মক হুমকি। ইসলামে কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই।
এমন কাজ, কথা ও প্রথা মানা যার কোনো বাস্তব ও ধর্মীয় ভিত্তি নেই। মানুষের তৈরি যুক্তিহীন এসব ভ্রান্ত বিশ্বাস, কথা, কাজ ও প্রথাকে সহজ বাংলায় কুসংস্কার বলা হয়। এসব কুসংস্কারের কারণে অনেকের জীবন হুমকির সম্মুখীন। আবার কোথাও কুসংস্কারের কবলে জীবনহানির ঘটনাও ঘটে। কিছু কিছু কুসংস্কার তো শিরকের পর্যায়ভুক্ত। আবার কিছু বিষয় সাধারণ বিবেকবিরোধী এবং রীতিমতো হাস্যকরও বটে। মূলত বাজারে 'কী করলে কী হয়' জাতীয় বই এসবের সরবরাহকারী। কিছু মানুষ চরম অন্ধবিশ্বাসে এগুলোকে লালন করে। যেমন পরীক্ষার দিন ডিম খেলে ডিমের মতো নম্বর মেলে, কিংবা ছোট্ট শিশুর দঁাঁত ইঁদুরের গর্তে ফেললে তারও ইঁদুরের মতো সুন্দর দাঁত হবে। আবার কেউ বলে, ডান হাত চুলকালে টাকা আসে আর বাম হাত চুলকালে টাকা খরচ হয়। কিংবা ডান পায়ের তালু চুলকালে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ডাক আসে। ঘরের চৌকাঠে বসা যাবে না। দোকানের প্রথম ক্রেতাকে ফিরিয়ে দিতে নেই। গলায় কাঁটা বিঁধলে বিড়ালের পা ধরে মাফ চাইতে হয় ইত্যাদি।
সমাজে প্রচলিত এসব কুসংস্কারের কারণে আল্লাহর ওপর আস্থা ও তার রহমতের প্রতি নির্ভরতা কমে যায়। মূলত কুসংস্কার হলো ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরের প্রচলিত নিয়মবিধি, যার প্রতি মানুষ অন্ধবিশ্বাস স্থাপন করে সেই বিশ্বাসকে ভিত্তি করে জীবনে চলার চেষ্টা করে। কুসংস্কারজনিত অন্ধবিশ্বাসে পড়ে মানুষ নিজেদের ইমানকে দুর্বল করে তুলছে। বস্তুত মুসলমানের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসাই যথেষ্ট। ইসলামী শরিয়ত পরিপন্থী প্রচলিত এসব বর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য। এছাড়া কুসংস্কার বন্ধের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো সবার ইমানি দায়িত্ব। কুসংস্কার প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, 'হে আল্লাহর রাসূল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়।' _বুখারি শরিফ। আমরা জানি, অজ্ঞতা ও অশিক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় যাবতীয় কুসংস্কার। ফলে সমাজে নানা রকম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই অজানাকে জানতে হবে, অচেনাকে চিনতে হবে। যত দূর সম্ভব প্রতিটি বিষয়ে সুস্পষ্ট জ্ঞান ও পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। এ জন্য চাই সঠিকভাবে জ্ঞান অন্বেষণ ও বিদ্যার্জন। ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে অত্যাবশ্যক করা হয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের দ্বার বিকশিত হলেই সমাজ থেকে কুসংস্কার দূরীভূত হবে। কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, 'যে ব্যক্তি জ্ঞান রাখে আর যে জ্ঞান রাখে না, তারা উভয় কি সমান হতে পারে?' -সূরা আল যুমার : ৯
সাধারণত গ্রামীণ এলাকার লোকজনের মাঝে কুসংস্কারের প্রভাব ও প্রবণতা একটু বেশি লক্ষ্য করা যায়। তবে শহুরে লোকজন এসব থেকে মুক্ত এটাও বলা যাবে না। বড় বড় খেলোয়াড়, রাজনৈতিক নেতা, প্রসিদ্ধ লেখকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকদের মাঝেও কুসংস্কারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাদের সমাজ-সংসার, আচার-অনুষ্ঠান ও দৈনন্দিন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এসব মনগড়া প্রথা এবং ভ্রান্ত রীতিনীতি অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। আল্লাহর বিধান ও হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) দেখানো জীবনাচারের সঙ্গে এসব সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইসলামী শরিয়ত এসব কুসংস্কার ও কুপ্রথাকে বিশ্বাস করা হারাম বলে অভিহিত করে তা থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) আগমনপূর্ব সময়কে কোরআনে কারিমে 'আইয়্যামে জাহিলিয়াত' বা অজ্ঞতা, বর্বরতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন যুগ বলা হয়েছে। কারণ, তৎকালীন আরব সমাজ ছিল নানা কুসংস্কারের ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এ ধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে পরিশুদ্ধ করতে আল্লাহতায়ালা হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) পাঠিয়ে ঘোষণা দেন যে, 'তিনি সেই সত্তা, যিনি স্বীয় রাসূলকে সঠিক পথ ও সঠিক তথা সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব মতবাদের ওপর এ ধর্ম তথা মতবাদ বিজয়ী হতে পারে।' -সূরা তওবা : ৩৩
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত দূরদর্শিতার সঙ্গে ঘোর অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন আরব সমাজে বিদ্যমান যাবতীয় কুসংস্কারের মূলে কুঠারাঘাত এনে সে সমাজে ইসলামের জ্যোতি বিকিরণ করেন। তিনি নবুয়তপ্রাপ্তির আগেই যাবতীয় কুসংস্কার সমাজ থেকে কীভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। নবুয়তপ্রাপ্তির পর তিনি তার দাওয়াতি কাজের সূচনায় জাহেলি যুগের সব কুসংস্কারকে পরিহার করে এক আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও আনুগত্য প্রদর্শনের কথা বলেন। ফলে সমাজ থেকে ধীরে ধীরে কুসংস্কারের প্রভাব কমতে থাকে_ এমতাবস্থায় তিনি নবুয়তপ্রাপ্ত হয়ে ইসলামের প্রচার করতে থাকেন। আল্লাহতায়ালা যাবতীয় কুসংস্কার থেকে মুমিনদের মুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়ে ঘোষণা করেন, 'হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া ও মূর্তি পূজার বেদি এবং ভাগ্য নির্ণয়কারী শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।'_ সূরা মায়িদা : ৯০
সুন্দর ও মার্জিত বিষয়াদিই ইসলামে অনুমোদিত। অন্যদিকে অসত্য, অসুন্দর ও যাবতীয় কদর্যতা ইসলামে নিষিদ্ধ। মানুষের জীবনকে সুন্দর ও শৃঙ্খলাময় করার জন্য যত রকমের সহজ-সরল দিকনির্দেশনা ও পথ রয়েছে, তার সব ইসলামে বিদ্যমান। এ কারণেই ইসলামকে মধ্যপন্থিদের ধর্ম বলা হয়। মানবতার বিরুদ্ধে যাবতীয় নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে ইসলামই একমাত্র রক্ষাকবচ। তাই আমাদের সব ধরনের কুসংস্কারের ঊধর্ে্ব উঠে জীবন পরিচালনা করতে হবে। কুসংস্কারে বিশ্বাস ভীষণ পাপ ও ভ্রষ্টতার কারণ। কোরআনে কারিমে এ সম্পর্কে উলেল্গখ আছে, 'পথভ্রষ্ট লোক আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে অবস্থান করবে।' আমাদের সমাজ থেকে যাবতীয় কুসংস্কার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন ও সজাগ করতে আলেম-ওলামা, মসজিদের ইমাম-খতিব, শিক্ষক ও সমাজ উন্নয়ন কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে।
muftianaet@gmail.com
এমন কাজ, কথা ও প্রথা মানা যার কোনো বাস্তব ও ধর্মীয় ভিত্তি নেই। মানুষের তৈরি যুক্তিহীন এসব ভ্রান্ত বিশ্বাস, কথা, কাজ ও প্রথাকে সহজ বাংলায় কুসংস্কার বলা হয়। এসব কুসংস্কারের কারণে অনেকের জীবন হুমকির সম্মুখীন। আবার কোথাও কুসংস্কারের কবলে জীবনহানির ঘটনাও ঘটে। কিছু কিছু কুসংস্কার তো শিরকের পর্যায়ভুক্ত। আবার কিছু বিষয় সাধারণ বিবেকবিরোধী এবং রীতিমতো হাস্যকরও বটে। মূলত বাজারে 'কী করলে কী হয়' জাতীয় বই এসবের সরবরাহকারী। কিছু মানুষ চরম অন্ধবিশ্বাসে এগুলোকে লালন করে। যেমন পরীক্ষার দিন ডিম খেলে ডিমের মতো নম্বর মেলে, কিংবা ছোট্ট শিশুর দঁাঁত ইঁদুরের গর্তে ফেললে তারও ইঁদুরের মতো সুন্দর দাঁত হবে। আবার কেউ বলে, ডান হাত চুলকালে টাকা আসে আর বাম হাত চুলকালে টাকা খরচ হয়। কিংবা ডান পায়ের তালু চুলকালে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ডাক আসে। ঘরের চৌকাঠে বসা যাবে না। দোকানের প্রথম ক্রেতাকে ফিরিয়ে দিতে নেই। গলায় কাঁটা বিঁধলে বিড়ালের পা ধরে মাফ চাইতে হয় ইত্যাদি।
সমাজে প্রচলিত এসব কুসংস্কারের কারণে আল্লাহর ওপর আস্থা ও তার রহমতের প্রতি নির্ভরতা কমে যায়। মূলত কুসংস্কার হলো ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরের প্রচলিত নিয়মবিধি, যার প্রতি মানুষ অন্ধবিশ্বাস স্থাপন করে সেই বিশ্বাসকে ভিত্তি করে জীবনে চলার চেষ্টা করে। কুসংস্কারজনিত অন্ধবিশ্বাসে পড়ে মানুষ নিজেদের ইমানকে দুর্বল করে তুলছে। বস্তুত মুসলমানের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসাই যথেষ্ট। ইসলামী শরিয়ত পরিপন্থী প্রচলিত এসব বর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য। এছাড়া কুসংস্কার বন্ধের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো সবার ইমানি দায়িত্ব। কুসংস্কার প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, 'হে আল্লাহর রাসূল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়।' _বুখারি শরিফ। আমরা জানি, অজ্ঞতা ও অশিক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় যাবতীয় কুসংস্কার। ফলে সমাজে নানা রকম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই অজানাকে জানতে হবে, অচেনাকে চিনতে হবে। যত দূর সম্ভব প্রতিটি বিষয়ে সুস্পষ্ট জ্ঞান ও পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। এ জন্য চাই সঠিকভাবে জ্ঞান অন্বেষণ ও বিদ্যার্জন। ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে অত্যাবশ্যক করা হয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের দ্বার বিকশিত হলেই সমাজ থেকে কুসংস্কার দূরীভূত হবে। কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, 'যে ব্যক্তি জ্ঞান রাখে আর যে জ্ঞান রাখে না, তারা উভয় কি সমান হতে পারে?' -সূরা আল যুমার : ৯
সাধারণত গ্রামীণ এলাকার লোকজনের মাঝে কুসংস্কারের প্রভাব ও প্রবণতা একটু বেশি লক্ষ্য করা যায়। তবে শহুরে লোকজন এসব থেকে মুক্ত এটাও বলা যাবে না। বড় বড় খেলোয়াড়, রাজনৈতিক নেতা, প্রসিদ্ধ লেখকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকদের মাঝেও কুসংস্কারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাদের সমাজ-সংসার, আচার-অনুষ্ঠান ও দৈনন্দিন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এসব মনগড়া প্রথা এবং ভ্রান্ত রীতিনীতি অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। আল্লাহর বিধান ও হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) দেখানো জীবনাচারের সঙ্গে এসব সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইসলামী শরিয়ত এসব কুসংস্কার ও কুপ্রথাকে বিশ্বাস করা হারাম বলে অভিহিত করে তা থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) আগমনপূর্ব সময়কে কোরআনে কারিমে 'আইয়্যামে জাহিলিয়াত' বা অজ্ঞতা, বর্বরতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন যুগ বলা হয়েছে। কারণ, তৎকালীন আরব সমাজ ছিল নানা কুসংস্কারের ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এ ধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে পরিশুদ্ধ করতে আল্লাহতায়ালা হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) পাঠিয়ে ঘোষণা দেন যে, 'তিনি সেই সত্তা, যিনি স্বীয় রাসূলকে সঠিক পথ ও সঠিক তথা সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব মতবাদের ওপর এ ধর্ম তথা মতবাদ বিজয়ী হতে পারে।' -সূরা তওবা : ৩৩
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত দূরদর্শিতার সঙ্গে ঘোর অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন আরব সমাজে বিদ্যমান যাবতীয় কুসংস্কারের মূলে কুঠারাঘাত এনে সে সমাজে ইসলামের জ্যোতি বিকিরণ করেন। তিনি নবুয়তপ্রাপ্তির আগেই যাবতীয় কুসংস্কার সমাজ থেকে কীভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। নবুয়তপ্রাপ্তির পর তিনি তার দাওয়াতি কাজের সূচনায় জাহেলি যুগের সব কুসংস্কারকে পরিহার করে এক আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও আনুগত্য প্রদর্শনের কথা বলেন। ফলে সমাজ থেকে ধীরে ধীরে কুসংস্কারের প্রভাব কমতে থাকে_ এমতাবস্থায় তিনি নবুয়তপ্রাপ্ত হয়ে ইসলামের প্রচার করতে থাকেন। আল্লাহতায়ালা যাবতীয় কুসংস্কার থেকে মুমিনদের মুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়ে ঘোষণা করেন, 'হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া ও মূর্তি পূজার বেদি এবং ভাগ্য নির্ণয়কারী শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।'_ সূরা মায়িদা : ৯০
সুন্দর ও মার্জিত বিষয়াদিই ইসলামে অনুমোদিত। অন্যদিকে অসত্য, অসুন্দর ও যাবতীয় কদর্যতা ইসলামে নিষিদ্ধ। মানুষের জীবনকে সুন্দর ও শৃঙ্খলাময় করার জন্য যত রকমের সহজ-সরল দিকনির্দেশনা ও পথ রয়েছে, তার সব ইসলামে বিদ্যমান। এ কারণেই ইসলামকে মধ্যপন্থিদের ধর্ম বলা হয়। মানবতার বিরুদ্ধে যাবতীয় নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে ইসলামই একমাত্র রক্ষাকবচ। তাই আমাদের সব ধরনের কুসংস্কারের ঊধর্ে্ব উঠে জীবন পরিচালনা করতে হবে। কুসংস্কারে বিশ্বাস ভীষণ পাপ ও ভ্রষ্টতার কারণ। কোরআনে কারিমে এ সম্পর্কে উলেল্গখ আছে, 'পথভ্রষ্ট লোক আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে অবস্থান করবে।' আমাদের সমাজ থেকে যাবতীয় কুসংস্কার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন ও সজাগ করতে আলেম-ওলামা, মসজিদের ইমাম-খতিব, শিক্ষক ও সমাজ উন্নয়ন কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে।
muftianaet@gmail.com
No comments