কথা সামান্যই-চীন কী করে এত মেডেল জিতল by ফজলুল আলম
শোনা কথা, হিটলারের সময়ে অলিম্পিকে দৌড়ে এক কৃষ্ণবর্ণের ব্যক্তি গোল্ড মেডেল পান। হিটলার তাতে খেপে গিয়ে চিৎকার করে বলেছিলেন, 'কোনো সাদা জার্মান পাওয়া গেল না!' উইম্বলডন টেনিসে বেশ কয়েকবার দুই কৃষ্ণবর্ণের মার্কিন বোন ফাইনালে যাচ্ছিলেন।
তাতে অনেকে মন্তব্য করে, 'টেনিস ফাইনালে আর কতবার এ দুজনকে (কৃষ্ণত্ব বুঝিয়ে) দেখতে হবে?' ২০১২ সালের অলিম্পিক চলছে, তাতে সোনা ও মেডেলের পাল্লায় চীন ও আমেরিকা প্রায় সমানে সমান। একবার মার্কিন কৃষ্ণবর্ণের সোনা ও অন্যান্য মেডেল জেতা খেলোয়াড়রা যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মেডেল গ্রহণের সময় মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে। অলিম্পিক খেলাধুলায় শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে- ফলে সেটা সেই দেশের জাতিকেও শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান এনে দেয়। একসময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো এককালের সোভিয়েত ইউনিয়ন ও বর্তমানের রাশিয়ার সঙ্গে। সে অবস্থা এখন আর নেই। সহসাই চীন এসে প্রথম অলিম্পিকে বেশ কয়েকটা পদক নিয়ে গেল- প্রথমেই প্রথম হতে পারেনি, কিন্তু এবার বোধহয় পেরে যাবে।
বিশ্বের দরবারে চীনের আগমনের পথ খুলে যায় নিক্সক-চৌ এন লাইয়ের পিং পং ডিপ্লোম্যাসির মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে। এর পরের বছর জাতিসংঘ তাইওয়ানকে অগ্রাহ্য করে মেইনল্যান্ড চীনকে চীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর ধীরে ধীরে চীন বিশ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। এই চীন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল ১৯৪৯ সালে। ব্রিটিশরা ভারত ছাড়ে ১৯৪৭ সালে। অথচ ভারত উপমহাদেশ (পাকিস্তান ও ভারত প্রজাতন্ত্র) তাদের আগে স্বাধীন হয়েও বিশ্বে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পড়ে আছে। চীন অবশ্য ১৯৪৯ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত ২২ বছর কয়েকটি নিকটবর্তী সমাজবাদী দেশ ছাড়া আর কারো সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়নি। কিন্তু তারা আণবিক বোমা বানিয়ে ফেলেছে এবং পারমাণবিক শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সমকক্ষ হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক শক্তিতেও (ডলারের সর্বোচ্চ রিজার্ভসহ) তারা বিশ্বে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। ফলে তাদের ঘটানো সাম্রাজ্যবাদ শক্তির পক্ষে সহজ কাজ হয়ে ওঠেনি। বলা হয়, চীন আর এখন সমাজতন্ত্র নীতি অনুসরণ করে না, তারা পুঁজিবাদের পথ ধরেছে। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে সে দেশে উন্নতির পথে কোনো বাধা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হয় না। এবারের অলিম্পিক এই বক্তব্যের পক্ষে সমর্থন জোগায়।
কিন্তু তাদের এই সাফল্য পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো সহজভাবে নিতে পারেনি। সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার আগে তারা অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমান সমান পদক পেত। কিন্তু সমাজতন্ত্র পরিহার করা রাশিয়া এখন পদকের তালিকায় অনেক নিচে চলে গেছে- এমনকি ব্রিটেন এখন তৃতীয় স্থানে আছে, তাদেরও রাশিয়া ছুঁতে পারবে বলে মনে হয় না।
চীনের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো সমানে বিষোদগার করে চলছে। এখন তারা চীনের এই সর্বোচ্চসংখ্যক স্বর্ণপদক প্রাপ্তিতে উন্মত্ত হয়ে অনেক কিছু বলছে। তাদের কথা হলো, সম্ভবত চীনা খেলোয়াড়রা ড্রাগ (স্টেরয়েড) টেস্ট ফাঁকি দেওয়ার বুদ্ধি বের করেছে। সাঁতারে চীন বিশ্বরেকর্ড করার পরে এ ধারণা নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে। দ্বিতীয় অভিযোগ হলো, চীন অমানবিক অত্যাচারে জর্জরিত করে অলিম্পিক খেলোয়াড় তৈরি করে। জনৈক মার্কিন সাংবাদিকের দাবি, তিনি বেইজিংয়ের শি চা হাই নামের সর্বোচ্চ ক্রীড়া প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে গিয়ে স্বচক্ষে দেখেছেন কিভাবে দৈহিক ও মানসিক অত্যাচার ও শাস্তির মধ্য দিয়ে চীন তাদের মেডেল আনার সেনাবাহিনী তৈরি করে। এ জন্য তারা নাকি কিন্ডারগার্টেন থেকেই খেলোয়াড় বাছাই করতে থাকে। যারা বেইজিং অলিম্পিক দেখেছে এবং বর্তমান অলিম্পিক দেখছে তারা চীনা খেলোয়াড়দের অভিব্যক্তি দেখে এসব অভিযোগ মানবে বলে মনে হয় না। তৃতীয় অভিযোগ হলো, সমাজতন্ত্র পরিহার করে রাশিয়ার অলিম্পিক মেডেল সংখ্যা কমেছে, সুতরাং এখন চীনেরও সেই অবস্থা হতে বাধ্য। চীন সমাজতন্ত্র পরিহার করেছে কি না তা দ্ব্যর্থহীনভাবে কেউ বলছে না। ধরে নিই করেছে; কিন্তু এর পরও এই অলিম্পিকে তারা অনেক সোনা জিতেছে।
আসলে চীন সম্পর্কে পাশ্চাত্যের মিথ্যা প্রচারণার শেষ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতি-বর্ণ বিভাজনের তালিকায় জাপানিরা হলো 'অনারারি (খেতাবি) হোয়াইট', কিন্তু চীনারা 'ব্ল্যাক'। ইউরোপের প্রায় সব সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চীনকে তাদের (ব্রিটেন ও ফ্রান্স সর্বাগ্রে) কলোনি বানিয়েছিল এবং তারা রটিয়েছিল, চীন এক চণ্ডুখোর জাতি, তাদের মেরুদণ্ড নেই, তাদের মেয়েদের পায়ের পাতা বেঁধে দেওয়া হয়, যাতে তারা দৌড়াতে না পারে, এ রকম আরো অনেক নেতিবাচক কথা। কলকাতা ও ঢাকায় আমরা চীনা জুতো তৈরির কারিগর দেখে সেসব প্রপাগান্ডায় বিশ্বাস করতাম। কিন্তু ১৯৪৫ সালে জাপানিদের তাড়ানোর চার বছরের মধ্যে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের সমর্থক চিয়াং কাইশেককে তাইওয়ানে বিতাড়িত করে। হংকংকে তারা ৫০ বছরের লিজ দেয় ব্রিটেনের কাছে (সেটা সময়মতো ফেরত নিয়েছে)। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার পর চীন বিশ্বের দরবারে নিজেদের আসন নিতে পরিকল্পনা করেই এগোচ্ছে।
তাহলে ক্রীড়াঙ্গনে চীনাদের আধিপত্য কী করে হলো? চীন দেশের সবকিছুই জনগণকে ঘিরে। তাদের শিক্ষা-দীক্ষা এমনকি বৃদ্ধদের ভালোভাবে সময় কাটানোর দায়িত্বও সরকারের। খেলাধুলায় তারা বিশাল বাজেট রেখেছে। গোটা চীনে তিন হাজার ক্রীড়া প্রশিক্ষণকেন্দ্র আছে। সেখানে প্রায় চার লাখ ক্রীড়াবিদ প্রশিক্ষণ পায়। তাদের মধ্য থেকে ৪৬ হাজার ক্রীড়াবিদ বেইজিংয়ের শি চা হাই নামের সর্বোচ্চ ক্রীড়াকেন্দ্রে ডাক পায়। এই ৪৬ হাজারের মধ্য থেকে ৪০০-এর একটু কম ক্রীড়াবিদ অলিম্পিকের জন্য মনোনীত হয়। মেডেল পাওয়ার জন্য অলিম্পিকের আবহাওয়া ও ব্যবস্থা সেখানে করাই আছে, ফলে ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এসে কোনো অপ্রত্যাশিত অবস্থায় পড়ে না।
এ প্রসঙ্গে রাশিয়ার একটি দৈনিক পত্রিকা 'স্পোর্টস এক্সপ্রেস' খোলাখুলিভাবে স্বীকার করেছে, রাশিয়ায় ক্রীড়ার জন্য বাজেট বর্তমানে খুবই কম এবং বিভিন্ন ক্রীড়াপ্রতিষ্ঠানে সরকারি নিয়ন্ত্রণের অভাব প্রকট। অন্যদিকে একই পত্রিকার মতে, চীনের সরকারের বিশাল বাজেট, আন্তর্জাতিক মানের বিশাল 'স্পোর্টস এরিনা' তৈরি, ক্রীড়াসংক্রান্ত মেডিক্যাল রিসার্চ- এসব চীনের পদক জেতা নিশ্চিত করেছে।
জাতি, গোত্র, বর্ণ নিয়ে যেসব দেশ বৈষম্য করে তাদের এখন নতুন শিক্ষা নেওয়ার সময় এসেছে।
লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সংস্কৃতিবিষয়ক গবেষক
বিশ্বের দরবারে চীনের আগমনের পথ খুলে যায় নিক্সক-চৌ এন লাইয়ের পিং পং ডিপ্লোম্যাসির মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে। এর পরের বছর জাতিসংঘ তাইওয়ানকে অগ্রাহ্য করে মেইনল্যান্ড চীনকে চীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর ধীরে ধীরে চীন বিশ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। এই চীন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল ১৯৪৯ সালে। ব্রিটিশরা ভারত ছাড়ে ১৯৪৭ সালে। অথচ ভারত উপমহাদেশ (পাকিস্তান ও ভারত প্রজাতন্ত্র) তাদের আগে স্বাধীন হয়েও বিশ্বে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পড়ে আছে। চীন অবশ্য ১৯৪৯ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত ২২ বছর কয়েকটি নিকটবর্তী সমাজবাদী দেশ ছাড়া আর কারো সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়নি। কিন্তু তারা আণবিক বোমা বানিয়ে ফেলেছে এবং পারমাণবিক শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সমকক্ষ হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক শক্তিতেও (ডলারের সর্বোচ্চ রিজার্ভসহ) তারা বিশ্বে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। ফলে তাদের ঘটানো সাম্রাজ্যবাদ শক্তির পক্ষে সহজ কাজ হয়ে ওঠেনি। বলা হয়, চীন আর এখন সমাজতন্ত্র নীতি অনুসরণ করে না, তারা পুঁজিবাদের পথ ধরেছে। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে সে দেশে উন্নতির পথে কোনো বাধা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হয় না। এবারের অলিম্পিক এই বক্তব্যের পক্ষে সমর্থন জোগায়।
কিন্তু তাদের এই সাফল্য পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো সহজভাবে নিতে পারেনি। সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার আগে তারা অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমান সমান পদক পেত। কিন্তু সমাজতন্ত্র পরিহার করা রাশিয়া এখন পদকের তালিকায় অনেক নিচে চলে গেছে- এমনকি ব্রিটেন এখন তৃতীয় স্থানে আছে, তাদেরও রাশিয়া ছুঁতে পারবে বলে মনে হয় না।
চীনের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো সমানে বিষোদগার করে চলছে। এখন তারা চীনের এই সর্বোচ্চসংখ্যক স্বর্ণপদক প্রাপ্তিতে উন্মত্ত হয়ে অনেক কিছু বলছে। তাদের কথা হলো, সম্ভবত চীনা খেলোয়াড়রা ড্রাগ (স্টেরয়েড) টেস্ট ফাঁকি দেওয়ার বুদ্ধি বের করেছে। সাঁতারে চীন বিশ্বরেকর্ড করার পরে এ ধারণা নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে। দ্বিতীয় অভিযোগ হলো, চীন অমানবিক অত্যাচারে জর্জরিত করে অলিম্পিক খেলোয়াড় তৈরি করে। জনৈক মার্কিন সাংবাদিকের দাবি, তিনি বেইজিংয়ের শি চা হাই নামের সর্বোচ্চ ক্রীড়া প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে গিয়ে স্বচক্ষে দেখেছেন কিভাবে দৈহিক ও মানসিক অত্যাচার ও শাস্তির মধ্য দিয়ে চীন তাদের মেডেল আনার সেনাবাহিনী তৈরি করে। এ জন্য তারা নাকি কিন্ডারগার্টেন থেকেই খেলোয়াড় বাছাই করতে থাকে। যারা বেইজিং অলিম্পিক দেখেছে এবং বর্তমান অলিম্পিক দেখছে তারা চীনা খেলোয়াড়দের অভিব্যক্তি দেখে এসব অভিযোগ মানবে বলে মনে হয় না। তৃতীয় অভিযোগ হলো, সমাজতন্ত্র পরিহার করে রাশিয়ার অলিম্পিক মেডেল সংখ্যা কমেছে, সুতরাং এখন চীনেরও সেই অবস্থা হতে বাধ্য। চীন সমাজতন্ত্র পরিহার করেছে কি না তা দ্ব্যর্থহীনভাবে কেউ বলছে না। ধরে নিই করেছে; কিন্তু এর পরও এই অলিম্পিকে তারা অনেক সোনা জিতেছে।
আসলে চীন সম্পর্কে পাশ্চাত্যের মিথ্যা প্রচারণার শেষ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতি-বর্ণ বিভাজনের তালিকায় জাপানিরা হলো 'অনারারি (খেতাবি) হোয়াইট', কিন্তু চীনারা 'ব্ল্যাক'। ইউরোপের প্রায় সব সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চীনকে তাদের (ব্রিটেন ও ফ্রান্স সর্বাগ্রে) কলোনি বানিয়েছিল এবং তারা রটিয়েছিল, চীন এক চণ্ডুখোর জাতি, তাদের মেরুদণ্ড নেই, তাদের মেয়েদের পায়ের পাতা বেঁধে দেওয়া হয়, যাতে তারা দৌড়াতে না পারে, এ রকম আরো অনেক নেতিবাচক কথা। কলকাতা ও ঢাকায় আমরা চীনা জুতো তৈরির কারিগর দেখে সেসব প্রপাগান্ডায় বিশ্বাস করতাম। কিন্তু ১৯৪৫ সালে জাপানিদের তাড়ানোর চার বছরের মধ্যে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের সমর্থক চিয়াং কাইশেককে তাইওয়ানে বিতাড়িত করে। হংকংকে তারা ৫০ বছরের লিজ দেয় ব্রিটেনের কাছে (সেটা সময়মতো ফেরত নিয়েছে)। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার পর চীন বিশ্বের দরবারে নিজেদের আসন নিতে পরিকল্পনা করেই এগোচ্ছে।
তাহলে ক্রীড়াঙ্গনে চীনাদের আধিপত্য কী করে হলো? চীন দেশের সবকিছুই জনগণকে ঘিরে। তাদের শিক্ষা-দীক্ষা এমনকি বৃদ্ধদের ভালোভাবে সময় কাটানোর দায়িত্বও সরকারের। খেলাধুলায় তারা বিশাল বাজেট রেখেছে। গোটা চীনে তিন হাজার ক্রীড়া প্রশিক্ষণকেন্দ্র আছে। সেখানে প্রায় চার লাখ ক্রীড়াবিদ প্রশিক্ষণ পায়। তাদের মধ্য থেকে ৪৬ হাজার ক্রীড়াবিদ বেইজিংয়ের শি চা হাই নামের সর্বোচ্চ ক্রীড়াকেন্দ্রে ডাক পায়। এই ৪৬ হাজারের মধ্য থেকে ৪০০-এর একটু কম ক্রীড়াবিদ অলিম্পিকের জন্য মনোনীত হয়। মেডেল পাওয়ার জন্য অলিম্পিকের আবহাওয়া ও ব্যবস্থা সেখানে করাই আছে, ফলে ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এসে কোনো অপ্রত্যাশিত অবস্থায় পড়ে না।
এ প্রসঙ্গে রাশিয়ার একটি দৈনিক পত্রিকা 'স্পোর্টস এক্সপ্রেস' খোলাখুলিভাবে স্বীকার করেছে, রাশিয়ায় ক্রীড়ার জন্য বাজেট বর্তমানে খুবই কম এবং বিভিন্ন ক্রীড়াপ্রতিষ্ঠানে সরকারি নিয়ন্ত্রণের অভাব প্রকট। অন্যদিকে একই পত্রিকার মতে, চীনের সরকারের বিশাল বাজেট, আন্তর্জাতিক মানের বিশাল 'স্পোর্টস এরিনা' তৈরি, ক্রীড়াসংক্রান্ত মেডিক্যাল রিসার্চ- এসব চীনের পদক জেতা নিশ্চিত করেছে।
জাতি, গোত্র, বর্ণ নিয়ে যেসব দেশ বৈষম্য করে তাদের এখন নতুন শিক্ষা নেওয়ার সময় এসেছে।
লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সংস্কৃতিবিষয়ক গবেষক
No comments