বস্তি উচ্ছেদ
বাংলাদেশে গত কয়েক দশক ধরে বস্তি ও বস্তিবাসীর বিষয়টি নগরজীবনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশেই এ সমস্যা আছে; কিন্তু বাংলাদেশে এ সমস্যা প্রকট। নিম্ন আয়ের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ সাধারণত এসব বস্তিতে বসবাস করে। অনেকেই এসব বস্তিকে কেন্দ্র করে তাদের জীবন ও জীবিকার ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
স্বল্পপুঁজির নানা ধরনের ব্যবসার সঙ্গে ওরা জড়িত। নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে এরা গ্রাম থেকে শহরে এসে ভিড় করে। রাজধানীতে এ ধরনের বেশিরভাগ ছিন্নমূল মানুষ নতুন জীবিকা ও আশ্রয়ের খোঁজে বস্তিগুলোতে এসে ভিড় করেছে। এদের শহরে আসা বন্ধের জন্য ইতোপূর্বে বহুবার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বহুবার বসবাসকারী বস্তিবাসীদের উচ্ছেদও করা হয়েছে; কিন্তু মূল সমস্যার সমাধান হয়নি। বরং রাজধানীর অভ্যন্তরে ও উপকণ্ঠে বস্তি গড়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে বস্তিবাসীদের সংখ্যাও ক্রমেই বেড়েছে। এ বিষয়ে গবেষণা ও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খুব কম ক্ষেত্রেই বস্তিবাসীরা তাদের নিজ নিজ গ্রামে ফিরে গেছে। আসলে তৃতীয় বিশ্বের কিছু দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশের শহর জীবনে বস্তির বাস্তবতা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সৃষ্টি করেছে। ইতোপূর্বে বহুবার নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও সচেতন জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে, পুনর্বাসন ছাড়া রাজধানীতে বস্তি উচ্ছেদ নিষেধ করতে হবে। জানা গেছে, উন্নয়নবিদ ও সচেতন জনগোষ্ঠীর এই দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার পুনর্বাসন ছাড়া বস্তি উচ্ছেদ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত। কারণ গ্রাম থেকে ছিন্নমূল হয়ে আসা এই বস্তিবাসীরা কোথায় যাবে? এই অসহায় মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের। জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় ৫ হাজার বস্তিতে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বসবাস করে। রাজধানী ঢাকার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই বস্তিবাসী। ‘নগর গবেষণা কেন্দ্রের’ এক গবেষণায় এদেরকেই রাজধানীর ‘নগর অর্থনীতির প্রাণ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ঢাকার এই এক-তৃতীয়াংশ নগরবাসীর মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, গার্হস্থ্য শ্রমিক, হকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিম্ন আয়ের কর্মচারী। সুতরাং শহরের সচ্ছল মানুষদের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি এই সাধারণ জনগোষ্ঠীর স্বার্থও সরকারকে দেখতে হবে। তবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে যেসব বস্তি গড়ে উঠছেÑ সেক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ভাবা দরকার। সরকারী জমি দখলের উদ্দেশ্যে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি বস্তি গড়ে তুলেছে। এছাড়া বস্তিতে অনেক সমাজবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধী আত্মগোপন করে আছে। অবশ্যই এদের শনাক্ত করতে হবে এবং এদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করতে হবে।
তবে বস্তির সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে পুনর্বাসনের উদ্যোগ অবশ্যই কাক্সিক্ষত। জানা গেছে, জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালার সংশোধনীতে বস্তি উচ্ছেদ নিষিদ্ধ বিষয়ে বিধিনিষেধ আসছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নতুন ও সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত করেছে। সিদ্ধান্তের কার্যকর বাস্তবায়ন জরুরী। নগর উন্নয়নের বিষয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে অভিনন্দন।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত। কারণ গ্রাম থেকে ছিন্নমূল হয়ে আসা এই বস্তিবাসীরা কোথায় যাবে? এই অসহায় মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের। জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় ৫ হাজার বস্তিতে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বসবাস করে। রাজধানী ঢাকার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই বস্তিবাসী। ‘নগর গবেষণা কেন্দ্রের’ এক গবেষণায় এদেরকেই রাজধানীর ‘নগর অর্থনীতির প্রাণ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ঢাকার এই এক-তৃতীয়াংশ নগরবাসীর মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, গার্হস্থ্য শ্রমিক, হকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিম্ন আয়ের কর্মচারী। সুতরাং শহরের সচ্ছল মানুষদের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি এই সাধারণ জনগোষ্ঠীর স্বার্থও সরকারকে দেখতে হবে। তবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে যেসব বস্তি গড়ে উঠছেÑ সেক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ভাবা দরকার। সরকারী জমি দখলের উদ্দেশ্যে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি বস্তি গড়ে তুলেছে। এছাড়া বস্তিতে অনেক সমাজবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধী আত্মগোপন করে আছে। অবশ্যই এদের শনাক্ত করতে হবে এবং এদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করতে হবে।
তবে বস্তির সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে পুনর্বাসনের উদ্যোগ অবশ্যই কাক্সিক্ষত। জানা গেছে, জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালার সংশোধনীতে বস্তি উচ্ছেদ নিষিদ্ধ বিষয়ে বিধিনিষেধ আসছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নতুন ও সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত করেছে। সিদ্ধান্তের কার্যকর বাস্তবায়ন জরুরী। নগর উন্নয়নের বিষয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে অভিনন্দন।
No comments