আত্মহত্যার অন্যতম কারণ বিষণ্ণতা
মরিতে চাহিনা আমি এই সুন্দর ভবন ছেড়ে মানবের মাঝে আমি বাঁচতে চাই, কবিগুরুর এ বাক্য উপেক্ষা করে অনেকে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে আত্মহত্যা, কেউ বিষ খেয়ে, কেউ ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে, কেউ গলায় ফাঁস দিয়ে আবার কেউ নীরবে সূক্ষ্মভাবে জীবন শেষ করে দিচ্ছে। এসবের পিছনে রয়েছে বিষণœতা নামক ব্যাধি।
মন খারাপের কারণে কোন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়াকে বিষণœতা বুঝায়। বিষণœতার রোগীগুলো ফকির, কবিরাজ, ওঝা ও বিভিন্ন লোক দ্বারা বিভিন্নভাবে প্রতারিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের ৫-৯% মহিলা কোন না কোনভাবে বিষণœতা নামক রোগে ভুগছেন। এই বিরাট অংশ রোগী এই ডাক্তার, সেই ডাক্তার, এই পরীক্ষা ঐ পরীক্ষা করে শেষে কোন রোগ ধরতে না পেরে ধীরে ধীরে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়।
লক্ষণ
১। শারীরিক লক্ষণ : মাথা জ্বালাপোড়া করা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জ্বলে। কখনো কখনো পুরো শরীর জ্বালাপোড়া করে।
২। মাথা দিয়ে নাক দিয়ে কান দিয়ে গরম ভাপ ওঠে, কেউ কেউ বলে ভাত সিদ্ধ করলে যে রকম ভাপ ওঠে ঠিক সেই রকম কান দিয়ে নাক দিয়ে বের হয় এবং বার বার তেলপানি দেয়া লাগে মাথা ঠা-া করার জন্য।
৩। কেউ কেউ মাথার চুল মাঝখানে ফেলে দিয়ে বিভিন্ন গাছের পাতা পিষে মাথায় দিয়ে রাখে মাথা ঠা-া রাখার জন্য।
৪। বেশিরভাগ রোগীর ঘুমের সমস্যা হয়, কারো কারো একদম ঘুম হয় না। আজানের অনেক আগেই ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং সকাল বেলাটা তুলনামূলকভাবে বেশি খারাপ লাগে।
৫। যদি কোন বয়স্ক মহিলা দুঃখের কথা বলতে গেলেই প্রায় কেঁদে ফেলে তখন কিন্তু বিষণœতাই প্রথম সন্দেহ হতে পারে।
৬। মুখের কথা শুনে আপনি কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন যেমন : এই সমস্ত রোগী খুব কম কথা বলে এবং খুব আস্তে আস্তে কথা বলে। একটা প্রশ্ন করলে অনেক সময় পর উত্তর দেয়, মাঝে মাঝে কোন কথাই বলতে চায় না। কেউ জিজ্ঞেস না করলে কথা বলতে চায় না। তারপর ধীরে ধীরে এমন একটা অবস্থায় চলে যায় যে একদম কথা বলে না যাকে আমরা মিউট বলি।
৭। মন খারাপ থাকা, এটাই আসল লক্ষণ : এই মন খারাপের প্রকাশ বিভিন্ন মানুষের বিভিন্নভাবে হতে পারে, বেশিরভাগ রোগী নিজের মনের দুঃখ ভাব সরাসরি বলতে চায় না। তারা সাধারণত বেশিরভাগ সময় বিরক্ত ভাব থাকে, অন্যের কথা সহ্য করতে পারে না, কথা বললে রেগে যায়, বেশিরভাগ সময় মনমরা ভাব থাকে, কারো সাথে মিশতে চায় না, কাছে ছোট ছোট বাচ্চা চেঁচামেচি করলে বিক্ত হয় টেলিভিশন দেখতে চায় না অথচ আগে নিয়মিত টেলিভিশন দেখত এবং সবার সাথে মিশত। এখন কিছুই ভাল লাগে না। ছোটখাটো ব্যাপার নিয়েই কেঁদে ফেলে এবং অতীতের দুঃখের ঘটনাগুলো বার বার বলতে চায়। এ সবই কিন্তু মন খারাপের লক্ষণ।
৮। বাচ্চা ডেলিভারির পর বিষণœতা নামক রোগটির ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই সময়ে বেশিরভাগ মায়ের অভিযোগ থাকে শরীর বেশি দুর্বল লাগে, মন বিরক্ত থাকে। ঘুম হয় না। আত্মীয়স্বজনরা বলে ও যেন ইদানীং বেশি খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে এবং ভয় ও দুশ্চিন্তা লাগে। অনেক গ্রামাঞ্চলে এই সমস্যাগুলি সূতিকা বলে কবিরাজরা চিকিৎসা করে। অথচ এই নারীরা কিন্তু বিষণœতা নামক রোগে ভুগছে।
৯। এই সমস্ত রোগীর আনন্দ ফুর্তি, সাজগোজ, হাসিঠাট্টা, গল্প করা ধীরে ধীরে সকল আনন্দদায়ক ও স্বাভাবিক কাজকর্মে লোপ পেতে থাকে।
১০। খাওয়ার প্রতি অনীহা থাকে যে খেয়ে কি লাভ হবে, বেঁচে থেকে কি লাভ হবে?
১১। কেউ কেউ বসার সময় গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে জড় বস্তুর মতো করে বসে থাকে।
১২। এমনও দেখা গেছে, বলে যে, ডাক্তার আমার নাড়িভুঁড়ি পচে গেছে। আমি হয়ত বড় ধরনের পাপ করেছি, আল্লাহ আমাকে পাপের শাস্তি দিচ্ছে।
১৩। অনেক বিষণœ রোগীকে দেখা যায়, কথা বলার মাঝখানে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এটাও একটা লক্ষণ।
১৪। শরীরের ওজন কমতে থাকে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে বাড়তেও পারে।
১৫। কেউ কেউ হাজির হন মাথাব্যথা ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা নিয়ে।
ডা. মোঃ দেলোয়ার হোসেন
সহকারী অধ্যাপক, ০১৮১৭০২৮২৭৭
বাংলাদেশের ৫-৯% মহিলা কোন না কোনভাবে বিষণœতা নামক রোগে ভুগছেন। এই বিরাট অংশ রোগী এই ডাক্তার, সেই ডাক্তার, এই পরীক্ষা ঐ পরীক্ষা করে শেষে কোন রোগ ধরতে না পেরে ধীরে ধীরে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়।
লক্ষণ
১। শারীরিক লক্ষণ : মাথা জ্বালাপোড়া করা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জ্বলে। কখনো কখনো পুরো শরীর জ্বালাপোড়া করে।
২। মাথা দিয়ে নাক দিয়ে কান দিয়ে গরম ভাপ ওঠে, কেউ কেউ বলে ভাত সিদ্ধ করলে যে রকম ভাপ ওঠে ঠিক সেই রকম কান দিয়ে নাক দিয়ে বের হয় এবং বার বার তেলপানি দেয়া লাগে মাথা ঠা-া করার জন্য।
৩। কেউ কেউ মাথার চুল মাঝখানে ফেলে দিয়ে বিভিন্ন গাছের পাতা পিষে মাথায় দিয়ে রাখে মাথা ঠা-া রাখার জন্য।
৪। বেশিরভাগ রোগীর ঘুমের সমস্যা হয়, কারো কারো একদম ঘুম হয় না। আজানের অনেক আগেই ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং সকাল বেলাটা তুলনামূলকভাবে বেশি খারাপ লাগে।
৫। যদি কোন বয়স্ক মহিলা দুঃখের কথা বলতে গেলেই প্রায় কেঁদে ফেলে তখন কিন্তু বিষণœতাই প্রথম সন্দেহ হতে পারে।
৬। মুখের কথা শুনে আপনি কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন যেমন : এই সমস্ত রোগী খুব কম কথা বলে এবং খুব আস্তে আস্তে কথা বলে। একটা প্রশ্ন করলে অনেক সময় পর উত্তর দেয়, মাঝে মাঝে কোন কথাই বলতে চায় না। কেউ জিজ্ঞেস না করলে কথা বলতে চায় না। তারপর ধীরে ধীরে এমন একটা অবস্থায় চলে যায় যে একদম কথা বলে না যাকে আমরা মিউট বলি।
৭। মন খারাপ থাকা, এটাই আসল লক্ষণ : এই মন খারাপের প্রকাশ বিভিন্ন মানুষের বিভিন্নভাবে হতে পারে, বেশিরভাগ রোগী নিজের মনের দুঃখ ভাব সরাসরি বলতে চায় না। তারা সাধারণত বেশিরভাগ সময় বিরক্ত ভাব থাকে, অন্যের কথা সহ্য করতে পারে না, কথা বললে রেগে যায়, বেশিরভাগ সময় মনমরা ভাব থাকে, কারো সাথে মিশতে চায় না, কাছে ছোট ছোট বাচ্চা চেঁচামেচি করলে বিক্ত হয় টেলিভিশন দেখতে চায় না অথচ আগে নিয়মিত টেলিভিশন দেখত এবং সবার সাথে মিশত। এখন কিছুই ভাল লাগে না। ছোটখাটো ব্যাপার নিয়েই কেঁদে ফেলে এবং অতীতের দুঃখের ঘটনাগুলো বার বার বলতে চায়। এ সবই কিন্তু মন খারাপের লক্ষণ।
৮। বাচ্চা ডেলিভারির পর বিষণœতা নামক রোগটির ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই সময়ে বেশিরভাগ মায়ের অভিযোগ থাকে শরীর বেশি দুর্বল লাগে, মন বিরক্ত থাকে। ঘুম হয় না। আত্মীয়স্বজনরা বলে ও যেন ইদানীং বেশি খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে এবং ভয় ও দুশ্চিন্তা লাগে। অনেক গ্রামাঞ্চলে এই সমস্যাগুলি সূতিকা বলে কবিরাজরা চিকিৎসা করে। অথচ এই নারীরা কিন্তু বিষণœতা নামক রোগে ভুগছে।
৯। এই সমস্ত রোগীর আনন্দ ফুর্তি, সাজগোজ, হাসিঠাট্টা, গল্প করা ধীরে ধীরে সকল আনন্দদায়ক ও স্বাভাবিক কাজকর্মে লোপ পেতে থাকে।
১০। খাওয়ার প্রতি অনীহা থাকে যে খেয়ে কি লাভ হবে, বেঁচে থেকে কি লাভ হবে?
১১। কেউ কেউ বসার সময় গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে জড় বস্তুর মতো করে বসে থাকে।
১২। এমনও দেখা গেছে, বলে যে, ডাক্তার আমার নাড়িভুঁড়ি পচে গেছে। আমি হয়ত বড় ধরনের পাপ করেছি, আল্লাহ আমাকে পাপের শাস্তি দিচ্ছে।
১৩। অনেক বিষণœ রোগীকে দেখা যায়, কথা বলার মাঝখানে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এটাও একটা লক্ষণ।
১৪। শরীরের ওজন কমতে থাকে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে বাড়তেও পারে।
১৫। কেউ কেউ হাজির হন মাথাব্যথা ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা নিয়ে।
ডা. মোঃ দেলোয়ার হোসেন
সহকারী অধ্যাপক, ০১৮১৭০২৮২৭৭
No comments