শিক্ষক সুব্রত হত্যা মামলা-হাইকোর্টের আদেশ অমান্য, জামিন পেল প্রধান আসামি by আশরাফ-উল-আলম
রাজধানীর মিরপুরের মেথডিস্ট চার্চের সানডে স্কুলের শিক্ষক সুব্রত বৈদ্য হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে জামিন দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। গতকাল রবিবার আসামি রিপন দাস আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে মহানগর হাকিম হারুনুর রশিদ তাকে জামিন দেন।
আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ জামিনকে অস্বাভাবিক আখ্যায়িত করেছেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অভিযুক্ত আসামির জামিনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বাদী। তাঁরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলেও দাবি করেন।
রাজধানীর দারুস সালাম থানায় দায়ের করা চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রিপন দাস হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে গত বছর ২ নভেম্বর চার মাসের জন্য তার আগাম জামিন মঞ্জুর করা হয়। একই সঙ্গে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ২ মার্চ হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু রিপন দাস নিম্ন আদালতে হাজির হয়নি। গত ১৬ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। নির্ধারিত সময়ের চার মাসেরও বেশি সময় পর গতকাল রবিবার আসামি আত্মসমর্পণ করলে সব বিধিবিধান উপেক্ষা করে আদালত তাকে জামিন দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সুব্রত বৈদ্য মিরপুর বাংলা কলেজে বিএসএস কোর্সে পড়তেন। তাঁরা চার বোন এক ভাই। আর্থিক কারণে বাবা-মা লেখাপড়ার খরচ চালাতে না পারায় সুব্রত মিরপুর মাজার রোডের দ্বিতীয় কলোনির মেথডিস্ট চার্চের সানডে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। চার্চের নিচতলায় আসামি নীপা দাসের বাসা। নীপা দাসের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। এ নিয়ে নীপা দাসের ভাই, বাবা ও মায়ের সঙ্গে সুব্রতর সম্পর্ক খারাপ হয়। সুব্রতকে তাঁরা নীপার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাপ দেন। সম্পর্ক ছিন্ন না করলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর চার্চে ছাত্রছাত্রীদের ধর্মীয় বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার পর চার্চের চতুর্থ তলায় সুব্রতকে ডেকে নেন নীপা। দুপুর আড়াইটায় নীপা টেলিফোনে সুব্রতর বোনকে জানান, সুব্রত অসুস্থ। সুব্রতর স্বজনরা দ্রুত চার্চে গিয়ে দেখেন, নীপা এবং তাঁর বাবা, মা ও ভাইয়েরা সুব্রতকে পাঁজাকোলা করে নিচে নামাচ্ছেন। দ্রুত মিরপুর দুই নম্বরে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুব্রতকে মৃত ঘোষণা করেন। আসামিরা সুব্রত হৃদরোগে মারা গেছে বলে জানান। কিন্তু ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, সুব্রতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দারুস সালাম থানায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা হয়। পরে নিহতের বোন সুবর্ণা বৈদ্য বাদী হয়ে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে থানা কর্তৃপক্ষ বাদীর অভিযোগকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে। এজাহারে নীপা দাস, তাঁর বাবা নিবারণ দাস, মা লিন্ডা দাস, ভাই রিপন দাস, আত্মীয় শিমন শিকদার ও প্রভুদান বাড়ৈকে আসামি করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি নিজে এ মামলার শুনানির সময় জামিনের আপত্তি করেছেন। আদালতকে তিনি বলেছেন, আসামি হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে। একটি হত্যা মামলায় আসামিকে এভাবে জামিন দেওয়া যায় না। কিন্তু আদালত বাদীপক্ষের আপত্তি আমলে নেননি। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করার পরও এ ধরনের জামিন মঞ্জুর করার ঘটনা নজিরবিহীন।
অ্যাডভোকেট ফারুক আরো বলেন, এ মামলার আসামিরা আদালতকে প্রভাবিত করে জামিনে থাকছেন। এ কারণে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা যাচ্ছে না। তাঁরা তদন্তকে প্রভাবিত করছেন। অন্যদিকে তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডে নিয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছেন না।
মামলার বাদী নিহতের বোন সুবর্ণা বৈদ্য কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আদালতের এ ধরনের জামিন আদেশে আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হলাম। আদালতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।'
নিহতের ভগি্নপতি দুলাল গাইন বলেন, 'অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে আসামি জামিন পেয়ে গেল। এই হত্যাকাণ্ডে পুরো খ্রিস্টান সমাজ বিব্রত। চার্চের মতো একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে আমরা সংশয়ে আছি।'
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, হাইকোর্ট আসামিকে চার মাসের জন্য জামিন দেন। চার মাস পরে অবশ্যই নিম্ন আদালতে আসামির আত্মসমর্পণ করার কথা। তা না করলে হাইকোর্ট অবমাননা করা হয়। অনেক পরে আসামি আত্মসমর্পণ করেছে। এতে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করা হয়েছে। এ কারণেই তার জামিন নামঞ্জুর হওয়ার কথা। অথচ তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এটা অবশ্যই অস্বাভাবিক জামিন।
অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ বলেন, এ ধরনের জামিন আদেশ নজিরবিহীন। অস্বাভাবিকও বটে।
রাজধানীর দারুস সালাম থানায় দায়ের করা চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রিপন দাস হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে গত বছর ২ নভেম্বর চার মাসের জন্য তার আগাম জামিন মঞ্জুর করা হয়। একই সঙ্গে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ২ মার্চ হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু রিপন দাস নিম্ন আদালতে হাজির হয়নি। গত ১৬ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। নির্ধারিত সময়ের চার মাসেরও বেশি সময় পর গতকাল রবিবার আসামি আত্মসমর্পণ করলে সব বিধিবিধান উপেক্ষা করে আদালত তাকে জামিন দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সুব্রত বৈদ্য মিরপুর বাংলা কলেজে বিএসএস কোর্সে পড়তেন। তাঁরা চার বোন এক ভাই। আর্থিক কারণে বাবা-মা লেখাপড়ার খরচ চালাতে না পারায় সুব্রত মিরপুর মাজার রোডের দ্বিতীয় কলোনির মেথডিস্ট চার্চের সানডে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। চার্চের নিচতলায় আসামি নীপা দাসের বাসা। নীপা দাসের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। এ নিয়ে নীপা দাসের ভাই, বাবা ও মায়ের সঙ্গে সুব্রতর সম্পর্ক খারাপ হয়। সুব্রতকে তাঁরা নীপার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাপ দেন। সম্পর্ক ছিন্ন না করলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর চার্চে ছাত্রছাত্রীদের ধর্মীয় বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার পর চার্চের চতুর্থ তলায় সুব্রতকে ডেকে নেন নীপা। দুপুর আড়াইটায় নীপা টেলিফোনে সুব্রতর বোনকে জানান, সুব্রত অসুস্থ। সুব্রতর স্বজনরা দ্রুত চার্চে গিয়ে দেখেন, নীপা এবং তাঁর বাবা, মা ও ভাইয়েরা সুব্রতকে পাঁজাকোলা করে নিচে নামাচ্ছেন। দ্রুত মিরপুর দুই নম্বরে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুব্রতকে মৃত ঘোষণা করেন। আসামিরা সুব্রত হৃদরোগে মারা গেছে বলে জানান। কিন্তু ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, সুব্রতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দারুস সালাম থানায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা হয়। পরে নিহতের বোন সুবর্ণা বৈদ্য বাদী হয়ে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে থানা কর্তৃপক্ষ বাদীর অভিযোগকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে। এজাহারে নীপা দাস, তাঁর বাবা নিবারণ দাস, মা লিন্ডা দাস, ভাই রিপন দাস, আত্মীয় শিমন শিকদার ও প্রভুদান বাড়ৈকে আসামি করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি নিজে এ মামলার শুনানির সময় জামিনের আপত্তি করেছেন। আদালতকে তিনি বলেছেন, আসামি হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে। একটি হত্যা মামলায় আসামিকে এভাবে জামিন দেওয়া যায় না। কিন্তু আদালত বাদীপক্ষের আপত্তি আমলে নেননি। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করার পরও এ ধরনের জামিন মঞ্জুর করার ঘটনা নজিরবিহীন।
অ্যাডভোকেট ফারুক আরো বলেন, এ মামলার আসামিরা আদালতকে প্রভাবিত করে জামিনে থাকছেন। এ কারণে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা যাচ্ছে না। তাঁরা তদন্তকে প্রভাবিত করছেন। অন্যদিকে তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডে নিয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছেন না।
মামলার বাদী নিহতের বোন সুবর্ণা বৈদ্য কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আদালতের এ ধরনের জামিন আদেশে আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হলাম। আদালতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।'
নিহতের ভগি্নপতি দুলাল গাইন বলেন, 'অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে আসামি জামিন পেয়ে গেল। এই হত্যাকাণ্ডে পুরো খ্রিস্টান সমাজ বিব্রত। চার্চের মতো একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে আমরা সংশয়ে আছি।'
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, হাইকোর্ট আসামিকে চার মাসের জন্য জামিন দেন। চার মাস পরে অবশ্যই নিম্ন আদালতে আসামির আত্মসমর্পণ করার কথা। তা না করলে হাইকোর্ট অবমাননা করা হয়। অনেক পরে আসামি আত্মসমর্পণ করেছে। এতে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করা হয়েছে। এ কারণেই তার জামিন নামঞ্জুর হওয়ার কথা। অথচ তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এটা অবশ্যই অস্বাভাবিক জামিন।
অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ বলেন, এ ধরনের জামিন আদেশ নজিরবিহীন। অস্বাভাবিকও বটে।
No comments