ঈদে বাড়ি ফেরা-'টিকিট আছে, তবে ভিআইপিদের জন্য' by ফিরোজ এহতেশাম
ঈদের ছুটিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে নিজ বাড়িতে যাবেন মো. দোয়েল খান। তিনি চাকরিজীবী। কল্যাণপুরে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে ১৬ আগস্টের টিকিট কিনতে গিয়েছিলেন। পাননি। বেরিয়ে আসছিলেন কাউন্টার থেকে।
প্রশ্ন করতেই হতাশ কণ্ঠে বললেন, 'ভাই, এখন যা টিকিট আছে তার সব ভিআইপিদের জন্য! আমাদের জন্য কোনো টিকিট নেই।' জানালেন, ১৬ আগস্টের টিকিট চাইলে তাঁকে টিকিট নেই বলে জানিয়ে দেন শ্যামলীর বিক্রয়কর্মীরা। ঠিক তখনই এক যাত্রী এসে তাঁর মোবাইল ফোনটি ধরিয়ে দেন একজন বিক্রয়কর্মীকে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ১৬ আগস্টের টিকিট পেয়ে যান।
হানিফ কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন রংপুরের যাত্রী তপু ইসলাম। তিনি বললেন, 'আমার বাড়ি যেতে হতো ১৪ তারিখে। ছয়-সাতটা বাস কাউন্টারে ঘুরলাম, কিন্তু ১৪, ১৫ বা ১৬ আগস্টের কোনো টিকিট নাকি নেই। ১৭ তারিখের টিকিট যা-ও আছে তা-ও একেবারে পেছনে। কিন্তু কেউ কেউ এসে আমাদের চোখের সামনেই টিকিট নিয়ে যাচ্ছে। আমরা না পেলে তারা কিভাবে পাচ্ছে? তারা যতই বলুক টিকিট নেই, আসলে টিকিট আছে, তবে ভিআইপিদের জন্য।'
পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন আরেক টিকিটবঞ্চিত যাত্রী রাজশাহীর মাসুদ চৌধুরী। তিনিও অভিযোগ করে বললেন, 'ভাই, আপনিও একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে গিয়ে টিকিট চান, পাবেন না। যেমন আমি পাইনি। কিন্তু ফোন করে যদি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে টিকিট চান, সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবেন।'
আবার কোনো কোনো যাত্রী অভিযোগ করলেন, গোপনে বিক্রয়কর্মী ও মাস্টারদের বেশি টাকা দিয়েও কেউ কেউ টিকিট নিয়ে যাচ্ছে। টিকিট বিক্রিতে এই কারসাজি চলছে বাস-মালিকদের চোখের আড়ালে। কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি থাকলে এমনটা হতো না। তাঁরা বললেন, 'আমরা বিক্রয়কর্মী ও মাস্টারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছি।'
গতকাল রবিবার রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর ও মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে যাত্রীদের এমন অভিযোগই বেশি পাওয়া গেল। তাঁরা আক্ষেপ করে বললেন, 'শুধু কি ভিআইপিরাই ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাবেন, আমরা যেতে পারব না!'
বাস কাউন্টারগুলোর বিক্রয়কর্মী ও মাস্টাররা যাত্রীদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, '১৪, ১৫ ও ১৬ আগস্টের সব টিকিট বিক্রি শেষ। কাউকেই আর এ তিন দিনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। কেউ যদি এসে টিকিট ফেরত দিয়ে যায় তাহলেই শুধু আমরা টিকিট দিতে পারব। আর আমরা টিকিটের নির্ধারিত দামের চেয়ে এক টাকাও বেশি নিচ্ছি না।'
অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বাসের এক বিক্রয়কর্মী বললেন, 'বাসের মালিকরাই তাঁর প্রতিটি বাসের চার-পাঁচটি করে টিকিট রেখে দেন। হঠাৎ কোনো ভিআইপি পারসন যদি টিকিট চেয়ে বসেন তখন তাঁদের দিতে হয়। ব্যবসা করতে হলে এ ছাড়া মালিকদের কোনো উপায়ও নেই।'
কেয়া পরিবহনের বিক্রয়কর্মী কদর আলী টিটু বললেন, '১৩ থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত কোনো বাসের টিকিট পাবেন না। যদিও থাকে তবে তা একেবারে পেছনের দিকে। তবে মালিকরা প্রতিবারই তিন-চারটি সিট রেখে দেন। ভুলক্রমে একই সিটের দুটি টিকিট বিক্রি হয়ে গেলে তখন ওই টিকিটগুলো কাজে লাগে। তবে আমরা টিকিটের নির্ধারিত দামের চেয়ে এক টাকাও বেশি নিচ্ছি না।'
টিটু জানালেন, উত্তরবঙ্গের মানসম্পন্ন বাসের মধ্যে রয়েছে এসআর ট্রাভেলস, টিআর ট্রাভেলস, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, নাবিল, কেয়া, বাবলু, আল-হামরা, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, গ্রিন লাইন প্রভৃতি। আর দক্ষিণবঙ্গের মানসম্পন্ন বাস হলো ঈগল, এসবি সুপার ডিলাক্স, পাবনা এক্সপ্রেস, সোহাগ, একে ট্রাভেলস, এসপি গোল্ডেন লাইন, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস, সায়রা পরিবহন, জে আর, স্কাই লাইন প্রভৃতি।
এসবি সুপার ডিলাক্সের বিক্রয়কর্মী সাজু আহমেদ বললেন, '১৪ থেকে ১৮ আগস্টের কোনো টিকিট নেই। তবে প্রতিবারই কেউ কেউ টিকিট ফেরত দিয়ে যায়। তখন ভাগ্যক্রমে সেই টিকিট কেউ কেউ পেয়ে যায়।'
পাবনা এক্সপ্রেসের ম্যানেজার মো. জুলফিকার জুলু বললেন, 'আমাদের প্রতিটি বাসের দু-চারটি করে টিকিট আছে ভিআইপিদের জন্য। তবে প্রত্যেকেই ঈদে আনন্দ করতে বাড়ি যাবে। তাদের সবাইকে যদি টিকিট দিতে পারি তাহলে আমাদেরও ভালো লাগে। এবার লম্বা ছুটির কারণে যাত্রীর চাপ একটু কম। আগে দু-এক দিন ভীষণ চাপ যেত।' তিনি বলেন, 'তবে নিম্ন আয়ের লোকজন, যেমন গার্মেন্টকর্মীরা এখন টিকিট পায়নি। ঈদের দুদিন আগে তারা টিকিটের জন্য উপচে পড়বে আর আমরা পড়ব ঝামেলায়। তখন যদি বিআরটিসির ডাবল ডেকারগুলো কোনো ট্রিপ নিয়ে যায়, তাহলে আমাদের জানায়। আমরা তখন যাত্রীদের ওই বাসে যাওয়ারও পরামর্শ দিই।'
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রমেশ চন্দ্র ঘোষ কালের কণ্ঠকে বলেন, '১৪, ১৫ ও ১৬ আগস্টের সব টিকিট বিক্রি ৩ ও ৪ আগস্টের মধ্যেই হয়ে গেছে। দু-চারটি টিকিট যা আছে তা ভিআইপিদের জন্য। তবে আরেক কারণেও এ টিকিটগুলো আমরা রাখি- যদি ভুলক্রমে একই সিটের দুটি টিকিট বিক্রি হয়ে যায় তা পূরণের জন্য। তবে ১৭, ১৮ ও ১৯ তারিখের জন্য এখনো পর্যাপ্ত টিকিট রয়েছে।'
হানিফ কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন রংপুরের যাত্রী তপু ইসলাম। তিনি বললেন, 'আমার বাড়ি যেতে হতো ১৪ তারিখে। ছয়-সাতটা বাস কাউন্টারে ঘুরলাম, কিন্তু ১৪, ১৫ বা ১৬ আগস্টের কোনো টিকিট নাকি নেই। ১৭ তারিখের টিকিট যা-ও আছে তা-ও একেবারে পেছনে। কিন্তু কেউ কেউ এসে আমাদের চোখের সামনেই টিকিট নিয়ে যাচ্ছে। আমরা না পেলে তারা কিভাবে পাচ্ছে? তারা যতই বলুক টিকিট নেই, আসলে টিকিট আছে, তবে ভিআইপিদের জন্য।'
পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন আরেক টিকিটবঞ্চিত যাত্রী রাজশাহীর মাসুদ চৌধুরী। তিনিও অভিযোগ করে বললেন, 'ভাই, আপনিও একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে গিয়ে টিকিট চান, পাবেন না। যেমন আমি পাইনি। কিন্তু ফোন করে যদি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে টিকিট চান, সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবেন।'
আবার কোনো কোনো যাত্রী অভিযোগ করলেন, গোপনে বিক্রয়কর্মী ও মাস্টারদের বেশি টাকা দিয়েও কেউ কেউ টিকিট নিয়ে যাচ্ছে। টিকিট বিক্রিতে এই কারসাজি চলছে বাস-মালিকদের চোখের আড়ালে। কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি থাকলে এমনটা হতো না। তাঁরা বললেন, 'আমরা বিক্রয়কর্মী ও মাস্টারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছি।'
গতকাল রবিবার রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর ও মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে যাত্রীদের এমন অভিযোগই বেশি পাওয়া গেল। তাঁরা আক্ষেপ করে বললেন, 'শুধু কি ভিআইপিরাই ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাবেন, আমরা যেতে পারব না!'
বাস কাউন্টারগুলোর বিক্রয়কর্মী ও মাস্টাররা যাত্রীদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, '১৪, ১৫ ও ১৬ আগস্টের সব টিকিট বিক্রি শেষ। কাউকেই আর এ তিন দিনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। কেউ যদি এসে টিকিট ফেরত দিয়ে যায় তাহলেই শুধু আমরা টিকিট দিতে পারব। আর আমরা টিকিটের নির্ধারিত দামের চেয়ে এক টাকাও বেশি নিচ্ছি না।'
অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বাসের এক বিক্রয়কর্মী বললেন, 'বাসের মালিকরাই তাঁর প্রতিটি বাসের চার-পাঁচটি করে টিকিট রেখে দেন। হঠাৎ কোনো ভিআইপি পারসন যদি টিকিট চেয়ে বসেন তখন তাঁদের দিতে হয়। ব্যবসা করতে হলে এ ছাড়া মালিকদের কোনো উপায়ও নেই।'
কেয়া পরিবহনের বিক্রয়কর্মী কদর আলী টিটু বললেন, '১৩ থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত কোনো বাসের টিকিট পাবেন না। যদিও থাকে তবে তা একেবারে পেছনের দিকে। তবে মালিকরা প্রতিবারই তিন-চারটি সিট রেখে দেন। ভুলক্রমে একই সিটের দুটি টিকিট বিক্রি হয়ে গেলে তখন ওই টিকিটগুলো কাজে লাগে। তবে আমরা টিকিটের নির্ধারিত দামের চেয়ে এক টাকাও বেশি নিচ্ছি না।'
টিটু জানালেন, উত্তরবঙ্গের মানসম্পন্ন বাসের মধ্যে রয়েছে এসআর ট্রাভেলস, টিআর ট্রাভেলস, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, নাবিল, কেয়া, বাবলু, আল-হামরা, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, গ্রিন লাইন প্রভৃতি। আর দক্ষিণবঙ্গের মানসম্পন্ন বাস হলো ঈগল, এসবি সুপার ডিলাক্স, পাবনা এক্সপ্রেস, সোহাগ, একে ট্রাভেলস, এসপি গোল্ডেন লাইন, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস, সায়রা পরিবহন, জে আর, স্কাই লাইন প্রভৃতি।
এসবি সুপার ডিলাক্সের বিক্রয়কর্মী সাজু আহমেদ বললেন, '১৪ থেকে ১৮ আগস্টের কোনো টিকিট নেই। তবে প্রতিবারই কেউ কেউ টিকিট ফেরত দিয়ে যায়। তখন ভাগ্যক্রমে সেই টিকিট কেউ কেউ পেয়ে যায়।'
পাবনা এক্সপ্রেসের ম্যানেজার মো. জুলফিকার জুলু বললেন, 'আমাদের প্রতিটি বাসের দু-চারটি করে টিকিট আছে ভিআইপিদের জন্য। তবে প্রত্যেকেই ঈদে আনন্দ করতে বাড়ি যাবে। তাদের সবাইকে যদি টিকিট দিতে পারি তাহলে আমাদেরও ভালো লাগে। এবার লম্বা ছুটির কারণে যাত্রীর চাপ একটু কম। আগে দু-এক দিন ভীষণ চাপ যেত।' তিনি বলেন, 'তবে নিম্ন আয়ের লোকজন, যেমন গার্মেন্টকর্মীরা এখন টিকিট পায়নি। ঈদের দুদিন আগে তারা টিকিটের জন্য উপচে পড়বে আর আমরা পড়ব ঝামেলায়। তখন যদি বিআরটিসির ডাবল ডেকারগুলো কোনো ট্রিপ নিয়ে যায়, তাহলে আমাদের জানায়। আমরা তখন যাত্রীদের ওই বাসে যাওয়ারও পরামর্শ দিই।'
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রমেশ চন্দ্র ঘোষ কালের কণ্ঠকে বলেন, '১৪, ১৫ ও ১৬ আগস্টের সব টিকিট বিক্রি ৩ ও ৪ আগস্টের মধ্যেই হয়ে গেছে। দু-চারটি টিকিট যা আছে তা ভিআইপিদের জন্য। তবে আরেক কারণেও এ টিকিটগুলো আমরা রাখি- যদি ভুলক্রমে একই সিটের দুটি টিকিট বিক্রি হয়ে যায় তা পূরণের জন্য। তবে ১৭, ১৮ ও ১৯ তারিখের জন্য এখনো পর্যাপ্ত টিকিট রয়েছে।'
No comments